জুমার নামাজ আদায়ে আদবরক্ষা
২২ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ২২ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৫ এএম
আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেছেন- (১) ‘আমি জ্বীন এবং মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছি শুধুমাত্র আমার ইবাদত করার জন্য’- সূরাঃ আয-যারিয়াত, (২) ‘তাদের কেবল একনিষ্ঠ হয়ে আল্লাহর ইবাদতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে’- সূরাঃ বাইয়্যিনাহ। নবী করিম (দ.) নূরানী জবান মুবারকে ইরশাদ করেছেন, (১) ‘প্রত্যেক আমল বা কর্ম নিয়্যতের উপর নির্ভরশীল’, (২) ‘প্রত্যেকটি বিদ’আত গোমরাহী’। ইসলাম কোন ব্যক্তিসত্তার মনগড়া মানবধর্ম নয়। ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক স্বয়ং আল্লাহ তা’আলা। ইসলাম আল্লাহ তা’আলার সর্বাধিক পছন্দনীয় একটি ধর্ম (আল-কুরান)। ইবাদত সমূহের মধ্যে জুমার নামাজ অন্যতম একটি ইবাদত। পবিত্র কুরআনে জুমা নামে একটি সূরা-ও অবতীর্ণ করা হয়েছে। নামাজ রবের নিকট একনিষ্ঠ আত্মসমর্পণের একটি অন্যতম মাধ্যম। হাদীসে বলা হয়েছে- ‘নামাজ মুমিনের জন্য মেরাজ স্বরূপ’। সুতরাং নামাজের মধ্যে দুনিয়াবী খেয়াল চলে আসলে বুঝতে হবে আমরা শয়তানের ফাঁদে পা বাড়িয়ে পথভ্রষ্টতার দিকে অগ্রসর হচ্ছি। পথভ্রষ্টতা মানুষকে বিপদগামী করে। ধর্মের নতুন সংযোগ-ও মানুষকে পথভ্রষ্টতার দিকে নিয়ে যায়। ধর্মের নতুন সংযোগকে আরবিতে বিদ’আত বলা হয়। হাদীসে প্রত্যেক বিদ’আতকে গোমরাহীর সাথে তুলনা করা হয়েছে। বাংলাদেশের কয়েকটি রাজনৈতিক দল ইসলামী বিধি-বিধান কে পরোয়া না করে রাজনৈতিক সুযোগ-সুবিধা নেওয়ার জন্য ইসলাম ধর্মকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। তন্মধ্যে- জুমার নামাজের পরপর সাধারণ মুসল্লিদের মাঝে মিছিলের ডাক। তারা এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করে যে, বাংলাদেশ একটি মুসলিম বিদ্বেষী রাষ্ট্র, এক কথায় দারুল হারব। এ মিছিলে বা প্রতিবাদ সভায় যোগদান না করলে ঈমান প্রশ্নবিদ্ধ! এ ধরণের রাজনৈতিক কর্মসূচি ধর্মের জন্য হুমকি স্বরূপ। যদি-ও ইসলামের জন্য নিবেদিত এই বাংলাদেশ। এ নব আবিষ্কার ইসলামের দৃষ্টিতে নিতান্ত ঘৃণিত ও জঘন্য। প্রতিটি দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দলের সু-নিদিষ্ট সাংগঠনিক কর্মসূচি, আন্দোলন, সংগ্রাম, জনসভা, সভা, সেমিনার, মিছিলের কর্মপরিকল্পনা থাকে। গুটিকয়েক রাজনৈতিক দল এমনভাবে কর্মসূচি পালন করে থাকে যে, কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষের অনিচ্ছা (রাজনৈতিক ও ধর্মীয় ভিন্নতা থাকা) থাকা সত্ত্বে-ও প্রোগ্রামে যোগ দিতে বাধ্য হয়। এক কথায় মুহূর্তের মধ্যে মানুষকে ঘায়েল করা। ইদানিং কালে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, বাংলাদেশের বিভিন্ন জুমা মসজিদে নামাজ শেষ হওয়ার সাথে সাথে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত মসজিদ প্রাঙ্গণ! মুহূর্তের মধ্যে গণজামায়েত করে সারিবদ্ধ মিছিল। ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে সাধারণ মুসল্লি। মিছিলের মাঝে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা আর প্রতিপক্ষের আক্রমন, গুলির শব্দ, আর্তনাতের আওয়াজে ভারি হয়ে উঠে আকাশ-বাতাস! যে মানুষ গুলো সুন্দর জামা পরিধান করে আতর লাগিয়ে সন্তানদের নিয়ে পরিবারের আদর মাখা হাত থেকে মিষ্টি মুখ করে হাসিমুখে ঘর থেকে বেরিয়েছিলো মসজিদ পানে, মিছিলের মধ্যে এ মানুষ গুলোর রক্তাক্ত জামা আর নিতর দেহ ফিরে যায় জানাজার মাঠে কিংবা পুলিশের কাস্টরিতে আহত অবস্থায়। এ দৃশ্য দেখে নির্বাক চিত্তে থাকিয়ে থাকে মুসলিম জনতা। নবীয়ে পাক (দ.) কোন সময় সাহাবীদের অপ্রস্তুত অবস্থায় জিহাদে অংশগ্রহণ করতে বলেননি। প্রিয় নবীজি (দ.) সাহাবায়ে কেরামদের আগ থেকে না জানিয়ে কোন যুদ্ধতে পাঠাননি। তিনি একটি জিহাদের জন্য বহুবার মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যারা এ ধরণের রাজনীতি চর্চা করে তারা ধর্মের বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে, তাদের বুঝা উচিত আমরা ধর্মকে গদীতে বসার জন্য ব্যবহার করছি নাকি ইসলামের সার্বিক উন্নয়নের জন্য কাজ করছি। এ ধরণের মিছিল করে যারা ধর্মকে বিকৃত ও কলঙ্কিত করছে এবং বিদয়াত করছে তারা ইসলামকে সমূলে ধ্বংস করছে। বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ এবং গণতান্ত্রিক দেশ। তবে এ দেশের সংবিধান ইসলামকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করেছে। বাংলাদেশ; অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হলে-ও ইসলামের জন্য নিবেদিত। বাংলাদেশে, ইসলাম এবং মুসলমান নিরাপদ অবস্থানে আছে। একটি আন্দোলন, প্রতিবাদ সভা কিংবা মিছিল মানে প্রাণকে হাতে নিয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়া। এ আন্দোলন যেকোন সময় ভয়ঙ্কার রূপ নিতে পারে। এ ধরণের ঘটনা বিশে^র প্রতিটি দেশে অতীত থেকে বর্তমানে অহরহ ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়ে আসছে। এ ধরণের মিছিলের কারণে মানুষ যদি জুমা পড়তে ছেলে-সন্তানদের নিয়ে মসজিদে না আসে তাহলে এ দায়ভার কে নিবে? কিংবা মিছিলে একজন সাধারণ মুসল্লি আহত হলে এ দায়ভার কে নিবে? ছোট ছেলেদের জুমার নামাজে নিয়ে আসার জন্য ইসলাম- অভিভাবকদের উৎসাহিত করেছেন। কিন্তু এ ধরণের ঘটনার কারণে ছোট সোনামণিরা মসজিদে আসতে ভয় পেলে এ দায়ভার কে নিবে? অপ্রিয় হলে-ও সত্য যে, রাজনীতি যারা করে তারা নিজের স্বার্থের জন্য কিংবা দলের স্বার্থের জন্য কাজ করে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করে, সাধারণ মানুষের জন্য নয়! বাংলাদেশের মত গণতান্ত্রিক দেশে ধনীরা দিনিদিন ধনী হচ্ছে গরীবরা দিনদিন গরীব হচ্ছে। ইসলামি দর্শন বা ইসলামি শাসনব্যস্থার নামে সাধারণ মুসলমানের আবেগ ও অনুভূতি নিয়ে খেলা করা অনুচিত। এটি জঘন্য ধর্মবিরোধী ও বিদয়াতি কার্যক্রমের শামিল। এরা ধর্মের নামে অধর্ম চর্চা করে। আসুন আমরা- ধর্মকে জায়গায় ধর্মকে রাখি আর রাজনীতিকে জায়গায় রাখি। মিথ্যার বেড়াজালে ও রাজনীতির অন্তকোন্দলে ধর্মকে না জড়ায়। এ সমস্ত কারণে যদি জুমার নামাজে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ বা সরকারি নজরদারি চলে আসে কিংবা সরকারিভাবে নির্দিষ্ট মসজিদে জুমার নামাজ বন্ধ করে দেওয়া হয় এ দায়ভার কে নিবে? শতশত রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করেন পূর্ব ঘোষিতভাবে। ইসলামের দাওয়াত গোপনে কেন প্রকাশ্যে দিন। সত্যের উপর অবিচল থাকলে বিজয় সুনিশ্চিত আর সত্য সমাগত মিথ্য বিতাড়িত- আল কুরআন।
বিভাগ : ধর্ম দর্শন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ঘণকুয়াশায় আরিচা-কাজিরহাট, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ
আওয়ামী লীগ যা করেছে, বিএনপি তার বিপরীত কাজ করে সুন্দর সমাজ গড়বে- কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের নেতা ইয়াকুব চৌধুরী
রোমাঞ্চকর ম্যাচে বার্সাকে হারিয়ে শীর্ষে আতলেটিকো
জেসুসের জোড়া গোলের রাতে আর্সেনালের বড় জয়
বিলুপ্তির পথে মাটির ঘর
চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
প্রতিবন্ধী স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ
কেরু চিনিকলে আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন
বিহারিরা কেমন আছে
লক্ষ্মীপুরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি
আসাদ সরকারের পতন : নতুন সিরিয়ায় ইসরাইলি আগ্রাসন
মেটলাইফ বাংলাদেশের গ্রাহকরা ডিসকাউন্ট পাবেন ওশান প্যারাডাইস হোটেলস ও রিসোর্টে
১৫ নারী ও শিশুকে হস্তান্তর
আবাসন ও গার্মেন্ট খাতের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে
মেহেরপুরে বেড়েছে গরম কাপড় বিক্রি
কাশিয়ানীর হাট-বাজার নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব
অ্যানুয়াল বিজনেস কন্টিনিউয়িটি প্ল্যান ড্রিল ২০২৪ আয়োজন করলো ব্র্যাক ব্যাংক
সমস্যায় জর্জরিত আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
সবুজ গালিচায় হলুদের সমারোহ
আখাউড়ায় ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মেধা বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত