গণতন্ত্র মঞ্চের মিছিলে পুলিশের বাধা

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

১৯ জুন ২০২৩, ১১:০০ পিএম | আপডেট: ২০ জুন ২০২৩, ১২:০১ এএম

সচিবালয় অভিমুখে গণতন্ত্র মঞ্চের বিক্ষোভ মিছিলে বাধা দিয়েছে পুলিশ। এ সময় ধাক্কাধাক্কিতে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার বেলা দেড়টার দিকে বিদ্যুৎ সংকটের সমাধান ও নিত্যপণ্যের দাম কমানোর দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। সমাবেশের পর বিক্ষোভ মিছিল বের করেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা-কর্মীরা। মিছিলটি সচিবালয় অভিমুখে অগ্রসর হয়ে জিরো পয়েন্ট মোড়ে গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। রাস্তার ওপর পুলিশ কাঁটাতারের ব্যারিকেড দিলে বিক্ষোভকারীরা সেই বাধা ভেঙে সচিবালয়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তখন সেখানে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। একপর্যায়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা পুলিশের বাধার মুখে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে তাঁদের কর্মসূচি শেষ করেন।
সচিবালয় অভিমুখে বিক্ষোভের আগে প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশে বক্তব্যে গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, আমরা নির্বাচন হতে দেব না বলিনি। জনগণ যদি বলে নির্বাচন হতে দেব না, তখন আপনাদের করার কিছু নেই। এই সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে পারে, এটা দেশের জনগণ বিশ্বাস করে না। তাই এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না।

তিনি বলেন, এ দেশের অর্থনীতির অবস্থা খুবই খারাপ। জনগণের স্বার্থে, মানুষের স্বার্থে এ সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। এ সরকারকে আগে পদত্যাগ করতে হবে। এ মুহূর্তে দরকার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ সরকারের পায়ের তলে মাটি নেই।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমরা কর্মসূচি দিয়ে ধাপে ধাপে শান্তির দিকে অগ্রসর হচ্ছি। ঈদের পরে আরও বৃহত্তর ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। তিনি বলেন, এ বছর বাংলাদেশে যত মুদ্রার ঘাটতি দেখা গেছে তা গত কয়েক বছরে হয়নি। এ সরকারের কাছে বাংলাদেশের জনগণ বিদ্যুৎ পাবেন না, নিরাপত্তা পাবেন না, ভোট দিতে পারবেন না। এ সরকারের যাবার সময় হয়েছে। এ সরকার হচ্ছে স্বৈরাচারী, বদমাশ, লুটপাটের সরকার। এ সরকার আগে আমাদের ভয় দেখাত। জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য নানা কায়দা দেখাত। এজন্যই আমরা বলি, তোমাদের সময় হয়েছে, তোমরা এবার যাও।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম। সমাবেশের পর সচিবালয় অভিমুখে পুলিশি বাধা নিয়ে এই জোটের নেতা ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, আজকে তাঁরা সচিবালয় অভিমুখে বিক্ষোভ করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ বাধা দিয়েছে। যে ধরনের আয়োজন পুলিশ সেখানে করে রেখেছে, যেভাবে তারা মারমুখী হয়েছে, তাতে মঞ্চের অনেক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।

তিনি বলেন, মানুষ বিদ্যুৎ সংকটে নাকাল অবস্থায় আছেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বমুখীতে তারা কুপোকাত হয়েছেন। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেওয়ার নামে সরকার যা করল; এখন বিদ্যুতের দাম কত কত হয়েছে তা আপনারা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন। সমস্ত পণ্য তৈরি করতে বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। ফলে সব জিনিসের দাম বিদ্যুতের দাম বাড়ার ফলে বেড়ে গেছে। বিদ্যুৎ সংকটকে কাজে লাগিয়ে সরকার পয়সা হাতে নেওয়ার ব্যবস্থা করছিল। এ পয়সা ১/২ পয়সা নয়, হাজার কোটি টাকা।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আমরা বলতে চাই, আপনারা আপনাদের পেশাদারি দায়িত্ব পালন করুন। সরকারের সহযোগী হিসেবে দেশের মানুষ আপনাদের দেখতে চায় না। সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, গরিবকে আরও গরিব বানানোর প্রজেক্ট বর্তমান বাজেট। আমরা গণতন্ত্র মঞ্চ বলছি, এখনো আপনাদের নিরাপদে সরে যাওয়ার একটি রাস্তা খোলা আছে। এখন পর্যন্ত সংকট সমাধানের রাস্তা খোলা আছে। এর মধ্যে যদি সরকার ব্যবস্থা না নেয়, তবে ঈদের পর গণতন্ত্র মঞ্চ আরও শক্তিশালী হবে।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

মেসির সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন উড়িয়ে দিলেন সেই সাংবাদিক

মেসির সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন উড়িয়ে দিলেন সেই সাংবাদিক

দেশের মানুষ হাসিনার ফাঁসি চায় :ভোলায় সারজিস আলম

দেশের মানুষ হাসিনার ফাঁসি চায় :ভোলায় সারজিস আলম

জীবনযাত্রা ব্যয় আরো বাড়তে পারে

জীবনযাত্রা ব্যয় আরো বাড়তে পারে

সাবেক ওসি শাহ আলমকে ধরতে সারা দেশে রেড অ্যালার্ট

সাবেক ওসি শাহ আলমকে ধরতে সারা দেশে রেড অ্যালার্ট

মনে হচ্ছে পারমাণবিক বোমা ফেলা হয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেসে

মনে হচ্ছে পারমাণবিক বোমা ফেলা হয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেসে

খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ভালোভাবেই হচ্ছে

খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ভালোভাবেই হচ্ছে

চাল ও মুরগির বাজার অস্থিতিশীল

চাল ও মুরগির বাজার অস্থিতিশীল

সামরিক খাতে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে চায় তুরস্ক

সামরিক খাতে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে চায় তুরস্ক

মানুষ জবাই করা আর হাত-পা ভেঙে দেয়ার নাম তাবলিগ নয় :জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ান

মানুষ জবাই করা আর হাত-পা ভেঙে দেয়ার নাম তাবলিগ নয় :জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ান

মুজিব কোট এখন ‘বাচ্চাদের পটি’

মুজিব কোট এখন ‘বাচ্চাদের পটি’

সীমান্তে প্রতিরোধ ব্যূহ

সীমান্তে প্রতিরোধ ব্যূহ

গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আরও ৬ জনের লাশ ঢামেক মর্গে

গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আরও ৬ জনের লাশ ঢামেক মর্গে

মালয়েশিয়ায় এনআইডি ও স্মার্ট কার্ড সেবা কার্যক্রম চালু হচ্ছে

মালয়েশিয়ায় এনআইডি ও স্মার্ট কার্ড সেবা কার্যক্রম চালু হচ্ছে

সাংবাদিক মিজানুর রহমান খানের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ শনিবার

সাংবাদিক মিজানুর রহমান খানের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ শনিবার

ক্র্যাবের সভাপতি তমাল, সাধারণ সম্পাদক বাদশাহ্

ক্র্যাবের সভাপতি তমাল, সাধারণ সম্পাদক বাদশাহ্

মুকসুদপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু’গ্রুপে সংঘর্ষ : আহত ২৫

মুকসুদপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু’গ্রুপে সংঘর্ষ : আহত ২৫

ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক সহযোগী মনে করে তালেবান

ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক সহযোগী মনে করে তালেবান

মাইনাস টু ফর্মুলার আশা কখনো পূরণ হবে না : আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী

মাইনাস টু ফর্মুলার আশা কখনো পূরণ হবে না : আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী

গাজীপুর কারাগারে শ্রমিক লীগ নেতার মৃত্যু

গাজীপুর কারাগারে শ্রমিক লীগ নেতার মৃত্যু

ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে শীর্ষ পর্যায়ের দূত পাঠাবে চীন

ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে শীর্ষ পর্যায়ের দূত পাঠাবে চীন