ফেডারেশনে উপেক্ষিত ছিলেন সাবেক তারকা অ্যাথলেটরা!
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম | আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
অ্যাডভোকেট আব্দুর রকিব মন্টু, বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের সদ্য পদত্যাগী দুর্নীতি পরায়ণ সাধারণ সম্পাদক। যিনি জাতীয় পর্যায়ের অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতায় কখনও অংশই নেন নি। অথচ তিনি স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর হিসেবে তারকা অ্যাথঔেঁ পরিচয়ে টানা তিনবার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। ২০১৭ সালের মার্চ মাস থেকে চলতি বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত যুবলীগ নেতা মন্টুর দায়িত্বকালে বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনে উপেক্ষিত ছিলেন সাবেক তারকা অ্যাথলেটরা! যারা খেলোয়াড় হিসেবে বাংলাদেশের জন্য শুধু সম্মান বয়েই আনেননি, পরবর্তীতে অ্যাথলেট গড়ার কারিগর হিসেবে সফলও হয়েছিলেন। যাদের হাত ধরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় প্রয়াত শাহ আলম, বিমল চন্দ্র তরফদার ও প্রয়াত মাহবুবুল আলমরা স্বর্ণপদক জিতে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছিলেন। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর সেইসব সাবেক তারকা অ্যাথলেটদের পাত্তাই দেননি মন্টু।
নব্বইয়ের দশকে (১৯৮৫ ও ১৯৮৭) টানা দুই সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসে দ্রুততম মানব হয়ে স্বর্ণজয়ের রেকর্ড ছিল কেবল প্রয়াত অ্যাথলেট শাহ আলমের। ১৯৯৩ সালে ঢাকা এসএ গেমসে ১০০ মিটার স্প্রিন্টে স্বর্ণজয়ী বিমল চন্দ্র তরফদার এবং ১৯৯৫ সালে মাদ্রাজ এসএ গেমসে ২০০ স্প্রিন্টে স্বর্ণজয়ী প্রয়াত অ্যাথলেট মাহবুবুল আলম। স্বর্ণজয়ী এসব অ্যাথলেটদের কোচ ছিলেন আরেক তারকা অ্যাথলেট ও ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম। গত ৭ বছর অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনে অবাঞ্ছিত করে রাখা হয়েছিল তাকে। কেবল শাহ আলমই নন, অ্যাডভোকেট আবদুর রকিব মন্টুর কমিটি ফেডারেশনেই আসতে দেয়নি সাবেক তারকা অ্যাথলেট মো. ইয়াহিয়া, ইকবাল হোসেন, মো.ইব্রাহিম চেঙ্গিস (অ্যাথলেট ও ফেডারেশনের দুইবারের সাধারণ সম্পাদক), মোস্তাক আহমেদ, মাহবুবা বেলিদের। অথচ এদের হাতে ফলেছিল সোনা। অ্যাথলেট গড়ার কারিগরদের বরাবরই অসম্মান করতেন স্বৈরাচারী সংগঠক মন্টু।
গত ৭ বছর দেশের অ্যাথলেটিক্সে শাসন করা কর্তাদের অধিকাংশই ছিলেন অ্যাথলেটদের বাইরের মানুষ। সবশেষ ২০২৩ সালের নির্বাচনেও কমিটিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন, জায়েদুল আলম, মোয়াজ্জেম হোসেন, এসএম ফারুকী হাসান ও জামাল হোসেনের মতো ক্রীড়া জগতের বাইরের লোকেরা। তাই উন্নতির বদলে অবনতির দিকেই গেছে ‘মাদার অব গেমস’ ডিসিপ্লিন খ্যাত অ্যাথলেটিক্স। সোনাঝরা কোচ মো. শাহ আলমের মতো তারকারা ছিলেন উপেক্ষিত। ২০০২ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন মুন্সিগঞ্জের এই অ্যাথলেট। এরপর ২০০৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত শাহ আলম ছিলেন নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক।
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো দেশের ক্রীড়াঙ্গনেও লেগেছে সংস্কারের ছোঁয়া। ফেডারেশনকে দুর্নীতিমুক্ত রাখতে এবং দেশের অ্যাথলেটিক্সকে বাঁচাতে রাষ্ট্রীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত মো. শাহ আলমের সঙ্গে এবার একিভূত হয়েছেন সাবেক অ্যাথলেট ও মাঠ বিশেষজ্ঞ মো. ইয়াহিয়া, সাবেক তারকা অ্যাথলেট মিজানুর রহমান, জ্যোৎ¯œা আফরোজ, ইকবাল হোসেন, মোস্তাক আহমেদ, মিলজার হোসেন, জ্যোৎ¯œা বেগম, রেহানা পারভীন, ফরিদ খান চৌধুরী ও খুরশিদা খুশীরা। এ প্রসঙ্গে মো. শাহ আলম গতকাল বলেন,‘অ্যাথলেটিক্সকে বাঁচাতে অ্যাথলেটদেরই প্রয়োজন। এক সময় এসএ গেমসে স্বর্ণপদক জিতলেও আজ দেশের অ্যাথলেটিক্সে চলছে দুর্দশা। এ থেকে উত্তরণ প্রয়োজন।’ আরেক সাবেক তারকা অ্যাথলেট ইকবাল হোসেন বলেন, ‘এসএ গেমসে স্বর্ণজয়ী প্রয়াত শাহ আলম, গোলাম আম্বিয়া, বিমল চন্দ্র তরফদার ও মাহবুবুল আলমের মতো স্বর্ণজয়ী অ্যাথলেট তৈরী করার কারিগর আমাদের আরেক অ্যাথলেট মো. শাহ আলম ভাই। যিনি আগেও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন ফেডারেশনে। আশাকরি উনার হাতেই ফের আন্তর্জাতিক ট্র্যাকে ফিরবে সোনার হাসি। অ্যাথলেট, কোচ ও সংগঠক- একাধারে তিন ধারাতেই তিনি সফল। দেশের অ্যাথলেটিক্সের সোনালী অতীত ফেরাতে দায়িত্বের মঞ্চে আসা উচিত তারকা অ্যাথলেটদেরই।’
বিভাগ : খেলাধুলা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
শেষ বিকেলে লুইস-অ্যাথানেজের 'আক্ষেপে' ম্যাচে ফিরল বাংলাদেশে
রানআউট হজ,লুইসের ব্যাটে এগোচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
জমকালো 'কনটেনন্ডার সিরিজ',কে কার বিপক্ষে লড়বেন?
তারেক রহমানের আর্থিক সহায়তা নিয়ে সিয়ামের বাড়িতে মীর হেলাল
অবশেষে ২৬ মামলার আসামি কুমিল্লার শীর্ষ সন্ত্রাসী আল-আমিন গ্রেফতার
'জুলাই অনির্বাণ’ এ রক্তপিপাসু হাসিনার নির্মমতা দেখে কাঁদছেন নেটিজেনরা
দেশনেত্রীর প্রতি অপরিসীম শ্রদ্ধা ও সম্মান
বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনসহ সরকারের কাজের পরিধি বিশাল
অদক্ষ ফার্মাসিস্ট দ্বারাই চলছে ফার্মেসি
নির্বাচন কমিশন গঠন : গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু
বেনাপোল দিয়ে যাত্রী পারাপার কমেছে অর্ধেক, রাজস্ব আয় ও ব্যবসা বাণিজ্যে ধস
দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম
মসজিদে পরে এসে ঘাড় ডিঙিয়ে সামনের কাতারে যাওয়া জায়েজ নেই
দুনিয়া ও আখেরাতের জন্য সুন্দর জীবন এবং কৃতজ্ঞতাবোধ
যুগে যুগে জুলুম ও জালিমের পরিণতি
সালাম ইসলামী সম্ভাষণ রীতির এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ
করিমগঞ্জের নাম কি আদৌ শ্রীভূমি দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ?
বিশাল স্বর্ণখনির সন্ধান পেলো চীন
মাছ ধরার নৌকার সঙ্গে ভারতীয় সাবমেরিনের সংঘর্ষ
যৌন পর্যটনের নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠছে টোকিও : বাড়ছে ভিড়