সৈয়দ খাজা গিছু দারায (রহ.)-১
৩১ মে ২০২৪, ১২:১০ এএম | আপডেট: ৩১ মে ২০২৪, ১২:১০ এএম

সৈয়দ খাজা গিছু দারায (রহ.) ছিলেন ভারতে চিশতীয়া ধারার একজন হানাফি মাতুরিদি পন্ডতি এবং সুফি সাধক। তাঁর আসল নাম সৈয়দ মুহম্মদ ইবনে ইউসুফ আল-হুসাইনি। খাজা বান্দা নওয়াজ নামে তিনি সমধিক পরিচিত। খাজা নাসির উদ্দিন চেরাগ দেহলভী (রহ.) এর কাছ থেকে ‘গিছু দারায’ উপাধি লাভ করেন। তিনি নানা ধর্মের মধ্যে বোঝাপড়া, সহিষ্ণুতা এবং সম্প্রীতির পক্ষে কাজ করেছেন। তিনি সর্বজনীন ভ্রাতৃত্বের বার্তা ছড়িয়ে দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে ব্যাপক খ্যাতি লাভ করেন। খাজা গিছু দারায (রহ.) ছিলেন সুফি সাধক নাসির উদ্দিন চেরাগ দেহলভীর শিষ্য ও উত্তরসূরি। দিল্লিতে তৈমুরের আক্রমণের কারণে ১৩৯৮ সালের দিকে তিনি দৌলতাবাদে (মহারাষ্ট্র) চলে যান। তাঁর মাধ্যমে চিশতীয়া তরিকা দক্ষিণ ভারতে বিস্তৃতি লাভ করে। বাহমানি সুলতান, তাজ উদদীন ফিরুজ শাহের আমন্ত্রণে অবশেষে তিনি গুলবার্গে বসতি স্থাপন করেন। সৈয়দ খাজা গিছু দারায (রহ.) আরবি, ফার্সি ও উর্দু ভাষায় ১৯৫টি বই লিখেছেন। তার সব গ্রন্থ এখন আর পাওয়া যায় না। উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হল, তাফসীর-ই-কুরআনে-ই-মাজিদ মুলতাকিত, হাভশি কাশফ, শরহে মাশরেক, শরহ ফিকাহ-ই-আকবর, শরহ আদাব-উল-মুরিদীন, শরহ তা-আরুফ, রিসালা সিরাত-উন-নবী, তারজুমা মাশরেক, মা-আরিফ তরজমা আওয়ারিফ, শরহ ফাসুসুল হিকাম, তরজুমা রিসালা কশেরিয়া, হাওয়া আসাহী ক্বাওয়াত-উল-কালব, কাসিদা আমালি, আদাব-আল-মুরিদিন, দিওয়ান, জাওয়ামিউল কালিম, হিদায়তুশ শুয়ুখ ও রুহে তাসাউফ।
তিনি উর্দু ভাষার দক্ষিণ ভারতীয় শাখা দাখনিতে জনসাধারণের নির্দেশনার জন্য ‘মিরাজ-আল আশিকিন’ নামে মহানবী হযরত মুহম্মদ (সা.)-এর উপর একটি গ্রন্থ রচনা করেন। তিনিই প্রথম সুফি যিনি এই আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করেন, যা পরবর্তী শতাব্দীতে দক্ষিণ ভারতের অন্যান্য অনেক সুফি সাধকের দ্বারা বিশদভাবে বর্ণনা করা হয়েছিল। তিনি ইবনে আরাবি এবং শায়খ সোহরাওয়ার্দীর উপর বেশকিছু গ্রন্থ রচনা করেন, যা তাদের কাজগুলোকে ভারতীয় পন্ডতিদের কাছে সহজলভ্য করে তোলে এবং পরবর্তী মরমি চিন্তাধারাকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা পালন করে।
১৩২১ সালের ৭ আগস্ট তিনি দিল্লির সাইদ ওয়ালশরীফ মুহম্মদ বিন ইউসুফ আল হোসাইনির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। পনের বছর বয়সে তিনি পিতৃহারা হলে খাজা নাসির উদ্দিন চেরাগ দেহলভীর শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের জন্য দিল্লি ফিরে আসেন। তিনি কেথলি, তাজউদ্দিন বাহাদুর এবং কাজী আব্দুল মুকতাদিরের খুব উৎসাহী ছাত্র ছিলেন। দিল্লি, মেওয়াত, গোয়ালিয়র, চন্দর, এয়ারচা, চাত্রা, চান্দেরি, মিয়ান্ধর, বরোদা, খাম্বায়াত এবং গুলবার্গের মতো বিভিন্ন জায়গায় তিনি শিক্ষকতা করেন। ১৭ ডিসেম্বর, ১৩৯৮ তারিখে দিল্লি ত্যাগ করেন। শহরটি তখন তৈমুরের দ্বারা অবরুদ্ধ ছিল এবং এর পতন আসন্ন ছিল। সৈয়দ খাজা গিছু দারায (রহ.) ছিলেন হযরত আলী (রা.)-এর বংশধর। তাঁর পূর্বপুরুষেরা হিরাতে বসবাস করতেন। তাদের মধ্যে একজন দিল্লিতে এসে এখানে বসতি স্থাপন করেছিলেন। তার পিতা সৈয়দ ওয়ালশরীফ ইউসুফ বিন মুহম্মদ আল-হুসেইনি ছিলেন একজন খ্যাতিমান ব্যক্তি এবং খাজা নিজাম উদ্দিন আউলিয়া (রহ.)-এর প্রতি ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ।
বিভাগ : বিশেষ প্রতিবেদন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

এক অজু দিয়ে আসর মাগরিব ও এশার নামাজ পড়া প্রসঙ্গে?

আন্তঃধর্মীয় সংলাপের গুরুত্ব

ভেজালের দৌরাত্ম্য

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে দেশে স্বৈরাচারী শাসক তৈরি হতেই থাকবে ; অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ ও ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে অস্বস্তি

মেঘনা আলমের আটকাদেশ : সরকারের সঠিক সিদ্ধান্ত

সংক্ষিপ্ত বিশ্বসংবাদ

দিল্লিতে ধূলোঝড়ের তাণ্ডবে ২শ’ ফ্লাইট বিঘ্ন

আল-আকসার ইমামকে ৭ দিনের নিষেধাজ্ঞা ইসরাইলের

পর্যটকদের কাছে টিকিট বিক্রি ইসরাইলের

ইউক্রেনকে রেকর্ড ২১ বিলিয়ন ইউরো সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি মিত্রদের

মার্কিন শুল্ক বিরোধ মোকাবিলায় প্রতিবেশী দেশে নজর চীনের

জনসংখ্যা হ্রাস রোধে হাইস্পিড রেললাইন

১৭ ঘণ্টা পর আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট চালু

হাজার সেনা বরখাস্ত করেছে ইসরাইল

যুক্তরাষ্ট্রে ডিমের দামে সংকটে সাধারণ মানুষ

পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষোভ চলছেই মোদির কুশপুতুল দাহ

তহবিলের অভাবে শ’ শ’ কর্মী ছাঁটাই করছে ওচা

পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করলে চরম মূল্য দিতে হবে ইরানকে : ট্রাম্প

ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম, নতুন রেকর্ড