পুরো ঢাকায় ঘুরবে মেট্রোর চাকা
৩১ মার্চ ২০২৩, ১০:২৭ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৫৪ পিএম

২০৩০ সালের মধ্যে রাজধানীর ঢাকা ও এর আশপাশ মিলিয়ে ছয় রুটে চলবে মেট্রোরেল। এরপর থেকে পুরো ঢাকা মেট্রোরেল দাপটের সাথে চলাচল করবে যাত্রী নিয়ে। একটি যানজটহীন স্বাচ্ছন্দময় গণপরিবহন পাবেন ঢাকাবাসী। এছাড়াও এসময়ের মধ্যে চালু হওয়ার কথা রয়েছে পাতালসহ মোট ৬টি রুটে মেট্রোরেল চলাচল। আর এই নতুন সম্ভাবনা নিয়েও দুরন্ত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে মেট্রোরেলের অন্য রুটগুলোর নির্মাণকাজ। মাত্র তিন মাস আগে মেট্রোরেলের যুগে প্রবেশ করা বাংলাদেশে সাত বছর পর থাকবে মেট্রোর একক আধিপত্য। এমনাটাই বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
ইতোমধ্যে চালু হলো মেট্রোরেলের শেওড়াপাড়া ও উত্তরা দক্ষিণ স্টেশন। এখন থেকে উত্তরা-আগারগাঁও রুটের সব স্টেশনেই থামবে মেট্রোরেল। ১২ কিলোমিটার এই পথের সব স্টেশন খুলে দেওয়ায় খুশি যাত্রীরা। যদিও সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় মেট্রোরেলে যাত্রী তেমন ছিল না। এই দুই স্টেশন থেকে যাত্রীরা তাদের নিজ নিজ গন্তব্যে যাতায়াত করতে পারছেন। তবে নতুন মেট্রো স্টেশনে যাত্রীদের খুব একটা চাপ দেখা যায়নি। যে কয়জন যাত্রী ছিলেন তাদের মাঝে এক ধরনের উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। গতকাল শুক্রবার শেওড়াপাড়া স্টেশন পরিদর্শন করে এই চিত্র দেখা যায়। বর্তমানে মেট্রোরেল সকাল সাড়ে ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলাচল করছে। ৫ এপ্রিল থেকে চলবে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। এরপর জুলাই মাস থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত চলবে মেট্রোরেল।
সরেজমিনে দেখা যায়, ছুটির দিনেও যাত্রীদের তেমন চাপ নেই। ৭টা ৫৫ মিনিটের দিকে কয়েকজন যাত্রীকে গেটের সামনে আসতে দেখা যায়। তবে গেট খুলে দেওয়ার পর যাত্রীদের মেট্রো স্টেশনে প্রবেশের জন্য কোনো লাইন ধরতে হয়নি। ভেতরে প্রবেশ করতেই দেখা যায় রোভার স্কাউটরা যাত্রীদের সহযোগিতা করছেন। এছাড়া ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) কর্তৃপক্ষের সদস্যরাও যাত্রীদের সহায়তা করছেন।
পূর্ব শেওড়াপাড়ার এক বাসিন্দা বলেন, অপেক্ষায় ছিলাম কবে এটা চালু হবে। এই মেট্রোরেলের জন্য অনেক সাফার করেছি। যাই হোক আজকে শেওড়াপাড়া স্টেশন চালু হয়েছে। ভালো লাগছে অনেক। আমরা দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেয়েছি।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ম্যানেজার মাহফুজুর রহমান বলেন, সকাল ৮টায় দুটি স্টেশন যাত্রীদের জন্য উন্মুক্ত করা হলো। এটি একেবারেই সাধারণভাবে করা হলো। সব কিছু আগের মতোই। পার্থক্য শুধু যাত্রী স্টেশনে প্রবেশ করছে এবং মেট্রোরেল থামছে। আমরা দুটি দল গঠন করেছি। যারা অপারেশনের জন্য উত্তরা দক্ষিণ এবং শেওড়াপাড়া স্টেশনের অপারেশন টিমের সঙ্গে সমন্বয় করবে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক জানান, নতুন দুই স্টেশন চালু করতে দুটি আলাদা টিম গঠন করা হয়েছে, যারা স্টেশন পরিচালনায় সমন্বয় করবে। ক্রমান্বয়ে সময় বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে ৫ এপ্রিল থেকে বাড়ছে মেট্রোরেলের চলাচলের সময়। এদিন থেকে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলবে ট্রেন।
উল্লেখ্য, গত ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেলের লাইন-৬-এর উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ২১ কিলোমিটার উড়াল রেলপথের মধ্যে উত্তরার (দিয়াবাড়ি) অংশ থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন থেকে সাধারণ যাত্রী নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে মেট্রোরেলের চলাচল শুরু হয়। এর পর ধাপে ধাপে স্টেশনগুলো খুলে দেওয়া হয়। সর্বশেষ এই দুই স্টেশন খুলে দেওয়ায় উত্তরা উত্তর (দিয়াবাড়ি) থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের সবগুলো স্টেশন খুলে দেওয়া হলো। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশ এ বছরের শেষ দিকে চালুর পরিকল্পনা আছে কর্তৃপক্ষের। মতিঝিল থেকে স্টেশন পর্যন্ত অংশ চালু হতে পারে ২০২৫ সাল নাগাদ।
এদিকে, রাজধানীর যানজট কমিয়ে মানুষের যাতায়াত সহজ ও দ্রুত করার লক্ষ্যে বিশ্বের উন্নত দেশের মতো রাজধানী ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণের উদ্যোগে ২০১২ সালে সায় দেয় সরকার। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী মোট ছয় ধাপে মেট্রোরেল নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনার প্রথম ধাপে গঠন করা হয় ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড-ডিএমটিসিএল। উড়াল ও পাতাল রেলপথ মিলিয়ে ছয়টি ধাপ রয়েছে। এমআরটি লাইন-৬, এমআরটি লাইন-১, এমআরটি লাইন-৫, এমআরটি লাইন-২, নর্দার্ন ও সাউদার্ন, এমআরটি লাইন-৪। এর মধ্যে এমআরটি লাইন-৬ দিয়ে প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়।
ডিএমটিসিএল সূত্রে জানা গেছে, এমআরটি লাইন-৬, ১ ও ৫ এই তিন লাইন যথাক্রমে ২০২৫ সালের জুন, ২০২৬ সালের ডিসেম্বর এবং ২০২৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে প্রকল্প কর্মকর্তারা বলছেন, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় বিলম্বের কারণে এমআরটি লাইন-১ ও ৫ এর কাজ শেষ হতে ২০৩০ সাল লেগে যেতে পারে।
২০২৮ সালের মধ্যে সাভারের হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা পর্যন্ত উড়াল-পাতাল মিলিয়ে মোট ২০ কিলোমিটার মেট্রোরেল পথ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে ১৩ দশমিক ৫০ কিলোমিটার হবে উড়াল এবং সাত কিলোমিটারে পাতাল রেলপথ নির্মাণ হবে। এই রুটের মোট ১৪টি স্টেশনের মধ্যে নয়টি উড়াল পথে আর পাঁচটি স্টেশন থাকবে পাতাল পথে।
এমআরটি লাইন-৫ নর্দার্ন রুট নামে পরিচিত এই অংশের সার্ভে কাজ চলছে এখন। ২০২৮ সালে লাইনটির নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা থাকলেও ২০৩০ সাল পর্যন্ত সময় লাগতে পারে বলে জনিয়েছে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ। কারণ হিসেবে করোনা মহামারির কথা বলা হচ্ছে। এ কারণে দীর্ঘ সময় থেমে ছিল প্রকল্পের নির্মাণকাজ।
ঢাকায় মেট্রোরেল পথ নির্মাণের উদ্যোগের সূচনা হয় এমআরটি লাইন-৬ এর হাত ধরে। উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ২১ দশমিক ২৬ কিলোমিটার মেট্রোরেল পথের ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটারের কাজ শেষ করা হয় প্রথম ধাপে। গেল বছরের ২৮ ডিসেম্বর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনা। উদ্বোধনের পর ২৯ ডিসেম্বর থেকে বাণিজ্যিকভাবে যাত্রী পরিবহন করছে মেট্রোরেল।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

মাগুরায় ট্রাকের ধাক্কায় মোটর সাইকেল আরোহী নিহত

ধর্ষণ মামলার আসামি সালমান শাহ পালিয়ে থাকার পর গ্রেপ্তার

ভারতের ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩৩ জনে

কবি নজরুল কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতির আত্মহত্যা

বিয়ে করেছেন সংগীতশিল্পী ঐশী

রাত হলে যে কারণে মেজাজ হারান মিথিলা

ভারতে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা : নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২০৭

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রীর সাথে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র এবং মানব সম্পদ মন্ত্রীর বৈঠক

তালেবানের সময়ে আফগানিস্তানে মাদক ব্যবসা বেড়েছে

শরীয়তপুর-চাঁদপুর রুটে ৩০ ঘন্টা বন্ধ থাকবে ফেরি চলাচল

আরও এক সপ্তাহ থাকতে পারে তাপপ্রবাহ

শনিবার ৮ ঘণ্টা গ্যাস বন্ধ থাকবে যেসব এলাকায়

আ.লীগের সর্বনাশ করার জন্য আর কোনো দলের দরকার নেই : কাদের সিদ্দিকী

প্রস্তাবিত বাজেটে যেসব সুযোগ-সুবিধা চায় বিজিএমইএ

হজের সংক্ষিপ্ত নিয়ম ও জরুরি মাসায়েল-৬

আইএমএফের প্রেসক্রিপশনে বাজেট হয়নি

বিজিবি’র অভিযানে ২৮২ কোটি টাকার চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ

মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজির বঙ্গজয়-২

‘বাস্তবতাহীন’ বাজেট বাস্তবায়নই চ্যালেঞ্জ

জিডিপির অনুপাতে বাজেটের আকার অনেক ছোট : ড. মির্জ্জা আজিজ