জহির উদ্দীন বাবর দিগি¦জয়ের বাঘ-১২
২৩ মার্চ ২০২৪, ১২:১২ এএম | আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৪, ১২:১২ এএম

সেকালের গুরুত্বপূর্ণ লেখক তুলসীদাস। তিনি রামের জীবনী লেখেন। সেই বিখ্যাত জীবনীর নাম ‘রামচরিতমানস’। গ্রন্থটি তিনি রচনা করেছিলেন বাবরি মসজিদ নির্মাণের ৪৪ বছর পরে ১৫৭২ সালে। রামের একনিষ্ঠ ভক্ত, অনুরাগী তুলসীদাস মুসলিমদের সম্পর্কে অনেক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ম্লেচ্ছ, যবন ইত্যাদি অভিধা তো দিয়েছেনই। তাদের নিন্দার জন্য নানা প্রসঙ্গ অনুসন্ধান করেছেন। কিন্তু রামের মন্দির ভেঙে ফেলার কোনো বিবরণ দেননি। এমন কিছু ঘটলে সবার আগে তিনি তা উল্লেখ করতেন। কাশীতে বসে তিনি রামের জীবনী লেখেন। অযোধ্যা ছিলো তার কাছেই। সেখানে ঘটনাটি ঘটলে তার জানাটা ছিলো অবধারিত।
ত্রেতাযুগের পর থেকে ১৯২০ পর্যন্ত হিন্দুদের কোনো ধর্মগ্রন্থে অযোধ্যার রামমন্দিরের উল্লেখ নেই। কেন নেই? রামভক্ত তুলসীদাস মুসলিম শাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভের প্রচার করতে গিয়েও কেন রামমন্দিরের ধ্বংসের কথা বলেননি? হিন্দুদের প্রাচীন তীর্থস্থানসমূহের তালিকায় কেন অযোধ্যার রামমন্দিরের নাম নেই? ৪০০ খ্রিস্টাব্দে রচিত ‘বিষ্ণুস্মৃতি’র মতো গ্রন্থেও কেন এর উল্লেখ নেই? কিংবা ১৪২০ সালে রচিত এ বিষয়ক আকরগ্রন্থ ‘তীর্থ চিন্তামণি’ পুস্তকে কেন অযোধ্যার কোনো রামমন্দিরের উল্লেখ নেই? ফাহিয়েন, হিউয়েন সাঙ, ইবনে বতুতা প্রমুখ ভ্রামণিকের রচনায় কেন এই মন্দিরের কোনো উল্লেখ নেই? যে শিবাজী আওরঙ্গজেবের বিরুদ্ধে লড়াই করলেন, তিনি কেন রামমন্দির ভেঙে মসজিদ তৈরির বিষয়ে কিছুই উল্লেখ করেননি? স্বামী দয়ানন্দ স্বরস্বতি ফয়জাবাদে মুসলিম শাসকদের বিরুদ্ধে নিয়মিতই প্রচারণা চালাতেন। তিনি কেন কখনো বলেননি রামমন্দির ভেঙে মসজিদ গড়ার কথা?
১৫২৮ সাল থেকে ১৯২০ সালের মধ্যে অসংখ্য গ্রন্থ রচিত হলো। কেউ জানলো না বাবরি মসজিদ তৈরি হয়েছে মন্দির ভেঙে। কেউ তা উল্লেখ করলো না কোথাও। প্রথম অপবাদটা এলো ১৯২১ সালে। ব্রিটিশ লেখিকার তরফে। তার নাম শ্রীমতি বেভারিজ। বাবরনামার অনুবাদ করলেন তিনি ‘মেমোয়ার্স অব বাবর’ নামে। বইটির কোথাও মন্দির ভাঙার উল্লেখ না থাকলেও ফুটনোটে বেভারিজ লিখলেন, ‘বাবর মুসলমান হওয়ায় এবং প্রাচীন হিন্দু তীর্থের পবিত্রতা ও মর্যাদায় মুগ্ধ হওয়ায় মসজিদ নির্মাণের জন্য মন্দিরের ‘অন্তত আংশিক স্থানান্তর করাতেন।’ কিন্তু এর প্রমাণ কী? বেভারিজের কোনো প্রমাণের দরকার নেই। তিনি লিখলেন, যেহেতু বাবর মুসলমান, তাই অন্য ধর্মের প্রতি তার অসহিষ্ণুতা ছিল।’ ফয়জাবাদ গেজেটিয়ারে ব্রিটিশ কর্তা আগেই সাজিয়ে রেখেছিলেন এই অপবাদের প্রকল্প।
বিভাগ : বিশেষ প্রতিবেদন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

এক অজু দিয়ে আসর মাগরিব ও এশার নামাজ পড়া প্রসঙ্গে?

আন্তঃধর্মীয় সংলাপের গুরুত্ব

ভেজালের দৌরাত্ম্য

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে দেশে স্বৈরাচারী শাসক তৈরি হতেই থাকবে ; অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ ও ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে অস্বস্তি

মেঘনা আলমের আটকাদেশ : সরকারের সঠিক সিদ্ধান্ত

সংক্ষিপ্ত বিশ্বসংবাদ

দিল্লিতে ধূলোঝড়ের তাণ্ডবে ২শ’ ফ্লাইট বিঘ্ন

আল-আকসার ইমামকে ৭ দিনের নিষেধাজ্ঞা ইসরাইলের

পর্যটকদের কাছে টিকিট বিক্রি ইসরাইলের

ইউক্রেনকে রেকর্ড ২১ বিলিয়ন ইউরো সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি মিত্রদের

মার্কিন শুল্ক বিরোধ মোকাবিলায় প্রতিবেশী দেশে নজর চীনের

জনসংখ্যা হ্রাস রোধে হাইস্পিড রেললাইন

১৭ ঘণ্টা পর আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট চালু

হাজার সেনা বরখাস্ত করেছে ইসরাইল

যুক্তরাষ্ট্রে ডিমের দামে সংকটে সাধারণ মানুষ

পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষোভ চলছেই মোদির কুশপুতুল দাহ

তহবিলের অভাবে শ’ শ’ কর্মী ছাঁটাই করছে ওচা

পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করলে চরম মূল্য দিতে হবে ইরানকে : ট্রাম্প

ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম, নতুন রেকর্ড