স্বল্প খরচ আর স্বল্প সময়ের লাভবান ফসল হওয়াতে সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছে ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলার চাষিরা। উপজেলায় গত বছরের তুলনায় এ বছর সরিষার আবাদ বেড়েছে। মৌসুমের শুরুতে ঘুর্ণিঝড়-বৃষ্টিতে আঘাত হানলেও কৃষকদের মনোবল ভাঙতে পারেনি। সবুজ আর হলুদে ভরে উঠছে মাঠের পর মাঠ। এ বছর বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা।

চলতি মৌসুমে উপজেলার সদরপুর, ঢেউখালী, ভাসানচর ও কৃষ্ণপুর ইউনিয়নে সরিষার আবাদ বেশি হয়েছে। সদরপুর কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, প্রচলিত দেশি সরিষার চেয়ে বারি-১৪ ও বারি-১৮ ফলন বেশি হওয়ায় চাষিরা আগ্রহী হচ্ছে। এ বছর উপজেলায় ২০৯০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় ৩৯০ হেক্টর বেশি। এ বছর সময়মতো ৪ হাজার কৃষককে উন্নত জাতের বারি-১৪ ও বারি-১৮ জাতের সরিষাবীজ, সার ও কীটনাশক দেয়া হয়েছে। ফলে তারা আমন ধান সংগ্রহের পর জমি ফেলে না রেখে সরিষা চাষ করেছেন।

বিভিন্ন সরিষা চাষিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এবার ফলন ভাল হচ্ছে। আবহাওয়ার বিপর্যয় ঘটা বা পোকার আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত না হলে বেশি পরিমাণ সরিষা পাওয়া যাবে।

ঢেউখালী ইউনিয়নের সরিষা চাষি মোয়াজ্জেম মজুমদার জানিয়েছেন, প্রতিবিঘা জমিতে সরিষা চাষে খরচ হয় সর্বোচ্চ তিন হাজার টাকা। প্রতি মণ সরিষা বিক্রি করা যায় ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫শ’ টাকা দরে। প্রতি বিঘাতে গড়ে সাত মণ সরিষা উৎপাদন হলে বিঘা প্রতি ১৫-১৬ হাজার টাকা লাভ করা যায়।

ভাসানচর ইউনিয়নের কৃষক জানিয়েছেন, সরিষা আবাদে সেচের প্রয়োজন হয় না। তাছাড়া কম সময়ে সরিষা ঘরে তোলা যায়। সরিষার বড় শত্রু জাব পোকা। এবার জাব পোকার আক্রমণ দেখা যাচ্ছে না। আশা করা যাচ্ছে, সরিষার ভাল উৎপাদন হবে।

সদরপুর কৃষি কর্মকর্তা নিটুল রায় জানান, উন্নত জাতের সরিষা বারি-১৪ ও বারি -১৮। গাছের উচ্চতা হয় দেড় থেকে ২ ফুটের মতো। আগে সরিষা গাছ বড় হলেও ফলন কম হতো। নতুন জাতের ছোট আকারের এ সরিষা গাছের গোড়া থেকে মাথা পর্যন্ত ফল আসে। বীজ বপনের ৭০ দিনের মধ্যেই খেত থেকে সরিষা সংগ্রহ করা যায়। প্রতি হেক্টরে ২ টন হিসেবে এবছর সদরপুর উপজেলায় ৪ হাজার একশ’ আশি টন সরিষা উৎপাদন হবে। আশা করি এতে উপজেলার সরিষা চাষিরা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন।