নববর্ষ : নতুন বছরের বার্তা
০১ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৪ এএম
জানুয়ারি ২০২৪। দেখতে দেখতে একটি বছর শেষ হয়ে গেল। শুরু হলো নতুন আরেকটি বছর। চলে যাওয়া বছরটি একাই যায়নি, সাথে করে নিয়ে গেছে অনেক মানুষকে, যারা আর কখনো এই পৃথিবীর আলো-বাতাসে ফিরে আসবে না। ২০২৪-এর প্রথম সূর্যোদয় যাদের ওপর হয়েছে বছর শেষ হতে হতে তাদেরও অনেকের সময় ফুরিয়ে যাবে। ২৫-এর সূর্যোদয় তাদের দেখার সুযোগ হবে না। কী অমোঘ সত্য! এই সত্যকে হয়তো ভুলে থাকা যায়, কিন্তু অতিক্রম করা যায় না। কুরআন মাজীদের দ্ব্যর্থহীন ঘোষণা : প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। আর কিয়ামতের দিন তোমাদেরকে তোমাদের কর্মফল পূর্ণমাত্রায় দেয়া হবে। অতঃপর যাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে দাখেল করা হবে সে-ই সফলকাম। এই পার্থিব জীবন তো প্রতারণার উপকরণ ছাড়া কিছুই নয়। (সূরা আলে ইমরান : ১৮৫)।
ক্ষণস্থায়ী জীবনের মানুষের সামনে কুরআনে কারীম এক জ্বলন্ত সত্য তুলে ধরেছে। আর তা তুলে ধরেছে পূর্ণাঙ্গভাবে। এখানেই কুরআনের বিশিষ্টতা। কুরআন মানুষকে পরিচিত করে পূর্ণ সত্যের সাথে। আমরা বলি, মানুষ মরণশীল। একথা সত্য, তবে তা সত্যের অর্ধেক। মরণশীল মানুষের মৃত্যুর পর কী হবে তা এখানে নেই। কারণ তা ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য নয়। গায়েব।
শুধু ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তো গায়েবের সংবাদ জানা যায় না। তা জানার উপায় কুরআন ও সুন্নাহ। কুরআন-সুন্নাহর সংবাদ ছাড়া মানুষ মরণশীল-এই ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য বিষয়টুকুর তাৎপর্য স্পষ্ট হয় না। কাজেই ‘মানুষ মরণশীল’ কথাটা সত্যের অর্ধেক। এই অর্ধেকসহ পুরো কথাটা জানিয়েছেন মহান আল্লাহ তাআলা কুরআনে কারীমে। এ কারণে কুরআনের ইলম এতো জীবন-ঘনিষ্ঠ।
কুরআন আমাদের জানাচ্ছে যে, মৃত্যুর পর মানুষকে তার কর্মফলের মুখোমুখি হতে হবে। হিসাব দিতে হবে জীবনের সময় ও কর্মের। সেই হিসাব-দিবসে যারা জাহান্নাম থেকে নাজাত পেয়ে জান্নাতে যাবে তারাই সফল। এই অখণ্ডসত্য যদি চেতনায় স্পষ্ট হয়ে যায়, যদি মহান আল্লাহর অপার করুণায় মনের চোখ খুলে যায়, অপসারিত হয় অধর্মের, অবিশ্বাসের অপচ্ছায়া তাহলে মানবের সর্বসত্তা অকুণ্ঠচিত্তে বলে উঠবে : অর্থাৎ পার্থিব জীবন তো দু’দিনের মায়া-মরীচিকামাত্র।
মৃত্যু ও পরকাল সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা তাঁর পবিত্র বাণী কুরআনে কারীমে বার বার সচেতন করেছেন। একই সাথে মানুষের চারপাশের প্রকৃতিতে স্থাপন করেছেন চিন্তাশীলতা ও বার্তা গ্রহণের অসংখ্য উপাদান। দিন-রাতের গমনাগমন, সকাল-দুপুর-বিকালের প্রাকৃতিক পরিবর্তন, সপ্তাহ-মাস-বছরের চক্রাকার আবর্তন-এই সবকিছু বার বার মানুষকে বলে যাচ্ছে তার বেলা ফুরোবার কথা। আপনার দেহ-মনের পরিবর্তন আপনাকে বার্তা দিচ্ছে। আপনার স্বজন-প্রিয়জনের চলে যাওয়া বার্তা দিয়ে যাচ্ছে-আপনারও বেলা ফুরোবার।
আপনি কি ভেবে দেখেছেন, মহান আল্লাহ কতোবার আপনাকে বার্তা দিয়েছেন? কতোভাবে দিয়েছেন? তবুও যদি ফিরে না আসেন তাহলে কীভাবে আশা করতে পারেন-চিরস্থায়ী জীবনে নাজাতের?! মহান আল্লাহ বার্তা দিয়েছেন অসংখ্যবার, আপনি শোনেননি। যতোদিন গেছে, না-শোনার পাল্লাই ভারী হয়েছে। জীবনের এই পড়ন্ত বেলায় এসে এবার অন্তত শুনুন তাঁর ডাক।
তিনি রহমান, তিনি রহীম; অতীতের জমে ওঠা সব অমনোযোগিতা, ভ্রƒক্ষেপহীনতা তিনি এক নিমিষে ক্ষমা করে দেবেন। এমন যেন না হয় যে, তিনি শুধু ডেকেই গেলেন আর আপনি রইলেন মুখ ফিরিয়ে। আর এভাবেই আপনার আয়ু শেষ হয়ে গেল। তাহলে বুকে হাত দিয়ে বলুন, কীভাবে, কোন্ যুক্তিতে মহান আল্লাহকে দোষ দিবেন?
আপনি সব বোঝেন। অর্থোপার্জনের লসাগু-গসাগু আপনার মুখস্থ। ক্ষমতা-প্রতিপত্তির সব রসায়ন কণ্ঠস্থ। রাজনীতির সরল-জটিল সকল সূত্র ঠোঁটস্থ। কূটনীতি-সমাজনীতির সূক্ষ্ম ও স্থূল সকল ইঙ্গিত আপনার কাছে আয়নার মতো পরিষ্কার।
এই সবকিছু আপনি বোঝেন, শুধু বোঝেন না-আপনার ক্ষণস্থায়ী জীবনের সমাপ্তির বার্তা! শুধু বোঝেন না-আপনার চারপাশের আবর্তনশীল দিন-রাতের ভাষাহীন বাণী! শুধু বোঝেন না-আপনার স্রষ্টা, আপনার রব আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের আহ্বান ও হুঁশিয়ারি! বলুন, এই না-বোঝা কি আপনার পক্ষে যথেষ্ট অজুহাত?
যদি না হয় তাহলে এবার একটু থামুন। একান্তে নিজের সাথে বোঝাপড়া করুন। জীবনের পড়ন্ত বেলায় নিজের দিকে একবার তাকান। গোধূলির লাল সূর্যের দিকে তাকিয়ে হিসাব করুন-তার অস্তাচলে যাওয়ার আর কতখানি বাকি! মৃত্যুকে স্মরণ করুন। স্মরণ করুন মৃত্যুর পরের দিনগুলোকে। কী হতে পারে তখন? স্বজন-প্রিয়জনেরা আপনার মৃত্যুর সংবাদে চমকে উঠবে। বেদনায় ভারাক্রান্ত হবে। কিছুদিন অশ্রু ফেলবে। এরপর সব আগের মতোই চলতে থাকবে।
নতুন বছরে আপনার-আমার আমাদের সবার জীবনে উন্মোচিত হোক নতুন দিগন্ত। যে দিগন্ত সত্য ও ন্যায়ের, শুভ ও কল্যাণের, মুক্তি ও নাজাতের-আমীন ইয়া রব্বাল আলামীন।
বিভাগ : শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
আইপিএল: প্লে অফে কে কার মুখোমুখি
আট গোলের রোমাঞ্চ: ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে রিয়ালের ড্র
সহজ জয়ে লা লিগায় রানার্সআপ বার্সা
ক্লপকে অশ্রুসিক্ত বিদায় লিভারপুলের
সিটির অমরত্বের রাত...
বায়ুদূষণে শীর্ষে ঢাকা
ফতুল্লায় হত্যা মামলার আসামি কেরানিগঞ্জে গ্রেপ্তার
যৌথ বাহিনীর অভিযানে বান্দরবানে কেএনএফের ৩ সদস্য নিহত
রাজশাহীতে মোটরসাইকেলের কাগজপত্র দেখতে চাওয়ায় পুলিশকে মারপিট, যুবক আটক
স্বাচিপ রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি ডা. জাহিদ, সম্পাদক ডা. অর্ণা জামান
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রগঠনের দাবিতে সারাদেশে জেলা ও মহানগরীতে ইসলামী
খালেকুজ্জামানের বাড়ী সরকারিভাবে পুননির্মাণের দাবি - ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ
কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত সাবেক বিজেপি নেতা
সঠিক ওজন ও পরিমাপ নিশ্চিতকরণে বিএসটিআই নিরলস কাজ করে যাচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী
মানসম্মত পণ্য উৎপাদনে সরকার নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে: প্রেসিডেন্ট
বিক্ষোভ, গাড়ি ভাঙচুর, অটোরিকশাচালকদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া
কিরগিজস্তানে আহত বাংলাদেশি ছাত্রদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনুন
শিরোপার রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষা : শেষ ম্যাচে মাঠে নামছে সিটি-আর্সেনাল
কোরবানির গোস্ত দিয়ে কোন অনুষ্ঠান করে টেবিল বসিয়ে টাকা বা উপহার নেওয়া প্রসঙ্গে।
মানিকগঞ্জ-ঢাকা রেললাইন প্রসঙ্গে