জহির উদ্দীন বাবর দিগ্বিজয়ের বাঘ-৩
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:১২ এএম | আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:১২ এএম

তাসখন্দে মামা সুলতান মাহমুদ খানের আশ্রয়ে আসেন বাবর। তাঁর দুই মামা মাহমুদ খান ও আহমদ খানের সাহায্যে ফারগানা রাজ্য উদ্ধারের চেষ্টা করেন। কিন্তু ১৫০৩ খ্রিস্টাব্দে আর্চিয়ানের যুদ্ধে সাইবানী খানের কাছে পরাজিত হন। ফারগানার আশা হারান চিরতরে।
বাবর এবার দৃষ্টি দিলেন আফগান অঞ্চলে। তাঁর লক্ষ্য কাবুল। ‘কাবুল চার ঋতুর দেশ (শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা ও বসন্ত)। এখানকার ভূমি বেশ উর্বর। এখানে পূর্বে লামঘানত, পেশোয়ার, হশতনগর ও হিদুস্তানের (হিন্দুস্তান) কিছু অংশ আছে। পশ্চিমে পর্বতমালা রয়েছে। এখানে হাজারা আর নিকুদারি উপজাতির লোকেরা বসবাস করে। উত্তরে হিন্দুকুশ পর্বতমালা একে অন্য দেশগুলোর সীমানা থেকে আলাদা করেছে। এখানে কুন্দুজ আর অন্দর-আব রাজ্য রয়েছে। দক্ষিণে ফার্মুল নগজ, বান আর আফগানিস্তান।
বাবর একে জয় করতে স্বপ্নব্যাকুল। পরিস্থিতিও তার পক্ষে কথা বলছিলো। তৈমুর লঙ্গের বংশধর উলুঘ বেগ ছিলেন কাবুলের শাসক। তার মৃত্যু হয়েছে। এলাকাটি এখন অরক্ষিত। মুহম্মদ মুকিম শহরের সিংহাসন দখল করলেও তার কোনো গ্রহণযোগ্যতা ছিলো না। কারণ, তিনি তৈমুরের বংশের বাইরের লোক এবং তার কোনো স্বীকৃতিও নেই। বাবরকে তাই কাবুলে তৈমুরি রক্তের শাসন পুনরোদ্ধার করতে হবে। হিন্দুকুশ পর্বতমালার দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে বাবর হাজির হলেন কাবুলে। দখলদার মুহম্মদ মুকিম তাকে প্রতিরোধ করতে পারেননি। সামান্য সংর্ঘষ হয় এবং বিজয়ী বাবর ১৫০৪ সালের অক্টোবর মাসে কাবুলের ক্ষমতা গ্রহণ করেন। ২৩ বছর বয়েসী বিজেতা শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে লাগলেন সবকিছু। বাবরের পুত্র হুমায়ুনের জন্ম হয় হিজরি ৯১৩ সালের ৪ জিলকদ মোতাবেক ১৫০৮ সালের ৬ মার্চ। দিনটিকে স্মরণীয় করার জন্য সেদিন থেকে বাবর পাদিশা বা সম্রাট উপাধি ধারণ করেন। এর আগে তিনি ছিলেন বাবুর মির্জা।
১৫০৯ সালের কাবুলের দুর্গে জন্ম নেন বাবরের দ্বিতীয় পুত্র কামরান। এর দশ বছর পরে ১৫১৯ সালের শুরুর দিকে বাদশাহ বাবর বাজুর আক্রমণ করেন। মাত্র ২/৩ ঘণ্টার যুদ্ধে তিনি বাজুর দখল করেন। সেখানে অবস্থানকালে জন্ম নেন তার এক সন্তান, যার নাম রাখা হয় হিন্দাল বা হিন্দুস্তান বিজেতা।
বাবর যে হিন্দুস্তান জয়ে উদগ্রীব, তার ঘোষণা ছিলো এই নামের মর্মে। সমরকন্দ জয়ে অব্যাহত ব্যর্থতা এবং ভারতের সম্ভাবনাময় বাস্তবতা বাবরকে উদ্দীপিত করছিলো। এদিকে ভারতে তখন শাসনতান্ত্রিক দুর্বলতায় নৈরাজ্য চলছে। সার্বভৌম কেন্দ্রীয় শক্তি ভেঙে পড়েছে। সাম্রাজ্যের অধিকাংশ অঞ্চলই কার্যত স্বাধীন হয়ে পড়েছিল। উপমহাদেশের উত্তর অংশ শাসন করছিলেন আফগান শাসকরা। রাজপুতনাও এই সময়ে প্রায় স্বাধীন। মেবারের রানা সংগ্রাম সিংহ কেন্দ্রীয় আফগান শক্তির দুর্বলতার সুযোগে ভারতে হিন্দুরাজ্য স্থাপনে সচষ্টে। দিল্লী সালতানাত হারিয়েছে নিজের পরাক্রম ও জীবনীশক্তি।
বাবরের জন্য দিল্লী অভিযানের অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি ছিলো। এরই মধ্যে দিল্লী থেকে এলো আমন্ত্রণ। লোদি সুলতানের সাথে আফগান আমীরদের চলছেিলা তিক্ত বিবাদ। এরই প্রেক্ষিতে দৌলত খান লোদি ও আলম খান লোদি বাবরকে দিল্লী আক্রমণের আমন্ত্রণ জানান। দৌলত খান ছিলেন খুবই প্রভাবশালী এবং আলম খান ছিলেন সুলতানের নিকটাত্মীয়। তারা ইব্রাহিম লোদির বিরুদ্ধে বাবরকে ব্যবহার করতে উদগ্রীব ছিলেন। তাদের আমন্ত্রণ ভারত অভিযানের শর্ত তৈরি করলো। বাবর সুযোগকে ভালোভাবেই কাজে লাগালেন।
বিভাগ : বিশেষ প্রতিবেদন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

এক অজু দিয়ে আসর মাগরিব ও এশার নামাজ পড়া প্রসঙ্গে?

আন্তঃধর্মীয় সংলাপের গুরুত্ব

ভেজালের দৌরাত্ম্য

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে দেশে স্বৈরাচারী শাসক তৈরি হতেই থাকবে ; অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ ও ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে অস্বস্তি

মেঘনা আলমের আটকাদেশ : সরকারের সঠিক সিদ্ধান্ত

সংক্ষিপ্ত বিশ্বসংবাদ

দিল্লিতে ধূলোঝড়ের তাণ্ডবে ২শ’ ফ্লাইট বিঘ্ন

আল-আকসার ইমামকে ৭ দিনের নিষেধাজ্ঞা ইসরাইলের

পর্যটকদের কাছে টিকিট বিক্রি ইসরাইলের

ইউক্রেনকে রেকর্ড ২১ বিলিয়ন ইউরো সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি মিত্রদের

মার্কিন শুল্ক বিরোধ মোকাবিলায় প্রতিবেশী দেশে নজর চীনের

জনসংখ্যা হ্রাস রোধে হাইস্পিড রেললাইন

১৭ ঘণ্টা পর আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট চালু

হাজার সেনা বরখাস্ত করেছে ইসরাইল

যুক্তরাষ্ট্রে ডিমের দামে সংকটে সাধারণ মানুষ

পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষোভ চলছেই মোদির কুশপুতুল দাহ

তহবিলের অভাবে শ’ শ’ কর্মী ছাঁটাই করছে ওচা

পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করলে চরম মূল্য দিতে হবে ইরানকে : ট্রাম্প

ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম, নতুন রেকর্ড