হজের সংক্ষিপ্ত নিয়ম ও জরুরি মাসায়েল-২
২৯ মে ২০২৩, ১০:৫৫ পিএম | আপডেট: ৩০ মে ২০২৩, ১২:০১ এএম
ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ বিষয় : ১. পুরুষের জন্য শরীরের কোনো অঙ্গের আকৃতি বা গঠন অনুযায়ী তৈরিকৃত বা সেলাইকৃত কাপড় পরিধান করা নিষিদ্ধ। যেমন: পাঞ্জাবি, জুব্বা, শার্ট, সেলোয়ার, প্যান্ট, গেঞ্জি, কোর্ট, সোয়েটার, জাঙ্গিয়া। মাসআলা: ইহরামের কাপড় ছিঁড়ে গেলে তা সেলাই করে বা জোড়া দিয়ে পরিধান করা যাবে। তবে ইহরামের কাপড় এ ধরনের সেলাইমুক্ত হওয়াই ভালো। (রদ্দুল মুহতার ২/৪৮১, শরহু লুবাবিল মানাসিক ৯৮)। মাসআলা: ইহরাম অবস্থায় সেলাইযুক্ত ব্যাগ ব্যবহার করা ও বেল্ট বাঁধা নিষিদ্ধ নয়।
২. পুরুষের জন্য মাথা ও চেহারা ঢাকা নিষিদ্ধ। মহিলাদের জন্য শুধু চেহারায় কাপড় স্পর্শ করানো নিষেধ। তাই তারা পরপুরুষের সামনে চেহারায় কাপড় লেগে না থাকে এভাবে পর্দা করবে। ৩. পুরুষের জন্য পায়ের উপরের অংশের উঁচু হাড় ঢেকে যায় এমন জুতা পরিধান করা নিষেধ। এমন জুতা বা স্যান্ডেল পরতে হবে যা পরলে ওই উঁচু অংশ খোলা থাকে। (রদ্দুল মুহতার ২/৪৯০)।
৪. ইহরামের কাপড় বা শরীরে আতর বা সুগন্ধি লাগানো নিষেধ। সুগন্ধিযুক্ত তেল যয়তূন ও তিলের তেলও লাগানো যাবে না। সুগন্ধি সাবান, পাউডার, স্নো, ক্রীম ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে না। এমনকি পৃথকভাবে সুগন্ধি জর্দা খাওয়াও নিষিদ্ধ। পানের সাথে খাওয়া মাকরূহ। ইচ্ছাকৃতভাবে ফল-ফুলের ঘ্রাণ নেওয়া মাকরূহ। (মানাসিক ১২১; আহকামে হজ ৩৪)।
৫. শরীরের কোনো স্থানের চুল, পশম বা নখ কাটা বা উঠানো নিষিদ্ধ। ৬. ইহরাম অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীর বিশেষ সম্পর্ক স্থাপন করা বা স্ত্রীর সামনে এ সংক্রান্ত কোনো কথা বা কাজ করা নিষিদ্ধ। ৭. কোনো বন্যপশু শিকার করা বা কোনো শিকারীকে সহযোগিতা করা নিষিদ্ধ। ৮. ঝগড়া-বিবাদ সাধারণ সময়েও নিষিদ্ধ। ইহরাম অবস্থায় এর গুনাহ আরো বেশি। ৯. কাপড় বা শরীরের উকূন মারা নিষিদ্ধ। (আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৮৬-৪৯০)।
মাসআলা: ইহরাম অবস্থায় যে কাজগুলো নিষিদ্ধ তাতে লিপ্ত হওয়া গুনাহ। এর কারণে হজ কিছুটা অসম্পূর্ণ হয়ে যায় আর কিছু নিষেধাজ্ঞা এমন রয়েছে যেগুলো করলে ‘দম’ ওয়াজিব হয়। আর আরাফায় অবস্থানের পূর্বে স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হলে হজই নষ্ট হয়ে যায়। এক্ষেত্রে গরু বা উট জবেহ করা ছাড়া পরবর্তী বছর কাজা করা জরুরি। (আদ্দুররুল মুখতার ২/৫৫৮-৫৫৯)।
মাসআলা: ইহরাম অবস্থায় মাথা ও মুখ ব্যতীত পূর্ণ শরীর চাদর ইত্যাদি দিয়ে আবৃত করা যাবে। কান, ঘাড়, পা ঢাকা যাবে। মাথা ও গাল বালিশে রেখে শোয়া যাবে। তবে পুরো মুখ বালিশের উপর রেখে ঢেকে শোয়া যাবে না। (মানাসিক ১২৩-১২৪)। মাসআলা: ইহরাম অবস্থায় পান খাওয়া নিষিদ্ধ নয়। তবে পানে সুগন্ধিযুক্ত মসলা বা জর্দা খাওয়া নিষিদ্ধ। মাসআলা: ইহরাম অবস্থায় পানিতে ডুব দেয়া যাবে। (গুনয়াতুনন্নাসেক ৯১)।
উমরার পদ্ধতি: উমরার ফরজ দু’টি। ১. উমরার ইহরাম বাঁধা। অর্থাৎ উমরার নিয়তে তালবিয়া পড়া। ২. বাইতুল্লাহ শরীফের তাওয়াফ করা । উমরার ওয়াজিব দু’টি : ১. সাফা-মারওয়ার মাঝে সায়ী করা। ২. মাথার চুল মু-ানো বা ছাঁটা। মাসআলা: উমরার তাওয়াফে পুরুষের জন্য ‘ইজতিবা’ অর্থাৎ ডান কাঁধ খালি রেখে চাদর বগলের নিচ দিয়ে বের করে বাম কাঁধের উপর রাখা এবং ‘রমল’ অর্থাৎ তাওয়াফের প্রথম তিন চক্করে কিছুটা দ্রুত বীরদর্পে হাঁটা।
উমরার তাওয়াফ: মাসআলা : যে তাওয়াফের পর সায়ী আছে সেই তাওয়াফের প্রথম তিন চক্করে রমল অর্থাৎ বীরদর্পে কাঁধ হেলিয়ে কিছুটা দ্রুত বেগে চলা সুন্নত। তদ্রƒপ পুরো তাওয়াফে ইজতেবা (ডান কাঁধ খালি করে ডান বগলের নিচে দিয়ে বের করে বাম কাঁধের উপর দিয়ে চাদর পরিধান) করা সুন্নতে মুআক্কাদাহ। তবে এ দু’টি শুধু পুরুষদের জন্য সুন্নত। মহিলাদের জন্য নয়। (মানাসিক ১২৯, আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৯৮)।
মাসআলা: তাওয়াফকারীর সীনা বাইতুল্লাহ দিকে করে তাওয়াফ করা যাবে না। এমনকি রুকনে ইয়ামানী স্পর্শ করার সময় কিংবা হাজরে আসওয়াদ চুমু দেওয়ার সময় সীনা বাইতুল্লাহর দিকে ঘুরে গেলে যেখান থেকে ঘুরেছে সেখান থেকেই সীনা ঠিক করে আবার তাওয়াফ শুরু করা জরুরি। (মানাসিক ১৫৩, রদ্দুল মুহতার ২/৪৯৪)।
মাসআলা: সকল তাওয়াফের পর দুই রাকাত নফল নামাজ পড়া ওয়াজিব। চাই তাওয়াফ নফল হোক বা ফরজ। আর এই দুই রাকাত মাকামে ইব্রাহীমীর পিছনে পড়া ভালো। কিন্তু জায়গার সংকুলান না হলে মসজিদে হারামের যে কোনো স্থানে পড়া যাবে। এমনকি হেরেমের সীমানার ভেতর পড়লেও ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে। হেরেমের বাইরে পড়া মাকরূহ। তবে পড়লে আদায় হবে যাবে। দম ওয়াজিব হবে না। (মানাসিক ১৫৫, আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৯৯)।
মাসআলা: তাওয়াফ পরবর্তী দুই রাকাত নামাজ তাওয়াফের পরেই অবিলম্বে আদায় করা উত্তম। বিনা ওজরে বিলম্বে পড়া মাকরূহ। তবে মাকরূহ ওয়াক্ত হলে পরে পড়বে। (রদ্দুল মুহতার ২/৪৯৯)। মাসআলা: একাধিক তাওয়াফ করে পরবর্তী দুই রাকাত নামাজকে একত্রে পড়া মাকরূহ। তবে পূর্বের তাওয়াফের পরের সময় যদি মাকরূহ ওয়াক্ত হয়ে থাকে তবে একাধিক তাওয়াফের নামাজ একত্রে আদায় করতে কোনো অসুবিধা নেই। (গুনয়াতুনাসেক ১১৭)।
বিভাগ : শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
উইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ
বেইজিং সংস্কৃতি ও পর্যটন ব্যুরো ও আটাবের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত
প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ
দেশের বাজারে ফের বাড়ল সোনার দাম
সবচেয়ে কম মূল্যে বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ দিচ্ছে নেপাল: নেপাল রাষ্ট্রদূত
আগামী নির্বাচন নিয়ে দিল্লি ভয়ংকর পরিকল্পনা করছে: যুক্তরাষ্ট্র জাগপা
উত্তরায় মা ও শিশুর গায়ে এসিড ছুড়ে স্বর্ণালংকার লুট
বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের জলসীমায় অনুপ্রবেশ, ট্রলারসহ ১৬ ভারতীয় জেলে আটক
ভূমি সেবা সংক্রান্ত ৫টি সফটওয়্যারের নতুন সংস্করণ চালু হচ্ছে ডিসেম্বরে : ভূমি সচিব
পার্থে টেস্টের তৃতীয় দিনে দলে যোগ দেবেন রোহিত
দখলদারিত্বভিত্তিক গতানুগতিক ছাত্ররাজনীতি করবে না ছাত্রদল: সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন
বইমেলায় ‘সঠিক নিয়মে হাতের লেখা প্রশিক্ষণ বাংলা’-এর মোড়ক উম্মোচন
ভারতে খেলতে আসছে মেসির আর্জেন্টিনা
ছাত্র-জনতা গণহত্যার মূলহোতা ফ্যাসিস্ট হাসিনার পক্ষে আইনী লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়ে তোপের মুখে পান্না
রহস্যময় ‘ফরেন অফিশিয়াল ১’: আদানি ঘুষকাণ্ডে কে এই সরকারি কর্মকর্তা?
সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়ার সম্মানে জাতি আনন্দিত: ফখরুল
পাকিস্তানে মাইক্রোবাসে বন্দুক হামলায় নিহত ৩৮
রুয়েটে ভর্তি পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারী
মার্সেল ফ্রিজ কিনে গাড়ি পেলেন ঢাকার আনিসুর রহমান
বিএনপি ক্ষমতায় এলে গণমাধ্যম হবে মুক্ত বিহঙ্গের মতো : খোকন