ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৪ আশ্বিন ১৪৩১

কে স্বাধীন, কে পরাধীন

Daily Inqilab মুহাম্মাদ ওমর জোয়ার্দার

০৬ জুলাই ২০২৩, ১১:৫১ পিএম | আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৩, ১২:০১ এএম

অনেকে স্বাধীনতা বলতে বোঝে যা ইচ্ছা তা করতে পারার সুযোগ। কিন্তু মানুষের সকল ইচ্ছাই কি সঙ্গত বা মানুষ কি তার সকল ইচ্ছা পূরণ করতে পারে? কেউ করলে সে কি মানুষ নামের উপযুক্ত থাকে? চিন্তার বিষয়ে যে একেবারে স্বাধীন সে তো পাগল, আর যে সঠিক নিয়মে চিন্তা করে সে জ্ঞানী ও চিন্তাশীল।

কাজকর্মে যে নিয়মের শৃঙ্খল মানে না সে তো উচ্ছৃঙ্খল। মানুষ তাকে ঘৃণা করে আর যে নিয়ম মেনে চলে সে নিয়মানুবর্তী সমাজ তাকে সম্মান করে। সামাজিক শিষ্টাচার মেনে চললে মানুষ হয় ভদ্র, মেনে না চললে অভদ্র। মোটকথা চিন্তা করলে দেখা যাবে, মানুষকে সর্বাবস্থায় নিয়মের অধীন থাকতে হয়। তাহলে তার জীবন সুন্দর হয়, মানুষও তাকে ভালোবাসে। পক্ষান্তরে নিয়ম-কানুনের শাসন থেকে যে সম্পূর্ণ স্বাধীন হয়ে যায় সে নিজেকেও ধ্বংস করে, সমাজের জন্যও অভিশাপ হয়ে দেখা দেয়।

আল্লাহ তায়ালা মানুষের দুনিয়া ও আখিরাতের সফলতার জন্য যে পূর্ণাঙ্গ নিয়ম-কানুন দান করেছেন তার নাম দ্বীন। চিন্তা-চেতনা এবং বোধ ও বিশ্বাস থেকে শুরু করে মানব-জীবনের সকল বিষয়ের নিয়ম ও আদর্শ ইসলামে রয়েছে। লক্ষ্য করার বিষয় এই যে, কুরআন মজিদে দ্বীনের আহকামকে বলা হয়েছে, ‘হুদূদুল্লাহ’ বা আল্লাহর সীমারেখা। ‘সীমারেখা’ শব্দটিই সংযম ও শৃঙ্খলার অর্থ বহন করে।

সুতরাং একজন মুমিন-মুসলমান কখনো অসংযমী ও উচ্ছৃঙ্খল হতে পারে না। তার ধর্ম ও আদর্শই তাকে উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন থেকে বিরত রাখে। বস্তুত আল্লাহর সীমারেখার মধ্যে যে থাকে সেই প্রকৃত মানুষ এবং আল্লাহর প্রকৃত বান্দা। পক্ষান্তরে যারা স্বাধীনতার নামে আল্লাহর নিয়ম-কানুন থেকে বের হয়ে যায় তারা শুধু মনুষ্যত্বের সীমা থেকেই বের হয় না, নফস ও শয়তানের হাতে এমনভাবে বন্দি হয় যে, তার দুনিয়া ও আখিরাত দু’টোই বরবাদ হয়ে যায়।

দেখুন, যে এক আল্লাহকে মনিব মানে সে মেম্বার, চেয়ারম্যান, ওসি-ডিসি, জজ-কমিশনার, এসপি, মেয়র, মন্ত্রী, এককথায় সকল মানুষের মানসিক গোলামী থেকে মুক্ত। পক্ষান্তরে আল্লাহর গোলামী ও আবদিয়াত থেকে স্বাধীন হলে সে কোটি মাবুদের গোলামীতে বন্দি। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘অসংখ্য মাবুদ উত্তম, না এক মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ?’

আল্লাহর হুকুম পর্দা করা। যে নারী এই হুকুমের অধীন সে নফস ও শয়তানের তাবেদারি থেকে মুক্ত। তেমনি অসংখ্য মানুষের লোলুপ দৃষ্টি ও নির্যাতন; ইভটিজিং, ধর্ষণ, আত্মহত্যা, অপহরণ ইত্যাদি থেকেও মুক্ত। পক্ষান্তরে যে এ বিধান থেকে স্বাধীন সে শুধু নিজের নফস ও শয়তানের হাতেই বন্দি নয়, অসংখ্য পুরুষের খাহেশাতের কাছেও বন্দি।

আল্লাহর হুকুম নবীর তরিকামতো চলা। যে এই হুকুম মেনে চলবে সে অসংখ্য তরিকার অধীনতা থেকে মুক্ত। পক্ষান্তরে নবীর তরিকায় না চলে সে চলবে ইহুদি-খৃস্টানের তরিকায়, পৌত্তলিকদের তরিকায়, নাস্তিক-মুরতাদদের তরিকায়; কখনো এই তরিকায় কখনো ওই তরিকায়, এভাবে অসংখ্য গোমরাহীর গোলকধাঁধাঁয় তার অমূল্য জীবন নিঃশেষ হবে, দুনিয়ার পবিত্র জীবন ও আখিরাতের মুক্তি তার ভাগ্যে জুটবে না। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন। আমীন।


বিভাগ : শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

ইত্তিহাদেই সিটিকে রুখে দিল ইন্টার

ইত্তিহাদেই সিটিকে রুখে দিল ইন্টার

রোনালদোদের নতুন কোচ পিওলি

রোনালদোদের নতুন কোচ পিওলি

দক্ষিণ আফ্রিকাকে গুড়িয়ে আফগানদের ঐতিহাসিক জয়

দক্ষিণ আফ্রিকাকে গুড়িয়ে আফগানদের ঐতিহাসিক জয়

যেই গৌরব কেবল শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের

যেই গৌরব কেবল শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের

রিট করে ‘খেলাপি ঋণ স্থগিত’ বন্ধ চান ব্যাংক-মালিকরা

রিট করে ‘খেলাপি ঋণ স্থগিত’ বন্ধ চান ব্যাংক-মালিকরা

বিদেশি ঋণ ফের ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে

বিদেশি ঋণ ফের ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে

টাকা উদ্ধারের নামে ‘ঘুষ’ চাওয়ার অভিযোগ জিএম শাহজাহান চৌধুরীর’র বিরুদ্ধে

টাকা উদ্ধারের নামে ‘ঘুষ’ চাওয়ার অভিযোগ জিএম শাহজাহান চৌধুরীর’র বিরুদ্ধে

জাতীয় ঐক্য বিনষ্টকারী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে হবে

জাতীয় ঐক্য বিনষ্টকারী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে হবে

৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার কিনবে সরকার, ব্যয় ২৩৬ কোটি টাকা

৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার কিনবে সরকার, ব্যয় ২৩৬ কোটি টাকা

আইকনিক লিডার তারেক রহমান ও বাংলাদেশের রাজনীতি

আইকনিক লিডার তারেক রহমান ও বাংলাদেশের রাজনীতি

পতিত স্বৈরাচার ও ভারতের চক্রান্ত চলছেই

পতিত স্বৈরাচার ও ভারতের চক্রান্ত চলছেই

তারেক রহমানের রাষ্ট্রনায়কোচিত বক্তব্য ও দিকনির্দেশনা

তারেক রহমানের রাষ্ট্রনায়কোচিত বক্তব্য ও দিকনির্দেশনা

ইসরাইলের দখলদারিত্ব বন্ধের প্রস্তাব বিবেচনা জাতিসংঘের

ইসরাইলের দখলদারিত্ব বন্ধের প্রস্তাব বিবেচনা জাতিসংঘের

উত্তপ্ত মণিপুরে অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে নতুন করে গোলাগুলি

উত্তপ্ত মণিপুরে অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে নতুন করে গোলাগুলি

২৭ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার নতুন ভ্যারিয়্যান্ট

২৭ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার নতুন ভ্যারিয়্যান্ট

২০০ হাতি নিধনের সিদ্ধান্ত জিম্বাবুয়ের

২০০ হাতি নিধনের সিদ্ধান্ত জিম্বাবুয়ের

কলেরাসহ মারাত্মক রোগের ঝুঁকিতে সুদানের ৩৪ লাখ শিশু

কলেরাসহ মারাত্মক রোগের ঝুঁকিতে সুদানের ৩৪ লাখ শিশু

১১ হাজার ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর প্রাণ গেছে

১১ হাজার ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর প্রাণ গেছে

বেলারুশে হামলা হলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে : লুকাশেঙ্কো

বেলারুশে হামলা হলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে : লুকাশেঙ্কো

তাইওয়ান প্রণালীতে চীনের যুদ্ধবিমান

তাইওয়ান প্রণালীতে চীনের যুদ্ধবিমান