হতাশা মুমিনের চরিত্র নয়-২
২৮ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০২ এএম | আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০২ এএম
ইসলামের দ্বিতীয় খলীফা হযরত উমর ইবনে খাত্তাব (রা.)। তাঁর ইসলাম গ্রহণের কাহিনী আমরা অনেকেই জানি- যখন নবী মুহাম্মাদ (সা.)-এর দাওয়াতি কার্যক্রমকে কিছুতেই কাফের কুরাইশরা প্রতিহত করতে পারছিল না, আবার আরবের কঠিন গোত্রপ্রীতির কারণে কেউ তাঁকে হত্যা করার মতো সাহসও করছিল না, তখন এক মজলিসে ঘোষিত হলো পুরস্কার। নবী মুহাম্মাদকে হত্যার পুরস্কার। বীর সাহসী তো সেখানে কতজনই ছিল। কিন্তু এক উমর ছাড়া কেউ সেদিন মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি।
তিনি খোলা তরবারি নিয়ে ছুটলেন নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-কে হত্যা করার লক্ষ্যে। কিন্তু আল্লাহ তায়ালার রহমত ও কুদরত দেখুন। কাফেরদের পুরো সমাজ মিলে যে কাজটি করার হিম্মত করতে পারেনি, একা উমর তা সম্পন্ন করার দুঃসাহস দেখাতে বেরিয়ে পড়ল। তাও কেমন অপরাধ- ইসলামের নবীকে সরাসরি হত্যা! উমরের এ মিশন সফল হলে তো ইসলাম এখানেই শেষ!
এমন জঘন্য ও গুরুতর এক অপরাধের দিকে ছুটে চলা উমর পথিমধ্যে আল্লাহ তায়ালার রহমতের বর্ষণে এতটাই সিক্ত হলেন, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গিয়ে ইসলাম গ্রহণ করে মুসলমান হয়ে গেলেন। এখানেই কি শেষ! তিনি ইসলামের দ্বিতীয় খলীফা। নবীজী (সা.) এই দুনিয়াতেই সুনির্দিষ্টভাবে যে দশজন সাহাবীকে জান্নাতী বলে ঘোষণা করেছেন, যাদেরকে আমরা ‘আশারায়ে মুবাশশারা’ বলে স্মরণ করি, তিনি তাঁদের দ্বিতীয়জন।
আমাদের ইসলামী ইতিহাসের পরতে পরতে এমন অনেক বরেণ্য মনীষীর দেখা মিলবে, যারা শুরুর জীবনে নানামুখী পাপে ডুবে ছিলেন। পরবর্তী জীবনে তারা এতটাই বড় হয়েছেন, এখনো আমরা তাদেরকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি। ফুযায়ল ইবনে ইয়ায, মালিক ইবনে দিনারের মতো নামের এখানে অভাব নেই। সন্ত্রাসী-ডাকাত, ইসলামের দুশমন, অমুসলিম ধর্মগুরু, মন্দির-গীর্জার প্রধান ব্যক্তি উঠে আসছেন ইসলামের আলোকিত সীমানায়।
এই বাস্তবতাকে সামনে রেখে কি দ্বীন-ধর্ম আর পরকাল নিয়ে হতাশ হওয়ার কোনো সুযোগ আছে? আল্লাহ তায়ালার কী দ্ব্যর্থহীন আহ্বান : ‘বলো, হে আমার বান্দাগণ! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ, তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেন। সন্দেহ নেই, তিনিই ক্ষমাশীল দয়ালু।’ (সূরা যুমার : ৫৩)।
একই কথা পার্থিব সঙ্কট নিয়েও। এখানকার কোনো সঙ্কটই স্থায়ী নয়। দুনিয়াই যেখানে ক্ষণস্থায়ী, সেখানে এসব সঙ্কট স্থায়ী হবে কীভাবে? পবিত্র কুরআনের একটি ছোট সূরা ‘সূরা আলাম নাশরাহ’। এ সূরায় আল্লাহ তায়ালার ওয়াদা : কষ্টের সঙ্গেই তো স্বস্তি আছে। অবশ্যই কষ্টের সঙ্গেই স্বস্তি আছে। (সূরা আলাম নাশরাহ : ৫-৬)।
আল্লাহ তায়ালার এ ওয়াদা সর্বকালের জন্যেই সত্য। পবিত্র কুরআনে আল্লাহপাকের একটি বৈশিষ্ট্য এভাবে বর্ণিত হয়েছে : বরং তিনি, যিনি অসহায়ের আহ্বানে সাড়া দেন, যখন সে তাঁকে ডাকে এবং তিনি বিপদাপদ দূর করে দেন আর পৃথিবীতে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করেন। আল্লাহর সঙ্গে কি অন্য কোনো মাবুদ আছে? তোমরা খুব সামান্যই উপদেশ গ্রহণ কর। (সূরা নামল : ৬২)।
তাই হতাশ নয়; মুমিন হবে আশাবাদী। আল্লাহর রহমতের আশায় থাকবে সে; নিরেট পার্থিব বিষয় নিয়েও, দ্বীনী ও পরকালীন বিষয়েও। সর্বশক্তিমান দয়ালু আল্লাহর গুণবাচক নামগুলোর প্রতি যার বিশ্বাস থাকবে অটুট, তার অবশ্য হতাশ হওয়ার সুযোগ কোথায়! এ বিশ্বাস হতাশাকে দূর করবেই।
বিভাগ : শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ডিভোর্সের দুদিন পরই নতুন সুখবর এ আর রহমানের
বেনাপোল বন্দরে কম শুল্কে আরও ২ লাখ ৩২ হাজার পিস ডিম খালাস
পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের উপস্থিতি নিশ্চিতে ডিএনসিসির কমিটি
কুড়িগ্রামের আকাশে হঠাৎ ধুলি ঘূর্ণিঝড়
সিঙ্গাপুরে মাদক পাচারকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
পীরগঞ্জে ক্রপ প্রোটেকশন এসোসিয়েশনের কমিটি গঠন
প্রকাশিত হয়েছে শহীদদের স্মরণে ' জুলাই অনির্বাণ', ভিডিও দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন সাধারণ মানুষ
সায়ানাইড প্রয়োগে হত্যায় অভিযুক্ত নারীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে থাই আদালত
ঢাকায় আসলেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি
ইতালি নেদারল্যান্ডস কানাডায় পা রাখলেই গ্রেফতার নেতানিয়াহু
এবার আদানি গ্রুপের সঙ্গে বড় দুটি চুক্তি বাতিল করল কেনিয়া
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় নিহত ৪২
সিলেট সীমান্তে ১ কোটি ২১ লক্ষ টাকার ভারতীয় চোরাই পণ্য আটক করেছে বিজিবি
বেনাপোল সীমান্তে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল জব্দ
চীনে ৮৩ বিলিয়ন ডলারের বিশাল স্বর্ণখনির সন্ধান
টিসিবির তালিকায় আ'লীগের লোকজন বহাল থাকায় সাধারণ মানুষের ক্ষোভ
দৌলতখানে মা -মেয়েকে পিটিয়ে আহত
স্টেশন থেকে দুই কিলোমিটার দূরে থামল সীমান্ত এক্সপ্রেস
কুষ্টিয়ায় প্রতিমা ভাঙচুরের পর যুবক আটক, কথাবার্তা অসংলগ্ন
জুরাইনে পুলিশের সঙ্গে অটোরিকশা চালকদের সংঘর্ষ, রেলপথ অবরোধ