পশ্চিমা বিশ্বব্যবস্থার বিপক্ষে বেইজিং রাশিয়া ভাঙবে, চীন নতুন করে গড়বে
০২ জুন ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ০২ জুন ২০২৪, ১২:০২ এএম
এই কঠিন এবং হিংস্র সময়ে, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কূটনৈতিক সমন্বয়হীনতার বিষয়ে উদ্বেগ করা অদ্ভুত বলে মনে হতে পারে। তবে এর কাঠামোটি নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে একটি বাঁধা। নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, চীন, ফ্রান্স এবং রাশিয়ার ভারসাম্য রক্ষা হয় দুই বছরের মেয়াদে আরও দশটি নির্বাচিত দেশ দ্বারা।
জাতিসংঘের এই পরিষদের নীতিমালাগুলি বছরের পর বছর ধরে নিপিড়ক, সন্ত্রাসবাদী এবং বিদ্রোহকারী নেতাদের উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, শান্তিরক্ষা অভিযান, অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা, নূন্যতমভাবে আন্তর্জাতিক তদন্ত আরোপ করে আসছে, যারা অন্যথায় সম্পূর্ণ দায়মুক্তি ভোগ করতে পারতো। এখন সেই ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ছে।
জাতিসংঘের উন্নয়নশীল বিশ্বের অনেক সদস্য রাষ্ট্রের সাথে মতো অনেক পশ্চিমা দেশ গাজায় ইসরায়েলি কর্মকাণ্ডের নিন্দা করে, এমন প্রস্তাবে ভেটো দেয়ার জন্য এবং নিরাপত্তা পরিষদকে দুর্বল করে দেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করেছে। এছাড়া, ১৯৪৫ সাল-পরবর্তী বিশ্ব ব্যবস্থা কায়েম করার জন্যও দেশটির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়।
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পরপরই মার্কিন কর্মকর্তারা রাশিয়ার নিন্দা জানিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব উপস্তাপন করেন। কিন্তু চীন রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকে। চীনা কূটনীতিকরা ইউক্রেনের যুদ্ধের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে যথাযথভাবে দায়ী করে। বেইজিং যুক্তি দিয়েছে যে, পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর বিস্তার রাশিয়াকে কোণঠাসা করে দিয়েছে। এরপর, যুক্তরাষ্ট্র-পন্থী কূটনীতিকরা নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়ার নির্ভরযোগ্য সমর্থক চীন সম্পর্কে প্রশ্ন তুলেছেন।
চীন নিজেকে জাতিসংঘ ব্যবস্থার রক্ষক বলে মনে করে। স্থায়ী সদস্যদের ভেটো অধিকার সহ নিরাপত্তা পরিষদের কাঠামোটি একটি সুশৃঙ্খল বিশ্বের জন্য চীনের দৃষ্টিভঙ্গির সাথে মিলে যায়। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা বৃহৎ এবং ছোট দেশগুলির মধ্যে ন্যায্যতা এবং সমতার একটি ভারসাম্য রাখার কথা বলেন।
চীনের বক্তব্য পশ্চিমা বিরোধী হয়ে উঠলেও, বিশেষজ্ঞরা নিরাপত্তা পরিষদে চীনা বাস্তববাদের নিদর্শন দেখেছেন। ২০২২ সালে চীন আফগানিস্তানে জাতিসংঘ মিশনের পুনর্নবায়নের জন্য রাশিয়ার সমর্থন চেয়েছিল। উল্লেখিত প্রতিটি গুরুতর ক্ষেত্রে, সিরিয়া, মালি এবং উত্তর কোরিয়া জড়িত, যেখানে চীন রাশিয়ার সাথে যোগ দিয়ে ভেটো দেয়ার পরিবর্তে ভোট থেকে বিরত থেকে স্পষ্টতই মধ্যপন্থী অবস্থান নিয়েছে। চীনের এই দৃষ্টিভঙ্গিটি কম নাটকীয়, তবে নি:সন্দেহে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
আশঙ্কা বাড়ছে যে, চীন রাশিয়ার কাছ থেবে সুবিধা পেতে চায়। সিরিয়া, মালি ও উত্তর কোরিয়ার সার্বভৌম অধিকার উপেক্ষা করে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা জারি করার সমালোচনাতে রাশিয়ার সাথে যোগ দিয়েছে চীন। গবেষণা সংস্থা ক্রাইসিস গ্রুপের রিচার্ড গোয়ান বলেন, ‘চীন তার দিনে আফ্রিকার দেশগুলিতে জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষা মিশনগুলিকে দরকারী বলে মনে করেছে যেখানে তার অর্থনৈতিক স্বার্থ রয়েছে। তবে বিস্তৃতভাবে, আফ্রিকান দেশগুলি প্রাক্তন ঔপনিবেশিক শক্তির দ্বারা পিড়িত এবং ক্লান্ত।’
গোয়ান বলেন যে, চীন ও রাশিয়া আফ্রিকান সদস্যদের আস্থা জয় করতে করতে আগ্রহী। ২৩শে মে আফ্রিকা সম্পর্কে একটি বিতর্কে চীনের জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত ফু কং আফ্রিকান সদস্যদের উপর আধিপত্য বিস্তারে আগ্রহী ঔপনিবেশিক যুগের পুরানো মানসিকতা, আফ্রিকান রাষ্ট্রগুলির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অনিচ্ছাকৃতভাবে হস্তক্ষেপ করা এবং সর্বদা চাপ ও নিষেধাজ্ঞার আশ্রয় নেওয়ার জন্য পশ্চিমা দেশগুলির সমালোচনা করেন।
বেইজিং উত্তর কোরিয়ার উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার লক্ষ্যে চীন-রাশিয়ার প্রস্তাবগুলি প্রত্যাখ্যান করার জন্য পশ্চিমা দেশগুলিকে দোষারোপ করে। চীন মনে করে বৈদেশিক বাণিজ্যের মাধ্যমে সমৃদ্ধি লাভ করতে হলে বিশে^ স্থিতিশীলতার প্রয়োজন। এই লক্ষ্যে জাতিসংঘ কীভাবে কাজ করবে, তাতে পশ্চিমারা ছড়ি ঘোরানোতে দেশটি অসন্তুষ্ট। রাশিয়াকে তার নিষেধাজ্ঞা এবং অধিকার লঙ্ঘনকারীদের উপর নজরদারি করা সহ পুরানো বিশ^ ব্যবস্থাটি ভেঙে ফেলার সুযোগ করে দিচ্ছে চীন। এবং পরবর্তী বিশ^ কেমন হবে, সেটি সম্ভবত নির্ধারণ করবে বেইজিং।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
নড়াইলে গরু চোর সন্দেহে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা
চৌগাছায় পল্লী বিদ্যুতের নতুন সংযোগ বন্ধ, বিপাকে গ্রাহকরা
ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা দিয়ে রাষ্ট্রের টাকার অপচয় করেছে আওয়ামী সরকার- বিএনপির কেন্দ্রীয় গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক শামীম
ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস খোলার চক্রান্ত রুখে দিতে হবে -ইসলামী আইনজীবী পরিষদ
ঐক্যবদ্ধ্য ভাবে চাঁদাবাজির মূল উৎসগুলো উৎপাটন করতে হবে ..সোনারগাঁওয়ে এস এম ওয়ালিউর রহমান আপেল
কেনাকাটা করতে গিয়ে বিপত্তি, খোদ ফরাসি রাষ্ট্রদূতের মোবাইল চুরি চাঁদনি চকে!
‘ছাত্র-জনতা দুস্কৃতিকারী’ বলার পুরস্কার সদর দফতরের অতিরিক্ত আইজিপি!
কেমন শিক্ষাঙ্গন চায় জানতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রদলের মতবিনিময়
পালিয়ে বিয়ে করে হয়রানির শিকার হয়েছিলেন কোক স্টুডিও তারকা
ব্রাহ্মণপাড়ায় সীরাতুন্নবী (সা.) মাহফিল অনুষ্ঠিত
ইসরাইলকে জব্দ করতে সামরিক বাজেট ৩ গুন বাড়াচ্ছে ইরান
ইবির চারুকলা বিভাগের নতুন সভাপতি ড. কামরুল
৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগের পতন তাদের দোসররা এখনো ঘাপটি মেরে আছে তাই সজাগ থাকতে হবে - বাদশা
শেরপুরে সেনাবাহিনী-মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিপ্তরের যৌথ অভিযানে ২ নারী গ্রেপ্তার গাঁজা-ইয়াবাসহ মাদকদ্রব্য ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার
পরিকল্পিতভাবে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে হত্যার অভিযোগ করলেন মাসুদ সাঈদী
সোনাইমুড়ীতে জামায়াতের ইউনিয়ন কর্মী সম্মেলন
দেবহাটা কলেজের সহকারি অধ্যাপক রবিউল ইসলাম সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত
ঢাবি ভর্তি পরীক্ষার ফি কমাতে উপাচার্যের কাছে শিবিরের স্মারকলিপি
দীর্ঘ ৮ বছর পর নিজ এলাকা করিমগঞ্জে সংবর্ধনায় ড. ওসমান ফারুক
আমাকে শান্তিতে থাকতে দিন: উয়েফাকে মরিনহো