লোদি বংশ : বেলাশেষের আলো-১
১২ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৮ এএম | আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৮ এএম

তুঘলক বংশের শাসনের সমাপ্তি ঘটলো ১৪১৩ খ্রিস্টাব্দে। এ বংশের শেষ সুলতান মাহমুদ শাহের মৃত্যুর পরে দৌলত খান লোদি নামক এক আমীরকে দিল্লীর সিংহাসনে বসান একদল আমাত্য। কিন্তু দৌলত খান নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি। অনিশ্চয়তা বেড়েই চলছিলো। এ পরিস্থিতিতে দৃশ্যপটে এলেন খিজির খান। ১৪১৪ সালে তিনি দখল করলেন দিল্লীর সিংহাসন। ইতঃপূর্বে তিনি ছিলেন লাহোর, মুলতান ও দিপালপুরের শাসনকর্তা। খিজির নিজের ন্যায্যতাকে প্রমাণ করার জন্য নিজেকে সৈয়দ বংশের একজন বলে খুব করে প্রচার করলেন। সৈয়দ বংশের শাসন ১৪১৪ থেকে ১৪৫১ অবধি অব্যাহত থাকে। এই বংশ দিল্লী সালতানাতের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে। অবশেষে শেষ সৈয়দ সুলতান আলম শাহ স্বেচ্ছায় শাসনক্ষমতা তুলে দেন আফগান পাঠান সেনাপতি বাহলুল লোদির হাতে।
বাহলুলের দাদা বাহরাম লোদি ভারতে এসেছিলেন আফগানিস্তান থেকে। তিনি ছিলেন পশতু বংশীয়। ফিরোজ শাহ তুঘলকের আমলে তিনি হতে পেরেছিলেন মুলতানের একজন কর্মকর্তা। দ্রæতই তিনি নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেন এবং পদোন্নতি লাভ করেন। তার পুত্র কালা লোদি ছিলেন সক্ষম ও মেধাবী যোদ্ধা। খোক্করদের বিদ্রোহ দমনে সাফল্য দেখিয়ে তিনি হন প্রভাবশালী। বাহলুলের চাচা ছিলেন সুলতান লোদি। তিনি হন সরহিন্দের শাসক। তার মৃত্যুর পরে এই পদ লাভ করেন বাহলুল। মালবে মুহম্মদ খলজির বিদ্রোহ দমন করে সুলতান মুহম্মদ শাহের পক্ষ থেকে তিনি লাভ করেন খানে খানান উপাধি, অর্জন করেন লাহোরের শাসকপদ। দিল্লীতে যখন উজির হামিদ খাঁ বিদ্রোহ শুরু করেন, তখন বাহলুল লোদি তাকে পরাজিত করে দিল্লী দখল করেন এবং সুলতান শাহ আলমকে পুনরায় ক্ষমতা গ্রহণের অনুরোধ করেন। কিন্তু শাহ আলম এতে অনাগ্রহী ছিলেন। তিনি বাদাউনে বাকি জীবন কাটান।
১৪৫১ খ্রিস্টাব্দের ১৯ এপ্রিল সুলতান আবুল মুজাফফর বাহলুল শাহ গাজি উপাধি নিয়ে দিল্লীর সুলতান হন বাহলুল লোদি। শুরু হয় লোদি বংশের শাসন। দিল্লী সালতানাত তখন সঙ্কুচিত হচ্ছে ক্রমাগত। আফগান সর্দাররাও চাইছিলো স্বাধীনতা। বিভিন্ন প্রাদেশিক শক্তির উচ্চাকাক্সক্ষাও তার অজানা ছিলো না। এ পরিস্থিতিতে একমাত্র সুশাসনই সাম্রাজ্যকে জীবনীশক্তি দিতে পারে। বাহলুল তাই চ‚ড়ান্তভাবে একক ব্যক্তিশাসনের বদলে যৌথ-দায়িত্বমূলক শাসন নীতি অবলম্বন করেন। বিচ্ছিন্নতা ও উচ্চাকাক্সক্ষা যাদের চোখে লকলক করছে, এমন সর্দারদের তিনি নিয়ন্ত্রণে রাখার নানা কৌশল অবলম্বন করেন। যাদের আনুগত্যের সম্ভাবনা আছে, তাদেরকে বিভিন্ন উচ্চপদ ও জায়গীর দেন তিনি। যেখানে শক্তিপ্রয়োগ ছাড়া উপায় নেই, সেখানে তরবারি ব্যবহার করেন। মেওয়াত, সম্বল, কোয়েল, রেওয়ারী, চান্দেরী, গোয়ালিয়র ইত্যাদি অঞ্চলের শাসকরা বিদ্রোহকেই পছন্দ করছিলো। বাহরাম তাদের মোকাবেলা করেন সক্ষম হাতে। তাদেরকে বাধ্য করেন, দিল্লীর আনুগত্য স্বীকারে, করপ্রদানে।
বিভাগ : বিশেষ প্রতিবেদন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

এক অজু দিয়ে আসর মাগরিব ও এশার নামাজ পড়া প্রসঙ্গে?

আন্তঃধর্মীয় সংলাপের গুরুত্ব

ভেজালের দৌরাত্ম্য

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে দেশে স্বৈরাচারী শাসক তৈরি হতেই থাকবে ; অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ ও ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে অস্বস্তি

মেঘনা আলমের আটকাদেশ : সরকারের সঠিক সিদ্ধান্ত

সংক্ষিপ্ত বিশ্বসংবাদ

দিল্লিতে ধূলোঝড়ের তাণ্ডবে ২শ’ ফ্লাইট বিঘ্ন

আল-আকসার ইমামকে ৭ দিনের নিষেধাজ্ঞা ইসরাইলের

পর্যটকদের কাছে টিকিট বিক্রি ইসরাইলের

ইউক্রেনকে রেকর্ড ২১ বিলিয়ন ইউরো সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি মিত্রদের

মার্কিন শুল্ক বিরোধ মোকাবিলায় প্রতিবেশী দেশে নজর চীনের

জনসংখ্যা হ্রাস রোধে হাইস্পিড রেললাইন

১৭ ঘণ্টা পর আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট চালু

হাজার সেনা বরখাস্ত করেছে ইসরাইল

যুক্তরাষ্ট্রে ডিমের দামে সংকটে সাধারণ মানুষ

পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষোভ চলছেই মোদির কুশপুতুল দাহ

তহবিলের অভাবে শ’ শ’ কর্মী ছাঁটাই করছে ওচা

পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করলে চরম মূল্য দিতে হবে ইরানকে : ট্রাম্প

ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম, নতুন রেকর্ড