ঢাকা   রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
ভারতের সভ্যতায় মুসলমানদের অবদান

শের শাহ শুরি : প্রজ্ঞার প্রতাপ-১

Daily Inqilab মুসা আল হাফিজ

২১ জুন ২০২৪, ১২:১৯ এএম | আপডেট: ২১ জুন ২০২৪, ১২:৩০ এএম


শাসক শের শাহর খ্যাতির নিচে তলিয়ে গেছে তার আসল নাম। মা-বাবা তার নাম রেখেছিলেন ফরিদুদ্দীন খান। সেনাপতি ও শাসক হিসেবে প্রথমে তিনি ছিলেন শের খান। ১৫৪০ খ্রিষ্টাব্দে সম্রাট হুমাযূনকে পরাজিত করার পরে তিনি হলেন ‘শের শাহ শুরি’।

যেহেতু তিনি পশতুন শুর উপজাতি থেকে এসেছিলেন, তাই তার উপাধী শুরী। ফার্সি ভাষায় শের কথাটির মানে সিংহ বা বাঘ। উপাধিটি তিনি লাভ করেন অসাধারণ সাহসের জন্য। যুবক ফরিদ একটি বাঘকে হত্যা করেছিলেন, যেটি হঠাৎ বিহারের গভর্নর বাহার খান লোহানীর ওপর লাফিয়ে পড়েছিল।

তার দাদা ও বাবা ছিলেন সামন্তপ্রভু। ছোট্ট জায়গীর ছিল তাদের। তার দাদা ইব্রাহিম খান শুর ঘোড়া ব্যবসায়ী হিসাবে শুরু করেছিলেন, এক পর্যায়ে নার্নৌল এলাকায় (বর্তমান হরিয়ানা) জমিদারি লাভ করেন। তার পৃষ্ঠপোষক জামাল খান লোদি তাকে হিসার ফিরোজায় কয়েকটি গ্রাম অর্পণ করেছিলেন। শের শাহের পিতা হাসান খান শুর জামাল খানের চাকরিতে প্রবেশ করেন। ১৪৯৪ সালে, জামাল খান পদোন্নতি লাভ করেন এবং তারপর সিকান্দার খান লোদি বিহারে প্রতিষ্ঠিত হন। জামাল খানের আদেশে সিকান্দার খান হাসানকে বিহারের খোয়াসপুর, সাসারাম এবং হাজিপুরের জমিদারি দেন।

হাসান খান শুরের ছিলেন চার স্ত্রী। প্রত্যেকের দু‘টি করে আট সন্তান। ফরিদ খান সবার বড়, সবচেয়ে যোগ্য। শুধুমাত্র নিজাম খা ছিলেন শেরশাহের সহোদর ভাই। চতুর্থ স্ত্রী তাদের সহ্য করতে পারতেন না। তিনি ছিলেন নিষ্ঠুর। কিন্তু হাসান খান সেই স্ত্রীর প্রভাব থেকে বের হতে পারতেন না। ফলে পিতার বিরাগভাজন হন ফরিদ। পিতা-পুত্রের দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। পারিবারিক কলহের কারণে ফরিদকে বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতে হয়। তিনি জৌনপুরে শিক্ষা লাভ করেন এবং নিজেকে আরো দক্ষ করে তোলেন। অবশেষে বাবার তরফে জমিদারির ব্যবস্থাপক পদের প্রস্তাব পান তিনি। এর মধ্য দিয়ে তার ক্ষমতার উত্থান শুরু। পিতার অঞ্চলগুলিকে শাসন করতেন তিনি। সেখানে আনেন বহুবিধ সংস্কার। যা তাকে খ্যাতি দিয়েছিলো এবং এই অঞ্চল সমৃদ্ধি দেখেছিল। পারিবারিক চক্রান্ত চলমান ছিলো। ফরিদ খান জায়গিরদারের কাছে তার অবস্থান ছেড়ে যান এবং আগ্রা চলে যান। পিতার মৃত্যু অবধি তিনি সেখানেই ছিলেন।

মুগলরা তখন আগ্রার শাসনগ্রহণ করছেন। ফরিদ খান আগ্রায় অবস্থান করে পরিবর্তনগুলোকে খুব কাছ থেকে পাঠ করতে লাগলেন। বাবরের অধীনে মুগলদের নেতৃত্ব গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। সম্রাট বাবরের নজর পড়েছিলো শের শাহের প্রতি। তিনি দেখেছিলেন তার মধ্যে বিশেষ কিছু, যা মুগল ক্ষমতাকে হুমকিতে ফেলে দেবে।


বিভাগ : বিশেষ প্রতিবেদন


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

সম্রাট জাহাঙ্গীর : রূপান্তরের বাদশাহী-৪
সম্রাট জাহাঙ্গীর : রূপান্তরের বাদশাহী-৩
সম্রাট জাহাঙ্গীর : রূপান্তরের বাদশাহী-২
সম্রাট জাহাঙ্গীর : রূপান্তরের বাদশাহী-১
ব্রিটিশ সরকারের তত্বাবধানে বাহদুর শাহ জাফর ও তাঁর বংশধরদের অবস্থা !
আরও

আরও পড়ুন

কুরস্কে ৪০ শতাংশ এলাকার দখল হারিয়েছে ইউক্রেন

কুরস্কে ৪০ শতাংশ এলাকার দখল হারিয়েছে ইউক্রেন

আমরা জমিদার নই,মানুষের পাহারাদার : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আমরা জমিদার নই,মানুষের পাহারাদার : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

জর্ডানে ইসরাইলি দূতাবাসের কাছে গুলি, বন্দুকধারী নিহত

জর্ডানে ইসরাইলি দূতাবাসের কাছে গুলি, বন্দুকধারী নিহত

ট্রাম্পের জয়ের পর ইলন মাস্কের সম্পদ বাড়ছে রকেট গতিতে

ট্রাম্পের জয়ের পর ইলন মাস্কের সম্পদ বাড়ছে রকেট গতিতে

ভয়াবহ তুষারঝড়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাজ্য, বহু ফ্লাইট বাতিল

ভয়াবহ তুষারঝড়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাজ্য, বহু ফ্লাইট বাতিল

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরও ১২০ ফিলিস্তিনি

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরও ১২০ ফিলিস্তিনি

ইভেন্টের  সেরা লড়াইটি উপহার দিলেন আফরা-সানজিদা

ইভেন্টের সেরা লড়াইটি উপহার দিলেন আফরা-সানজিদা

ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান পাহাড়ের পর জয়-জাকিরকে হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ

ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান পাহাড়ের পর জয়-জাকিরকে হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ

নাটকীয় শেষ দশ মিনিটে দুই গোল শোধ করে বার্সাকে রুখে দিল সেল্তা

নাটকীয় শেষ দশ মিনিটে দুই গোল শোধ করে বার্সাকে রুখে দিল সেল্তা

বিবর্ণ সিটিকে ইতিহাদেই বিধ্বস্ত করলো টটেনহ্যাম

বিবর্ণ সিটিকে ইতিহাদেই বিধ্বস্ত করলো টটেনহ্যাম

নটিংহ্যামকে হারিয়ে চার ম্যাচের জয়খরা কাটালো আর্সেনাল

নটিংহ্যামকে হারিয়ে চার ম্যাচের জয়খরা কাটালো আর্সেনাল

স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণের দাবী অত্যন্ত যৌক্তিক

স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণের দাবী অত্যন্ত যৌক্তিক

পাঠ্যবই ছাপায় অনিয়মে আনন্দ প্রিন্টার্সকে সতর্কতা

পাঠ্যবই ছাপায় অনিয়মে আনন্দ প্রিন্টার্সকে সতর্কতা

দক্ষিণ লেবাননে ৬ চিকিৎসাকর্মী নিহত

দক্ষিণ লেবাননে ৬ চিকিৎসাকর্মী নিহত

জনগণের সাথে জনসংযোগ বাড়াতে হবে

জনগণের সাথে জনসংযোগ বাড়াতে হবে

আমরা যুদ্ধে বিশ্বাসী না কেউ গায়ে পড়লে জবাবের প্রস্তুতি রাখতে হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

আমরা যুদ্ধে বিশ্বাসী না কেউ গায়ে পড়লে জবাবের প্রস্তুতি রাখতে হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

বাফুফের নতুন সভাপতি তাবিথের কাছে ২৭ রেফারির চিঠি

বাফুফের নতুন সভাপতি তাবিথের কাছে ২৭ রেফারির চিঠি

ফের বাড়লো সোনার দাম, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা

ফের বাড়লো সোনার দাম, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা

বাংলাদেশে খেলা নিয়ে অনিশ্চিয়তায় হামজা!

বাংলাদেশে খেলা নিয়ে অনিশ্চিয়তায় হামজা!

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেই হবে অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফের খেলা

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেই হবে অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফের খেলা