হযরত আমির খসরু (রহ.)-৩
০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম | আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম

হযরত আমির খসরু ছিলেন হযরত নিজামউদ্দীন আওলিয়ার শীর্ষস্থানীয় শিষ্যদের অন্যতম। আধ্যাত্মিক দিক দিয়ে তিনি উচ্চতম অবস্থানে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন। তিনি বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। দিল্লীর অন্তত সাতজন সুলতানের তিনি প্রিয়ভাজন ছিলেন এবং তাদের দরবারে স্থান লাভ করেছিলেন। তিনি বহুভাষাবিদ ছিলেন। তাকে উর্দু ভাষার জনক এবং হিন্দী ভাষার সংস্কারক হিসেবে গণ্য করা হয়। এর বাইরেও তিনি আরবি, ফারসি, তুর্কি ভাষায় সুপ-িত ছিলেন। তিনি তার সমকালের শ্রেষ্ঠ কবিদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। ছন্দবিশারদ হিসেবেও তার খ্যাতি ছিল। তিনি সর্বকালের ঈর্ষাযোগ্য সংগীত প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। এতো গুণের যিনি আধার তিনি যে সর্ব পর্যায়ে প্রিয়ভাজন হবেন, সেটাই স্বাভাবিক। তিনি তার পীর ও মুর্শিদ হযরত নিজামউদ্দীন আওলিয়ার অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন। তাদের মধ্যকার আধ্যাত্মিক সম্পর্ক ও সখ্য ছিল কিংবদন্তিতুল্য। শামস-ই-তাবারিজ ও মাওলানা রুমির মধ্যে যে অভেদ-অচ্ছেদ্য সম্পর্ক ছিল, হযরত নিজামউদ্দীন আওলিয়া ও হযরত আমির খসরুর মধ্যেও সে রকম সম্পর্কই বিদ্যমান ছিল।
হযরত নিজামউদ্দীন আওলিয়া ও হযরত আমির খসরুর সম্পর্কের বিষয়াদি নিয়ে নানা কল্পকাহিনী, বর্ণনা-বিবরণ পাওয়া যায়। যেমন এই ঘটনাটি। আমির খসরু তখন ৮ বছরের বালক। তার মা তাকে হযরত নিজামউদ্দীন আওলিয়ার দরবারে নিয়ে যান। কিন্তু আমির খসরু ভেতরে প্রবেশ করতে অস্বীকৃতি জানান। মা ভেতরে গেলে তিনি গুনগুন করে একটি কবিতা আবৃত্তি করতে থাকেন। যার ভাবার্থ:
তুমি সেই সম্রাট, প্রাসাদেরই রাজা
কবুতর গেলে যেথা হয়ে যায় বাজপাখি
গরীব পথচারী এসেছে, সে দরজায়
ভেতরে থাকবে, নাকি ফিরে যাবো, জানাবে কী?
হযরত নিজামউদ্দীন আওলিয়া আধ্যাত্মিক শক্তিবলে ভেতর থেকে এ কবিতা শুনতে পান। তিনি দরজায় এসে বালক আমির খসরুকে অভিবাদন জানিয়ে পাল্টা কবিতা আবৃত্তি করেন:
হে প্রাণের বন্ধু, ভেতরে এসো
সারা জীবন আমার বিশ্বস্ত বন্ধু হয়ে থেকো
বোকা মানুষ কেউ যদি আসতো
তাহলে সে না হয় খালি হাতে ফিরে যেতো।
হযরত নিজামউদ্দীন আওলিয়া ও হযরত আমির খসরু ছিলেন একাত্মা। তাদের পরস্পরের প্রতি অনুরাগ ও ভালোবাসা এতই প্রবল ছিল যে, কথিত আছে, হযরত নিজামউদ্দীন আওলিয়া তার ভক্ত-শিষ্যদের কাছে এই মর্মে অসিয়ত করে যান যে, তার প্রিয় সাগরেদ আমির খসরুকে যেন তার পাশেই কবর দেয়া হয়। হযরত নিজামউদ্দীন আওলিয়া ইন্তেকাল করলে হযরত আমির খসরু তার কবরে গিয়ে বিলাপ শুরু করেন। এইভাবে একটানা ৬ মাস বিলাপ করতে করতে তিনিও ইন্তেকাল করেন। অসিয়ত মোতাবেক, হযরত নিজামউদ্দীন আওলিয়ার পাশেই তার কবর দেয়া হয়।
বিভাগ : বিশেষ প্রতিবেদন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

এক অজু দিয়ে আসর মাগরিব ও এশার নামাজ পড়া প্রসঙ্গে?

আন্তঃধর্মীয় সংলাপের গুরুত্ব

ভেজালের দৌরাত্ম্য

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে দেশে স্বৈরাচারী শাসক তৈরি হতেই থাকবে ; অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ ও ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে অস্বস্তি

মেঘনা আলমের আটকাদেশ : সরকারের সঠিক সিদ্ধান্ত

সংক্ষিপ্ত বিশ্বসংবাদ

দিল্লিতে ধূলোঝড়ের তাণ্ডবে ২শ’ ফ্লাইট বিঘ্ন

আল-আকসার ইমামকে ৭ দিনের নিষেধাজ্ঞা ইসরাইলের

পর্যটকদের কাছে টিকিট বিক্রি ইসরাইলের

ইউক্রেনকে রেকর্ড ২১ বিলিয়ন ইউরো সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি মিত্রদের

মার্কিন শুল্ক বিরোধ মোকাবিলায় প্রতিবেশী দেশে নজর চীনের

জনসংখ্যা হ্রাস রোধে হাইস্পিড রেললাইন

১৭ ঘণ্টা পর আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট চালু

হাজার সেনা বরখাস্ত করেছে ইসরাইল

যুক্তরাষ্ট্রে ডিমের দামে সংকটে সাধারণ মানুষ

পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষোভ চলছেই মোদির কুশপুতুল দাহ

তহবিলের অভাবে শ’ শ’ কর্মী ছাঁটাই করছে ওচা

পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করলে চরম মূল্য দিতে হবে ইরানকে : ট্রাম্প

ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম, নতুন রেকর্ড