গোনাহের প্রতিকার ও প্রভাব-১
৩০ জুন ২০২৪, ১২:০৮ এএম | আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ১২:০৮ এএম
জীবন চলতে গিয়ে মানুষকে নানা রকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। নানা ধরনের কাজ-কর্ম করতে হয়। ভাবতে হয় নানা রকম বিষয় এবং সামলাতে হয় বিচিত্র রকমের পরিস্থিতি। এসব ক্ষেত্রে যথাযথ উদ্যোগ ও উপযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ যেমন হয়, তেমনি হয়ে যায় অনাকাক্সিক্ষত নানা ভুল ও বিচ্যুতি। মানুষের মানবিক ও প্রাকৃতিক নানা দুর্বলতাও প্রকাশ পায় সেখানে। প্রকাশ পায় তার আত্মশক্তি, ইচ্ছাশক্তি ও কর্মশক্তির বিভিন্ন অবস্থা। কোনো সন্দেহ নেই, এসব কিছু সত্ত্বেও জীবনের বহু ক্ষেত্রে মানুষ সফল হয়। তবে ব্যর্থতাও অধিকার করে নেয় বহু ক্ষেত্রে। জীবনের এই ধারা চলমান। জীবন যতদিন আছে হয়তো ততদিনই চলবে এই অবস্থা।
কোনো মানুষই চায় না তার জীবনে ব্যর্থতা নেমে আসুক। চায় না তাকে দুঃখ স্পর্শ করুক কিংবা স্পর্শ করুক হতাশা ও দুশ্চিন্তা। কিন্তু অমোঘ বাস্তবতা রুখবে কে? তাই সফলতার পাশাপাশি মানুষকে ব্যর্থতাও দেখতে হয়। সুখের সাথে মেনে নিতে হয় দুঃখকেও। না চাইলেও সয়ে যেতে হয় দুর্দশা ও দুশ্চিন্তা।
জীবনের এসব ক্ষেত্রে মানুষ সবসময়ই যে নীতি-আদর্শে অবিচল থাকতে পারে এমন নয়। অনিচ্ছা সত্ত্বেও অনেক ক্ষেত্রে সে সরে যায় করণীয় থেকে। লিপ্ত হয়ে পড়ে নিষিদ্ধ কিংবা অনুচিত নানা কাজে। এক্ষেত্রে মানুষের স্বভাব দুর্বলতা তো আছেই। আরও আছে গাফলত ও অবহেলা, প্রবৃত্তি ও মন্দপ্রবণতা, আছে দৃঢ়তা ও অবিচলতার অভাব। উপরন্তু ইবলিস শয়তান তো আছেই। আছে তার ওয়াসওয়াসা ও কুমন্ত্রণা।
মানুষের এই সকল অবস্থা, স্বভাবজাত দুর্বলতা, অবহেলা, মন্দপ্রবণতা ও শয়তানের কুমন্ত্রণার কথা খুব ভালোভাবেই জানেন তিনি, যিনি সকলের খালিক ও স্রষ্টা এবং মালিক ও সর্বাধিকারী। তাই খুব সহজ ও সুন্দর প্রতিবিধানের ব্যবস্থা রেখেছেন তিনি। দিয়েছেন উদ্ধারকারী সহজ মাধ্যম এবং প্রতিষেধকমূলক সহজ প্রক্রিয়া।
জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃত গোনাহের প্রতিবিধান সম্পর্কে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন : যে কেউ কোনো মন্দ কাজ করবে অথবা নিজের প্রতি জুলুম করবে, তারপর আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করবে, সে আল্লাহকে পাবে অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা নিসা : ১১০)।
এখানে মন্দ কাজ তথা ছোট ছোট গোনাহ এবং নিজের প্রতি জুলুম তথা বড় ধরনের গোনাহ, উভয়টির ক্ষেত্রেই বলা হয়েছে ইস্তিগফার বা ক্ষমা প্রার্থনার কথা। বলা হয়েছে, ক্ষমা প্রার্থনা করলে আল্লাহকে পাবে অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। অর্থাৎ বান্দা কোনো ভুল, অপরাধ বা সীমালঙ্ঘন করলেও তার প্রতি তিনি অত্যন্ত দয়ার আচরণ করেন। ক্ষমাগুণ প্রকাশ করেন। তাই দৃঢ় আশা করা যায় যে, তিনি বান্দাকে ক্ষমা করে দেবেন।
বাস্তবে সুস্থ বিবেকের অধিকারী কোনো মানুষই চায় না খারাপ হতে। চায় না মন্দ কাজ করতে কিংবা অপরাধী হতে। কিন্তু মানুষের স্বভাবজাত দুর্বলতা, আত্মনিয়ন্ত্রণে শিথিলতা এবং নফস ও শয়তানের প্রবঞ্চনা তাকে এসবে লিপ্ত করে ফেলে। তাছাড়া দুনিয়া যেহেতু পরীক্ষার জায়গা, এখানে ভালো ও মন্দ উভয় কাজের শক্তি দিয়ে মানুষকে পাঠানো হয়েছে। এরপর ভালো ও নেক কাজে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। মন্দ ও গোনাহের কাজে ঘোষণা করা হয়েছে শাস্তি। সেই শাস্তি থেকেই বাঁচার উপায় হলো তাওবা ও ইস্তিগফার।
অন্য একটি আয়াতে আরও উদার-ব্যাপ্ত ঘোষণা এসেছে। এসেছে অভয় ও আশ্বাসবাণী। আল্লাহ তাআলা বলেন : আপনি বলে দিন, হে আমার সেই বান্দারা! যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ! আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেন। নিশ্চয়ই তিনি অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা যুমার : ৫৩)।
গোনাহ হয়ে গেছে! নিজের প্রতি অবিচার করেছ! সীমালঙ্ঘন করেছ! তবু নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। এমন অভয় ও আশ্বাসবাণী পাওয়ার পর একজন মুমিনের হৃদয়ে কী আস্থা ও শক্তি অনুভূত হয় তা খুব সহজেই অনুমেয়।
শুধু তাই নয়। তাওবা ও ইস্তিগফারের প্রতি তিনি আলাদাভাবেও উৎসাহ দিয়েছেন। নির্দেশ করেছেন ক্ষমা ও জান্নাতের দিকে দ্রুত অগ্রসর হতে। ইরশাদ হয়েছে : এবং দ্রুত অগ্রসর হও তোমার রবের ক্ষমার দিকে এবং জান্নাতের দিকে, যার প্রশস্ততা আসমানসমূহ ও যমীনের (প্রশস্ততার) ন্যায়, যা প্রস্তুত করা হয়েছে মুত্তাকীদের জন্য। (সূরা আলে ইমরান : ১৩৩)।
ইস্তিগফার ও ক্ষমা প্রার্থনার ফলে এসব বিষয় লাভ হবে। আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করবেন। আকাশ থেকে মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন। ধনসম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে সমৃদ্ধ করবেন এবং বাগ-বাগিচা ও নদ-নদীর ব্যবস্থা করে দেবেন। স্পষ্ট কথা যে, এগুলোর প্রত্যেকটিই এমন, যা ছাড়া মানুষের জীবন ও জগৎ প্রায় অচল। সেগুলোই খুব সহজে লাভ হতে পারে ইস্তিগফারের মাধ্যমে।
বিভাগ : শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
রাঙামাটির সাজেকে দিনভর গোলাগুলি: ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জেলা প্রশাসনের
'বিপ্লবোত্তর ছাত্র ঐক্য' জবিতে ১২ ছাত্রসংগঠনের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ
শেরপুরে সেনা সদস্যকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ৩৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা : গ্রেপ্তার-৭
ঢাকায় তিন দিনব্যাপী ইরানি চলচ্চিত্র উৎসব শুরু
খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করলেন পাকিস্তানের হাইকমিশনার
ফিলিস্তিনে ইসরাইলের বর্বর হামলার প্রতিবাদে ঢাকায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের বিরুদ্ধে অবস্থাকারীরাই মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দায়িত্বে
ভিভো ভি৪০ ফাইভজি, হালকা ওজনে শক্তিশালী ব্যাটারি
ভারতের শাসকগোষ্ঠী ও হিন্দুত্ববাদী শক্তি সম্প্রীতি চায় না: তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা
দিল্লী দিশেহারা হয়ে নানা ধরনের বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে: শাহীন শওকত
বাংলাদেশে ব্রিটিশ নাগরিকদের ভ্রমণে সতর্কতা জারি
সামরিক আইন জারি দক্ষিণ কোরিয়ায়
হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে উত্তরায় মশাল মিছিল
নকলায় ট্রাক চাপায় নাতি পরপারে শিশু নানী হাসপাতালে
ইফায় ১৫ বছরের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশের সিদ্ধান্ত
ভারতের সঙ্গে পূর্ববর্তী ফ্যাসিবাদী সরকারের করা সব গোপন চুক্তি প্রকাশ করা উচিত : হাসনাত আবদুল্লাহ
ওয়ার্ল্ড রোবট অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের ২ পদক
ছাত্র-জনতার বিপ্লবে ভারতের স্বপ্ন ভেস্তে গেছে : হাজী ইয়াছিন
ভারত বাংলাদেশের ওপর যুদ্ধ বাধানোর চক্রান্ত করছে বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ
পার্থিব ও ওহীর জ্ঞানের সমন্বয়ে গঠিত মাদরাসা শিক্ষা: অধ্যক্ষ শাব্বীর আহমদ মোমতাজী