ঢাকা   শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৬ আশ্বিন ১৪৩১
পটুয়াখালীতে বছরে সাড়ে তিন শ’ কোটি টাকার পান উৎপাদন

মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক

Daily Inqilab মো. জাকির হোসেন, পটুয়াখালী থেকে

০৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:২৩ এএম | আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:২৩ এএম

বাঙালির চির চেনা প্রাচীন ঐতিহ্যের একটি হচ্ছে পান। গ্রামীণ এ ঐতিহ্য যুগ যুগ ধরে চলে আসার কারনেই দিনে দিনে এর প্রসার বাড়ছে। খরচের চেয়ে অন্তত ২ থেকে ৩ গুন লাভ হওয়ায় পটুয়াখালীতে দিনদিন পান চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা। জেলায় এ বছর সাড়ে তিন শ’ কোটি টাকার পান উৎপাদন হয়েছে। তবে বাম্পার ফলন পেয়েও মুখে হাসি নেই চাষিদের। সার, ওষুধ আর মধ্যস্বত্ব ভোগিদের দৌরত্মে কাঙ্খিত লাভ থেকে বঞ্চিত উপকূলীয় চাষিরা।

বঙ্গপসাগরের কোলঘেষা সর্ব দক্ষিণে উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালী। এ জেলার অর্থকরী ফসলের মধ্যে পান অন্যতম। এ পেশার সঙ্গে এখনো জড়িয়ে আছে হাজার হাজার মানুষের জীবন জীবিকা। কৃষি বিভাগের তথ্য মতে এ বছর জেলায় সাড়ে তিন শ’ কোটি টাকার পান উৎপাদন হয়েছে। তবে বাম্পার ফলন পেয়েও চাষিদের কপালে চিন্তার ভাজ।

ভোর থেকেই কাজে নেমে যান কৃষকরা পান বরজে পান তুলতে। তারপর কয়েক দফা বাছাই শেষে বিক্রি করেন স্থানীয় পাইকারদের কাছে। তবে কয়েক বছরের তুলনায় উৎপাদন প্রত্যাশা ছারিয়েছে এ বছর। তবে সার, খইলের উর্ধ্বগতি দাম আর বাড়তি বাইলনাশক ওষুধের খরচের কারণে কাঙ্খিত লাভ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন পান চাষিরা।

সদর উপজেলার পান চাষি রিয়াজ জানান, শ্রমিক মজুরিসহ সার, খইল আনুষাঙ্গিক খরচ দিনে দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরাসরি বাজারে নিয়ে বিক্রি করার ঝামেলা থেকে রেহাই পেতে মধ্যস্বত্ব ভোগী পাইকারদের কাছে তার সামান্য লাভে পান বিক্রী করে দিতে বাধ্য হচ্ছি। ৫ একর জমিতে পানের আবাদ করেছেন এলাকার আরেক চাষি হেলাল সিকদার। কাঙ্খিত উৎপাদন পেলেও মধ্যস্বত্বভোগির দৌরত্মের কারণে পানের সঠিক মূল্য পাচ্ছেন না তিনি।

মধ্যস্বত্বভোগি ছাড়া সরাসরি পান বিক্রির সুযোগ পেলে তাদের আয় বাড়বে বলে জানান কৃষকরা। এর মাঝেও আগের তুলনায় পানচাষে আয় বাড়ছে বলে জানান অনেকেই।

জেলার গলাচিপার ডাকুয়ার নুরুল ইসলাম জানান, ১৬ কড়া জমিতে ৪ লাখ টাকা খরচ করে ১০ বছর আগে পানের বরজ তৈরি করেন। এখন প্রতি বছর খরচ বাদে ১ লাখ টাকার মত লাভ থাকে। তবে করোনার সময় দীর্ঘ তিন বছর কোন লাভ করতে পারেননি। কোনো প্রণোদনা পাননি তারা, অনেকে এক সময় পথে বসে পড়েন। তিনি আরোও জানান, দিনে দিনে চাষিদের সংখ্যা বাড়ছে। তবে আড়ৎ পান দেয়ার কারণে মধ্যসত্বস্বত্বভোগীরা একটি লাভের বড় অংশ নিয়ে যায়। পটুয়াখালীর পান সারা দেশেই চলে যায়।

জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, জেলায় এ বছর ৬৪৫ হেক্টর জমিতে পানের বরজে ৭ হাজার ৭৫০ মেট্রিকটন পান উৎপাদন হয়েছে। যার বাজার মূল্য সারে তিন শ’ কোটি টাকা। পান চাষিদের প্রশিক্ষণসহ লাভোবানের বিষয় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে তারা কাজ করে যাচ্ছেন।


বিভাগ : অভ্যন্তরীণ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

ফিরেই গোলের দেখা পেলেন রোনালদো,নাসেরের সহজ জয়

ফিরেই গোলের দেখা পেলেন রোনালদো,নাসেরের সহজ জয়

কোহলি রিভিউ না নেওয়ার যে কারণ জানালেন সঞ্জয় মাঞ্জরেকার

কোহলি রিভিউ না নেওয়ার যে কারণ জানালেন সঞ্জয় মাঞ্জরেকার

মাঠের বাইরে নতুন পরিচয়ে মেসি

মাঠের বাইরে নতুন পরিচয়ে মেসি

দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার আহ্বান উপদেষ্টা নাহিদের

দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার আহ্বান উপদেষ্টা নাহিদের

মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক হালাল শোকেসের ২০তম আসরে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ

মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক হালাল শোকেসের ২০তম আসরে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত দেশকে অস্থিতিশীল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে পরাজিত শক্তি

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত দেশকে অস্থিতিশীল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে পরাজিত শক্তি

শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কাল

শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কাল

‘মব জাস্টিস’ বন্ধের আহ্বান বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরামের

‘মব জাস্টিস’ বন্ধের আহ্বান বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরামের

সাত দফা দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ

সাত দফা দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ

গৌরনদীর দই, একবার খাইলেও আর একবার খাই

গৌরনদীর দই, একবার খাইলেও আর একবার খাই

নোয়াখালীতে জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধের দাবি

নোয়াখালীতে জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধের দাবি

স্বর্ণের দাম বেড়ে রেকর্ড ২,৬০৯ ডলার ছাড়িয়েছে

স্বর্ণের দাম বেড়ে রেকর্ড ২,৬০৯ ডলার ছাড়িয়েছে

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ ও বিচার দাবিতে খুলনায় মানববন্ধন

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ ও বিচার দাবিতে খুলনায় মানববন্ধন

গাজায় অব্যাহত ইসরাইলি গণহত্যা ওআইসির নেতারা চেয়ে চেয়ে দেখছেন

গাজায় অব্যাহত ইসরাইলি গণহত্যা ওআইসির নেতারা চেয়ে চেয়ে দেখছেন

চাঁদপুর শহরে সড়ক সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ

চাঁদপুর শহরে সড়ক সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ

সেনা কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়া প্রসঙ্গে

সেনা কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়া প্রসঙ্গে

নোয়াখালীতে ৪৪ দিন পর লাশ উত্তোলন

নোয়াখালীতে ৪৪ দিন পর লাশ উত্তোলন

ভারতের দোসর ও হাসিনামিডিয়ার প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা

ভারতের দোসর ও হাসিনামিডিয়ার প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা

আশাশুনিতে হাজরাখালির নেটপাটায় পানিবন্দি ২শ’ পরিবার

আশাশুনিতে হাজরাখালির নেটপাটায় পানিবন্দি ২শ’ পরিবার

জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের অধিকার খর্ব হবে না: সেলিম উদ্দিন

জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের অধিকার খর্ব হবে না: সেলিম উদ্দিন