ফিরোজ শাহ তুঘলক : সুলতানী যুগের দ্য গ্রেট-৩
২৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৬ এএম | আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৬ এএম

সেই চেষ্টা কেমন ছিলো, এর বিবরণী পাওয়া যাবে জিয়াউদ্দিন বারানী রচিত ‘তারিখ-ই-ফিরোজশাহী’, শামস-ই-সিরাজ রচিত ‘তারিখ-ই-ফিরোজশাহী’, সুলতানের আত্মজীবনী ‘ফুতুহাৎ-ই-ফিরোজশাহী’ এবং ‘আইন-ই-মহরু’ ও ‘সিরাত-ই-ফিরোজশাহী’ ইত্যাদি গ্রন্থে। এতে ফিরোজ শাহের বিভিন্ন পদক্ষেপ ও প্রকল্পের চিত্র পাওয়া যায়। বিশাল সাম্রাজ্যের কোথাও না কোথাও খরা, অনাবৃষ্টি, বন্যায় ফসলহানি লেগেই থাকতো। এর ফলে কৃষকদের ভুগতে হতো। এই ধারা এক অলঙ্ঘনীয় বাস্তবতায় পরিণত হয় বলতে গেলে। মুহম্মদ বিন তুঘলক কৃষিঋণ দিতেন এই পরিস্থিতিতে। কৃষকদের তা পরিশোধ করতে হতো পরে। কোনো কোনো এলাকায় অধিক ফসলহানি বা দুর্ভিক্ষ ঘটলে এই ঋণ মওকুফ করা হতো। ফিরোজ শাহ এখানে সংস্কার আনেন। যেখানেই দুর্ভিক্ষ ও মহামারী ঘটবে, সেখানেই কৃষি ঋণ থেকে প্রজাদের মুক্তি দেওয়ার নিয়ম জারি হয়। এর পাশাপাশি পূর্ববর্তী সুলতানের পরিকল্পগুলির জন্য ক্ষতিগ্রস্ত প্রজাদের তিনি ক্ষতিপূরণ দান করেন। যুগ যুগ ধরে চলে আসছিলো নানা রকমের কর। অনুসন্ধান করে দেখা গেলো, অন্তত ২৪ রকমের কর প্রচলিত আছে সাম্রাজ্যে, যা বৈধ নয়। এগুলোকে আবয়াব বা অবৈধ কর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। সম্পদশালী মুসলিমদের থেকে যাকাত ছাড়া নাগরিকদের থেকে কেবল তিন ধরনের কর আদায় করতেন তিনি।
এগুলো ছিল খারাজ, জিজিয়া ও খুমস। কুরআন নির্দেশিত এই ব্যবস্থা কায়েমের ফলে সকল ধর্ম ও সংস্কৃতির প্রজারা উপকৃত হন। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ফিরোজ শাহের নীতি ছিলো প্রজাবান্ধব। আগে এক প্রদেশ থেকে অন্য প্রদেশে বাণিজ্যের জন্য শুল্ক দিতে হতো। তিনি সেই প্রথা তুলে নেন।
কৃষির উন্নতির জন্য ফিরোজ শাহের পদক্ষেপগুলো ছিলো যুগান্তকারী। আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গির পানিব্যবস্থাপনায় আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প চেনা ব্যাপার হলেও উপমহাদেশের প্রাচীন ইতিহাসে ফিরোজ শাহকে এর সফল উদগাতা হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। ‘তারিখ-ই-মুবারকশাহী’ গ্রন্থ তার কয়েকটি অন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পের বিবরণ দিয়েছে, যার মাধ্যমে সেচ ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হয় এবং বিভিন্ন অঞ্চলে পানিসঙ্কটের দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হাজির করা হয়। এসব প্রকল্প ছিলো বৃহদায়তনিক। যেমন ১. যমুনা থেকে ভিসার পর্যন্ত ৫০ মাইল দীর্ঘ আন্তঃনদী সংযোগ। ২. শতদ্রু থেকে ঘর্ঘরা পর্যন্ত ৯৬ মাইল দীর্ঘ খাল। ৩. ঘর্ঘরা থেকে ফিরোজাবাদ পর্যন্ত শতাধিক মাইল দীর্ঘ খাল। একদিকে যেমন দীর্ঘ খাল তৈরি করা হয়, তেমনি তৈরি করা হয় আন্তঃজেলা ও আন্তঃপ্রাদেশিক দুর্যোগ প্রতিকার চ্যানেল। এই প্রকল্পের অধীনে দীর্ঘ ও উঁচু যেসব বাঁধ তৈরি করা হয়, তার মধ্যে ৫০টির বিবরণ রয়েছে তারিখ ই মুবারক শাহীতে।
এগুলো ছিলো ফিরোজ শাহের সামগ্রিক প্রজাকল্যাণী ব্যবস্থাপনার অংশমাত্র।
বিভাগ : বিশেষ প্রতিবেদন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

এক অজু দিয়ে আসর মাগরিব ও এশার নামাজ পড়া প্রসঙ্গে?

আন্তঃধর্মীয় সংলাপের গুরুত্ব

ভেজালের দৌরাত্ম্য

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে দেশে স্বৈরাচারী শাসক তৈরি হতেই থাকবে ; অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ ও ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে অস্বস্তি

মেঘনা আলমের আটকাদেশ : সরকারের সঠিক সিদ্ধান্ত

সংক্ষিপ্ত বিশ্বসংবাদ

দিল্লিতে ধূলোঝড়ের তাণ্ডবে ২শ’ ফ্লাইট বিঘ্ন

আল-আকসার ইমামকে ৭ দিনের নিষেধাজ্ঞা ইসরাইলের

পর্যটকদের কাছে টিকিট বিক্রি ইসরাইলের

ইউক্রেনকে রেকর্ড ২১ বিলিয়ন ইউরো সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি মিত্রদের

মার্কিন শুল্ক বিরোধ মোকাবিলায় প্রতিবেশী দেশে নজর চীনের

জনসংখ্যা হ্রাস রোধে হাইস্পিড রেললাইন

১৭ ঘণ্টা পর আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট চালু

হাজার সেনা বরখাস্ত করেছে ইসরাইল

যুক্তরাষ্ট্রে ডিমের দামে সংকটে সাধারণ মানুষ

পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষোভ চলছেই মোদির কুশপুতুল দাহ

তহবিলের অভাবে শ’ শ’ কর্মী ছাঁটাই করছে ওচা

পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করলে চরম মূল্য দিতে হবে ইরানকে : ট্রাম্প

ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম, নতুন রেকর্ড