আকবর দ্য গ্রেট-৮
৩০ আগস্ট ২০২৪, ১২:১৮ এএম | আপডেট: ৩০ আগস্ট ২০২৪, ১২:১৮ এএম

একজন ইংরেজ ভ্রামণিকের উদ্ধৃতি দিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আকবরের ধর্মদৃষ্টিকে বয়ান করেছেন। একটি ঘটনার মধ্যদিয়ে তা লক্ষ্য করেছেন তিনি। ‘আকবর শাহের মাতৃভক্তি অত্যন্ত প্রবল ছিল। এমনকি, এক সময়ে যখন তাঁহার মা পালকি চড়িয়া লাহোর হইতে আগ্রায় যাইতেছিলেন, তখন আকবর এবং তাঁহার দেখাদেখি অন্যান্য বড়ো বড়ো ওমরাওগণ নিজের কাঁধে পালকি লইয়া তাঁহাকে নদী পার করিয়াছিলেন। সম্রাটের মা সম্রাটকে যাহা বলিতেন তিনি তাহাই পালন করিতেন। কেবল আকবর শা মায়ের একটি আজ্ঞা পালন করেন নাই। সম্রাটের মা সংবাদ পাইয়াছিলেন যে পর্তুগিজ নাবিকগণ একটি মুসলমান জাহাজ লুট করিয়া একখানা কোরান গ্রন্থ পাইয়াছিল, তাহারা সেই গ্রন্থ একটি কুকুরের গলায় বাঁধিয়া বাজনা বাজাইয়া অর্মজ শহর প্রদক্ষিণ করিয়াছিল।
এই সংবাদে ক্রুদ্ধ হইয়া সম্রাটমাতা আকবরকে অনুরোধ করিয়াছিলেন, যে একখানা বাইবেল গাধার গলায় বাঁধিয়া আগ্রা শহর ঘোরানো হউক। সম্রাট তাহার উত্তরে বলিয়াছিলেন, ‘যে কার্য একদল পর্তুগালবাসীর পক্ষেই নিন্দনীয় সে কার্য একজন সম্রাটের পক্ষে অত্যন্ত গর্হিত সন্দেহ নাই। কোনো ধর্মের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করিলে ঈশ্বরের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করা হয়। অতএব, আমি একখানা নিরীহ গ্রন্থের উপর দিয়া প্রতিশোধস্পৃহা চরিতার্থ করিতে পারিব না।’
এই ঘটনা আকবরের মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া তৈরি করেনি। তিনি গোয়াতে অবস্থানরত পর্তুগীজদের কাছে খ্রিস্টান পাদ্রী প্রেরণের আহŸান জানান। যেন তিনি খ্রিস্টধর্মকে উপলব্ধি করতে পারেন। এতে বর্বররা সাড়া দেয় দ্রæত। ১৫৮০ সালের ১৯ ফেব্রæয়ারি প্রথম প্রতিনিধি দল আকবরের কাছে আসে। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন এনরিকেজ, রিদলজেন একোয়াভিভ আর এস্টোনিভ মনসারেত। তারা প্রায় ২ বছর দরবারে অবস্থান করেন। ১৫৮২ সালের এপ্রিল মাসে প্রথম দলটির বিদায় হলেও আরেকটি দল আসে ১৫৯১ সালে। এই দলের নেতৃত্বে ছিলেন এডওয়ার্ড লিউটন আর ক্রিস্টোফার দ্য ভেগা। একবছর দলটি আকবরের দরবারে ছিলো। ফাদার জেরোম জেভিয়ার, বেনেডিক্ট দ্য গোয়োস আর ইমানুয়েল পিনহিরোর নেতৃত্বাধীন আরেকটি দল আকবরের সমীপে আসে লাহোরে, ১৫৯৫ সালের ঘটনা এটা। ১৬০৫ সালে আকবরের মৃত্যু পর্যন্ত এই মিশনটি মুঘল রাজদরবারে অবস্থান করেছিলো। অপরদিকে ব্রিটিশ রাণী এলিজাবেথ উদ্বিগ্ন ছিলেন পর্তুগীজদের সাথে আকবরের যোগাযোগে। তার পক্ষ থেকে আকবরের কাছে পত্র প্রেরণ করা হয়। সেই সূত্র ধরে পরবর্তীতে ব্রিটিশরা মুঘল সাম্রাজ্যে বাণিজ্যের অনুমতি পায়।
হিন্দুদের প্রতি নিজের আন্তরিকতা প্রকাশের জন্য আকবর রাজপুত নারীদের সাথে বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হন। হিন্দু ধর্মের প্রতি তার আগ্রহ বাড়ে। হিন্দু স্ত্রীদের সুবিধার্থে প্রথমবারের মতো মুঘল প্রাসাদে পূজা-অর্চণার অনুমতি দেয়া হয়।
বিভাগ : বিশেষ প্রতিবেদন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

এক অজু দিয়ে আসর মাগরিব ও এশার নামাজ পড়া প্রসঙ্গে?

আন্তঃধর্মীয় সংলাপের গুরুত্ব

ভেজালের দৌরাত্ম্য

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে দেশে স্বৈরাচারী শাসক তৈরি হতেই থাকবে ; অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ ও ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে অস্বস্তি

মেঘনা আলমের আটকাদেশ : সরকারের সঠিক সিদ্ধান্ত

সংক্ষিপ্ত বিশ্বসংবাদ

দিল্লিতে ধূলোঝড়ের তাণ্ডবে ২শ’ ফ্লাইট বিঘ্ন

আল-আকসার ইমামকে ৭ দিনের নিষেধাজ্ঞা ইসরাইলের

পর্যটকদের কাছে টিকিট বিক্রি ইসরাইলের

ইউক্রেনকে রেকর্ড ২১ বিলিয়ন ইউরো সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি মিত্রদের

মার্কিন শুল্ক বিরোধ মোকাবিলায় প্রতিবেশী দেশে নজর চীনের

জনসংখ্যা হ্রাস রোধে হাইস্পিড রেললাইন

১৭ ঘণ্টা পর আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট চালু

হাজার সেনা বরখাস্ত করেছে ইসরাইল

যুক্তরাষ্ট্রে ডিমের দামে সংকটে সাধারণ মানুষ

পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষোভ চলছেই মোদির কুশপুতুল দাহ

তহবিলের অভাবে শ’ শ’ কর্মী ছাঁটাই করছে ওচা

পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করলে চরম মূল্য দিতে হবে ইরানকে : ট্রাম্প

ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম, নতুন রেকর্ড