স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক ও নির্যাতনের মামলা করায় বাদী রাজিয়া আফরোজ রাত্রী (১৯) ও তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে পড়েছেন। মামলা তুলে নেয়ার জন্য প্রতিনিয়ত প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে স্বামী ইব্রাহিম হোসেন (২২)।

ফলে স্ত্রী রাজিয়া আফরোজ রাত্রী পরিবার পরিজন নিয়ে একরূপ বন্দী অবস্থায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।

ঘটনা ঘটেছে ঈশ্বরদী পৌর এলাকার ইরকোন গেট এলাকায়। অভিযোগে জানা গেছে, বর্তমানে ঈশ্বরদী পৌর এলাকার ইরকোন গেট এলাকায় বসবাসরত হযরত আলীর মেয়ে রাজিয়া আফরোজ রাত্রী›র সাথে ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়া এলাকার নান্নু সরদারের (৫০) ছেলে ইব্রাহিম হোসেন›র গত ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ বিয়ে হয়।

পূর্ব পরিচয় ও প্রেমের সূত্র ধরে উভয়ের বিয়ে হলেও পরবর্তী কিছুদিন পর থেকেই ইব্রাহিম ১০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবি করতে থাকে স্ত্রী রাজিয়া আফরোজ রাত্রীর কাছে। এতে স্ত্রী রাজিয়া আফরোজ রাত্রী হতভম্ব ও বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে। কারণ দরিদ্র পরিবারের মেয়ে রাত্রীর এই বিপুল অংকের টাকা দেবার সামর্থ্য নেই।

কিন্তু নিষ্ঠুর স্বামী ইব্রাহিম বিষয়টি বুঝতে নারাজ। যৌতুকের টাকার দাবিতে শুরু করে স্ত্রী রাজিয়া আফরোজ রাত্রীর ওপর অমানুষিক নির্যাতন। দিনের পর দিন চলতে থাকে অমানুষিক নির্যাতন। এমতাবস্থায় ১০ মে ২০২২ স্বামী ইব্রাহিম স্ত্রী রাত্রীকে পিতার বাড়িতে রেখে চলে যায়।

কোন প্রকার খরচ তো দেয়ই না অন্যদিকে যৌতুকের টাকা দেয়ার জন্য বার বার এসে চাপ দিতে থাকে। এই বিপুল অংকের টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় পরিবারের লোকজনের সামনেই রাত্রীকে অমানুষিকভাবে আবারও মারধর করে।

এক পর্যায়ে অতিষ্ট হয়ে গত ২০ জুলাই ২০২২ পাবনার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী ০১নং আদালতে মামলা করেন রাজিয়া আফরোজ রাত্রী। যার নম্বর সিআর-৪১৮/২০২২। এই মামলার প্রধান আসামি করা হয় স্বামী ইব্রাহিম হোসেনকে।

অপর দু’জন আসামি করা হয়েছে ইব্রাহিম›র পিতা নান্নু সরদার (৫০) ও মাতা পান্না বেগম (৪২)কে।

এই মামলা দায়ের করার পর ইব্রাহিম আরও ক্ষিপ্ত হয়ে অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং মামলা তুলে নেয়ার জন্য প্রচন্ডচাপ সৃষ্টি করে এবং চাপ সৃষ্টি অব্যাহত রেখেছে। মামলা তুলে নিতে রাজি না হওয়ায় রাজিয়া আফরোজ রাত্রীকে এখন প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে ইব্রাহিম। ফলে চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে পড়েছে সে পরিবার পরিজন নিয়ে।

যেকোন সময় উগ্র ও উশৃঙ্খল ইব্রাহিম রাত্রীর প্রাণহানি ঘটাতে পারে বলে আশংকা করছেন। তিনি তার এবং তার পরিবারের নিরাপত্তার জন্য বিজ্ঞ আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।