জহির উদ্দীন বাবর দিগ্বিজয়ের বাঘ-৪
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০১ এএম | আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০১ এএম

১৫১৯ খ্রিস্টাব্দে বাবুর এক বিশাল সৈন্যবাহিনী নিয়ে হিন্দুস্তানের বাজাউর ও সোয়াতের দিকে অগ্রসর হন। তার বাহিনী শিবির গড়েছিলো ঝিলাম নদীর পশ্চিম তীরে ভিরা নগরীতে। সখোন থেকে তিনি দিল্লীর সুলতান ইব্রাহিম লোদির নিকট এক দূত পাঠান। তৈমুরের উত্তরাধিকারী হিসাবে তৈমুরের বিজিত অঞ্চলগুলো দাবি করেন। কিন্তু বাবুরের দূতকে রাস্তায় আটকে দিলেন পাঞ্জাবের শাসনকর্তা দৌলত খান লোদি। পাঁচ মাস পর দূত ফিরলেন শূন্য হাতে। বাবর ভীর, খুসব এবং চন্দ্রবতী নদীর তীরস্থ এলাকা জয় করে কাবুলে ফিরে যান। ১৫২০ খ্রিস্টাব্দে বাদাকশান দখল করেন। এর শাসক বানান স্বীয় পুত্র হুমায়ুনকে। ১৫২২ খ্রিস্টাব্দে উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ স্থান কান্দাহার অধিকার করেন। নিজের দ্বিতীয় পুত্র কামরানকে এর শাসনের দায়িত্ব দেন। তারপর ১৫২৪ সালে সিন্ধু, ঝিলাম ও চেনাব নদী অতিক্রম করে লাহোর ও দীপালপুর অধিকার করেন বাবর। লাহোরের সিংহাসনে বসান দৌলত খানকে। তাকে দেন সুযোগ-সুবিধা। কন্তিু পরে দৌলত খান ও আলম খান বাবরের সাথে বৈরিতা শুরু করেন। কিন্তু এতে দমবার পাত্র ছিলেন না তিনি। নতুন শক্তি সংগ্রহের জন্য তিনি আবারো ফিরে গেলেন কাবুলে। প্রস্তুতি নিতে থাকেন হিন্দুস্তানে চূড়ান্ত অভিযানের। ১৫২৫ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর মাসে তিনি কাবুল থেকে পুনরায় ভারত অভিযানে বের হন। বাদাকশান থেকে শক্তিশালী সৈন্যবাহিনী নিয়ে পিতার সঙ্গে রাস্তায় যোগ দিলেন হুমায়ুন।
তিনি বুঝতে পেরেছিলেন একটি মহান ও তাৎপর্যপূর্ণ বিজয় তাঁর জন্য অপেক্ষমান। কিন্তু মধ্য এশিয়া, আফগান ও খোক্কর যোদ্ধাদের সমন্বয়ে গঠিত ১২০০০ সেনার একটি বাহিনী আছে তার সাথে। বিশাল এক সাম্রাজ্যের মুখোমুখি হবার জন্য এ বাহিনী কোনোভাবেই যথষ্টে নয়। কিন্তু বাবর সংখ্যা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন না। তিনি ভাবছিলেন তার বাহিনীর নৈতিক মান নিয়ে। কারণ, তার নবগঠিত বাহিনীর অনেকেই মদ্যপানে আসক্ত। এরকম একটা বাহিনী নিয়ে জয়ী হওয়ার সম্ভবানা কোথায়? বাবর এই নিষিদ্ধ অভ্যাস থেকে বাহিনীকে পরিচ্ছন্ন করতে চাইলেন। তিনি তার ১২০০০ সেনাকে একত্রিত করলেন। গণতাওবার আয়োজন করলেন। সর্বান্তকরণে দোয়া করলেন, খোদা, আমাকে ক্ষমা করুন। জীবনে কখনো মদ পান করবো না, আমি সেই ওয়াদা করছি। আপনি আমার পূর্বের সকল পাপ ক্ষমা করুন এবং আমাদের বিজয় দান করুন । অঝোর ধারায় মোনাজাতে কাঁদছিলেন তিনি। একেবারে শশিুর মতো। বাবরের এ কান্না দেখে বাবরের বাহিনীর শুভবুদ্ধির উদয় হল এবং যারা মদ পান করতো তারা এই অপর্কম চিরদিনের জন্য পরিহার করলো।
বাবর এবার প্রশান্ত চিত্তে এগুতে থাকলেন সামনে। দৌলত খান লোদি বাধা দেবার চেষ্টা করে সম্পূর্ণভাবে পরাজিত হলেন। পাঞ্জাব অধিকার করলেন বাবর। দৌলত খান তাঁর বশ্যতা কবুল করেন। তারপর দিল্লীর দিকে এগিয়ে যান বাবর। ইব্রাহিম লোদি তাকে পানিপথের প্রান্তরে বাধা দিলে ১৫২৬ সালের ২১ এপ্রিল পানিপথের প্রথম যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
বিভাগ : বিশেষ প্রতিবেদন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

এক অজু দিয়ে আসর মাগরিব ও এশার নামাজ পড়া প্রসঙ্গে?

আন্তঃধর্মীয় সংলাপের গুরুত্ব

ভেজালের দৌরাত্ম্য

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে দেশে স্বৈরাচারী শাসক তৈরি হতেই থাকবে ; অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ ও ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে অস্বস্তি

মেঘনা আলমের আটকাদেশ : সরকারের সঠিক সিদ্ধান্ত

সংক্ষিপ্ত বিশ্বসংবাদ

দিল্লিতে ধূলোঝড়ের তাণ্ডবে ২শ’ ফ্লাইট বিঘ্ন

আল-আকসার ইমামকে ৭ দিনের নিষেধাজ্ঞা ইসরাইলের

পর্যটকদের কাছে টিকিট বিক্রি ইসরাইলের

ইউক্রেনকে রেকর্ড ২১ বিলিয়ন ইউরো সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি মিত্রদের

মার্কিন শুল্ক বিরোধ মোকাবিলায় প্রতিবেশী দেশে নজর চীনের

জনসংখ্যা হ্রাস রোধে হাইস্পিড রেললাইন

১৭ ঘণ্টা পর আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট চালু

হাজার সেনা বরখাস্ত করেছে ইসরাইল

যুক্তরাষ্ট্রে ডিমের দামে সংকটে সাধারণ মানুষ

পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষোভ চলছেই মোদির কুশপুতুল দাহ

তহবিলের অভাবে শ’ শ’ কর্মী ছাঁটাই করছে ওচা

পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করলে চরম মূল্য দিতে হবে ইরানকে : ট্রাম্প

ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম, নতুন রেকর্ড