স্বাধীনতার মাস : ইয়া আল্লাহ! এই জাতিকে সর্বকল্যাণে ভূষিত করুন
০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০১ এএম | আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০১ এএম
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তা। তিনি পরম দয়ালু অতি মেহেরবান। তাঁর দয়া ও করুণার প্রকাশ আমাদের সত্তায়, চারপাশে। জাতীয় কবির ভাষায় : কার করুণায় পৃথিবীতে এত ফসল ও ফুল হাসে/ বর্ষার মেঘে নদ-নদী-স্রোতে কার কৃপা নেমে আসে/ কার শক্তিতে জ্ঞান পায় এত পায় মান-সম্মান/ এ জীবন পেল কোথা, হতে তার পেল না আজিও জ্ঞান।’ তবে এ তাঁর করুণার একটি দিক। পৃথিবীর জীবনে বেঁচে থাকার সকল উপায় ও ব্যবস্থা তাঁরই দান। তাঁর করুণার আরেক দিক, আখিরাতের জীবনের মুক্তি ও শান্তির ব্যবস্থা। এ উদ্দেশ্যেই তিনি নাযিল করেছেন তাঁর পাক কালাম এবং যুগে যুগে প্রেরণ করেছেন অনেক নবী ও রাসূল। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা লাভ করেছি শেষ আসমানী কিতাব- আলকুরআনুল কারীম এবং শেষ নবী- হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে।
নবী (সা.) তাঁর উম্মতকে আখিরাতের বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করেছেন এবং নাজাতের পথ দেখিয়েছেন। শুধু পথই দেখাননি, চূড়ান্ত বিশ্বস্ততা ও কল্যাণকামিতার সাথে উম্মতকে সেই পথে পরিচালিত ও প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। তাঁর আগেও যুগে যুগে আল্লাহ তাআলা মানবজাতির হেদায়েতের জন্য অনেক নবী ও রাসূল পাঠিয়েছেন। তাঁদের সবার সাধারণ বৈশিষ্ট্য ছিল, বিশ্বস্ততা ও কল্যাণকামিতা।
প্রত্যেক নবী তাঁর কওমকে বিভিন্ন ভাষায় একথাই বলেছেন, ‘আমি তোমাদের কল্যাণকামী ও বিশ্বস্ত।’ কুরআন মাজীদে নবীগণের দাওয়াতের যে বিবরণ এসেছে তাতে এ বিষয়টি বারবার উল্লেখিত হয়েছে। পৃথিবীতে বহু দাবি ও আহ্বান উচ্চারিত হয়, কিন্তু এক কঠিন বাস্তবতা এই যে, দাবি মাত্রই সত্য নয়, আহ্বান মাত্রই কল্যাণের আহ্বান নয়। তাহলে সত্য ও মিথ্যার মাঝে এবং সততা ও কপটতার মাঝে পার্থক্যের উপায় কী? এর বড় উপায় হচ্ছে আহ্বানকারীর বিশ্বস্ততা ও কল্যাণকামিতা। এ এক সহজ সত্য। তবে এই সত্য কথাটি নীতিগতভাবে বোঝা যত সহজ প্রায়োগিক ক্ষেত্রে বোঝা তত সহজ নয়।
একারণে নবী-রাসূল আলাইহিমুস সালামের মতো শ্রেষ্ঠ মানবগণকেও অবিশ্বস্ততার অপবাদ শুনতে হয়েছে। আর এভাবে কওমের একটি শ্রেণি ভ্রান্তি ও মত্ততার মধ্যেই জীবন কাটিয়েছে এবং পরিণামে ধ্বংস হয়েছে। পক্ষান্তরে যেসব সৌভাগ্যবান কওমের সবচেয়ে বিশ্বস্ত ও কল্যাণকামী মানুষটিকে চিনতে পেরেছেন এবং তাঁর আনুগত্য করেছেন। পরিণামে তারা সফল হয়েছেন ও নাজাত পেয়েছেন। একারণে ছোট-বড় সফলতা-ব্যর্থতা এবং ব্যক্তি ও সমাজের মুক্তি ও সাফল্য নির্ভর করে বিশ্বস্ত ও কল্যাণকামীকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পারার উপরে।
যে করুণাময় সত্তা মানবের পার্থিব জীবনের প্রয়োজন পূরণের ধারা সৃষ্টির সূচনা থেকে অব্যাহত রেখেছেন তিনিই মানবের নাজাত ও মুক্তি এবং শান্তি ও সফলতার জন্য সঠিক পথনির্দেশ ও পথনির্দেশকের ধারাও জারি রেখেছেন। শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) এর মাধ্যমে যে পূর্ণাঙ্গ ও শাশ্বত দ্বীন তিনি মানবজাতিকে দান করেছেন তাই কিয়ামত পর্যন্ত মানুষের জন্য সঠিক পথনির্দেশ। আর এই দ্বীনের সত্যিকারের ধারক-বাহক খোলাফায়ে রাশেদীন, সাহাবা-তাবেয়ীন, আইম্মায়ে মুজতাহিদীন হচ্ছেন নবী (সা.) এর ওয়ারিছ এবং তাঁর পর উম্মাহর সবচেয়ে বিশ্বস্ত ও কল্যাণকামী শ্রেণি।
দেশে দেশে কর্মে ও বিশ্বাসে এবং আদর্শের প্রচারে এঁদের যারা উত্তরসূরী তারাই স্ব স্ব জনদের সর্বাধিক বিশ্বস্ত ও কল্যাণকামী মানুষ। আর এই কল্যাণকামিতা বিশেষ কোনো শ্রেণির জন্য নয় সকল শ্রেণি-পেশার ও সর্বস্তরের মানুষের জন্য। একটি হাদীসে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইরশাদ : ‘দ্বীন হচ্ছে কল্যাণকামিতা’। সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আল্লাহ রাসূল! কার জন্য কল্যাণকামিতা? আল্লাহর রাসূল (সা.) বললেন, ‘আল্লাহর জন্য, তাঁর রাসূলের জন্য, মুসলমানদের ইমামগণের জন্য এবং সাধারণ মুসলমানদের জন্য।’
সুতরাং ইলমে ওহীর যারা ধারক ও বাহক তাদেরও পরিচয়, বিশ্বস্ততা ও কল্যাণকামিতা। তাঁরা ওফাদার আল্লাহর প্রতি, তাঁর রাসূলের প্রতি, মুসলমানের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের প্রতি এবং সর্বস্তরের মুসলমানগণের প্রতি। এই ওফাদারিরই দাবি, সত্যকে সত্য বলা মিথ্যাকে মিথ্যা বলা। ব্যক্তি ও সমাজের জন্যে যা কল্যাণকর তাকে কল্যাণকর বলা আর ব্যক্তি ও সমাজের জন্যে যা অকল্যাণকর তাকে অকল্যাণকর বলা।
ওই কওমই সফলতার দিকে এগিয়ে যায় যে কওমের দা’য়ীগণ নিজেদের বিশ্বস্ততা ও কল্যাণকামিতার রক্ষায় সক্ষম থাকেন আর মাদ‘উ তথা জনসাধারণ তাদের প্রকৃত কল্যাণকামীদের চিনে তাদের পথনির্দেশ গ্রহণ করতে পারে। আল্লাহ তাআলা এই দেশ ও জাতিকে এই মহাসৌভাগ্য দান করুন এবং সকল কল্যাণে ভূষিত করুন। আমীন ইয়া রাব্বাল আলামীন।
বিভাগ : শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
সাটুরিয়া উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক গ্রেফতার
কলকাতায় বাংলাদেশ উপ হাইকমিশনের নিরাপত্তা জোরদার
‘সাইবার মানডে’ উপলক্ষে ওয়েব হোস্টিংয়ে লিমডা হোস্টে চলছে ৬০% পর্যন্ত ছাড়!
ঢাকায় আসছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রী
ফ্যাসিস্ট সরকারের ৮ বছরের নিষেধাজ্ঞার পর অবশেষে মঞ্চে আসছে থিয়েট্রিক্যাল বাহাস ও কন্ঠনালীতে সূর্য
মিলেছে ‘হারিছ চৌধুরী’র ডিএনএ, রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের নির্দেশ
নাম পরিবর্তনের দাবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের
গলায় ফাঁস দিয়ে বৃদ্ধের আত্মহত্যা
আইএসের নৃশংসতার বিচারে জাতিসংঘ ব্যর্থ : নাদিয়া মুরাদ
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে হেফাজতের মানববন্ধন
মানিকগঞ্জে হাঙ্গার প্রজেক্টের গণতন্ত্র অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত
এবার ভারতের মালদহে বাংলাদেশিদের জন্য হোটেল ভাড়া বন্ধ ঘোষণা
কিশোরগঞ্জের হাওর-অর্থনীতি বেগবান করতে চলছে কয়েকশ কোটি টাকার প্রকল্প
প্লাস্টিক ব্যবহার রোধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে: অতিরিক্ত সচিব ফাহমিদা খানম
দেশের ৬৯ কারাগারের ১৯টি ঝুঁকিপূর্ণ, ৭০ জঙ্গিসহ ৭০০ বন্দি এখনো পলাতক
পায়রার রাজস্ব আয় বাড়বে তিনগুণ, দেশের অর্থনীতিতে রাখবে বড় ভূমিকা
মমতা ব্যানার্জির মনে গভীর কট্টরপন্থি হিন্দুত্ববাদ : রিজভী
কঠিন সময় পার করছে বাংলাদেশ : প্রধান উপদেষ্টা
কুড়িগ্রামে সাবেক এমপি পুত্র সবুজ গ্রেফতার
ভারতে ৫.৩ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প