হেলে পড়েছেন কাদের সিদ্দিকী!
১৬ মে ২০২৩, ১১:০৬ পিএম | আপডেট: ১৭ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম
এই হলো বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী জাতীয় নেতা হিসেবে পরিচিত। তিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে বিএনপির সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছিলেন। সে সময় বিএনপির সমাবেশে তিনি কঠোরভাবে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনাকে ধিক্কার দিতেন। সমাবেশে আগত মানুষ কাদের সিদ্দিকীকে ‘জনগণের নেতা’ অভিহিত করতেন। ওই সময় জনগণের ভোটের অধিকারের কথা বললেও ব্যাংকে ঋণখেলাপির কারণে নিজে নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেননি। তবে জোটে আসনের ভাগ ছাড়েননি; নিজের কন্যাকে প্রার্থী করেছিলেন। ২০১৮ সালের ‘রাতের নির্বাচন’ নিয়ে অনেক বক্তব্য দিয়েছেন, আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তিরস্কার করেছেন। নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে নৌকা একশ হাত পানির নীচে ডুবে যাবে এমন মন্তব্য করেছেন। সেই কাদের সিদ্দিকী হঠাৎ স্ত্রী-কন্যাকে নিয়ে গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন। তিনি নিজের বক্তব্য থেকে ১৮০ ডিগ্রী ঘুরে গিয়ে শেখ হাসিনাকে গণতন্ত্রের নেত্রী হিসেবে অবিহিত করেন এবং তাঁর ভূয়সী প্রশংসা করেন। সরকারের নতুন স্তবক কাদের সিদ্দিকীকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেটিনেজরা লিখেছেন ‘তিনি জনগণের ভোটের অধিকার আদায়ের আন্দোলনকে ছুটি দিয়ে সরকারি দলের ছাতার নীচে হেলে পড়েছেন। দিল্লিতে বৃষ্টি হলে তিনি এখানে ছাতা ধরেন।’
দেশ বিদেশের মানুষ যখন দেশের গণতন্ত্র ভোটের অধিকার নিয়ে আন্দোলন করছেন; তখন কাদের সিদ্দিকী ক্ষমতা থেকে অনেক দূরে অবস্থান করেই সরকারকে সহায়তা করে যাচ্ছেন; যেমন সহায়তা করছে দিল্লি থেকে নরেন্দ্র মোদী। কাদের সিদ্দিকী এখন জাতীয় নেতার বদলে স্থানীয় নেতার হিসেবে যেন বেশি সফলতা চাচ্ছেন। এখন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলছেন, টাঙ্গাইলের বাসাইল পৌরসভা নির্বাচন সুষ্ঠু, সুন্দর হলে তার দল কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন বাসাইল পৌরসভা কি গোটা দেশের প্রাণকেন্দ্র? বাসাইলের নির্বাচন ফেয়ার হলে এ সরকারের অধীনে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিরপেক্ষ হওয়ার নিশ্চয়তা কি দেয়?
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী নিজের দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনারের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে এ কথা বলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা।
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনে আমি এবার নিয়ে দু’বার এসেছি। আগেরবারের চেয়ে এবার অনেক ভালো লেগেছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বা পুরো নির্বাচন কমিশনের আশ্বাসে আমি আশ্বস্ত হয়েছি। তারা বলেছেন, তাদের সাধ্য মতো সুষ্ঠু, নিরপেক্ষে উৎসবমুখর পরিবেশে বাসাইল নির্বাচন উপহার দেবেন। তিনি বলেন, ইসির অনেক কথার সঙ্গে আমরা একমত পোষণ করেছি। নির্বাচন হওয়া উচিৎ অবাধ, নিরপেক্ষ। কোন দল অংশগ্রহণ করল, ক’টি দল অংশগ্রহণ করল, এটার চেয়ে আমি মনে করি কতজন ভোটার তার ইচ্ছামতো ভোট দিতে পারল, এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা।
এখন পর্যন্ত ইসির কার্যক্রমে ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অবস্থা আছে কি না জানতে চাইলে কাদের সিদ্দিকী বলেন, এই কমিশন যখন গঠিত হয় তখন প্রেসিডেন্টের আহ্বানে আমরা বঙ্গভবনে গিয়েছিলাম। আমাদেরও কমিশন গঠনে প্রস্তাব ছিল। এই নির্বাচন কমিশন প্রথম দিকে অনেক এলোমেলো কথাবার্তা বলেছে। এখন আমার কাছে মনে হচ্ছে, তারা বুঝতে পেরেছেন নির্বাচন কমিশন কী এবং তাদের অনেক এলোমেলো কথা কমে গেছে। সেজন্যই আমরা উৎসাহী হয়ে এসেছি।
সুষ্ঠু ভোটের দায়িত্ব কি কেবল নির্বাচন কমিশনের? এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের সিদ্দিকী বলেন, না, না। একটা নির্বাচনকে যথাযথ সুন্দর করার প্রধান দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। তার চাইতেও আমার কাছে মনে হয় যারা রাজনৈতিক দল, জনসাধারণ, ভোটার এবং সরকার; তফসিল ঘোষণার পরে সরকারেরও সরকার হচ্ছে নির্বাচন কমিশন। অনেকে তার সেই ব্যক্তিত্ব, নেতৃত্ব দেখাতে পারে অনেকে আবার পারে না। আমরা বিশ্বাস এই কমিশন এখন সেই নেতৃত্ব দেখাতে পারবে।
দলীয় সরকারের অধীনে ভোটের বিষয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন হলো সরকার, সরকার কিছু নয়। সরকার হলো তখন আজ্ঞাবহ। বর্তমান প্রেক্ষাপটে যা অতটা দেখা যায় না। আমরা প্রত্যাশা করব ধীরে ধীরে পূব দিক থেকে সূর্য উদীত হবে, পশ্চিমে অস্ত যাওয়ার আগেই আমরা এই পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারব। নির্বাচনের সময় কোনো দলীয় সরকার থাকে না। নির্বাচনী সরকার, তার কোনো কাজ নেই। অসম্ভব বলে কিছু নেই। নির্বাচন কমিশনেরও এগিয়ে আসতে হবে এবং মানুষকেও একটু এগিয়ে আসতে হবে। নির্বাচনে আগ্রহ সৃষ্টি করতে রাজনৈতিক দলগুলোকেও ভূমিকা রাখতে হবে।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে বঙ্গবীর বলেন, বিএনপি এখানে বড় কথা নয়। বিএনপি, আওয়ামী লীগ বা অন্যান্য দল কোনোটাই বড় কথা নয়। যদি মানুষের মধ্যে নির্বাচনী মনোভাব সৃষ্টি করা যায়, তাহলে কোনো রাজনৈতিক দল বড় কথা নয়।
কাদের সিদ্দিকীর এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আলোচিত হচ্ছে। নেটিজেনদের বেশির ভাগই বলছেন, কাদের সিদ্দিকী দিল্লির লাড্ডু খাওয়া নেতা। তিনি বিএনপির সঙ্গে এতোদিন জনগণের ভোটের অধিকারের আন্দোলন করলেও এখন তিনি হালুয়া-রুটির লোভে সরকারি দল আওয়ামী লীগের দিকে হেলে পড়েছেন। ##
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
সময় টিভির সাংবাদিকদের চাকরিচ্যুতি: ওই দিনের প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরলেন হাসনাত
চট্টগ্রামের প্রবীণ আলেম আল্লামা জালাল উদ্দীনের ইন্তেকাল
ইসকন নিয়ে পোস্ট: আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুই বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার
সংস্কার প্রশ্নে পিছপা হলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসবে না: পরিবেশ উপদেষ্টা
সদরপুরে জাসাসের ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে র্যালী ও শোভাযাত্রা
বেগমগঞ্জে যুবদল নেতা সুমনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ
ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে চরম অচল অবস্থা, সহিংস ঘটনার আশংকা
জকিগঞ্জে জামায়াতের সেক্রেটারিকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ
থার্টি ফাস্ট নাইট নিষিদ্ধ করতে হবে আইন করে জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ান
মেলবোর্নে স্মিথ-কামিন্সের অনন্য কীর্তি
মনমোহন সিংয়ের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক
নেত্রকোনায় এ আর খান পাঠান স্মৃতি উন্মুক্ত ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতার শুভ উদ্বোধন
এবার তিন অঙ্কে মুর্শিদা
আগুনে পুড়েছে সবচেয়ে বিতর্কিত ফাইলগুলো: রিজভী
সখিপুরে বনবিভাগের বিরুদ্ধে বিএনপি’র বিক্ষোভ ও মশাল মিছিল
হাটহাজারী উপজেলার গড়দুয়ারা ইউনিয়নে লিফলেট বিতরণ
বিসিএফের কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনায় ফ্রান্স প্রবাসীদের প্রাণবন্ত মিলনমেলা
পরিস্থিতি বিবেচনায় স্থগিত পরিচালক সমিতির নির্বাচন
সিলেটে আজহারীর তাফসির মাহফিল আলিয়া মাঠের পরিবর্তে এমসি কলেজ মাঠে
সচিবালয়ে আগুন টঙ্গী হত্যাকাণ্ড ও ইসকনের আস্ফালন একই সূত্রে গাঁথা: মাওলানা মামুনুল হক