সম্রাট জাহাঙ্গীর : রূপান্তরের বাদশাহী-৬

Daily Inqilab মুসা আল হাফিজ

০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০২ এএম

১৬২০ সালে কাশ্মীর ভ্রমণ করেন জাহাঙ্গীর। সেখানে ঝরনায় দেখেন ছোট্ট এক বাদামি ডিপার। তার পায়ের পাতা অধ্যয়ন না করলে পাখিটিকে পুরোপুরি বুঝা যাচ্ছিলো না। সেই অধ্যয়ন প্রয়াসের বিবরণীও আছে তুজুকে। জাহাঙ্গীর লিখেন: ‘ঝরনার ধারে পাখিটি দেখলাম। ... সেটি দীর্ঘ সময় পানির নিচে ডুব দিয়ে থাকতে পারে এবং এক জায়গায় ডুব দিয়ে আরেক জায়গায় ওঠে। দুই-তিনটা পাখি ধরার নির্দেশ দেই, কারণ আমি জানতে আগ্রহী ছিলাম যে পাখিগুলো মুরগির মতো, নাকি হাঁসের মতো চ্যাপ্টা পায়ের পাতাওয়ালা, নাকি ভূচর পাখিদের মতো ছড়ানো আঙ্গুলের অধিকারী। দুটি পাখি ধরা হয়েছিল, একটা সাথে সাথেই মারা গেল, অন্যটি এক দিন বেঁচে ছিল। এদের পা হাঁসের মতো চ্যাপ্টা ছিল না, ওস্তাদ মনসুরকে এর প্রতিকৃতি আঁকতে বললাম।’ বাল্যকালে দুই সারস ছিলো জাহাঙ্গীরের সংগ্রহশালায়। তিনি এদের নাম দেন লাইলি ও মজনু।

দায়িত্বরত পাখিবিশারদদের প্রতি আদেশ ছিলো তাদের যে কোনো পরিবর্তন ও অভিব্যক্তি যেন নোট করা হয়, জাহাঙ্গীরকে জানানো হয়। যখন পাখিদের মিলন ও ডিম দেবার খবর পেলেন, জাহাঙ্গীর খুব আনন্দিত হলেন। তিনি খুব কাছ থেকে অবলোকন করতে থাকলেন তাদের জীবনকলা। স্ত্রী সারসটির আচরণ, সারা রাত ডিমের উপরে বসে তা দেওয়া, পুরুষ সারসটির সজাগ পাহারা, পরস্পরের কাজ-কর্ম শেয়ার করা ইত্যাদি। একবার নেউল জাতীয় এক প্রাণী তাদের এলাকায় ঢুকে পড়লো। পুরুষ সারসটি প্রবল গতিতে ধাওয়া করে তাকে এলাকাছাড়া করে! সূর্যের আলো ফুটলে পুরুষটি স্ত্রীর কাছে গেলো। তাকে ঠোঁট দিয়ে কিছুক্ষণ খুনসুটি করলো। পরে তার জায়গায় বসে ডিমে তা দেয়া শুরু করে। এভাবে প্রতিটি দিক ও পরিস্থিতির বিবরণী তিনি দেন। ছানাদের জন্ম, বেড়ে ওঠা, পুরুষ সারসের সন্তান বহন, স্নেহের ধরন, খাবার-দাবার ইত্যাদির বিবরণী দিয়েছেন সম্রাট।


বিভাগ : বিশেষ প্রতিবেদন


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

নাব্যতা হারিয়ে দখলদারদের কবলে পড়ে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে একের পর এক নদী
সম্রাট জাহাঙ্গীর : রূপান্তরের বাদশাহী-১২
সম্রাট জাহাঙ্গীর : রূপান্তরের বাদশাহী-১১
সম্রাট জাহাঙ্গীর : রূপান্তরের বাদশাহী-১০
সম্রাট জাহাঙ্গীর : রূপান্তরের বাদশাহী-৯
আরও
X

আরও পড়ুন

এক অজু দিয়ে আসর মাগরিব ও এশার নামাজ পড়া প্রসঙ্গে?

এক অজু দিয়ে আসর মাগরিব ও এশার নামাজ পড়া প্রসঙ্গে?

আন্তঃধর্মীয় সংলাপের গুরুত্ব

আন্তঃধর্মীয় সংলাপের গুরুত্ব

ভেজালের দৌরাত্ম্য

ভেজালের দৌরাত্ম্য

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে দেশে স্বৈরাচারী শাসক তৈরি হতেই থাকবে ; অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে দেশে স্বৈরাচারী শাসক তৈরি হতেই থাকবে ; অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ ও ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে অস্বস্তি

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ ও ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে অস্বস্তি

মেঘনা আলমের আটকাদেশ : সরকারের সঠিক সিদ্ধান্ত

মেঘনা আলমের আটকাদেশ : সরকারের সঠিক সিদ্ধান্ত

সংক্ষিপ্ত বিশ্বসংবাদ

সংক্ষিপ্ত বিশ্বসংবাদ

দিল্লিতে ধূলোঝড়ের তাণ্ডবে ২শ’ ফ্লাইট বিঘ্ন

দিল্লিতে ধূলোঝড়ের তাণ্ডবে ২শ’ ফ্লাইট বিঘ্ন

আল-আকসার ইমামকে ৭ দিনের নিষেধাজ্ঞা ইসরাইলের

আল-আকসার ইমামকে ৭ দিনের নিষেধাজ্ঞা ইসরাইলের

পর্যটকদের কাছে টিকিট বিক্রি ইসরাইলের

পর্যটকদের কাছে টিকিট বিক্রি ইসরাইলের

ইউক্রেনকে রেকর্ড ২১ বিলিয়ন ইউরো সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি মিত্রদের

ইউক্রেনকে রেকর্ড ২১ বিলিয়ন ইউরো সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি মিত্রদের

মার্কিন শুল্ক বিরোধ মোকাবিলায় প্রতিবেশী দেশে নজর চীনের

মার্কিন শুল্ক বিরোধ মোকাবিলায় প্রতিবেশী দেশে নজর চীনের

জনসংখ্যা হ্রাস রোধে হাইস্পিড রেললাইন

জনসংখ্যা হ্রাস রোধে হাইস্পিড রেললাইন

১৭ ঘণ্টা পর আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট চালু

১৭ ঘণ্টা পর আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট চালু

হাজার সেনা বরখাস্ত করেছে ইসরাইল

হাজার সেনা বরখাস্ত করেছে ইসরাইল

যুক্তরাষ্ট্রে ডিমের দামে সংকটে সাধারণ মানুষ

যুক্তরাষ্ট্রে ডিমের দামে সংকটে সাধারণ মানুষ

পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষোভ চলছেই মোদির কুশপুতুল দাহ

পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষোভ চলছেই মোদির কুশপুতুল দাহ

তহবিলের অভাবে শ’ শ’ কর্মী ছাঁটাই করছে ওচা

তহবিলের অভাবে শ’ শ’ কর্মী ছাঁটাই করছে ওচা

পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করলে চরম মূল্য দিতে হবে ইরানকে : ট্রাম্প

পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করলে চরম মূল্য দিতে হবে ইরানকে : ট্রাম্প

ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম, নতুন রেকর্ড

ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম, নতুন রেকর্ড