পেস স্বর্গে স্পিনারদের চ্যালেঞ্জ
২৬ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৪ এএম
বিশ্বকাপের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই বাংলাদেশ ক্রিকেট দল মাঠে নামতে যাচ্ছে কিছুদিনের ভেতরে। সেই ফরম্যাটে যেখানে সবচেয়ে বেশি ‘অস্বস্তি’। ঘরের মাঠে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ দিয়ে পাঁচ মাস পর লাল বলের ক্রিকেটে মাঠে নামার অপেক্ষায় বাংলাদেশ। দেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই টেস্টের এই সিরিজ দিয়ে আরেকটি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চক্রে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ২০২৩-২০২৫ চক্রে নিউজিল্যান্ডেরও এটি প্রথম সিরিজ। এর আগে গত দুটি চক্রই বাংলাদেশ শেষ করেছে টেবিলে সবার নিচে থেকে। প্রথম চক্রে কোনো জয় না পেলেও দ্বিতীয় চক্রে বাংলাদেশ কেবল একটি জয় পায়। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতিতে বাংলাদেশ এবারের আসরেও খেলবে ছয়টি দ্বিপক্ষীয় সিরিজ। মোট ম্যাচ হবে ১২টি। আসছে ২৮ নভেম্বর সিলেটে নিউজিল্যান্ডকে আতিথেয়তা দিয়ে লড়াই শুরু করবে বাংলাদেশ।
ঘরের মাঠে টেস্টে স্পিনই বাংলাদেশের প্রধান শক্তি। আর খেলা যদি হয় উপমহাদেশের বাইরের কোন দলের বিপক্ষে তাহলে তো কথাই নেই। সহজ এই পথেই হাঁটা অনুমেয়। তবে সিলেট টেস্টে এত সহজে সমাধান টানা যাচ্ছে না। বাংলাদেশে খেলা বলেই প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড তেমন প্রস্তুত হয়েই এসেছে। মাত্র তিন পেসারের সঙ্গে স্কোয়াডে রেখেছে বিশেষজ্ঞ চার স্পিনার। উপমহাদেশের বাইরের অন্য দলগুলোর তুলনায় কিউইরা স্পিনেও অনেক পারদর্শী। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাই একদম টার্নিং উইকেট দিলে ঝুঁকিটা বাংলাদেশের জন্যও থাকবে বেশি। বাংলাদেশের ব্যাটারদের তুলনায় স্পিন বরং ভালোই সামলান ব্ল্যাক ক্যাপসরা। হোম কন্ডিশনের সুবিধা এক্ষেত্রে কাজে লাগানো মুশকিল।
সিলেটের উইকেটের ঐতিহ্যের কারণেও একদম টানিং উইকেট পাওয়া কঠিন। এমনিতে বেশ ভালো বাউন্স থাকায় সিলেটে ব্যাটাররা পান বাড়তি সুবিধা। ইনিংসের শুরুর দিকে প্রভাব বিস্তার করেন পেসাররা। নভেম্বরের শেষ প্রান্তে সিলেটে সকাল বেলা শিশিরের প্রভাবও থাকবে। শুরুতে তাই স্পিন নয়, পেসের ভূমিকাই হয়ত মুখ্য থাকবে। বেলা বাড়ার সঙ্গে স্পিনাররা দাপট দেখাতে পারেন। তবে উইকেট মিরপুরের মতো মন্থর হওয়ার সম্ভাবনা কম। স্পোর্টিং উইকেটে সবার জন্যই থাকবে কিছু না কিছু। এমন সারফেসে দক্ষতা আর অভিজ্ঞতায় এগিয়ে থাকা দলই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয়। পুরো শক্তির নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাই এক্ষেত্রে বাংলাদেশের কঠিন চ্যালেঞ্জ।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্রের শুরুর টেস্টে বাংলাদেশ স্কোয়াডে রেখেছে চার স্পিনার। আছেন তিন পেসার। অর্থাৎ দুই দলের সমন্বয়ও প্রায় একই। স্পিন আক্রমণে বাংলাদেশের প্রধান দুই ভরসা তাইজুল ইসলাম আর মেহেদী হাসান মিরাজ আছেন। কিন্তু পেস আক্রমণ নিয়ে স্বাগতিকদের বেশ ভুগতে হতে পারে। চোটের কারণে প্রধান দুই পেসার তাসকিন আহমেদ আর ইবাদত হোসেন নেই। সৈয়দ খালেদ আহমেদের সঙ্গে আছেন শরিফুল ইসলাম আর হাসান মাহমুদ। হাসান আছেন অভিষেকের অপেক্ষায়। প্রতিপক্ষের পেস আক্রমণে অধিনায়ক টিম সাউদির সঙ্গে কাইল জেমিসন আর নেইল ওয়েগনার। দক্ষতা আর অভিজ্ঞতা মাপলে পেস আক্রমণ দিয়ে প্রতিপক্ষের উপর চ্যালেঞ্জ জানানোর অবস্থায় নেই বাংলাদেশ। তারচেয়ে রান করা যায় এমন উইকেটে খেলা হতে পারে একটি ভালো বিকল্প। টেস্টের আয়ু লম্বা করতে পারলে সবার জন্যই সুযোগের দরজা খোলে যাবে।
বিশ্বকাপে বাজে ব্যাট করে খারাপ ফল করা বাংলাদেশের জন্য রান করাটা আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতেও জরুরি। সাকিব আল হাসান ও লিটন দাসের অনুপস্থিতিতে নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিমদের উপর অনেক বেশি নির্ভরশীল থাকতে হবে টিম ম্যানেজমেন্টকে।
টেস্ট চ্যাম্পিয়ণশিপে আগের দুইবারই পয়েন্ট তালিকার নিচে ছিল বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ভালো শুরু করতে পারলে গল্প ভিন্ন হতেও পারে। ভুলে গেলে চলবে না নিউজিল্যান্ডকে গত বছর বাংলাদেশ হারিয়েছিল তাদের মাটিতেই। সেটাও তামিম, সাকিবদের ছাড়াই। এবারও সিলেটে সেই তামিম ও সাকিব নেই। মুমিনুল, মুশফিক, শান্তদের তাই বড় দায়িত্ব নিতে হচ্ছে। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাম্প্রতিক সময়ে ভালো ক্রিকেট খেলতে না পারায় বাংলাদেশকে কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে তা অজানা নয় কারোই। নিজেদের সবচেয়ে স্বাচ্ছন্দ্যের ফরম্যাট ওয়ানডেতে ভরাডুবি হয়েছে। টেস্ট ক্রিকেট এমনিতেও এই ক্রিকেটারদের ‘অস্বস্তির’ জায়গা। পরিসংখ্যান তো তা-ই বলছে, ১৩৮ টেস্টে ১০২ হার। জয় ১৮টি, ড্র-ও ১৮টি। তাই এবারের চক্রে সেই একই চিত্র পাল্টানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ।
তবে প্রতিটি ভোর নতুন আশা দেখায়। বাংলাদেশের ক্রিকেট আকাশেও যদি টেস্ট ক্রিকেটের ভাগ্য পরিবর্তন হয় তাহলে তো ভালোই। ফল নিজেদের পক্ষে না আসুক, শেষ কিছুদিন ধরে লড়াই করার যে মানসিকতা হারিয়ে ফেলেছেন ক্রিকেটাররা, ম্যাচ হারের আগে হেরে যাওয়ার মানসিকতা হয়েছে সেখান থেকে বের হয়ে আসতে পারলেও পরবর্তী সিরিজগুলোতে সুফল মিলবে। নিউজিল্যান্ডের পর শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে আতিথেয়তা দেবে বাংলাদেশ। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে শ্রীলঙ্কা ও অক্টোবর-নভেম্বরে বাংলাদেশে আসবে দক্ষিণ আফ্রিকা। আর বাংলাদেশ সফর করবে ভারত, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তান। পাকিস্তান ও ভারত সফর করবে যথাক্রমে আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে এবং ’২৪ এর শেষ দিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে নিজেদের শেষ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। প্রতিটি সিরিজেই রয়েছে দুটি করে টেস্ট ম্যাচ।
বিভাগ : খেলাধুলা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
মেসির সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন উড়িয়ে দিলেন সেই সাংবাদিক
দেশের মানুষ হাসিনার ফাঁসি চায় :ভোলায় সারজিস আলম
জীবনযাত্রা ব্যয় আরো বাড়তে পারে
সাবেক ওসি শাহ আলমকে ধরতে সারা দেশে রেড অ্যালার্ট
মনে হচ্ছে পারমাণবিক বোমা ফেলা হয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেসে
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ভালোভাবেই হচ্ছে
চাল ও মুরগির বাজার অস্থিতিশীল
সামরিক খাতে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে চায় তুরস্ক
মানুষ জবাই করা আর হাত-পা ভেঙে দেয়ার নাম তাবলিগ নয় :জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ান
মুজিব কোট এখন ‘বাচ্চাদের পটি’
সীমান্তে প্রতিরোধ ব্যূহ
গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আরও ৬ জনের লাশ ঢামেক মর্গে
মালয়েশিয়ায় এনআইডি ও স্মার্ট কার্ড সেবা কার্যক্রম চালু হচ্ছে
সাংবাদিক মিজানুর রহমান খানের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ শনিবার
ক্র্যাবের সভাপতি তমাল, সাধারণ সম্পাদক বাদশাহ্
মুকসুদপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু’গ্রুপে সংঘর্ষ : আহত ২৫
ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক সহযোগী মনে করে তালেবান
মাইনাস টু ফর্মুলার আশা কখনো পূরণ হবে না : আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী
গাজীপুর কারাগারে শ্রমিক লীগ নেতার মৃত্যু
ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে শীর্ষ পর্যায়ের দূত পাঠাবে চীন