ফিলিস্তিনিদের শুধু ডায়াপার পরিয়ে ঠাণ্ডায় ফেলে রাখছে ইসরাইলিরা
২১ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৪ এএম

আটক ফিলিস্তিনি পুরুষদের ঠান্ডার মধ্যে সব পোশাক খুলে নিয়ে শুধুমাত্র একটি ডায়াপার পরিয়ে ছেড়ে দিয়েছে ইসরাইলি সেনারা। জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। শুক্রবার গাজা সফর শেষে অজিথ সাংঘে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, গাজায় আটক পুরুষদের অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে রাখে ইসরাইলি সেনারা। এসব বন্দির ওপর শারীরিক নিপীড়ন চালানো হয়। এদের অনেককে ৩০ থেকে ৫৫ দিন পর্যন্ত আটক রাখা হয়। অজিথ গাজায় মুক্তি পাওয়া এসব বন্দিদের কয়েক জনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তিনি বলেন, পরবর্তীতে ছেড়ে দেওয়া হয় এমন কয়েক জন পুরুষ জানিয়েছেন ঠান্ডা আবহাওয়ায় পর্যাপ্ত পোশাক ছাড়া তারা শুধুমাত্র ডায়াপার পরেছিল।’ কেন তাদের ডায়াপার পরানো হয়েছিল তা স্পষ্ট নয় উল্লেখ করে অজিথ বলেন, ‘তারা স্পষ্টতই হতবাক হয়ে গিয়েছিল। এমনকি আমি যখন তাদের সঙ্গে দেখা করেছি তখনও তারা কেঁপে উঠেছিল।’ যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর প্রকাশ করা বেশ কয়েকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, শত শত ফিলিস্তিনি পুরুষকে তাদের অন্তর্বাস খুলে ঠান্ডার মধ্যে খোলা আকাশের নিচে বসিয়ে রাখা হয়েছে। কখনও কখনও চোখ বেঁধে তাদের ফেলে রাখা হয়েছে। কয়েকটি ভিডিওতে নারী ও শিশুদেরও দেখা গেছে। চলতি সপ্তাহে আল ইসরা ইউনিভার্সিটি গাজার সর্বশেষ প্রধান সরকারি ভবন ছিল যেটি মানচিত্র থেকে অদৃশ্য হয়ে গেছে। ভবনটিকে ইসরাইলি বাহিনী উড়িয়ে দিয়েছে। গাজার যুদ্ধ ইতিমধ্যেই অভূতপূর্ব প্রাণহানি ঘটিয়েছে। কিন্তু সরকারি ও বেসরকারি ভবন ধ্বংসের বিষয়েও উদ্বেগ বাড়ছে। এখন জাতিসংঘের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিবিসি নিউজকে তার আশঙ্কার কথা বলেছেন যে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ফলে গাজা থেকে হারিয়ে যেতে পারে একটি প্রজন্ম। ইউনাইটেড নেশনস অফিস ফর দ্য কো-অর্ডিনেশন অফ হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ওচা) যুদ্ধের প্রভাবের উপর নিয়মিত বুলেটিন প্রকাশ করে এবং তারা খারাপ পরিস্থিতিগুলো তুলে ধরে। সংস্থাটির সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গাজার অন্তত ৬০ শতাংশ বাড়ি বা আবাসন ইউনিট ‘ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত’ হয়েছে। প্রতি ১০টি স্কুলের মধ্যে নয়টির ‘উল্লেখযোগ্য ক্ষতি’ হয়েছে। হাসপাতাল, সরকারি ভবন এবং বিদ্যুতের নেটওয়ার্কগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে লাখ লাখ মানুষ। ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের ব্যাপারে বিশেষ দায়িত্ব পাওয়া জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-এর কমিশনার জেনারেল ফিলিপ লাজারিনি যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় তার চতুর্থ সফর শেষ করেছেন। বিবিসিকে লাজারিনি বলেন, ‘প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয় ব্যবস্থায় ৫ লাখেরও বেশি শিশু রয়েছে। আপনি যদি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে যাওয়া লোকদের তাদের বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে না পারেন তবে তারা কীভাবে স্কুলে ফিরে যাবে? এবং আমি ভয় পাচ্ছি যে আমরা এখানে একটি প্রজন্মের শিশুদের হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছি।’ অপর এক খবরে বলা হয়, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব প্রকাশ্যে প্রত্যাখ্যান করেছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইসরাইলের দূরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে বলে শুক্রবার জানিয়েছে বিবিসি অনলাইন। সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু বলেছিলেন, জর্ডান নদীর পশ্চিমের সব ভূমির উপর ইসরাইলের অবশ্যই নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে, যা ভবিষ্যতের যেকোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের অঞ্চলকে অন্তর্ভুক্ত করবে। তিনি বলেন, ‘এটি একটি প্রয়োজনীয় শর্ত এবং এটি (ফিলিস্তিনের) সার্বভৌমত্বের ধারণার সাথে সাংঘর্ষিক। কী করতে হবে? আমি আমাদের আমেরিকান বন্ধুদের এই সত্যটি বলি এবং আমি আমাদের উপর এমন একটি বাস্তবতা চাপিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টাও বন্ধ করে দিয়েছি যা ইসরাইলের নিরাপত্তার ক্ষতি করবে।’ এর প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ফিলিস্তিনের সার্বভৌমত্বের স্পষ্ট প্রত্যাখ্যান সত্ত্বেও ইসরাইলি কর্মকর্তাদের ওপর বিষয়টির জন্য চাপ দেওয়া বন্ধ রাখবে না। যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যের শান্তির জন্য ইসরাইল ও ফিলিস্তিন পৃথক রাষ্ট্রের ধারণাকে সমর্থন দিয়ে আসছে। তবে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এর কট্টোর বিরোধী। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, দ্বিরাষ্ট্র ইস্যুটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল অবশ্যই ভিন্নভাবে দেখে। আল-জাজিরা, বিবিসি।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

সিংগাইরে অজ্ঞাত এক নারির লাশ উদ্ধার

চৌদ্দগ্রামে বর্ধিত ইজারা মূল্য প্রত্যাহারের দাবিতে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ

রাজশাহীতে দুই ট্রেনের সংঘর্ষ, এক লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ

শিবগঞ্জে মাদ্রাসার দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ

কলাপাড়ায় ধর্ষণ বিরোধী লাঠি মিছিল, বিক্ষোভ ও সমাবেশ

৮০৪ নম্বর টুপি পরে ইমরান খানকে স্মরণ করায় আমের জামালকে জরিমানা

ঝিনাইদহে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অবৈধ গাইড বইয়ের কারখানার সন্ধান!

বেশিরভাগ পণ্যের দাম নিম্নমুখী, বাজারে স্বস্তি

রাশিয়ার যুদ্ধবিমান দক্ষিণ কোরিয়ার আকাশসীমার কাছাকাছি প্রবেশ

আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার বিচার ৭ দিনের মধ্যে শুরুর আহবান বিএনপি নেতা কাজী শিপনের

ঈশ্বরদীতে অগ্নিকাণ্ডে এক পরিবারের ৫টি ঘর ভস্মীভূত, ক্ষয়ক্ষতি প্রায় ১০ লাখ টাকা

রাজবাড়ীতে আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার

রাজশাহীতে দুই ট্রেনের সংঘর্ষ, এক লাইনে বন্ধ ট্রেন চলাচল

আটঘরিয়ার দুই এতিম ও অসহায় শিশুর দায়িত্ব নিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান

ট্রাম্পের অনুরোধের পর ইউক্রেনের সেনাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান পুতিনের

ইরাকে মার্কিন অভিযানে সিনিয়র আইএস নেতা নিহত

কেশবপুর খ্রিস্টান মিশনে ৯ম শ্রেণি ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যু

আছিয়ার চিকিৎসা, মৃত্যু, আসামী গ্রেফতার ও হেলিকপ্টারে চড়ে জানাজায় অংশগ্রহণ নিয়ে যা বললেন সারজিস

সুপার ওভারে শূন্য রানের বিশ্বরেকর্ড

‘ইনকিলাব মঞ্চে’র পদযাত্রা প্রত্যাহার, ২ দফা দাবি ঘোষণা