দাওয়াতে তাবলিগকে বিভক্ত করেছে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার। দাওয়াতে তাবলিগকে ধ্বংস করার লক্ষ্যেই এই বিভক্ত সৃষ্টি করা হয়েছে। দেশ বরেণ্য আলেম ওলামাদের নেতৃত্বে চলবে দাওয়াতে তাবলিগ; খুনীদের নেতৃত্বে নয়। ফ্যাসিস্ট হাসিনা ভারতে পালিয়েছে।
দাওয়াতে তাবলিগে কোনো বিভক্তি থাকতে পারবে না। অবিলম্বে টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে চার জন নিরপরাধ সাথীদের খুনের আসামী আসিফসহ জামিন প্রাপ্তদের জামিন বাতিল করে বিচার করতে হবে। খুনী সা’দপন্থিদের দেশবাসী ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। সা’দপন্থি খুনীদের দ্রæত বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।
ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসররা প্রশাসনে থেকে খুনী সা’দপন্থি প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে। আজ বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইটে ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশ ও তৌহিদী জনতার ব্যানারে টঙ্গী ইজতেমার মাঠে হামলাকারী পথভ্রষ্ট সাদপন্থীদের বিচারের দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। মুফতি জোবায়ের রশিনের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, আল্লামা মহিউদ্দিন রব্বানী। মাওলানা এনামুল হক মুসার সঞ্চালনায় এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মুফতি সাখাওয়াত হোসেন রাজী, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মাওলানা ফয়সাল আহমাদ, মাওলানা মুসলেহ উদ্দিন লালবাগ, মাওলানা আফসার মাহমুদ, মাওলানা দেলোয়ার হোসেন, মাওলানা আব্দুর রহমান, মুফতি জাকির হোসেন, মুফতি আবুল হাসান, মাওলানা জোবায়ের আহমেদ, মাওলানা জিয়াউল হক ও মাওলানা কামরুল ইসলাম।
বিক্ষোভ মিছিলের আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ইং দিবাগত রাতে টঙ্গী ইজতেমার মাঠে সাদপন্থী কর্তৃক হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িতদের অভিযুক্ত আসামিরা হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নিচ্ছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি একইসাথে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক বিভিন্ন প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ভ্রান্ত সাদপন্থীদেরকে দেশের বিভিন্ন মসজিদে কাজ করার সুযোগ দেওয়ার প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তারা আরো বলেন, দেশের শীর্ষ আলেমদের নাম অন্তর্ভুক্ত করে টঙ্গী হামলা কেন্দ্রিক সাদপন্থীদের পক্ষ থেকে উদ্দেশ্য প্রণোদিত মিথ্যা মামলা করার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সর্বপরি আমরা সরকারের নিকট টঙ্গী ইজতেমার মাঠে বারবার হামলাকারী ভ্রান্ত সাদপন্থীদের সকল ধরনের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করতে এবং টঙ্গী মাঠে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ মামলার আসামিদের জামিন বাতিল করে দ্রæত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী বলেন, আগামী ৩১ জানুয়ারি ও ১-২ ফেব্রুয়ারি আলেম উলামাদের তত্ত¡াবধানে বিশ্ব এজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। আসন্ন সেই ইজতেমা সফল করার জন্য আমরা দেশের আপামর তৌহিদী জনতার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। কাকরাইল মসজিদে তাবলীগের কাজ শুধুমাত্র শুরাই নেজামের আলেমদের তত্ত¡াবধানে পরিচালনার দাবি জানান তিনি।
তিনি কঠিন হুঁশিয়ারী দিয়ে আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে তাবলিগ জামাত থাকবে একটি। বিশ্ব ইজতেমাও হবে একটি। কেউ যদি দুটি করার পাঁয়তারা করে তাহলে কঠোর হাতে দমন করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘সাদপন্থিরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়েছে। তারা রাতের আধারে তৌহিদি জনতার উপর বারবার হামলা করেছে। মানুষ হত্যা করেছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় তারা মানুষ হত্যা করেও জামিন পেয়ে যাচ্ছে।’ সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি বায়তুল মোকাররম থেকে শুরু হয়ে নাঈটাঙ্গেল মোড় ঘুরে, কাকরাইল মোড় হয়ে মালিবাগে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় প্রধান অতিথি মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানীর দোয়ার মাধ্যমে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।