ঢাকা   রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
জ্বালানি ও নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের অন্তহীন সুযোগ তৈরি হবে

যেসব ইস্যুতে শতভাগ ঐকমত্য

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:১৬ পিএম | আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৬ এএম

এরই মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জি-২০ গ্রুপে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বিকল্প অংশীদার ও বিনিয়োগকারী হিসেবে ওয়াশিংটনের পরিকল্পনা সামনে এনেছেন। যার মাধ্যমে বৈশ্বিক অবকাঠামোতে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোডের চাপকে মোকাবেলা করার চেষ্টা করছেন তিনি। ‘প্রকৃত বড় চুক্তি’ উল্লেখ করে তিনি জানান, দুটি মহাদেশ জুড়ে বন্দর সেতু তৈরি হবে। যা মধ্যপ্রাচ্যকে আরো স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ ও সমন্বিত করে তুলবে। চুক্তি ঘোষণা অনুষ্ঠানে বলেন, এর আওতায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের অন্তহীন সুযোগ তৈরি হবে। যা সম্প্রদায়গুলোর যোগাযোগে কাজ করবে। শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজক ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘আজ যখন আমরা এত বড় সংযোগের উদ্যোগ শুরু করেছি, ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য বড় স্বপ্ন দেখার বীজ বপন করছি।’ যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার জন ফিনার সাংবাদিকদের বলেন, চুক্তিটি এ অঞ্চলের নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে উপকৃত করবে এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। শনিবার সম্মেলনের প্রথমদিনই সদস্যরাষ্ট্রগুলোর সবার সম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে সম্মেলনের আয়োজক দেশ ভারতের উত্থাপিত ‘নয়াদিল্লি ঘোষণা’। বর্তমান আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও অর্থনীতির নানামুখী চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখে বেশ কিছু পয়েন্ট অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে নয়াদিল্লি ঘোষণায়। সেগুলোর মধ্যে শীর্ষ ১০টি পয়েন্ট সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরা হলোÑ পয়েন্ট ১ : জি-২০ জোটের সদস্যরাষ্ট্রগুলো দৃঢ়, টেকসই, ভারসাম্যপূর্ণ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে। এই ঐক্যের মূল লক্ষ্য থাকবে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে জি-২০ জোটভুক্ত দেশগুলোর উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা। পয়েন্ট ২ : ২০৩০ সালের মধ্যে কাক্সিক্ষত উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের এই সমন্বিত প্রয়াসে অবশ্যই প্রকৃত ঐক্য নিশ্চিত করতে হবে। অর্থাৎ কোনো সদস্যরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যাওয়া চলবে না। সবাইকে সাথে নিয়েই এগোতে হবে। পয়েন্ট ৩ : জি-২০ জোটের সদস্যরাষ্ট্রগুলো নিজেদের মধ্যে একটি নিয়মতান্ত্রিক, বৈষম্যহীন, সুষম, মুক্ত, ন্যায়সঙ্গত এবং টেকসই বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তুলবেন। ‘এই বাণিজ্যিক সম্পর্কের লক্ষ্য হবে জোটভুক্ত সব রাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের। যে রাজনীতি এই বাণিজ্যিক সম্পর্ককে সমর্থন করবে, সেই রাজনীতিকেই সমর্থন করবে জি-২০,’ এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে নয়াদিল্লি ঘোষণায়। পয়েন্ট ৪ : সদস্যরাষ্ট্রগুলোর সরকারি খাতের পাশাপাশি বেসরকারি খাতগুলোও যেন আরও উৎপাদনশীল, টেকসই এবং প্রাণবন্ত হয়, সেজন্য জোটের পক্ষ থেকে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া হবে। পয়েন্ট ৫ : ক্লাইমেট পরিবর্তন ও তার জেরে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় জোটগত তৎপরতার আওতা বাড়াবে জি-২০। পয়েন্ট ৬ : ক্লাইমেট পরিবর্তনের অন্যতম প্রধান কারণ জীবাশ্ম জ্বালানির অতিমাত্রায় ব্যবহার। তাই বিশ্ব এখন ক্রমশ কয়লা-জ্বালানি তেলের পরিবর্তে নবায়নযোগ্য পরিবেশবান্ধব জ্বালানির দিকে ঝুঁকছে। জি-২০ সদস্যরাষ্ট্রগুলোও পরিবেশবান্ধব জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়াতে পারে, সেজন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেবে জি-২০। এসবের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণটি হলো কম দামে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা। পয়েন্ট ৭ : জি-২০ জোটের অন্যতম সদস্য রাশিয়া তার প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে গত দেড় বছর ধরে। ‘নয়াদিল্লি ঘোষণা’ অনুযায়ী, এই ইস্যুতে জি-২০ জোটের সদস্যরা জাতিসংঘের সনদ মেনে চলবেন। ওই সনদে দুই বা ততোধিক দেশের মধ্যকার সমস্যা সমাধানে আলোচনা ও কূটনৈতিক পন্থা অনুসরণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। তবে ‘নয়াদিল্লি ঘোষণা’র কোথাও বা সম্মেলনের প্রথম দিনের অতিথিদের কোনো বক্তব্যেই এই যুদ্ধের জন্য দায়ী হিসেবে রাশিয়ার নাম উল্লেখ করা হয়নি। পয়েন্ট ৮ : সদস্যরাষ্ট্রগুলোর খাদ্য ও পুষ্টির নিরাপত্তার বিষয়টিকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেবে জি-২০ জোট। এক্ষেত্রে জোটভুক্ত দেশগুলোর পারস্পরিক নানামুখী আদানপ্রদান ও সহায়তাকে উৎসাহিত করা হবে। সেই সঙ্গে ধান-গম-ভুট্টার মতো প্রচলিত শস্যের পাশাপাশি বাজরা-কুইনোয়া-জোয়ারের মতো কম প্রচলিত শস্যগুলো যেন হারিয়ে না যায়- সেজন্য কৃষিভিত্তিক গবেষণায় জোর দেওয়া হবে। পয়েন্ট ৯ : করোনা মহামারি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ত্রুটিগুলোকে স্পষ্ট করেছে। সদস্যরাষ্ট্রগুলোর স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামোকে আরও দৃঢ় ও সমৃদ্ধ করতে কাজ করবে জি-২০ জোট। পয়েন্ট ১০ : সদস্যরাষ্ট্রগুলোর অর্থনীতি ও অন্যান্য ইস্যুতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নারীরা যেন পুরুষের সমকক্ষ হয় এবং কার্যকরভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে— সেজন্য কাজ করবে জি২০ জোট। এনডিটিভি।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

গোল উৎসবে নেশন্স কাপে উড়ন্ত সূচনা জার্মানির

গোল উৎসবে নেশন্স কাপে উড়ন্ত সূচনা জার্মানির

জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু

জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু

পোপের ১৫৪ রানের পরেও ইংল্যান্ডের ৩২৫,কামিন্দু-সিলভায় লংকানদের লড়াই

পোপের ১৫৪ রানের পরেও ইংল্যান্ডের ৩২৫,কামিন্দু-সিলভায় লংকানদের লড়াই

স্কটল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো অস্ট্রেলিয়া

স্কটল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো অস্ট্রেলিয়া

মানিকগঞ্জে ইছামতী নদীতে থেকে মরদেহ উদ্ধার

মানিকগঞ্জে ইছামতী নদীতে থেকে মরদেহ উদ্ধার

‌'শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কঠাগড়ায় দাঁড় করাতে হবে'

‌'শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কঠাগড়ায় দাঁড় করাতে হবে'

শেষ ম্যাচও জিততে চায় বাংলাদেশ

শেষ ম্যাচও জিততে চায় বাংলাদেশ

সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জামায়াতকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে

সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জামায়াতকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে

আইওসির কোচিং কোর্সে বাংলাদেশের মাহফিজুল

আইওসির কোচিং কোর্সে বাংলাদেশের মাহফিজুল

নাটোরে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ শুরু

নাটোরে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ শুরু

পটিয়ায় জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদ্ন্নুবী অনুষ্ঠিত

পটিয়ায় জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদ্ন্নুবী অনুষ্ঠিত

মীরসরাইয়ে কমছে পানি তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন

মীরসরাইয়ে কমছে পানি তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন

বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না

বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না

নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়াই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব

নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়াই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব

নেমে গেছে বানের পানি স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতচিহ্ন

নেমে গেছে বানের পানি স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতচিহ্ন

সভাপতি শওকত সম্পাদক মানিক

সভাপতি শওকত সম্পাদক মানিক

সংযোগ সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে ৬ গ্রামবাসী

সংযোগ সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে ৬ গ্রামবাসী

বাড়িভিটা হারিয়ে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ

বাড়িভিটা হারিয়ে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ

ভয়াবহ বন্যায় কৃষি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের সর্বনাশ

ভয়াবহ বন্যায় কৃষি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের সর্বনাশ

মাদরাসা শিক্ষার সংস্কার : একটি পর্যালোচনা

মাদরাসা শিক্ষার সংস্কার : একটি পর্যালোচনা