জ্বালানি ও নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের অন্তহীন সুযোগ তৈরি হবে

যেসব ইস্যুতে শতভাগ ঐকমত্য

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:১৬ পিএম | আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৬ এএম

এরই মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জি-২০ গ্রুপে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বিকল্প অংশীদার ও বিনিয়োগকারী হিসেবে ওয়াশিংটনের পরিকল্পনা সামনে এনেছেন। যার মাধ্যমে বৈশ্বিক অবকাঠামোতে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোডের চাপকে মোকাবেলা করার চেষ্টা করছেন তিনি। ‘প্রকৃত বড় চুক্তি’ উল্লেখ করে তিনি জানান, দুটি মহাদেশ জুড়ে বন্দর সেতু তৈরি হবে। যা মধ্যপ্রাচ্যকে আরো স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ ও সমন্বিত করে তুলবে। চুক্তি ঘোষণা অনুষ্ঠানে বলেন, এর আওতায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের অন্তহীন সুযোগ তৈরি হবে। যা সম্প্রদায়গুলোর যোগাযোগে কাজ করবে। শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজক ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘আজ যখন আমরা এত বড় সংযোগের উদ্যোগ শুরু করেছি, ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য বড় স্বপ্ন দেখার বীজ বপন করছি।’ যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার জন ফিনার সাংবাদিকদের বলেন, চুক্তিটি এ অঞ্চলের নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে উপকৃত করবে এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। শনিবার সম্মেলনের প্রথমদিনই সদস্যরাষ্ট্রগুলোর সবার সম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে সম্মেলনের আয়োজক দেশ ভারতের উত্থাপিত ‘নয়াদিল্লি ঘোষণা’। বর্তমান আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও অর্থনীতির নানামুখী চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখে বেশ কিছু পয়েন্ট অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে নয়াদিল্লি ঘোষণায়। সেগুলোর মধ্যে শীর্ষ ১০টি পয়েন্ট সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরা হলোÑ পয়েন্ট ১ : জি-২০ জোটের সদস্যরাষ্ট্রগুলো দৃঢ়, টেকসই, ভারসাম্যপূর্ণ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে। এই ঐক্যের মূল লক্ষ্য থাকবে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে জি-২০ জোটভুক্ত দেশগুলোর উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা। পয়েন্ট ২ : ২০৩০ সালের মধ্যে কাক্সিক্ষত উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের এই সমন্বিত প্রয়াসে অবশ্যই প্রকৃত ঐক্য নিশ্চিত করতে হবে। অর্থাৎ কোনো সদস্যরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যাওয়া চলবে না। সবাইকে সাথে নিয়েই এগোতে হবে। পয়েন্ট ৩ : জি-২০ জোটের সদস্যরাষ্ট্রগুলো নিজেদের মধ্যে একটি নিয়মতান্ত্রিক, বৈষম্যহীন, সুষম, মুক্ত, ন্যায়সঙ্গত এবং টেকসই বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তুলবেন। ‘এই বাণিজ্যিক সম্পর্কের লক্ষ্য হবে জোটভুক্ত সব রাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের। যে রাজনীতি এই বাণিজ্যিক সম্পর্ককে সমর্থন করবে, সেই রাজনীতিকেই সমর্থন করবে জি-২০,’ এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে নয়াদিল্লি ঘোষণায়। পয়েন্ট ৪ : সদস্যরাষ্ট্রগুলোর সরকারি খাতের পাশাপাশি বেসরকারি খাতগুলোও যেন আরও উৎপাদনশীল, টেকসই এবং প্রাণবন্ত হয়, সেজন্য জোটের পক্ষ থেকে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া হবে। পয়েন্ট ৫ : ক্লাইমেট পরিবর্তন ও তার জেরে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় জোটগত তৎপরতার আওতা বাড়াবে জি-২০। পয়েন্ট ৬ : ক্লাইমেট পরিবর্তনের অন্যতম প্রধান কারণ জীবাশ্ম জ্বালানির অতিমাত্রায় ব্যবহার। তাই বিশ্ব এখন ক্রমশ কয়লা-জ্বালানি তেলের পরিবর্তে নবায়নযোগ্য পরিবেশবান্ধব জ্বালানির দিকে ঝুঁকছে। জি-২০ সদস্যরাষ্ট্রগুলোও পরিবেশবান্ধব জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়াতে পারে, সেজন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেবে জি-২০। এসবের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণটি হলো কম দামে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা। পয়েন্ট ৭ : জি-২০ জোটের অন্যতম সদস্য রাশিয়া তার প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে গত দেড় বছর ধরে। ‘নয়াদিল্লি ঘোষণা’ অনুযায়ী, এই ইস্যুতে জি-২০ জোটের সদস্যরা জাতিসংঘের সনদ মেনে চলবেন। ওই সনদে দুই বা ততোধিক দেশের মধ্যকার সমস্যা সমাধানে আলোচনা ও কূটনৈতিক পন্থা অনুসরণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। তবে ‘নয়াদিল্লি ঘোষণা’র কোথাও বা সম্মেলনের প্রথম দিনের অতিথিদের কোনো বক্তব্যেই এই যুদ্ধের জন্য দায়ী হিসেবে রাশিয়ার নাম উল্লেখ করা হয়নি। পয়েন্ট ৮ : সদস্যরাষ্ট্রগুলোর খাদ্য ও পুষ্টির নিরাপত্তার বিষয়টিকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেবে জি-২০ জোট। এক্ষেত্রে জোটভুক্ত দেশগুলোর পারস্পরিক নানামুখী আদানপ্রদান ও সহায়তাকে উৎসাহিত করা হবে। সেই সঙ্গে ধান-গম-ভুট্টার মতো প্রচলিত শস্যের পাশাপাশি বাজরা-কুইনোয়া-জোয়ারের মতো কম প্রচলিত শস্যগুলো যেন হারিয়ে না যায়- সেজন্য কৃষিভিত্তিক গবেষণায় জোর দেওয়া হবে। পয়েন্ট ৯ : করোনা মহামারি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ত্রুটিগুলোকে স্পষ্ট করেছে। সদস্যরাষ্ট্রগুলোর স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামোকে আরও দৃঢ় ও সমৃদ্ধ করতে কাজ করবে জি-২০ জোট। পয়েন্ট ১০ : সদস্যরাষ্ট্রগুলোর অর্থনীতি ও অন্যান্য ইস্যুতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নারীরা যেন পুরুষের সমকক্ষ হয় এবং কার্যকরভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে— সেজন্য কাজ করবে জি২০ জোট। এনডিটিভি।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

দুর্নীতির অভিযোগে রাশিয়ার সাবেক প্রতিরক্ষা উপমন্ত্রী গ্রেফতার

দুর্নীতির অভিযোগে রাশিয়ার সাবেক প্রতিরক্ষা উপমন্ত্রী গ্রেফতার

নাহিদসহ ৩ সমন্বয়ককে হাসপাতাল থেকে ডিবি হেফাজতে

নাহিদসহ ৩ সমন্বয়ককে হাসপাতাল থেকে ডিবি হেফাজতে

গাড়ির কসরৎ দেখিয়ে বিখ্যাত কুইন অফ স্মোক

গাড়ির কসরৎ দেখিয়ে বিখ্যাত কুইন অফ স্মোক

১০০ বছর পর প্যারিসে পর্দা উঠলো অলিম্পিকের

১০০ বছর পর প্যারিসে পর্দা উঠলো অলিম্পিকের

‘খান ইউনিসে’ ৪ দিনে বাস্তুচ্যুত প্রায় ২ লাখ

‘খান ইউনিসে’ ৪ দিনে বাস্তুচ্যুত প্রায় ২ লাখ

পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে ভারতের সামনে শ্রীলঙ্কা

পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে ভারতের সামনে শ্রীলঙ্কা

ইসরাইলকে বোমা সরবরাহের নীতি পরিবর্তন করেনি যুক্তরাষ্ট্র

ইসরাইলকে বোমা সরবরাহের নীতি পরিবর্তন করেনি যুক্তরাষ্ট্র

১ সপ্তাহে বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল আদায়ে লোকসান ৬ কোটি

১ সপ্তাহে বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল আদায়ে লোকসান ৬ কোটি

বিজিবির নিরাপত্তায় ট্রেনে জ্বালানি তেল পরিবহন

বিজিবির নিরাপত্তায় ট্রেনে জ্বালানি তেল পরিবহন

বাংলাদেশে সহিংসতা প্রসঙ্গে মমতা, ‘আমাকে শেখাবেন না, বরং আপনারা শিখুন’

বাংলাদেশে সহিংসতা প্রসঙ্গে মমতা, ‘আমাকে শেখাবেন না, বরং আপনারা শিখুন’

চোটজর্জর বার্সাকে নিয়ে চিন্তিত ফ্লিক

চোটজর্জর বার্সাকে নিয়ে চিন্তিত ফ্লিক

বছরের প্রথমার্ধে বিদেশি বিনিয়োগে দারুণ প্রবৃদ্ধি চীনে

বছরের প্রথমার্ধে বিদেশি বিনিয়োগে দারুণ প্রবৃদ্ধি চীনে

জাপানে রেকর্ড বৃষ্টিপাত, সরিয়ে নেওয়া হলো হাজারো মানুষকে

জাপানে রেকর্ড বৃষ্টিপাত, সরিয়ে নেওয়া হলো হাজারো মানুষকে

জন্মভূমির বিপক্ষে মুরের ফিফটি, মাডান্ডের অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ড

জন্মভূমির বিপক্ষে মুরের ফিফটি, মাডান্ডের অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ড

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৮২ রানে থামিয়েও দিনশেষে অস্বস্তিতে ইংল্যান্ড

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৮২ রানে থামিয়েও দিনশেষে অস্বস্তিতে ইংল্যান্ড

পদ্মায় নিখোঁজ নৌপুলিশের সন্ধান মেলেনি ৭ দিনেও

পদ্মায় নিখোঁজ নৌপুলিশের সন্ধান মেলেনি ৭ দিনেও

বেতাগী দরবারে ওরশ আজ

বেতাগী দরবারে ওরশ আজ

সন্ধ্যা হলেই দ্বিগুণ ভাড়া ভোগান্তিতে যাত্রীরা

সন্ধ্যা হলেই দ্বিগুণ ভাড়া ভোগান্তিতে যাত্রীরা

কারফিউ শিথিল করায় টাঙ্গাইলে জনজীবনে কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে

কারফিউ শিথিল করায় টাঙ্গাইলে জনজীবনে কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে

নদী ভাঙনে ৪৫৮ পরিবারের আহাজারি

নদী ভাঙনে ৪৫৮ পরিবারের আহাজারি