জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ান

আল্লাহ বিজয় দান করেছেন ছাত্র-জনতার শাহাদাতের বিনিময়ে

Daily Inqilab শামসুল ইসলাম

১৬ আগস্ট ২০২৪, ০৬:৩০ পিএম | আপডেট: ১৬ আগস্ট ২০২৪, ০৬:৩০ পিএম

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুহাদ্দিস মুফতি মো.ওয়ালীউর রহমান খান আজ বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, জালেম সরকারের বুলেটে ছাত্র-জনতার শাহাদাতের বিনিময়ে আল্লাহ বিজয় দান করেছেন। এ বিজয়ের মাধ্যমে মিথ্যা দূরভিত হয়েছে সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বদর ও ওহুদের যুদ্ধের ন্যায় আল্লাহ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নিহতদের শাহাদাতের মর্যাদা দান করুন। তিনি বলেন, নয় শতাধিক ছাত্র-জনতা শহীদ হয়েছেন। মহান আল্লাহর সাহায্য ছাড়া এ বিজয় আসেনি।
তিনি বলেন, আল্লাহ ইরশাদ করেন আল্লাহর সাহায্য এসেছে লোকেরা দলে দলের বেড়িয়ে আসতেছে। অনেকে অন্য ধর্মত্যাগ অন্য মত ত্যাগ করে আসবে। কিছু দুর্বৃত্ত মন্দিরে হামলা করে দেশকে অশান্ত করার ষড়যন্ত্র করবে। এদের প্রতিহত করতে হবে। ছাত্র-জনতার রক্তের সাথে বেঈমানী করা যাবে না। নিয়মিত তাসবিহ পাঠ করতে হবে। মনে রাখতে হবে দীর্ঘ ১৬ বছর জনগণ তাদের অধিকার নিয়ে রাস্তায় নামতে পারেনি। স্বৈরাচারি সরকার বুলেট, গুলি লাঠিচার্জ মিথ্যা মামলা নির্যাতন নীপিড়ন চালিয়ে দেশটাকে জিম্মি করে রেখেছিল। জনগণের মৌলিক অধিকার আন্দোলন পদদলিত করতে মাঝে মধ্যেই নিজেরাই লঞ্চ, স্টিমার বাস বন্ধ করে হরতার করেছিল বিগত সরকার। মুফতি ওয়ালীউর রহমান খান বলেন, দেশের ১ নম্বর সমস্যা ছিল দুর্নীতি, ২য় ছিল অবিচার জুলুম। বিদেশে পাচারকৃত অর্থ উদ্ধার করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করতে হবে। ছাত্র-জনতাই রক্তের বিনিময়ে দেশকে দ্বিতীয়বার স্বাধীন করেছেন। মেধা দিয়েই চাকরি হবে। মেধাবিরাই দেশ চালাবেন। কোনো বিদেশি শক্তির বাংলাদেশে খবরদারি চলবে না। ছাত্ররাই দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ত্ব রক্ষা করবেন এবং জনগণ তাদের পাশে থাকবেন। তিনি বলেন, চাঁদাবাজি বন্ধ হলেই দ্রব্যমূল কমে আসবে। দুর্নীতি অনাচার চিরতরে বন্ধ করতে হবে। তবেই সমাজে রাষ্ট্রে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে দেশ এগিয়ে যাবে। আল্লাহ সবাইকে কবুল করুন। আমিন।
গাজীপুরের টঙ্গীস্থ পূর্ব আরিচপূর্ব সরকার বাড়ী ঈদগাহ মসজিদুল আকসার খতিব মাওলানা রিয়াদুল ইসলাম মল্লিকআজ জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,“মানুষ তার একান্ত বন্ধুর ধর্মই গ্রহণ করে থাকে। সুতরাং তোমাদের প্রত্যেকেই যেন একটু ভেবে দেখে যে, সে কার সাথে বন্ধুত্ব পাতাতে যাচ্ছে”। তিরমিজি শরীফ-হাদীস:২৩৭৮। বন্ধু-বান্ধব তো এতোই প্রভাবশালী হয় যে, কোনো বন্ধু ইচ্ছে করলেই তার অপর বন্ধুকে দিয়ে যে কোনো অঘটন ঘটাতে পারে। এ ব্যাপারে পুরুষের চাইতে মহিলারাই বেশি পারদর্শী এবং তারাই পুরুষের চাইতে বেশি নিজ বান্ধবী কর্তৃক প্রভাবিত হয়। এ কারণেই বন্ধু-বান্ধব চয়ন করার সময় খুবই সতর্ক থাকতে হবে। বন্ধু-বান্ধব যেন দীনদার ও চরিত্রবান হয়। যাতে একে অপরকে নেক কাজে সহযোগিতা করতে পারে। কেউ গাফিল হলে অন্য জন তাকে নেক কাজে পুনরুজ্জীবিত করতে পারে। কেউ পথভ্রষ্ট হলে অন্য জন তাকে সতর্ক করতে পারে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,“কোনো পুরুষ অন্য কোনো মহিলার সাথে একান্তে মিলিত হলে শয়তান হয় তাদের তৃতীয় জন”।-
তিরমিজি শরীফ:হাদিস -১১৭১। আল্লামা ইবনুল-কাইয়্যেম (রহ.) বলেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশাই সকল বিপদ ও অঘটনের মূল। এরই কারণে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে মানুষের ওপর ব্যাপক শাস্তি নেমে আসে এবং এরই কারণে দুনিয়াতে ব্যক্তি ও সমষ্টিগত ফ্যাসাদ সৃষ্টি হয়। আর গোপনে নারী-পুরুষের সহাবস্থান তো ব্যভিচারের প্রতি কয়েক ধাপ এগিয়ে যাওয়া বৈ কি? নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা অন্তরের বিক্ষিপ্ততা এবং যৌন উত্তেজনাকে বৃদ্ধি করার একটি বিরাট মাধ্যম। কারণ, কোনো পুরুষ অন্য কোনো নারীর সাথে অবাধ মেলামেশার সুযোগ পেলেই তো সে তাকে ধীরে ধীরে নিজের প্রতি আকর্ষণ করার সুযোগ পায়। তেমনিভাবে কোনো নারী অন্য কোনো পুরুষের সাথে অবাধ মেলামেশার সুযোগ পেলেই তো সে তাকে ধীরে ধীরে নিজের প্রতি আকর্ষণ করার সুযোগ পায়। অন্যথায় নয়। আর তখনই উভয়ের মধ্যে পরস্পর গোপনে মিলনের চিন্তা আসে এবং তখনই ব্যভিচার সংঘটিত হয়। আল্লাহ তায়ালা শুধু যৌনকর্মকেই হারাম করেননি, বরং তিনি এরই পাশাপাশি সব ধরনের অশ্লীলতাকেও হারাম করেছেন।
আল্লাহ তায়ালা বলেন,“হে নবী আপনি ঘোষণা করে দিন, নিশ্চয় আমার প্রভু হারাম করে দিয়েছেন প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সকল ধরনের অশ্লীলতা, পাপকর্ম, অন্যায় বিদ্রোহ, আল্লাহ তায়ালার সাথে কাউকে শরীক করা; যে ব্যাপারে তিনি কোনো দলীল-প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি এবং আল্লাহ তায়ালা সম্পর্কে অজ্ঞতাবশত কিছু বলা” [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ৩৩] আল্লাহ তায়ালা যখন ব্যভিচারকর্মকে নিষেধ করে দিয়েছেন তখন তিনি সে সকল পথকেও নীতিগতভাবে রোধ করে দিয়েছেন যেগুলোর মাধ্যমে স্বভাবতঃ ব্যভিচারকর্ম সংঘটিত হয়ে থাকে। এ জন্যই আল্লাহ তায়ালা পুরুষ ও মহিলা উভয় জাতিকে লজ্জাস্থান হিফাযতের পূর্বে সর্বপ্রথম নিজ দৃষ্টিকে সংযত করতে আদেশ করেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, মুমিনদেরকে বলে দিন: যেন তারা নিজ দৃষ্টিকে সংযত করে এবং নিজ লজ্জাস্থানকে হিফাযত করে। এটাই তাদের জন্য প্রবিত্র থাকার সর্বোত্তম মাধ্যম। সূরা আন-নূর, আয়াত: ৩০ । বৈষম্য বিরোধী আনন্দলনে অংশগ্রহন করা ছাত্র-ছাত্রী, ভাই-বোনদের প্রতি অবিভাবকদের দৃষ্টি দেওয়া দরকার যাতে করে তারা আল্লাহ তায়া’লার গোস্বার কারণ না হয়। আল্লাহ সবাইকে আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন।


বিভাগ : মহানগর


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারকে গতিশীল করতে হবে-  উপদেষ্টা শারমীন

ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারকে গতিশীল করতে হবে- উপদেষ্টা শারমীন

এইচএমপিভি নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৭ নির্দেশনা

এইচএমপিভি নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৭ নির্দেশনা

পাংশায় মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে  মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে

পাংশায় মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে  মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে

শফিক রেহমান-রহমান মুরুব্বী এক্সপোজড

শফিক রেহমান-রহমান মুরুব্বী এক্সপোজড

রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া রুটে বাস চলাচল বন্ধ, চরম ভোগান্তিতে যাত্রীরা

রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া রুটে বাস চলাচল বন্ধ, চরম ভোগান্তিতে যাত্রীরা

মেহেরপুর জেলা বিএনপির নেতাদের বাগোয়ান বাসীর সংবর্ধনা

মেহেরপুর জেলা বিএনপির নেতাদের বাগোয়ান বাসীর সংবর্ধনা

জনগণের ওপর অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকুন

জনগণের ওপর অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকুন

কৃষির সাথে যেমন কৃষকের সম্পর্ক তেমনি দেশের জনগনের সাথে বিএনপির সম্পর্ক :  শামীম তালুকদার

কৃষির সাথে যেমন কৃষকের সম্পর্ক তেমনি দেশের জনগনের সাথে বিএনপির সম্পর্ক : শামীম তালুকদার

৪২ চার ও ১৬ ছক্কায় অপরাজিত ৩৪৬!

৪২ চার ও ১৬ ছক্কায় অপরাজিত ৩৪৬!

কুমারখালীতে টিসিবির পণ্য বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে বিক্ষোভ

কুমারখালীতে টিসিবির পণ্য বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে বিক্ষোভ

দেশের ৬০ ভাগ মানুষ কৃষির সাথে সম্পৃক্ত থাকলেও কৃষকের স্বার্থে কোনো সংগঠন গড়ে ওঠেনি'

দেশের ৬০ ভাগ মানুষ কৃষির সাথে সম্পৃক্ত থাকলেও কৃষকের স্বার্থে কোনো সংগঠন গড়ে ওঠেনি'

নিজের বিয়ে নিয়ে কি বললেন পড়শী

নিজের বিয়ে নিয়ে কি বললেন পড়শী

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সীমান্ত হত্যায় ব্যবহৃত চাকুসহ আরো এক আসামী  গ্রেফতার

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সীমান্ত হত্যায় ব্যবহৃত চাকুসহ আরো এক আসামী গ্রেফতার

সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরও ৬০ দিন বাড়লো

সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরও ৬০ দিন বাড়লো

৪২ মিনিটেই নেইমারের আয় ১০১ মিলিয়ন ইউরো

৪২ মিনিটেই নেইমারের আয় ১০১ মিলিয়ন ইউরো

ফেব্রুয়ারিতে পার্স-২ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করবে ইরান

ফেব্রুয়ারিতে পার্স-২ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করবে ইরান

মাগুরায় পিলখানা হত্যাকান্ডে হত্যাকারী ও পরকল্পনাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

মাগুরায় পিলখানা হত্যাকান্ডে হত্যাকারী ও পরকল্পনাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

কসাই থেকে নদীখেকো জাফর

কসাই থেকে নদীখেকো জাফর

পাঁচ দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের পাঁচ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

পাঁচ দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের পাঁচ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

ফ্যাসিবাদের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে সক্রিয় ছিল ইবি ছাত্রদল

ফ্যাসিবাদের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে সক্রিয় ছিল ইবি ছাত্রদল