দেশের স্বার্থে সবার সঙ্গে আলোচনা-মিটমাটে সম্মতি ইমরান খানের

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

০৫ মার্চ ২০২৩, ০৫:৩৬ পিএম | আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৩, ০৮:০৬ এএম

বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান। একইসঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর এই দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাও বেশ চরমে। এই পরিস্থিতিতে প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক পক্ষগুলোর দিকে শান্তির বার্তা প্রসারিত করেছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ চেয়ারম্যান ইমরান খান। -দ্য ডন

বিশ্বকাপ জয়ী সাবেক এই ক্রিকেট তারকা বলেছেন, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার মুখোমুখি হওয়া পাকিস্তানের স্বার্থে নিজের হত্যা প্রচেষ্টাসহ সবকিছু ক্ষমা করতে প্রস্তুত তিনি। রোববার (৫ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন। ইমরান খান বলেছেন, ‘আমি সবার সঙ্গে আলোচনা করতে, সবার সাথে (বিদ্যমান সমস্যা) মিটমাট করতে প্রস্তুত। কারণ পাকিস্তানকে একটি আসন্ন বিপর্যয় থেকে বাঁচাতে সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’ তবে সাবেক এই ক্রিকেট তারকা এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, যারা পাকিস্তানের জাতীয় সম্পদ লুট করেছে এবং পাকিস্তানকে ধনী থেকে ছিন্নমূল রাষ্ট্রের দিকে যারা ঠেলে দিয়েছে তাদের সাথে তিনি পুনর্মিলন করবেন না।

দ্য ডন বলছে, শনিবার ইমরান খান তার দলের নেতা ও কর্মীদের উদ্দেশে ভাষণ দেন। পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ লাহোরের জামান পার্কে তার বাসভবনের বাইরে একটি মাঠসহ সারা দেশের বড় শহরগুলোতে বড় স্ক্রিনে সম্প্রচার করা হয়। শনিবারের ভাষণে ইমরান খান পাকিস্তানের সাবেক সেনাপ্রধানের প্রতি আবারও নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘জেনারেল বাজওয়া আমাকে জাতীয় সম্পদ লুটকারীদের এনআরও দিতে অব্যাহতভাবে সুপারিশ করেছিলেন।’

শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানের বর্তমান সরকারের দিকে ইঙ্গিত করে ইমরান আরও বলেন, ‘(সরকার গঠনের পর) তারা অবিলম্বে এনএবি আইন সংশোধন করে এবং তাদের ১১০০ বিলিয়ন রুপির দুর্নীতির মামলা বন্ধ করে দেয়।’ দ্য ডন বলছে, নিজের স্বাভাবিক আক্রমণাক্তক সুরকে একপাশে রেখে শনিবার ইমরান খান দেশকে সংকট থেকে বের করে আনতে এবং সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য রোডম্যাপ ঘোষণা করেন।

সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রক্ষা করে পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে সাধারণ নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করায় সুপ্রিম কোর্টকে ধন্যবাদ জানিয়ে ইমরান খান বলেন, পাকিস্তানকে বাঁচাতে জনগণের সরকার গঠনের জন্য বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন এবং এর জন্য শীর্ষ আদালতের এই ‘বিপ্লবী সিদ্ধান্ত’ নেওয়ার প্রয়োজন ছিল।

পাকিস্তানের জন্য নিজের দৃষ্টিভঙ্গির রূপরেখা প্রকাশ করে পিটিআই প্রধান বিদেশ থেকে বিনিয়োগের জন্য পরিবেশ তৈরি করতে এবং স্থবির হয়ে যাওয়া অর্থনীতির চাকা পুনরায় চালু করার জন্য আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। ইমরান খান বলেন, নতুন সরকারের উচিত বিচার বিভাগ এবং অন্যান্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে সংস্কার করা। একইসঙ্গে ব্যয় ব্যাপকভাবে কমানো, করের ভিত্তি বাড়ানো এবং দেশের উন্নয়নে প্রবাসী পাকিস্তানিদের আকৃষ্ট করার কথাও বলেন তিনি।

পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, পাকিস্তানের উচিত বিনিয়োগ এবং রপ্তানি বাড়ানোর মাধ্যমে নিজের সম্পদ বাড়ানো। একইসঙ্গে পাকিস্তানি যুবকদের যুক্তিসঙ্গত কাজের সুযোগ দেওয়ার ওপরও জোর দেন তিনি। ইমরান খান আরও উল্লেখ করেন, প্রায় ৮ লাখ মেধাবী দক্ষ যুবক উন্নত ভবিষ্যতের আশায় ইতোমধ্যেই দেশ ছেড়েছে।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


আরও পড়ুন