জহির উদ্দীন বাবর দিগি¦জয়ের বাঘ-১৩
২৯ মার্চ ২০২৪, ১২:১০ এএম | আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৪, ১২:১০ এএম

মি. এইচ আর নেভিল নামক এই কর্তা গেজেটিয়ারে কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই লিখেছেন, ‘একটি মন্দির ধ্বংস করা হয় এবং মসজিদ নির্মাণ হয়। অবশ্য সেই মন্দির রামমন্দির কি না, সেটা উল্লেখ করেননি। বেভারিজ দাবি করলেন, এটাই রামমন্দির। এর কিছুদিন পরে শিল্পীর পরিচয় এবং সময়কাল বর্জিত আজগুবি এক তৈলচিত্র হাজির করলো এক ব্রিটিশ কর্তা। সেখানে নাকি দেখানো হয়েছে বাবরের সৈন্যরা রামমন্দির ধ্বংস করছে এবং হিন্দুনিধন করছে। ছবির নিচে লেখা হয়, ‘বাবরের সৈন্যরা অযোধ্যার রামমন্দির আক্রমণকালে ৭৫,০০০ হিন্দুকে হত্যা করে ও তাঁদের রক্ত দালানের মসলায় মেখে বাবরি মসজিদ নির্মাণ করে।’ কী মারাত্মক কথা! ৭৫০০০ হিন্দু হত্যা হয়েছে শুধু মন্দির ভাঙতে! কিন্তু বাবরের আমলে অযোধ্যা জনপদের মোট জনসংখ্যা ছিলো কয় হাজার? ব্রিটিশ প্রচারকরা এই প্রপাগান্ডার মাধ্যমে সেখানে হিন্দু মুসলিম উত্তেজনা ছড়াতে শুরু করলো।
অযোধ্যা নিয়ে ব্রিটিশদের ছিলো বিশেষ পরিকল্পনা। ১৮১৬ সালে অযোধ্যার বেগমের সাথে চুক্তি হয় তাদের। অযোধ্যার রাজস্ব আদায়ের সুবিধা এবং আইনশৃঙ্খলার ভার তাদের হাতে যায়। কিন্তু মুসলিমরা ব্রিটিশদের মেনে নেয়নি। ব্রিটিশ কর্তাদের অযোধ্যা থেকে তাড়িয়ে দেন। এর বদলা নিতে ব্রিটিশদের বিশেষ প্রকল্প থাকবে, এটা ছিলো অবধারিত। সেই প্রকল্প আত্মপ্রকাশ করলো সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের দ্বারা মুসলিমদের রক্তপাতের আয়োজন হিসেবে। কর্নেল উইলিয়ম স্নিমার ও জেমস আউট্রামের দায়িত্ব ছিলো সা¤প্রদায়িক বিষের বিস্তার। তারা কাজটি করলেন দক্ষতার সাথে। ১৮৩৮ সালের মন্টেগোমারি মার্টিন তাঁর এক সার্ভে রিপোর্টে নির্দেশ দেন রামমন্দির ধ্বংসের প্রচারণা চালাতে। তিনি সেই রিপোর্টে লিখলেন, ‘জনশ্রুতি আছে যে, অযোধ্যার রামমন্দির ভেঙে বাবরি মসজিদ নির্মিত হয়। তবে আমি একথা বিশ্বাস করি না।’ বাক্যটির প্রথম অংশ প্রচারিত হলো ভয়াবহভাবে। এর পর থেকে ঘটতে থাকলো বিপজ্জনক ঘটনাধারা। আমি বিশ্বাস করি না, বলতে হয় যে মিথ্যা উল্লেখ করে, সেই মিথ্যা কেন উল্লেখ জরুরি? দেখা গেলো ব্রিটেনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ও সেই মিথ্যার পালে হাওয়া দিতে লাগলো। ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে ফৈজাবাদের ব্রিটিশ সেটেলমেন্ট অফিসার পি কার্নেগি আরেকটা নথি বানিয়ে ফেললেন। কোনো প্রমাণ ছাড়াই সিদ্ধান্ত দিলেন, ‘অযোধ্যা যেহেতু রামের জন্মভ‚মি, অতএব সেখানে নিশ্চয়ই একটা রামমন্দির থেকে থাকবে এবং আমার মনে হয় সম্রাট বাবরের নির্দেশেই ওই মন্দির ধ্বংস করা হয়েছে।’
বিভাগ : বিশেষ প্রতিবেদন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

এক অজু দিয়ে আসর মাগরিব ও এশার নামাজ পড়া প্রসঙ্গে?

আন্তঃধর্মীয় সংলাপের গুরুত্ব

ভেজালের দৌরাত্ম্য

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে দেশে স্বৈরাচারী শাসক তৈরি হতেই থাকবে ; অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ ও ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে অস্বস্তি

মেঘনা আলমের আটকাদেশ : সরকারের সঠিক সিদ্ধান্ত

সংক্ষিপ্ত বিশ্বসংবাদ

দিল্লিতে ধূলোঝড়ের তাণ্ডবে ২শ’ ফ্লাইট বিঘ্ন

আল-আকসার ইমামকে ৭ দিনের নিষেধাজ্ঞা ইসরাইলের

পর্যটকদের কাছে টিকিট বিক্রি ইসরাইলের

ইউক্রেনকে রেকর্ড ২১ বিলিয়ন ইউরো সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি মিত্রদের

মার্কিন শুল্ক বিরোধ মোকাবিলায় প্রতিবেশী দেশে নজর চীনের

জনসংখ্যা হ্রাস রোধে হাইস্পিড রেললাইন

১৭ ঘণ্টা পর আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট চালু

হাজার সেনা বরখাস্ত করেছে ইসরাইল

যুক্তরাষ্ট্রে ডিমের দামে সংকটে সাধারণ মানুষ

পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষোভ চলছেই মোদির কুশপুতুল দাহ

তহবিলের অভাবে শ’ শ’ কর্মী ছাঁটাই করছে ওচা

পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করলে চরম মূল্য দিতে হবে ইরানকে : ট্রাম্প

ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম, নতুন রেকর্ড