কবিতা
১৪ মার্চ ২০২৫, ১২:৩১ এএম | আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১২:৩১ এএম

আবরারের জবানবন্দি
কামার ফরিদ
গতরাতে সারারাত কেঁদেছে আকাশ।
কেঁদেছে শিমূল ... কেঁদেছে বকুল আর ... ক্রিসেনথিমাম। তখনো মোছেনি সেই কষ্টের দাগ।
এখন সকাল হলেও কাটেনি আঁধার ... থামেনি মেঘের বিলাপ। কফিনটা পড়ে আছে লাশটানা গাড়িটার চোখের গ্রীবায়!
বাতাসের শরীরে ভাসে লোবানের ঘ্রাণ ...
সফেদ চাদরে ঢাকা মানব কফিন।
সূর্যটাও অভিমানে চলে গেছে দূরে ...
চারপাশে পড়ে আছে রক্তের দাগ ...
লাশহয়ে পড়ে আছে আবরার ... তোমার সন্তান!
বিশ্বাস করলে না তুমি! না করাই স্বাভাবিক।
বিশাল বৃক্ষ যে বার হাল্কা বাতাসে পড়ে তোমার চালায় ...
তখনো অনড় ছিলে।
বিশ্বাস করোনি তুমি। বলেছিলে Ñ ‘লৌকিক নয়’!
এবার সে বিশ্বাস ভাঙবে তোমার যখন শুনবে আমি ...
‘আমি আর বেঁচে নেই মা’!
এখানে এখনো যারা মানুষকে ভালোবেসে সামনে তাকায় Ñ তারা তো তোমার মতো ... তুমি ও তাহার মতো ...
প্রানহীন ... বোধহীন ... গতিহীন ... ‘পাথরমানব’।
-----নিষিদ্ধ হয়েছে আজ ভৈরবী ভোর!
নিষিদ্ধ হয়েছে সব পাখিদের উড়াল
স্বভাব! চারপাশে বেবুনের উল্লাসধ্বণি!
এর মাঝে পড়ে আছে সবুজ দোয়েল ...
খুন হয়ে পড়ে আছে ‘বুয়েট চত্তর’।
ডুকরে ডুকরে যেন কেঁদে ওঠে হিজলের চোখ।
মেঘের ডানার সাথে নেমে আসে পৃথিবীর মৌনতা!
পাশে তার জেগেছিল বাতাসের চলাচল ...
ঘুমহীন রাতের আকাশ।
গাড়িটা ছাড়বে এবার। সাইরেনে কেঁপে ওঠে
সমাজের শোকার্ত দেয়াল।
রাতের তারারা সব নেমে আসে কফিনের পাশে ...
দমকা বাতাসে যেন মায়ের কষ্টসহ দুলে ওঠে
আমাদের ক্ষমাহীন ব্যর্থতা!
কফিনের দরোজা খুলে হঠাৎ দাঁড়িয়ে গেল সময়ের শ্রেষ্ঠমানব। বলে গেল শেষ কথা তার Ñ
“নদী নয় ... পাখি নয় ... নয় কোনো কুয়াশার ভোর!
এবার ফিরিবো আমি নূরলের বেশে ... সালাম অথবা আসাদ ... অথবা তিতুমীর ...দ্রোহে ... অথবা বিদ্রোহে!”
গাড়িটা ছাড়লো এবার। লোবানের গন্ধে যেন
ভেসে গেল বুয়েট চত্তর।
এলোমেলো হয়ে এলো সব। পৃথিবীটাও ছোট হয়ে গেলো।
ছোট থেকে ছোট। কষ্টটা বুকে নিয়ে কফিনটাও হেঁটে যায় Ñ
নক্ষত্র ভীড়ের মাঝে Ñ খুঁজে নিতে শেষ আশ্রয়!
রাতের পাখিরা সব এইখানে বসে থেকে রাতের আকাশে খোঁজে
হারিয়ে যাওয়া সেই সবুজ দোয়েল। রাতটা গভীর হলে ডাহুকটা কেঁদে উঠে কেঁদে কেঁদে থেমে যায় ... সকালের বিবর্ণ রেখায়।
নতুন ফজর
ফরিদ সাইদ
গাজা হামলায় রক্ত নদী হাজার লাশের সারি
ঘর-বাড়ি সব ধসে গেছে কাঁদছে শিশু নারী।
বেঁচে থাকা বড়োই কঠিন ধ্বংসলীলার চাপে
বিভৎস রূপ সহিংসতায় আকাশ-বাতাস কাঁপে।
কাশ্মির আজও হয়নি স্বাধীন জ্বলছে আজ-ও জ্বলছে
ইঙ্গ-মার্কিন বুক উঁচিয়ে বিশ্ব জুড়ে চলছে।
মায়ানমারের জান্তা সকল করছে কীসের লড়াই
মারণাস্ত্রের ক্ষ্যামতা পেয়ে বাড়ছে রাশার বড়াই!
মাতৃভূমির চতুর্দিকে শত্রুসেনার নজর
ও দয়াময় জগৎজুড়ে দাওনা নতুন ফজর।
উড়ে যাচ্ছে স্নেহ মায়া
শারমিন নাহার ঝর্ণা
জলীয় বাষ্পর মতো উড়ে উড়ে
মহাকালের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে স্নেহ মায়া,
মানুষের হৃদয় এখন হিংস্র পাথরের কারুকার্য
সম্প্রীতির গ্রেনেড দিয়েও ভাঙ্গা যায় না।
বজ্রপাতের শব্দে কিছু লোক শামুকের মতো-
গুটিয়ে থাকে আড়ালে আবডালে।
রিক্ত হস্তে ঘরে ফেরে প্রতিদিন মানবতা,
অট্টালিকায় মহা সুখে দাঁত বের করে
খিলখিল শব্দে হাসছে হিংস্রতা,বর্বরতা।
আমরা নীরব দর্শক মুখে নেই কোন কথা।
ঘুম
আহাম্মদ উল্লাহ
পাখিরা উড়ে উড়ে ক্লান্ত-দু’চোখে তাদের নির্জনতম
পৃথিবীর শান্তি
সন্ধ্যায় ঘরে ফেরা হবে না আর, সমুদ্রের তীরে বাঁধা ঘর
জলের টানে বিলীন সভ্যতার ছাই আজ।
আসমান ভরা অন্ধকারের বুনো গন্ধে একাকী একটি ঘর চাই
একটি সংসার চাই ; দু’জনার দেহ হয় যেন ঠাঁই।
শান্তি চাই দেহ জুড়ে মেঘের বর্ষণ হয় যেমন জমিনের ঘাসে;
একটুখানি সুখ চাই অর্ধরাতে ঘুমিয়ে পড়া পাড়ার মাঝে।
সকল দুয়ার খোলা ;আজ রাতে ঘুম আসবে না আর-
মধুবালা -আনাগোনা শুরু হয় মাংস-মেদহীন দেহদের
আজ রাতে ঘুম আসবে না আর - তাদের ভীড়ে।
পৃথিবী ক্লান্ত; ক্লান্ত সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্র ; ক্লান্ত মহাকাশ
আজ- ক্লান্ত কায়া মধুবালা আমাদের পাখির সাথে মিলে।
ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি
গোলাম সরোয়ার
আমি স্বপ্ন দেখি শ্রেণীহীন পৃথিবীর,
আমি কল্পনায় চলে যাই শৃঙ্খলহীন সমাজে,
আমি জানি হবে মুক্তি, হবে যুক্তির জয়।
হবে না অস্ত্রের লড়াই,
হবে না বৈষম্যের খেলা,
হবে না সাম্প্রদায়িক হিংসা,
আমার কোন ভাই -বোন বর্ণবাদের শিকার হবে না,
ধর্ষিত হবে না আমার কোন বোন,
নিপীড়িত হবে না আমার কোন ভাই,
শৃঙ্খলের নামে পড়বে না শিকল,
বিনা দোষে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলবে না,
একটু খাদ্যের জন্য কোন মা কাঁদবে না,
একটু ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্য কোন পৌড় নিজেকে অসহায় ভাববে না।
শোষকের দ্বারা শোষিত হবে না,
আর কোন শিশু উদ্বাস্ত হবে না,
থালা হাতে দাঁড়াবে না আর রিলিফ ক্যাম্পে,
মরা মায়ের স্তনের দুধ না পেয়ে কাঁদবে না কোন শিশু,
পথে-প্রান্তরে উলঙ্গ হয়ে ঘুরবে না কেউ,
জন্ম নেবে না শরণার্থী শিবিরে,
শুনবে না অভাব আর অনটনের গল্প,
ঈদের চাঁদের অপেক্ষায় আকাশে চেয়ে থাকবেনা,
বড় হবে না অন্যের আশ্রয়ে,
ফিরে আসবে আবার সজীবতা-কেটে যাবে সব নির্জনতা।
বিভাগ : সাহিত্য
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

ঢাকায় তৎপর ‘র’! জুলকারনাইন এর চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস!

শার্শায় দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরার পথে ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাই, আটক ২

সার্বজনীন না করে সেকুলার নারীদের দিয়ে কমিশন গঠন করায় একটা ক্যাচাল তৈরি হয়েছে : রাশেদ খান

আশুলিয়ার শীর্ষ সন্ত্রাসী জিয়া দেওয়ান পিস্তলসহ গ্রেফতার

ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে ফের বৈঠকে বিএনপি

বিতর্কিত ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে ভারতে মুসলিমদের ব্যাপক বিক্ষোভ

আশুলিয়ায় নারী পোশাক শ্রমিককে হত্যার পর ঘরে আগুন, স্বামী পলাতক

রাজধানীতে যুবদল নেতাকে গুলি, অবস্থা আশঙ্কাজনক

আজ সন্ধ্যায় স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন পেশ

লালপুরে ফসলের মাঠ থেকে কবিরাজের মরদেহ উদ্ধার

বিচার ব্যবস্থাকে আরও সহজ করতে হবে: আসিফ নজরুল

‘ইস্টার যুদ্ধবিরতি’ ঘোষণার পরও রুশ হামলা চলছে: জেলেনস্কি

সবাই চায় স্বৈরাচার মুক্ত একটি বাংলাদেশ–বাঁধন

মিয়ানমারের দুই শতাধিক নাগরিক পালিয়ে থাইল্যান্ডে এসেছে, দাবি থাই কর্তৃপক্ষের

কোটচাঁদপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চল ছয়লাব পার্থেনিয়ামে এই গাছ হতে পারে মৃত্যুর কারণ

টিটিপি দমনে যৌথ উদ্যোগে একমত পাকিস্তান-আফগানিস্তান, বাড়ছে আঞ্চলিক সহযোগিতা

বরিশালে ক্যান্সার হৃদরোগ ও কিডনি হাসপাতাল ভবন নির্মাণ, কাজের অগ্রগতি বর্ধিত সময়ের ১ বছর পরেও মাত্র ৬৫ ভাগ

ভারত সফরে আসছেন ইলন মাস্ক, প্রযুক্তি বিনিয়োগে নতুন সম্ভাবনা

মেঘনায় অবৈধ বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে বিএনপির বিক্ষোভ

মার্কিন নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণে সতর্কতা জারি