দীর্ঘ এক দশক পর মালয়েশিয়ায় শি জিনপিংয়ের সফর, সম্পর্কের নতুন দিগন্ত
১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০২:১০ পিএম | আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০২:১৭ পিএম

দীর্ঘ এক দশক পর মালয়েশিয়ার মাটিতে পা রাখলেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার তিন দেশ সফরের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় তিনি কুয়ালালামপুরে পৌঁছান। তার এই সফর কেবল এক রাষ্ট্রনেতার আনুষ্ঠানিক ভ্রমণ নয়, বরং একটি কৌশলগত বার্তা—বিশ্ব অর্থনীতিতে চীন এখন আমেরিকার চেয়ে বেশি নির্ভরযোগ্য অংশীদার। বাণিজ্য, কূটনীতি ও ভূরাজনীতির জটিল সমীকরণে এই সফর আনছে এক নতুন মাত্রা।
এই সফরের মধ্য দিয়ে চীন মালয়েশিয়াকে দেখাতে চাইছে যে তারা শুধুই বিনিয়োগকারী নয়, বরং একটি দীর্ঘমেয়াদি ও বিশ্বস্ত কৌশলগত মিত্র। সফরের আগে ভিয়েতনামে শি জিনপিং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থেকে শুরু করে রেল অবকাঠামো পর্যন্ত একাধিক সহযোগিতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন। মালয়েশিয়ায় পৌঁছেই তিনি বলেছেন, চীন-মালয়েশিয়া সম্পর্ক কেবল দ্বিপাক্ষিক উন্নয়নের জন্য নয়, বরং এশিয়া ও বিশ্বে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই বক্তব্য আমেরিকার প্রতি একটি স্পষ্ট জবাব।
মালয়েশিয়ার সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও মন্ত্রী মোহাম্মদ নাজরি আবদুল আজিজ স্পষ্টভাবে বলেছেন, এই সফর চীনের পক্ষ থেকে একটি বার্তা—“আমরা নির্ভরযোগ্য বাণিজ্যিক অংশীদার, আমাদের সঙ্গে ব্যবসায় কোনো ঝুঁকি নেই।” চীন বর্তমানে মালয়েশিয়ার সর্ববৃহৎ বাণিজ্যিক অংশীদার। ২০২৪ সালে দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য ২১২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্র মালয়েশিয়ার পণ্যের ওপর ২৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় দুই দেশের মধ্যে কিছুটা টানাপড়েন দেখা যাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে অর্থনৈতিক বিকল্প কাঠামো গঠনের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই দেখা হচ্ছে শির সফরকে।
বিশ্লেষক জেমস চিন বলেন, “চীন এখন এমন এক বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাইছে যেখানে স্থানীয় মুদ্রা বা রেনমিনবিতেই বাণিজ্য হবে, মার্কিন ডলারের প্রভাব হ্রাস পাবে।” মালয়েশিয়ার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পরিচয় ও ফিলিস্তিন প্রশ্নে কঠোর অবস্থানের কারণে এই সফরের ভূরাজনৈতিক তাৎপর্য আরও বেড়েছে। ই সান ওহ নামের আরেক বিশ্লেষক জানান, মালয়েশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে চীনের দিকে ঝুঁকছে যাতে মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে আমেরিকাকে চাপে ফেলা যায়। তবে সবার শেষে যে বিষয়টি প্রধান তা হলো—চীনের বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা এবং উন্নত বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তোলা।
মালয়েশিয়া বর্তমানে আসিয়ান গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান হওয়ায়, চীনের কৌশলগত দৃষ্টিতে দেশটির গুরুত্ব আরও বেড়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রভাব কাঠামোয় মালয়েশিয়ার অবস্থান, উচ্চ প্রযুক্তি খাত এবং চায়না-প্লাস-ওয়ান কৌশলের অংশ হিসেবে কারখানা স্থাপন সব মিলিয়ে বেইজিংয়ের কাছে কুয়ালালামপুর একটি গুরুত্বপূর্ণ মিত্র। শি জিনপিংয়ের এই সফর একদিকে যেমন বিশ্ব অর্থনীতিতে চীনের নতুন অবস্থান তুলে ধরছে, তেমনি মালয়েশিয়ার পক্ষেও এটি এক সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিচ্ছে—যেখানে বিকল্প কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার সুযোগ রয়েছে। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

ডিএসই’র লেনদেন কমলেও সিএসইতে বেড়েছে

সড়ক করতে গিয়ে কোনো ধরনের অনিয়ম করা যাবে না

বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পর্যবেক্ষণ করছে তুরস্ক’

এনসিপির শৃঙ্খলা কমিটির নিরপেক্ষ তদন্ত প্রশংসায় পঞ্চমূখ

নিউইয়র্ক ‘বাংলাদেশ সোসাইটি’র নতুন ট্রাস্টি বোর্ড গঠন

নষ্ট হয়েছে অনেক নথি

এ বছর বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৩.৮% হতে পারে: আইএমএফ

সফররত ওমানের সুলতানের সঙ্গে বৈঠক পুতিনের

প্রদীপের বিরুদ্ধে ডেথ রেফারেন্স শুনানি আজ

ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে গণমিছিল আজ

ভারতে সেনা অফিসারকে পেটানোর ঘটনায় নতুন মোড়, উত্তেজনা বাড়ছে

৩ মাসে আয় ৯৯ কোটি টাকা আয়ের অর্ধেকই মুনাফা!

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কাতারের জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক

হাসিনার ডিগ্রি বাতিল করতে পর্যালোচনা করছে অস্ট্রেলিয়ান ইউনিভার্সিটি

আ. লীগের দোসররা ড. ইউনূসের চারপাশে সক্রিয় : জয়নুল আবদিন ফারুক

হত্যা মামলায় গাজীপুর আদালতে আ.লীগের শীর্ষ ৬ নেতা

নারী কমিশনের প্রস্তাব বাতিলের দাবিতে শনিবার বিক্ষোভ ঢাকায়

মাতারবাড়ি বন্দর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে : নৌপরিবহন উপদেষ্টা

মে দিবসে ঢাকায় বড় সমাবেশের ঘোষণা বিএনপির

সাবেক এডিসি নাজমুলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা