দাওয়াত হোক আল্লাহর দিকে
০৪ এপ্রিল ২০২৪, ১২:১০ এএম | আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ১২:১০ এএম
শান্তির গ্যারান্টি একমাত্র ইসলামেই দিতে পারে। বিশ^স্রষ্টা আল্লাহতায়ালা সৃষ্টির সেরা জীব মানুষকে চিন্তা ও কর্মের স্বাধীনতা দিয়েছেন। ‘সেই ব্যক্তির কথার চেয়ে আর কার কথা উত্তম হবে যে মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান করে, নিজে সৎ কাজ করে এবং বলে আমি একজন মুসলিম।’ আল-কুরআন। আল্লাহর দিকে যিনি মানুষকে আহ্বান করেন, তাকেই বলা হয় দায়ী ইলাল্লাহ। দায়ী আরবি ভাষার শব্দ। দাওয়াত প্রদান যিনি করেন তাকেই দায়ী বলে। ইলাল্লাহও আরবি ভাষার আল্লাহর প্রতিশব্দ। শব্দ দু’টি যখন একীভূত হয় তখন এ রূপ দাঁড়ায় দায়ী ইলাল্লাহ। আল্লাহর প্রতি আন্তরিক বিশ্বাস স্থাপন করে অন্যদের এ পথে যে আহ্বান করা হয়, সেই আহ্বানকারীকে দায়ী ইলাল্লাহ বলা হয়। আরব জাহিলিয়াতের যুগে মানুষ স্বার্থপরতায় বিভোর ছিল, বিশেষ করে কায়েমি স্বার্থবাদী মহল যখন ক্ষমতা ও বৈষয়িক স্বার্থে বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল, একে অপরের সম্পদ লুণ্ঠন, ক্ষমতা চূর্ণবিচূর্ণ করণে প্রতিযোগিতায় পাল্লা দিয়ে ছুটছিল, তখন সমাজে অশান্তি, হানাহানি, সামাজিক বিপর্যয় চরম আকার ধারণ করেছিল। তখন সমাজের প্রতিটি মানুষ অশান্তির অগ্নিগহ্বরে নিমজ্জিত হয়ে পড়ছিল। ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে থেকে আরব জাহিলিয়াতকে সুপথে আনতে ও স্বর্ণযুগে রূপান্তরিত করেছিল ওই দায়ী ইলাল্লাহর সুমহান ডাক। যে অমর বাণী পেশ করে আখেরি জামানার পয়গম্বর মানবসমাজকে বিপর্যয় থেকে উদ্ধার করেছিলেন, তা আজো ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে।
বিপন্ন মানবতার আহাজারি যুগে যুগে মানবসমাজের অন্তর পুড়ে ছাই করেছে। কায়েমি স্বার্থবাদীদের ভোগলিপ্সা মানবসমাজকে যুগে যুগে ক্ষতবিক্ষত করেছে। তাদের স্বার্থ মানবতাকে পদদলিত করছে বারবার। মানবসমাজের ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যায়, জাতির পিতা হজরত ইব্রাহিম আ:-এর যুগ থেকে আজ অবধি ওই ঘৃণ্য অবতারণা বয়েই চলেছে। ইব্রাহিম আ:-কে নমরুদ আগুনে নিক্ষেপ করেছিল তার স্বার্থ আজীবন কায়েম রাখার স্বার্থেই। মুসা আ:-কে নীল নদে ডুবাতে চেয়েছিল ফেরাউনের স্বার্থ কায়েম রাখার জন্য। আখেরি জামানার পয়গম্বর বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ সা:-কে জন্মভূমি মক্কা ছেড়ে মদিনায় হিজরত করতে হয়েছিল ওই কায়েমি স্বার্থের রোষানলে পড়েই। বর্তমান বিশ্বেও প্রায় সর্বত্রই চলছে কায়েমি স্বার্থের মহড়া। যেখানেই কায়েমি স্বার্থ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে, সেখানেই মানবতা বিপন্ন হয়। অশান্তির কশাঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়। বর্তমানে আমাদের জন্মভূমি বাংলাদেশেও অশান্তির আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে, একে অপরের প্রাণ কেড়ে নিয়ে উল্লাস করছে। প্রতিপক্ষ দমনে নৃশংসতার পথ বেছে নিচ্ছে, বিপন্ন মানবতার কান্নার রোল আকাশ-বাতাস ভারী করে তুলছে। কত দিনে এর পরিসমাপ্তি ঘটবে কে জানে। অগণিত প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত বাংলার স্বাধীনতা আজ বিপন্ন হতে চলেছে, কিসের জন্য এ দুরবস্থা? এর পেছনে কি কোনো মহৎ উদ্দেশ্য আছে? একবাক্যে সবাই বলবেন না, এর কোনো মহৎ উদ্দেশ্য নেই। তবে কী? তবে এর একমাত্র কারণ হচ্ছে স্বার্থের টানাটানি। কায়েমি স্বার্থ বিপন্ন মানবতাকে পদদলিত করে আজীবন নিজেদের স্বার্থ কায়েম রাখার জন্যই এ ঘৃণ্য অভিলাষ। যুগে যুগে কায়েমি স্বার্থ যেমন মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে তেমনি তারা ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্তও হয়েছে। সেখানেই মানবতা বিজয় লাভ করেছে। তবে এর জন্য প্রয়োজন একদল নিঃস্বার্থ জনতা আর নিরপেক্ষ ও সুবিচারপূর্ণ বিধিবিধানের। আজো যদি সমাজের নিঃস্বার্থবান মানুষগুলো ঐক্যবদ্ধ হয় তবে এ পাগলা ঘোড়ার লাগাম টেনে ধরা সম্ভব। তবে ত্যাগের মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে দৃঢ়পদে। প্রায় ১৫ শ’ বছর আগে আরব জাহিলিয়াতের যুগে বিপন্ন মানবতাকে মুক্তি দিতে যে মুক্তি সনদ প্রয়োগ করা হয়েছিল, সেই মুক্তি সনদ এখনো তো অধিকৃত অবস্থায় আমাদের হাতে রয়েছে। যে পরশপাথরের সংস্পর্শে ইতর অসভ্যতা সুসভ্য সোনার মানুষে পরিণত হয়েছিল, সেই মহান নেতা মুহাম্মদ সা:-এর অমূল্যবাণী ও তাঁর প্রদর্শিত পথ কোনোটাই আমাদের স্মরণ থেকে মুছে যায়নি। তাঁর প্রতিষ্ঠিত বাণী আমাদের কাছে অক্ষরে অক্ষরে সংরক্ষিত রয়েছে। ওই অমর বাণী সমাজে যোগ্যতার সাথে তুলে ধরতে হবে। এ জন্য দায়ী ইলাল্লাহকে দৃঢ়পদে এগিয়ে আসতে হবে। মানুষের কলুষিত অন্তরকে পবিত্র করার জন্য আল্লাহর দাসত্বের প্রতি টানতে হবে। কায়েমি স্বার্থের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ত্যাগের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। বিশ্বমানবতাকে বুঝাতে হবে তুমি লাগামহীন স্বাধীনতার অধিকারী নও। যে সৃষ্টিকর্তা তোমাকে, আমাকে ও সব কিছু সৃষ্টি করেছেন, এসব পরিচালনার জন্য বিধানও তিনি রচনা করে দিয়েছেন। তোমার রচিত বিধান নিরপেক্ষ নয়। এ দ্বারা দুনিয়াতে কোনো দিন শান্তি আসেনি, আর আসবেও না। তাই সবাই মিলে আল্লাহর রজু ধারণ করো আর পরস্পরে বিচ্ছিন্ন হয়ো না। দায়ীদের আশ্বস্ত করতে চাই, আপনারাও বলিষ্ঠভাবে আল্লাহর বিধান কায়েমের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ুন। আল্লাহ বলেছেন, ‘মনভাঙা হয়ো না, চিন্তা করিও না, তোমরাই বিজয়ী হবে, যদি তোমরা মোমেন হও।’ (আল কুরআন) তাই সৎকাজে তোমরা একে অন্যের সাথে প্রতিযোগিতা কর, কাল্যাণসমূহকে যথাযথভাবে প্রাপ্ত হওয়ার জন্য। আল-কুরআন।
লেখক: চিকিৎসক-কলামিস্ট।
বিভাগ : ধর্ম দর্শন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ঘণকুয়াশায় আরিচা-কাজিরহাট, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ
আওয়ামী লীগ যা করেছে, বিএনপি তার বিপরীত কাজ করে সুন্দর সমাজ গড়বে- কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের নেতা ইয়াকুব চৌধুরী
রোমাঞ্চকর ম্যাচে বার্সাকে হারিয়ে শীর্ষে আতলেটিকো
জেসুসের জোড়া গোলের রাতে আর্সেনালের বড় জয়
বিলুপ্তির পথে মাটির ঘর
চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
প্রতিবন্ধী স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ
কেরু চিনিকলে আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন
বিহারিরা কেমন আছে
লক্ষ্মীপুরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি
আসাদ সরকারের পতন : নতুন সিরিয়ায় ইসরাইলি আগ্রাসন
মেটলাইফ বাংলাদেশের গ্রাহকরা ডিসকাউন্ট পাবেন ওশান প্যারাডাইস হোটেলস ও রিসোর্টে
১৫ নারী ও শিশুকে হস্তান্তর
আবাসন ও গার্মেন্ট খাতের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে
মেহেরপুরে বেড়েছে গরম কাপড় বিক্রি
কাশিয়ানীর হাট-বাজার নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব
অ্যানুয়াল বিজনেস কন্টিনিউয়িটি প্ল্যান ড্রিল ২০২৪ আয়োজন করলো ব্র্যাক ব্যাংক
সমস্যায় জর্জরিত আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
সবুজ গালিচায় হলুদের সমারোহ
আখাউড়ায় ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মেধা বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত