বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই, এটা গণতন্ত্রের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেজন্য এ বছরে মাঝামাঝি সময়ে অর্থাৎ জুলাইয়ের মধ্যেই নির্বাচন সম্ভব। এজন্য সরকারকে নির্বাচন কমিশনকে এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানাচ্ছি। এ বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে আমরা নির্বাচনের ব্যবস্থা নিতে পারি।
মঙ্গলবার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
গতকাল সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এই সিদ্ধান্তের কথা জানানোর জন্যই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি মাঝেমধ্যে অবাক হযই এরকম একটা ক্রিটিক্যাল মুহূর্তে জাতীয় নির্বাচন ছাড়া অন্য কোন নির্বাচনের কথা আসে কি করে। এছাড়া নির্বাচন পেছনোর বিষয়ে আলোচনা হয় কি করে।
খালেদা জিয়া ২০১৬ সালে প্রেস কনফারেন্সে ভিশন ২০৩০ ঘোষণার মাধ্যমে সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিলেন উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সেখানে ক্ষমতার ভারসম্য আনার কথা বলা হয়েছিল। এরপর ২০২২ সালে ৩১ দফা রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছিল। প্রতিটি দফাই তো সংস্কারের প্রক্রিয়া।
ফখরুল বলেন, সভায়, সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এই আইন সম্পর্কে আরো বিস্তারিত তথ্য সম্বলিত একটি সংবাদ সম্মেলনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ বিষয়ে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খানকে প্রধান করে প্রফেসর এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামান ও ব্যরিষ্টার কায়সার কামাল সহ একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি অবিলম্বে এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রস্তুত করবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সভায় নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সভা মনে করে জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিলম্বিত করা হলে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ক্রমশবৃদ্ধি পাবে। যেহেতু নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে গঠিত হয়েছে সেহেতু জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার কারন নেই। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রশ্ন উঠে না। ২০২৫ সালের জুলাই মাসের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, নির্বাচন কমিশন ও সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যমতে আসার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, সভায় দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত উর্দ্ধগতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। একদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্য বৃদ্ধি, ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি অন্যদিকে ভ্যাট ও অন্যান্য করের হার বৃদ্ধি অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে সভা মনে করে। এ বিষয়ে একটি বিস্তারিত তথ্য সম্বলিত সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
ফখরুল বলেন, জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে আহবায়ক ও চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি অবিলম্বে উপরোক্ত বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রস্তুত করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান উপস্থিত ছিলেন।