ট্রাম্পের আদেশের বিরুদ্ধে ২২ রাজ্যে মামলা
২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০৫ এএম
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতেই বিতর্কিত নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন, যেখানে বলা হয়েছে, অবৈধ অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী শিশুরা আর জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাবে না। এই আদেশের বিরুদ্ধে ২২টি রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলরা আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের সংবিধানগত নীতির বিরোধিতা করেছে এবং এটি নিয়ে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ট্রাম্প তার দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই এই নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেয়া শিশুদের নাগরিকত্ব স্বীকৃতির ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করা হয়েছে। এই আদেশে বলা হয়, অবৈধ অভিবাসীদের সন্তানরা আর নাগরিকত্ব পাবে না। এমনকি যারা আইনসম্মতভাবে অস্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন, যেমন শিক্ষার্থী বা পর্যটক, তাদের সন্তানদের ক্ষেত্রেও এই আদেশ কার্যকর হবে। ট্রাম্পের দাবি, ১৪তম সংশোধনীতে বলা ্রযুক্তরাষ্ট্রের অধীনস্থ” শব্দগুচ্ছ এসব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। এই আদেশের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার(২১জানুয়ারি) ২২টি রাজ্য দুইটি পৃথক ফেডারেল আদালতে মামলা করেছে। ম্যাসাচুসেটসে দায়েরকৃত মামলায় ১৮টি রাজ্য এবং সান ফ্রান্সিসকো ও ওয়াশিংটন ডিসি যুক্ত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীর প্রথম বাক্যেই ‘জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের’ নীতির বিষয়টি বলা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া বা নাগরিক অধিকার পাওয়া সব ব্যক্তিই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক এবং রাষ্ট্রের যেখানেই তারা বাস করুন না কেন।এখানে দাবি করা হয়েছে যে, ১৪তম সংশোধনী অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া যে কোনো শিশু জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পায় এবং এটি বদলানোর ক্ষমতা প্রেসিডেন্ট বা কংগ্রেসের নেই। ওয়াশিংটনের অ্যাটর্নি জেনারেল নিক ব্রাউন বলেন, এই আদেশ প্রতি বছর ১,৫০,০০০ নবজাতককে নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করবে। শুধু ক্যালিফোর্নিয়াতেই প্রতিবছর ২০,০০০ শিশু নাগরিকত্ব হারাবে। ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল রব বন্টা বলেন, ্রআমরা আইন রক্ষার প্রতিশ্রুতি রাখতে চাই।গ্ধ
উল্লেখ্য, জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীতে এসেছে। যেখানে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া সব ব্যক্তিই মার্কিন নাগরিক। যদিও ট্রাম্প এই সুযোগ বন্ধ করতে সোচ্চার হয়েছেন। কিন্তু তার এই উদ্যোগকে উল্লেখযোগ্য আইনি বাধা অতিক্রম করতে হবে। দ্য আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন এবং অন্য গ্রুপগুলো তাৎক্ষণিকভাবে এই নির্বাহী আদেশের বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। আইনি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই আদেশ ১৪তম সংশোধনীর দীর্ঘকালীন আইনি ব্যাখ্যার বিরোধিতা করেছে এবং আদালতে এটি টিকবে না। ইয়েল ল স্কুলের অধ্যাপক আখিল রিড আমর বলেছেন, “এই আদেশ এতটাই চরম ও অবাস্তব যে আদালত এটি বাতিল করবে।”
ট্রাম্পের সমর্থিত কিছু বিচারপতি এই বিষয়ে সহানুভূতিশীল হতে পারেন, তবে বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞের মতে, আদালত এই ধরনের সাংবিধানিক পরিবর্তন প্রেসিডেন্টের একতরফা ক্ষমতার বাইরে বলে রায় দেবে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই আদেশ সংবিধানের দীর্ঘদিনের ব্যাখ্যা এবং নীতি লঙ্ঘন করেছে বলে দাবি করেছেন বিশেষজ্ঞ এবং আইনজীবীরা। রাজ্যগুলো আদালতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে এই আদেশকে অকার্যকর করতে। নাগরিকত্ব প্রশ্নে এই আইনি লড়াই ভবিষ্যতের অভিবাসন নীতিতে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।
১ ফেব্রুয়ারি থেকে চীনের ওপর শুল্ক আরোপ : ইউরোপীয় ইউনিয়নের পাশাপাশি চীনা পণ্যে শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি পুনর্ব্যক্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্ষমতা গ্রহণের একদিন পর মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি চীনের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা ভাবছেন।
চীন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যবসায়ীক অংশীদার। যুক্তরাষ্ট্রের বাজার চীনা পণ্যের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। তারপরও চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির কারণ হিসেবে ট্রাম্পের দাবি, চীন থেকে ব্যথানাশক ফেন্টানিলের রাসায়নিক উপাদান মেক্সিকো হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশ করে। অতিমাত্রায় ফেন্টানিল সেবনের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে বছরে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ মারা যায়। ট্রাম্প প্রথম মেয়াদেও চীনা পণ্যে শুল্ক আরোপ করেছিলেন। এবার নির্বাচনি প্রচারণায় তিনি দেশটির পণ্যের ওপর ৬০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। এছাড়া মেক্সিকো ও কানাডার পণ্যের ওপরও ট্রাম্প ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়ে রেখেছেন। ধারণা করা হচ্ছিল, প্রথম দিনেই ট্রাম্প কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যে আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি করতে পারেন, যদিও তা হয়নি। তবে প্রথমদিন সোমবার ওভাল অফিসে বসেই কোন কোন দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সম্পর্কে অন্যায্যতা আছে, তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
ডোনাল্ড ট্রাম্প মনে করেন, আমদানি পণ্যে শুল্ক আরোপ করলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক লাভ হবে। যদিও সমালোচকেরা মনে করেন, এসব শুল্কের ভার শেষমেশ ভোক্তাদের ঘারেই বর্তাবে। এ ছাড়া দেশের বাইরে থেকে রাজস্ব আহরণে ট্রাম্প এক্সটার্নাল রেভিনিউ সার্ভিস নামের একটি বিভাগ স্থাপন করবেন। এদিকে বাণিজ্য উত্তেজনার সমাধান খোঁজার চেষ্টা করছে চীন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ না করেই মঙ্গলবার চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তার দেশ বাণিজ্য উত্তেজনার মধ্যে ‘সমাধান খুঁজছে’ এবং আমদানি সম্প্রসারণে পদক্ষেপ নিচ্ছে। সূত্র : দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, বিবিসি।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
চীনে শিক্ষা সফর অনুষ্ঠিত
যশোরে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা শাহীন চাকলাদারের ৪ বছরের কারাদণ্ড
যশোরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২, আহত ৩
ইট বৃষ্টির মধ্যে সংঘর্ষ থামাতে দৌঁড়ালেন শ্যামনগরের ইউএনও রনী খাতুন
মানিকগঞ্জ জেলা যুবলীগের আহবায়ক আব্দুর রাজ্জাক গ্রেফতার
ঘরের মাঠে আর্সেনালের সহজ জয়
মাহমুদুল্লাহ-রিশাদ নৈপুণ্যে জিতে প্লে অফের বরিশালের এক পা
ভারতকে ছেড়ে কেন চীনের ঘনিষ্ঠ হচ্ছে শ্রীলঙ্কা?
রাজনৈতিক উত্তরণে অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করবে জাপান
প্রবাসী উপদেষ্টার আশ্বাসে মালয়েশিয়া গমনেচ্ছুদের আন্দোলন স্থগিত
মহার্ঘভাতার সঙ্গে ভ্যাট বাড়ানোর কোনো সম্পর্ক নেই: অর্থ উপদেষ্টা
পুরো বইমেলা মনিটরিং হবে ড্রোনে-ডিএমপি কমিশনার
যানবাহন চালক-পথচারীদের জন্য ডিএমপির বিশেষ নির্দেশনা
মাস্ক বা অন্য কেউ টিকটক কিনলে বিনিয়োগ করবে প্রিন্স তালালের কোম্পানি
মৃত বাবার রেখে যাওয়া ঋণ পাওনাদার নিতে না চাওয়া প্রসঙ্গে?
খেলাধুলার মাধ্যমে তরুণদের শারীরিক ও মানসিক বিকশিত হয় -ডিসি তৌফিকুর রহমান
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিজিবি বিএসএফ বৈঠক
জিয়াউল হক মাইজভা-ারী ট্রাস্টের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান
অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তে সিলেটজুড়ে স্বস্তি
৪ দিনের রিমান্ডে সাবেক এমপি আবু রেজা নদভী