নবী করিম (সা.) এর ঊর্ধ্বাকাশ ভ্রমণ
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০২ এএম
হিজরতে মদীনার আগের কথা। বাধা আর সফলতার মাঝে এগিয়ে চলছিল ইসলামের অগ্রযাত্রা। কাফির-মুশরিকদের ঠাট্টা-বিদ্রƒপ আর অকথ্য নির্যাতনে শাণিত হচ্ছিল মু‘মিনের ঈমান, জ্বলে উঠছিল মুসলমানের দ্বীনী জযবা। এমনি সময়ে কোনো এক রাতে নবীজী (সা.) সাহাবীদের নিয়ে ইশার নামায আদায় করলেন। অতঃপর খানায়ে কাবা সংলগ্ন ‘হাতীমে’ শুয়ে বিশ্রাম নিতে লাগলেন। এই সেই ‘হাতীম’, যা এক সময়ে খানায়ে কাবারই অংশ ছিল।
মক্কার কাফেররা গুরুত্বপূর্ণ কাজে এখানে সমবেত হত, পরস্পর শপথ ও মৈত্রী চুক্তিতে আবদ্ধ হত। সংকটাপন্ন মুহূর্তে দুআর জন্য প্রসারিত করত দু’হাত। মক্কার সর্দারেরা এখানে প্রায় বিশ্রাম নিত। নবীজীও মাঝে মাঝে আরাম করতেন। ওই রাতেও নবীজী সেখানে তন্দ্রাবিষ্ট ছিলেন; নিদ্রা তখনও আসেনি। আর নবী-রাসূলগণের নিদ্রা তো এমনই হয়; চোখ দুটো তাঁদের মুদে আসলেও ক্বলব থাকে সতত জাগ্রত। জিবরীল আমীন আ. নেমে এলেন। নবীজীকে জাগ্রত করলেন।
অতঃপর তাঁকে নিয়ে গেলেন আবে যমযমের নিকটে। তাঁর বক্ষের অগ্রভাগ হতে চুল পর্যন্ত বিদীর্ণ করা হল। বের করা হল তাঁর হৃৎপিণ্ড। তা আবে যমযম দ্বারা শোধন করা হল। ঈমান ও প্রজ্ঞায় ভরপুর স্বর্ণের একটি পেয়ালা এনে তা দিয়ে ভরে দেওয়া হল নবীজীর বক্ষ মুবারক। অতঃপর হৃৎপিণ্ড যথাস্থানে রেখে দিয়ে উপরিভাগ সেলাই করে দেয়া হল। হযরত আনাস রা. বলেন, আমি এর চিহ্ন নবীজীর বুকে প্রত্যক্ষ করেছি।
‘বুরাক’ নামক ক্ষিপ্রগতির একটি সওয়ারী আনা হল, যা ছিল গাধার চেয়ে বড় ও খচ্চরের চেয়ে ছোট এবং দীর্ঘদেহী। রং ছিল শুভ্র। এমনই ক্ষিপ্র ছিল তার চলার গতি যে, দৃষ্টিসীমার শেষ প্রান্তে গিয়ে পড়ত তার পায়ের খুর। তার পিঠের উপর জিন আঁটা ছিল, মুখে ছিল লাগাম। নবীজী রেকাবে পা রাখবেন এমন সময় ‘বুরাক’ ঔদ্ধত্য দেখাল। জিবরীল তাকে থামিয়ে বললেন, হে বুরাক! তুমি মুহাম্মাদ (সা.) এর সামনে ঔদ্ধত্য প্রকাশ করছ? তুমি কি জান, আল্লাহর কাছে তার চেয়ে মহান ও প্রিয়তম কোনো ব্যক্তি কখনও তোমার উপর সওয়ার হয়নি। একথা শুনতেই বুরাক ঘর্মাক্ত হয়ে গেল। (তিরমিযী : ৩১৩১)।
অতঃপর নবীজী বুরাকে আরোহণ করলেন। মুহূর্তেই এসে উপস্থিত হলেন জেরুজালেম নগরীর বায়তুল মাকদিসে। জিবরীল একটি পাথর ছিদ্র করে বুরাককে বেঁধে রাখলেন। (তিরমিযী : ৩১৩২)। এটা সেই বৃত্ত, যেখানে নবীগণও নিজেদের বাহন বেঁধে রাখতেন। (মুসনাদে আহমাদ : ২/৫২৮)। বায়তুল মাকদিসে ঢুকে তিনি দেখেন, হযরত মূসা (আ.) নামাযরত আছেন। তিনি ছিলেন ছিপছিপে ও দীর্ঘ দেহের অধিকারী। তাঁর চুল ছিল কোঁকড়ানো, যা ছিল কান পর্যন্ত ঝুলন্ত। দেখে মনে হবে যেন ‘ শানওয়া’ গোত্রেরই একজন লোক।
হযরত ঈসা আ.-কেও দণ্ডায়মান হয়ে নামায পড়তে দেখা গেল। তিনি ছিলেন মাঝারি গড়নের, সাদা ও লাল রং বিশিষ্ট। তাঁর চুল ছিল সোজা ও চাকচিক্যময়। তাঁর আকার-আকৃতি সাহাবী উরওয়া ইবনে মাসউদ সাকাফী রা.-এর সাথে অধিক মেলে। হযরত ইব্রাহীম আ.-কেও নামাযরত অবস্থায় দৃষ্টিগোচর হল। নবীজী বলেন, তাঁর দেহাবয়ব আমার সাথে অধিক সামঞ্জ্যশীল। (মুসলিম : ১৬৭)।
ইতিমধ্যে জামাত প্রস্তুত হল। তিনি দু’রাকাত নামায আদায় করলেন। সকল নবী-রাসূলগণ নবীজীর পিছনে ইক্তেদা করলেন। ওখান থেকে বের হয়েই দেখলেন, জিবরীল আ.-এর হাতে দুটি সুদৃশ্য পাত্র। একটি শরাবের, অপরটি দুধের। পাত্রদুটি পেশ করা হলে নবীজী দুধেরটিকেই বেছে নিলেন। এতদ্দর্শনে জিবরীল আ. তাঁকে বললেন, আপনি ও আপনার উম্মত স্বভাবজাত ফিত্রাতকেই বেছে নিয়েছেন। আপনি যদি শরাব পছন্দ করতেন, তাহলে আপনার উম্মত পথভ্রষ্ট হয়ে যেত। (মুসলিম, হাদীস ১৬৮)।
বিভাগ : শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
গুমের দায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২২ সদস্য চাকরিচ্যুত
কুরস্ক অঞ্চলের ৪০ ভাগ খোয়ানোর স্বীকারোক্তি ইউক্রেনের
মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে বাংলাদেশ চীনের সাথে কাজ করতে আগ্রহী: বাণিজ্য উপদেষ্টা
হাজীদের সর্বোত্তম স্বার্থ রক্ষায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ধর্ম উপদেষ্টা ড. খালিদ হোসেন
শরীয়তপুরে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের যৌথ কর্মী সভা
মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় সিকিউরিটি গার্ড নিহত
পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিল জিম্বাবুয়ে
১৫ দিন রিমান্ড শেষে কারাগারে আব্দুর রাজ্জাক
লক্ষ্মীপুরে ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ৫০ জন
নির্বাচিত সরকারই দেশকে পুনর্গঠন করতে পারে : তারেক রহমান
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা কমিটিতে অচেনা ৭ জন
মৌলভীবাজারে কৃষি ও প্রযুক্তি মেলা শুরু
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের মডেল উদ্ভাবন
ব্রহ্মপুত্রে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে চলছে বালু ব্যবসা
বাঘায় কৃষি শ্রমিককে গলা কেটে হত্যা
কেশবপুরে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ
হামলার শিকার হয়েও মুখ খুলতে পারছে না বোয়ালমারীর বহু পরিবার
ইসলামী আন্দোলনের গণসমাবেশে আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবি
বিপিএলের প্রথম দিনই মাঠে নামছে বসুন্ধরা-মোহামেডান
সাগরে মিলছে না আশানুরূপ ইলিশ হতাশায় মীরসরাইয়ের জেলেরা