বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি ও অর্থনীতির ধীরগতির মধ্যেও সবশেষ চার মাসে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পারলেও সদ্য সমাপ্ত মার্চে তা আর হয়ে ওঠেনি; আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৪৯ শতাংশ কমেছে মোট রফতানি আয়। গতকাল রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, মার্চে বাংলাদেশ থেকে ৪৬৪ কোটি ৩৯ লাখ ডলার সমমূল্যের পণ্য রফতানি হয়েছে। আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক হওয়ার পাশাপাশি লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও মোট আয় সাড়ে ৭ শতাংশ কম।

বার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী মার্চের কৌশলগত রফতানির লক্ষ্য ছিল ৫০২ কোটি ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরের মার্চে রফতানি হয়েছিল ৪৭৬ কোটি ২২ লাখ ডলার। মার্চে রফতানি ঋণাত্মক হলেও চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের তিন প্রান্তিক মিলিয়ে (জুলাই থেকে মার্চ) রফতানি আয়ে ৮ দশমিক ০৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি রয়েছে। মার্চ শেষে দেশের মোট রফতানি আয় দাঁড়িয়েছে চার হাজার ১৭২ কোটি ১৬ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল তিন হাজার ৮৬০ কোটি ৫৬ লাখ ডলার। এর আগে রফতানি আয় সবশেষ নেতিবাচক অবস্থার মুখে পড়েছিল চলতি অর্থবছরের অক্টোবরে; ওই মাসে ৪৩৫ কোটি ৬৬ লাখ ডলার সমমূল্যের পণ্য রফতানি হয়েছিল। আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে তা ৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ কম ছিল। এরপর রফতানি আয় ঘুরে দাঁড়িয়ে চার মাস প্রবৃদ্ধির ধারায় থাকে। তবে অক্টোবরের আগের মাসেই টানা ১৩ মাস পর রফতানির প্রবৃদ্ধির ধারায় ছেদ পড়ে। সেপ্টেম্বরে রফতানি থেকে আয় আসে ৩৯০ কোটি ৫০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই মাসের চেয়ে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ কম।

২০২১-২০২২ অর্থবছরে প্রথমবারের মত সেবা ছাড়া শুধু পণ্য রফতানি থেকে ৫০ বিলিয়ন ডলার আয় আসে; মোট রফতানি হয় পাঁচ হাজার ২০৮ কোটি ২৬ লাখ ডলারের পণ্য যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৩৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেশি।
মার্চে পিছিয়ে পোশাক রফতানিতেও
প্রধান রফতানি পণ্য তৈরি পোশাক রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র বিশ্লেষণে দেখা যায়, বরাবরের মতো মোট রফতানি আয়ের মধ্যে তৈরি পোশাকের অংশই বেশি। সদ্য সমাপ্ত মার্চে মোট ৩ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রফতানি হয়েছে। তবে এ মাসে পোশাক রফতানিও আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে এক দশমিক ০৪ শতাংশ পিছিয়ে আছে। অপরদিকে মার্চে মোট ১ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার ওভেন পোশাক রফতানি হয়েছে। এ খাতে রফতানি কমেছে ৩ দশমিক ৬১ শতাংশ। আর ২ দশমিক ০৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপতানির মাধ্যমে প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে নিট পোশাক খাত; আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে বেড়েছে ১ দশমিক ৩২ শতাংশ।

বিজিএমইএ’র পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, একক মাসে কমলেও নয় মাসের হিসাবে পোশাক খাতে প্রবৃদ্ধি বজায় রয়েছে। গত ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকের ৩১ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলারের বিপরীতে চলতি অর্থবছরের একই সময়ে রফতানি হয়েছে ৩৫ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। ফলে পোশাক খাত এখনও ১২ দশমিক ১৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে।