সম্রাট হুমায়ুন : উদারনীতির উদ্যান-৪
১১ মে ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ১১ মে ২০২৪, ১২:০৪ এএম

হুমায়ুনের বিরুদ্ধে মির্জা কামরানের বিদ্রোহ শুরু হলো ১৫৩০ সালে। বিদ্রোহে বাধা দেননি হুমায়ুন। ভাইদের রক্ত না ঝরাতে তিনি ছিলেন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কামরান পেলেন অবারিত সুযোগ। তিনি সিন্ধু নদী অতিক্রম করে পাঞ্জাব দখল করে নেন। তার শাসনাধীন অঞ্চল হয়ে গেলো বিশাল, যেখানে আছে কাবুল-কান্দাহার ও পাঞ্জাব। হুমায়ুন তখনও নিষ্ক্রিয়। এতে অন্য উচ্চাকাক্সক্ষীরা সাহসী হতে থাকে। তাদের অন্যতম ছিলেন গুজরাটের অধিপতি বাহাদুর শাহ মুহম্মদ জামান মির্জা। রুমী খানের নেতৃত্বে তিনি গড়ে তোলেন শক্তিশালী বাহিনী, যাদের মধ্যে ছিলো গোলা বারুদ ব্যবহারের বিশেষ দক্ষতা। এই সেনাবাহিনী দিয়ে তিনি হুমায়ুনের কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করেন। বাহাদুর শাহ উড়ালেন বিদ্রোহের পতাকা। মেবারের রানা প্রতাপ তার সহযোগী হলেন। তারা প্রথমে মালব দখল করলেন। আহমদনগর, খান্দেশ ও বেরারে বিশৃঙ্খলা বেড়ে চললো। বাহাদুর শাহ সেই সব অঞ্চলও দখল করে নিলেন। পর্তুগীজরা আগে কর দিতো হুমায়ুনকে। এবার তাদের কর নিলেন বাহাদুর শাহ।
দিল্লীর বিদ্রোহী আমিররা পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছিলেন। তারা বাহাদুর শাহের কাছে এসে আশ্রয় নিতে থাকলেন। এবার নড়ে-চড়ে বসলেন হুমায়ুন। সবাই বুঝলো তিনি ক্ষুব্ধ হয়েছেন। চিতোরের রানা বিক্রমাদিত্য এই পরিস্থিতিতে শঙ্কিত ছিলেন। তার মা কর্ণবতী হুমায়ুনকে একটি রাখী পাঠিয়ে ভাই বলে সম্মোধন করেন। তাকে সাহায্যের জন্য আগ্রহের কথা জানিয়ে দেন। কিন্তু হুমায়ুন আগ্রা থেকে বের হয়ে গোয়ালিয়রে চিতোর অধিকার করেন শুরুতে। ১৫৩৪ সালের নভেম্বরে ঘটে এই ঘটনা। তারপর তিনি ধাওয়া করেন বাহাদুর শাহকে। এগিয়ে যান গুজরাটের দিকে। ১৫৩৫ সালের এপ্রিল ছিলো বাহাদুর শাহের জন্য বিপজ্জনক মাস। হুমায়ুনের আক্রমণে ২০ এপ্রিল বিধ্বস্ত হন বাহাদুর। ২৫ এপ্রিল গুজরাটের মাণ্ড থেকে তাকে পলায়ন করতে হলো। চম্পানীর বিখ্যাত দুর্গ এলো হুমায়ুনের দখলে। তারপর মালব ও গুজরাটে সম্রাটের কর্তৃত্ব দৃঢ় হলো। গুজরাটের শাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলো মীর্জা আসকারিকে, যে ছিলো শাসক হিসেবে অযোগ্য। অন্য ভাই হিন্দাল ছিলো বিদ্রোহী। আর সমস্ত সমস্যার গোড়ায় কাজ করছিলো অপর ভাই কামরানের লোভ ও স্বার্থপরতা। আসকারির উপদেষ্টা ছিলো হিন্দু বেগ। আহমদাবাদকে কেন্দ্রে রেখে আসকারির শাসন সংহত হবার আগেই গুজরাট দখল করে নেন বাহাদুর শাহের গভর্নর মানুখান।
১৫৩৭ সালে হুমায়ুন চুনার দুর্গ অধিকার করেন। এটা ছিলো অত্যন্ত প্রভাবশালী এক জয়। বাহাদুর শাহের বন্দুকবাজ সেনাপতি রুমি খানকে নিজের বশ্যতায় এনে এই জয় সম্পন্ন করেন হুমায়ুন। ১৫৩৯ খ্রিস্টাব্দে বাংলার দায়িত্ব দেন জাহাঙ্গীর কুলি বেগের হাতে। দিল্লীতে তখন চলছে অস্থিরতা। সম্রাটকে যেতে হলো সেদিকে। শেরশাহ পেলেন সুযোগ। প্রবল দ্রুততায় তিনি দখল করে নিলেন তেলিয়াগার্চি ও কনৌজ। ফলে সাম্রাজ্যের বিস্তৃত বিপুল অংশের সাথে ছিন্ন হয়ে গেলো রাজধানীর যোগাযোগ। হুমায়ুন পড়লেন ভীষণ বিপদে।
বিভাগ : বিশেষ প্রতিবেদন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

এক অজু দিয়ে আসর মাগরিব ও এশার নামাজ পড়া প্রসঙ্গে?

আন্তঃধর্মীয় সংলাপের গুরুত্ব

ভেজালের দৌরাত্ম্য

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে দেশে স্বৈরাচারী শাসক তৈরি হতেই থাকবে ; অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ ও ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে অস্বস্তি

মেঘনা আলমের আটকাদেশ : সরকারের সঠিক সিদ্ধান্ত

সংক্ষিপ্ত বিশ্বসংবাদ

দিল্লিতে ধূলোঝড়ের তাণ্ডবে ২শ’ ফ্লাইট বিঘ্ন

আল-আকসার ইমামকে ৭ দিনের নিষেধাজ্ঞা ইসরাইলের

পর্যটকদের কাছে টিকিট বিক্রি ইসরাইলের

ইউক্রেনকে রেকর্ড ২১ বিলিয়ন ইউরো সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি মিত্রদের

মার্কিন শুল্ক বিরোধ মোকাবিলায় প্রতিবেশী দেশে নজর চীনের

জনসংখ্যা হ্রাস রোধে হাইস্পিড রেললাইন

১৭ ঘণ্টা পর আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট চালু

হাজার সেনা বরখাস্ত করেছে ইসরাইল

যুক্তরাষ্ট্রে ডিমের দামে সংকটে সাধারণ মানুষ

পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষোভ চলছেই মোদির কুশপুতুল দাহ

তহবিলের অভাবে শ’ শ’ কর্মী ছাঁটাই করছে ওচা

পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করলে চরম মূল্য দিতে হবে ইরানকে : ট্রাম্প

ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম, নতুন রেকর্ড