জহির উদ্দীন বাবর দিগ্বিজয়ের বাঘ-৬
০২ মার্চ ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৪, ১২:০২ এএম

কিন্তু বাবরের জন্য জমায়েত হচ্ছিলো ঘণকালো মেঘমালা। মেবারের রাজপুত নেতা রানা সংগ্রাম সিং তাকে ভারত আক্রমণে প্ররোচিত করেছিলেন। বলেছিলেন সব ধরনের সহযোগিতা করবেন। তিনি বিশ্বাসভঙ্গ করেছিলেন। তার উদ্দেশ্য ছিলো বাবরকে দিয়ে লোদিকে দুর্বল করা। বাবর যেন লোদিকে আক্রমণ ও বিধ্বস্ত করে আবারো ফিরে যান। পরে রানা সিং সহজেই দিল্লিকে নিজের করে নিতে পারবেন। দিল্লি সালতানাতের ধ্বংসস্তূপের উপর হিন্দুরাষ্ট্র গঠন করতে পারবেন।
বাবর যখন মোঘল রাজবংশের গোড়াপত্তন করলেন, তখন সংগ্রাম সিংহ আশাহত হলেন প্রচ-। তিনি রাজপুত শক্তিকে নিজের অধীনে ঐক্যবদ্ধ করতে সচেষ্ট হলেন। বাবরের বিরুদ্ধে তিনি বিলসার সিলহদা, ধুনগড়ের উদয়সিংহ, মারবাড়ের ভীমসিংহ, চান্দেরীর মেহেদী রাও প্রমুখ বহু রাজপুত সর্দার এবং হাসান খান মেওয়াটির সাহায্যে একটি শক্তিশালী সামরিক জোট গঠন করেন। সম্মিলিত সামরিক জোটে ছিলেন ১২০ জন রাজপুত সর্দার, ৮০ হাজার অশ্বারোহী (মতান্তরে ১,২০,০০০ অশ্বারোহী) ৫ শত হস্তী (মতান্তরে ১,০০০) এবং বিপুল সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক। বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন সংগ্রাম সিংহ। পুরোদমে যুদ্ধপ্রস্তুতি চলছিলো। এই বাহিনী কোনোভাবে বাবরের কোমরকে শক্ত হতে দেবে না। এর আগেই শিশুরাষ্ট্রকে নিশ্চিহ্ন করে দেবে। বাবরের সাথে তখন স্বল্পসংখ্যক যোদ্ধা। আকাশ ঢেকে ফেলা মেঘমালার মতো বিশাল প্রতিপক্ষ বাহিনীর বিপরীতে সৈন্যরা হতোদ্যম হবে, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু বাবর ছিলেন বজ্রকঠোর, শিলাদৃঢ়। তিনি ক্ষুদ্র সৈন্যদলের সামনে অগ্নিময় এক ভাষণ দিলেন, যার নজির বিরল। বিস্ময়কর সেই ভাষণে ভীত-সন্ত্রস্ত সৈন্যরা যে প্রাণাবেগ ও প্রেরণায় উদ্দীপিত হলো, তখন সেটাই ছিলো বাবরের জন্য খুব জরুরি। ১৫২৭ খ্রিস্টাব্দের ১৬ মার্চ আগ্রার অনতিদূরে ফতেহপুর সিক্রির নিকট উভয় বাহিনী মুখোমুখি হলো, ঐতিহাসিক এই যুদ্ধের নাম খানুয়ার যুদ্ধ। বিপুল বিশাল সৈন্যবাহিনী নিয়ে যুদ্ধ করলেন সংগ্রাম সিংহ। বীরত্বও প্রদর্শন করলেন। কিন্তু পরাজিত হলেন শোচনীয়ভাবে। এই যুদ্ধ নির্ধারণ করে দিলো হিন্দুস্তানের ভাগ্যের গতিপথ। পানিপথের প্রথম যুদ্ধে দিল্লির পতনমুখী লোদি বংশের নামমাত্র সুলতান ইব্রাহিম লোদি পরাজিত হয়েছিলেন। কিন্তু খানুয়ার যুদ্ধের ফলে ভারতে শক্তিশালী ঐক্যবদ্ধ রাজপুত শক্তির শোচনীয় পরাজয় ঘটে। ফলে রানা সংগ্রাম সিংহের হিন্দু রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন যেমন বিধ্বস্ত হয়ে যায়, তেমনি বিপন্ন হয় রাজপুতদের আধিপত্য।
বিভাগ : বিশেষ প্রতিবেদন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

এক অজু দিয়ে আসর মাগরিব ও এশার নামাজ পড়া প্রসঙ্গে?

আন্তঃধর্মীয় সংলাপের গুরুত্ব

ভেজালের দৌরাত্ম্য

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে দেশে স্বৈরাচারী শাসক তৈরি হতেই থাকবে ; অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ ও ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে অস্বস্তি

মেঘনা আলমের আটকাদেশ : সরকারের সঠিক সিদ্ধান্ত

সংক্ষিপ্ত বিশ্বসংবাদ

দিল্লিতে ধূলোঝড়ের তাণ্ডবে ২শ’ ফ্লাইট বিঘ্ন

আল-আকসার ইমামকে ৭ দিনের নিষেধাজ্ঞা ইসরাইলের

পর্যটকদের কাছে টিকিট বিক্রি ইসরাইলের

ইউক্রেনকে রেকর্ড ২১ বিলিয়ন ইউরো সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি মিত্রদের

মার্কিন শুল্ক বিরোধ মোকাবিলায় প্রতিবেশী দেশে নজর চীনের

জনসংখ্যা হ্রাস রোধে হাইস্পিড রেললাইন

১৭ ঘণ্টা পর আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট চালু

হাজার সেনা বরখাস্ত করেছে ইসরাইল

যুক্তরাষ্ট্রে ডিমের দামে সংকটে সাধারণ মানুষ

পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষোভ চলছেই মোদির কুশপুতুল দাহ

তহবিলের অভাবে শ’ শ’ কর্মী ছাঁটাই করছে ওচা

পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করলে চরম মূল্য দিতে হবে ইরানকে : ট্রাম্প

ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম, নতুন রেকর্ড