পরিণতির দিকে আন্দোলন
৩১ জুলাই ২০২৩, ১২:২১ এএম | আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২৩, ১২:২২ এএম
‘বিএনপি মরা লাশ’ মাজাভাঙা বিএনপি আন্দোলনে ভয় পায়, ‘খাদের কিনারে বিএনপি’ ‘বছর ঘুরে ঈদ আসে বিএনপি আন্দোলন কোন মাসে!’ ‘বিএনপির মিথ্যাচারের ফাঁপা বেলুন’ ‘বিএনপি গণবিচ্ছিন্ন গণধিকৃত দল’ ‘দেখতে দেখতে ১৪ বছর বিএনপির আন্দোলন কোন বছরসহ নানা বক্তব্যের মাধ্যমে বিএনপিকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কিছু নেতা ও কয়েকজন মন্ত্রীর রুটিন কাজ হয়ে গেছে। সভায় ওইসব নেতা বিএনপিকে নিয়ে কি বক্তব্য দেবেন উপস্থিত দর্শক আগেই বুঝতে পারতেন। রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপিকে তুচ্ছজ্ঞান করা ওই মন্ত্রী-নেতাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলতো। কে কত জঘন্যভাবে বিএনপিকে অপদস্ত করবে সেটা নিয়ে তারা সভাসমাবেশ, সেমিনারে প্রতিযোগিতা করতেন। সেই মাজাভাঙা বিএনপি গত এক বছরে রাজপথে উত্তাপ ছড়িয়েছে। সুপরিকল্পিতভাবে ধাপে ধাপে জনগণের ভোটের অধিকার পুনপ্রতিষ্ঠার এক দফার আন্দোলন যৌক্তিক পরিণতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে তাতে ওইসব মন্ত্রী-অহংকারী নেতার ভেসে যাওয়ার জোগার হয়েছে। অপ্রিয় হলেও সত্য মাঠের রাজনীতিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে রীতিমতো নাচাচ্ছে বিএনপি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অবস্থা যেন গনি মিয়ার মতোই। স্কুলের বইয়ের গল্প ‘গনি মিয়া একজন কৃষক, নিজের জমি নাই পরের জমিতে চাষ করেন’। তেমনি ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের যেন নিজের কোনো কর্মসূচি নেই; বিএনপির কর্মসূচি দেয়, সেই অনুযায়ী তারাও কর্মসূচি দেন।
গত কয়েক মাসে উপজেলা-জেলা-বিভাগীয় সমাবেশ, পথযাত্রা, তারুণ্য সমাবেশ, ২৮ জুলাই মহাসমাবেশ ও ২৯ জুলাই ঢাকার প্রবেশ মুখে অবস্থান কর্মসূচিতে পালনের জানান দিচ্ছে রাজপথ কার্যত বিএনপির নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে। ২৯ জুলাই আইনশঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে সংঘাত-সংঘর্ষ ও রাজপথে রক্তপাতের ঘটনা ঘটলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতাদের হাকডাক কার্যত ফাপা বেলুনের মতো ক্রামান্বয়ে চুপসে যাচ্ছে।
২০১৪ সালের পাতানো নির্বাচনে বর্জন এবং ২০১৮ সালের রাতের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ফাঁদে পা দেয়ার পর বিএনপি কার্যত রাজপথ থেকে হারিয়ে গিয়েছিল। দীর্ঘ কয়েক বছর বিএনপিকে রাজপথে আন্দোলন দূরের কথা মিটিং-মিছিল পর্যন্ত করতে দেয়া হয়নি। বরং হামলা-মামলায় জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী দলটিকে নিশ্চিত করে দেয়ার চেষ্টা হয়। দলটির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ১৪ বছরে প্রায় দেড় লাখ মামলা দায়ের করা হয়েছে, এসব মামলায় আসামির সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ।
২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র র্যাবের ৭ জনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর জুলুম-নির্যাতন কিছুটা নিম্নমুখি হয়; পাল্টে যায় রাজনীতির চিত্র। তবে এখনো হামলা-মামলা অব্যাহত রয়েছে দলটির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। এখন পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে যে বিএনপি কি কর্মসূচি দেয় সেদিকে তীর্থের কাকের মতো বসে থাকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিএনপি যেদিনই ‘পদযাত্রা’ কর্মসূচি দেয় সেদিনই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ‘শান্তি সমাবেশ’ করে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনী যেমন ‘শান্তি কমিটি’ গঠন করে বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষকে ঠেকিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছিল; পার্বত্য শান্তি চুক্তির আগে সন্তু লারমা পাহাড়ে ‘শান্তি বাহিনী’ গঠন করে যেমন জুলুম নির্যাতন করত; অনেকটা সে আদলে শান্তি সমাবেশ করছে ক্ষমতাসীন দলটি। এখন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নিজস্ব চিন্তা যেন নেই; বিএনপি যা করবে সেটাই তারা অনুসরণ করছে মাত্র। আর এটা করতে গিয়ে ক্ষমতাসীন দলটি মি¤্রায়মান সাংগঠনিক অবস্থার মুখোশ খুলে যাচ্ছে। ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দলটি যেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। বিএনপির এক দফার দাবিতে ২৭ জুলাই রাজধানীতে মহাসমাবেশের ডাক দেয়। পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের তিনটি সহযোগী সংগঠনের ব্যানারে একই দিন সমাবেশের ডাক দেয়া হয়। সংঘাত-সংঘর্ষ এড়াতে বিএনপি সমাবেশের তারিখ পরিবর্তন করে একদিন পিছিয়ে নেয়ার ১০ মিনিটের মাথায় আওয়ামী লীগের ওই সংগঠনগুলোও সমাবেশের তারিখ পিছিয়ে দেয়। আবার বিএনপি ২৯ জুলাই ঢাকার প্রবেশ মুখে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণার ২০ মিনিটের মাথায় আওয়ামী লীগও ঢাকার প্রবেশ মুখে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। দীর্ঘ সাড়ে ১৪ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা দলটি যেন বিএনপির নাচের পুতুলে পরিণত হয়ে গেছে। দাতা দেশ-সংস্থা, দেশের বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা পরামর্শ দিচ্ছেন সংঘাত-সংঘর্ষ এড়াতে একই দিনে দুই বড় দলের সমাবেশ না করতে। বিএনপি থেকেও বলা হয়েছে আওয়ামী লীগ যেদিন কর্মসূচি দেবে সেদিন আমরা (বিএনপি) কর্মসূচি দেব না। অথচ আওয়ামী লীগ যেন নিজেদের চিন্তা-চেতনা থেকে কর্মসূচি দেয়ার রাজনৈতিক অবস্থান হারিয়ে ফেলেছে। বিএনপি যেদিন কর্মসূচি দেয় তারাও সেদিই দিচ্ছে।
রাজনৈতিক অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে জুলুম-নির্যাতন হামলা মামলায় বিধ্বস্ত দলটি ফিনিক্স পাখির মতো ঘুড়ে দাঁড়িয়েছে। বিএনপি রাজপথের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার দিকেই এগুচ্ছে। এখন দলটি সরকারের পদত্যাগ করে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে শক্ত অবস্থান করে ফেলেছে। এ অবস্থা একদিনে হয়নি। গত বছরের আগস্ট মাসে বিএনপি উপজেলা এবং সেপ্টেম্বর মাসে জেলা পর্যয়ে পর্যায়ে সমাবেশ করে। অক্টোবরে বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশ করে। এই ধারাবাহিক সমাবেশের শেষ কর্মসূচি ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। এ সমাবেশকে নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ চরম নিষ্ঠুরতা চালায় বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর। অবশেষে রাজধানী ঢাকাকে জনারণ্যে পরিণত করে সমাবেশে করে বিএনপি। এরই মধ্যে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে তারুণ্যের সমাবেশ করেছে দলটি। গত ১২ জুলাই একদফা আন্দোলনের ঘোষণা দেয়ার পর জোরেশোরে মাঠে নেমেছে বিএনপি। সমমনা দলগুলো যুগপৎ কর্মসূচি পালনে ঐক্যমত্যে পৌঁছে। বিএনপির বাইরে আরো ৩৫টি দল এক দফার আন্দোলনে মাঠে কর্মসূচি পালন করছে। এই একদফা আন্দোলনের অংশ হিসেবে ঢাকাসহ সারাদেশে পদযাত্রা করেছে দলটি। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ঢাকামুখী করতে তৃণমূল থেকে ঢাকা অভিমুখী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২৭ জুলাই বৃহস্পতিবার ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ ওইদিন কর্মসূচি দেয়ার কারণে সংঘাত এড়াতে তারিখ পরিবর্তন করে ২৮ তারিখে নিয়ে যায়। আওয়ামী লীগও বিএনপির দেখাদেখি সমাবেশের তারিখ পরিবর্তন করে। বাম দলগুলো, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, এবি পার্টি নিজেদের মতো করে আন্দোলন করছে।
বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা মনে করছেন বিগত আন্দোলনে প্রতিপক্ষের ফাঁদে পা দেয়ায় রাজধানী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দখলে ছিল। পাশাপাশি আইনশঙ্খলা বাহিনীকে তারা দলীয়ভাবে ব্যবহার করেছে। তাই চূড়ান্ত সফলতা পাওয়া যায়নি। এবার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের মতোই ঢাকাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার পরিকল্পনা নিয়ে কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হচ্ছে। কারণ আইনশঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার ভীতি রয়েছে। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে। অবাধ, সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ ও সব দলের অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে যারাই বাধার সৃষ্টি করবে তাদের ওপর ভিসা নীতি প্রয়োগ করা হবে। হ-ুরাস ও নাইজেরিয়ায় পাতানো নির্বাচন করায় ওইসব দেশের কয়েকজনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। চলতি জুলাই মাসেও কম্বোডিয়ায় পাতানো নির্বাচন করায় সে দেশে শীর্ষ নেতা ও আমলা-কর্মর্কতার ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা দু’দিনের মাথায় দেশটির ৩৮ বছরের স্বৈরশাসক হুন সেন প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেয়ার ঘোষণা দিতে বাধ্য হয়েছেন। এসব কারণে বিএনপির নেতারা মনে করছেন সাড়ে ১৪ বছর আইনশঙ্খলা বাহিনীর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ইচ্ছাপুরণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হলেও এখন অতোটা করবেন না। আর ২৯ জুলাই তার প্রমাণও পাওয়া গেছে। ধোলাইখালে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক পেটানোর পর তাকে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। কয়েক ঘণ্টা পর পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সোনারগাঁও হোটেল থেকে খাবার এনে তাকে খাইয়েছেন। ওই পুলিশ কর্মকর্তা গয়েশ্বর রায়ের প্লেটে ভাত তুলে দিচ্ছেন সে চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। একইদিন গাবতলী থেকে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমানকে পেটানোর পর তাকে ধরে নিয়ে গিয়ে পরে হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তাকে ফুল, ফল ও ফলের জুস পাঠানো হয়। সেটাও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল। ২৯ তারিখের ঘটনায় আইনশঙ্খলা বাহিনী ১১টি মামলা করলেও সামনে হয়তো এতো মারমুখি হবে না। তাছাড়া দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে ঢাকার আন্দোলন সফল করার আহ্বান জানিয়েছেন। সারাদেশে কর্মসূচি না দিয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের রাজধানীমুখী করার নির্দেশনা দিয়েছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া, দেশটির দক্ষিন এশিয়া বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু যেদিন ঢাকায় সেদিন নয়াপল্টনে বিএনপি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করেছে। ওই দিন আওয়ামী লীগ সমাবেশ করেছে বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেইটে। সমাবেশ দুটি শান্তিপূর্ণভাবে হলেও লোকসমাগমে ছিল বিস্তর ফরাক। আওয়ামী লীগের সমাবেশে যে পরিমাণ মানুষ হাজির হয়েছে বিএনপির সমাবেশে ছিল তার ১০ গুন বেশি উপস্থিতি। উজরা জেয়া বড় দুই দলের শান্তিপূর্ণ সমাবেশের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তিনি আগামীতে নির্বাচন ইসুতে এমন শান্তিপূর্ণ সমাবেশ দেখতে চেয়েছেন। পরবর্তীতে বিএনপির ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ কয়েকটি তারণ্য সমাবেশ করেছে; তার দেখাদেখি আওয়ামী লীগও সমাবেশ করেছে। কিন্তু ২৯ জুলাই বিএনপির দেখাদেখি ঢাকা প্রবেশ পথে অবস্থানের কর্মসূচি দিলেও পরে আওয়ামী লীগ কর্মসূচি প্রত্যাহার করলেও কয়েকটি এলাকায় বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। আগ্নি সংযোগ নিয়ে কয়েকটি গণমাধ্যমে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ফেসবুক, ইউটিউবে সচিত্র প্রতিবেদন রয়েছে। সচিত্র প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে, বাস ড্রাইভার বক্তব্য দিচ্ছেন এমন ‘আইনশঙ্খলা বাহিনীর থাকার পরও তিন যুবক মোটর সাইকেলে এসে বাসে অগ্নি সংযোগ করে চলে যায়’। এ ঘটনার পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে দ্বিতীয় সারির নেতারা বিএনপির বিরুদ্ধে অগ্নি সন্ত্রাসের অভিযোগ তোলেন। বিএনপি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয় তারা কখনোই অগ্নি সন্ত্রাসের বিশ্বাসী নন। আন্দোলনরত বিএনপির বিরুদ্ধে অগ্নি সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে সরকারের তল্পিবাহক গণমাধ্যম প্রচারণা শুরু করে। এর মধ্যে গত রোববার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চে অন্য এক মামলার শুনানিতে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর বলেন, ‘মাই লর্ড, কাল থেকে আগুন সন্ত্রাস শুরু হয়েছে ফের।’ এসময় হাইকোর্ট বলেন, ‘মিস্টার ডিএজি আগুন সন্ত্রাস প্রসঙ্গ হাইকোর্টে আনবেন না, এটা ১৮ কোটি মানুষের কোর্ট, কোর্টের পরিবেশ নষ্ট করছেন কেন?’
বিএনপির ৮২টি সাংগঠনিক জেলার নেতাকর্মীরা ‘চলো চলো, ঢাকা চলো’ সেøাগান তুলে ঢাকার মহাসমাবেশে যোগদেন। কখনো প্রখর রোদ কখনো মুশলধারে বৃষ্টির মধ্যেই লাখ লাখ নেতাকর্মী সমাবেশে ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে নেতাদের দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য শোনেন। বিএনপি নেতারা মনে করছেন, সমাবেশ ও মহাসমাবেশে নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি ক্ষমতাসীন দল ও প্রশাসনে আন্দোলন নিয়ে ভীতি শুরু হয়ে গেছে। কারণ ক্ষমতাসীন দলের নেতারা মুখে যাই বলুক মাঠের চিত্র তাদের নখদর্পণে। শান্তিপূর্ণ সমাবেশের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিএনপির এক দফার আন্দোলন নিয়ে আস্থা ও জনপ্রিয়তা বাড়ছে, স্বর্তঃস্ফূর্তভাবে মানুষ সমাবেশে অংশ গ্রহণ করছে। এরপর কর্মসূচি দিলে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাস্তায় নেমে আসবে। এমন পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে সামনে সরকারের সামাল দেওয়া কঠিন হবে এবং চাপে পড়বে। কারণ এদেশের মানুষ ভোটের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে কোনো দিন পরাজিত হয়নি। তাছাড়া গণতন্ত্র এবং জনগণের ভোটের অধিকার পুনোরুদ্ধার ইস্যুতে বিএনপির আন্দোলন নিয়ে উন্নয়ন সহযোগী দেশ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ প্রভাবশালী কিছু রাষ্ট্রেরও আগ্রহ আছে। আবার অতীতে ভারত সব সময় আওয়ামী লীগকে সমর্থন করলেও এবার তা করছে না নৈতিক কারণে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে চীন, রাশিয়া, ইরানের বলয়ের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। এর বাইরে মার্কিন ভিসা নীতি ঘোষণার পর আন্দোলন দমনে কঠোর পদক্ষেপ নিলে আন্তর্জাতিকভাবে সরকার আরো কঠিন চাপে পড়বে। আর বাধা না দিলে আন্দোলন গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেবে। বিএনপিসহ সমমনা আন্দোলনরত দলগুলোর ১০ থেকে ১২ জন নেতার সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, অল্পদিনের মধ্যেই তারা আন্দোলন যৌক্তিক পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে সক্ষম হবেন।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
সচিবালয়ের গেটে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া-পুলিশের ফাঁকা গুলি
ফ্রান্সের উগ্র ডানপন্থী রাজনীতিবিদ মারি লা পেনের মৃত্যু
দুদক কার্যালয় থেকে গ্রেপ্তার তিন ভুয়া কর্মকর্তা রিমান্ডে, হত্যা মামলায় যুবলীগ নেতা সোহাগ রিমান্ডে,
শিগগিরই চালের দাম কমে আসবে : বাণিজ্য উপদেষ্টা
কুরস্কে ২৪ ঘন্টায় ইউক্রেনের ৪৮৫ সেনা নিহত
পশ্চিম তীরে বন্দুক হামলায় ৩ ইসরাইলি নিহত
ঢাবিতে হাসিনার ‘ডামি নির্বাচন’ প্রদর্শনী
জুলাই গণহত্যা: হাসিনাসহ ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল
শিগগিরই চালের দাম কমে আসবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
গাজায় ফিলিস্তিনিদের ত্রাণ সহযোগিতা দিচ্ছে হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি
ট্রাম্প প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতি যুদ্ধ নাকি বন্ধুত্বের পক্ষে
মিথ্যা ন্যারেটিভ ভেঙ্গে দেয়া আমাদের ইতিহাসের দায়বদ্ধতার অংশ
বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে
এক-পঞ্চমাংশ এইচ-১বি ভিসাই ভারতীয় সংস্থাগুলোর কাছে
গ্রীনল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন ট্রাম্প জুনিয়র
মক্কা-মদিনায় ভারী বৃষ্টিতে বন্যা
ভারতে চীনের পরিবর্তে বাড়ছে জাপানি বিনিয়োগ
পশ্চিম তীরে ৩ ইসরাইলি নিহত
যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা একীভূত করার প্রস্তাব ট্রাম্পের
অস্ট্রিয়ায় সরকার গঠন করছেন অতি ডানপন্থি নেতা কিকল