চাপের মুখে সুর বদল নেতানিয়াহুর
১১ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৫ এএম
হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ সমাপ্তির পর ইসরাইলের গাজা জয়, দখল বা শাসন করার কোন লক্ষ্য নেই বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এর আগে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন গাজায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে ইসরাইল, যার সমালোচনা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল ফক্স নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, কোন সশস্ত্র বাহিনীর হুমকি ঠেকাতে একটা ‘যথাযোগ্য শক্তির’ সেখানে প্রবেশের দরকার হতে পারে।
‘আমরা গাজা জয় করতে চাই না, আমরা গাজা দখল করতে চাই না এবং আমরা গাজা শাসন করতে চাই না’, নেতানিয়াহু যোগ করেন। বলেন, সেখানে একটা বেসামরিক সরকারের প্রয়োজন হবে, কিন্তু একই সাথে ইসরাইলকে এটাও নিশ্চিত করতে হবে যে ৭ অক্টোবরের মতো হামলা, যেখানে হামাস তাদের ১৪০০ জন নাগরিককে হত্যা করেছে, সেরকম আর ঘটবে না। ‘দরকার হলে একটা যথাযোগ্য বাহিনী গাজায় প্রবেশ করবে এবং হত্যাকারীদের হত্যা করবে। কারণ সেটাই হামাসের মতো আরেকটা সংস্থার গড়ে ওঠা ঠেকাবে’, বলেন তিনি।
প্রতিদিন চার ঘণ্টার সামরিক বিরতির ঘোষণা : ইসরাইল উত্তর গাজায় প্রতিদিন চার ঘণ্টার সামরিক বিরতি শুরু করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি। তবে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, এটা খুবই ‘স্থানীয় এবং সামান্য একটা পদক্ষেপ’ যা তাদের ‘যুদ্ধ থেকে মনোযোগ সরাবে না’।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন এই সময়টায় দুটি ‘জরুরি মানবিক পথ’ দিয়ে মানুষজন যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সরে যেতে পারবে। উত্তর গাজা থেকে বেসামরিক লোকদের বের হবার সুযোগ করে দিতে ইসরাইলের প্রতিদিন বোমা হামলায় এই চার ঘণ্টার বিরতির বিষয়ে সম্মত হওয়া তাদের সঠিক সিদ্ধান্তের পথে একটি ধাপ। ইসরাইল এমন সময় এই সিদ্ধান্ত নিলো যখন প্রায় ১০ দিন পর ইসরাইলি বন্দিদের এক ঝলক দেখলো বিশ্ব, গাজার দ্বিতীয় বৃহৎ সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদ দুই বন্দির একটা ভিডিও প্রকাশ করেছে। বন্দিদের একজন ৭০ বছর বয়সী হানা কাতসির, যাকে একটা হুইলচেয়ারে বসে থাকতে দেখা যায়। ৭ অক্টোবর সীমান্তবর্তী শহর নির ওজ থেকে তাকে ধরে নিয়ে আসা হয় গাজায়। আরেকজন হলো অল্পবয়সী এক কিশোর। গাজায় ২৪০ জন বন্দির ভাগ্য নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে তীব্র আলোচনা চলছে দুই পক্ষের। তবে তাদের ছেড়ে দেয়ার ব্যাপারে কোন চুক্তিতে পৌঁছানোর বিষয়টি আপাতত আলোচনার বাইরে বলেই মনে করছেন বিবিসির পল অ্যাডামস।
গাজার দুটি প্রধান হাসপাতালে হামলা : গাজার দুটি প্রধান হাসপাতাল- আল শিফা ও আল কুদসের পাশেই হামাসের সাথে লড়াই চলছে ইসরাইলি বাহিনীর। বৃহস্পতিবার ইসরাইল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) জানায় তারা আল শিফা হাসপাতালের পাশে হামাসের ‘সামরিক দপ্তরে’ অভিযান চালিয়ে অন্তত ৫০ জন ‘সন্ত্রাসীকে’ হত্যা করেছে। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, তিনি আল কুদস হাসপাতালের দিকেও ট্যাঙ্ক থেকে গুলি ছুড়তে দেখেছেন। প্রায় দুই হাজার রোগী ও ৫০ হাজার উচ্ছেদ হওয়া মানুষ এখন আল শিফা হাসপাতালের ভেতরে আছে বলে জানা যাচ্ছে। এটি গাজা শহরের উত্তর রিমালের পাশে অবস্থিত সেখানকার সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। অন্যদিকে পশ্চিম তীরেও সহিংসতার খবর পাওয়া যাচ্ছে। জেনিনের শরণার্থী শিবিরে ইসরাইলি অভিযানে ১৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানায় সেখানকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
ইসরাইলের প্রতি ‘পক্ষপাতিত্ব’, নিউ ইয়র্ক টাইমস কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ : যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছিলেন ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীরা। সেখানে গিয়ে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি তুলেছেন তারা। পাশাপাশি নিউ ইয়র্ক টাইমসের বিরুদ্ধে ইসরাইল-হামাস যুদ্ধের খবর প্রচারে ইসরাইলের প্রতি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ম্যানহাটনে সংবাদমাধ্যমটির সদর দপ্তরের সামনে জড়ো হন কয়েক শ’ বিক্ষোভকারী। তাদের মধ্যে অনেকেই নিউ ইয়র্ক টাইমসের কার্যালয়ের ভেতর ঢুকে পড়েন। ঘণ্টাখানেকেরও বেশি সময় ধরে অবস্থান করেন তারা। বিক্ষোভকারীদের নেতৃত্বে ছিলেন কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী। ‘রাইটার্স ব্লক’ নামের এই গণমাধ্যমকর্মীদের দল সেখানে গাজায় নিহত হাজার হাজার ফিলিস্তিনির নাম পড়ে শোনান। এই নামের তালিকায় ছিলেন অন্তত ৩৬ জন সাংবাদিক, যারা গাজায় ইসরাইলি হামলা শুরুর পর নিহত হয়েছেন। নিউ ইয়র্ক টাইমসকে উপহাস করে বিক্ষোভকারীরা ব্যঙ্গাত্মক পত্রিকা ‘দ্য নিউ ইয়র্ক ওয়ার ক্রাইমস’ বিতরণ করেছে সেখানে। সেই ব্যঙ্গাত্মক পত্রিকায় নিউ ইয়র্ক টাইমসকে ‘গণহত্যায়’ জড়িত বলে অভিযুক্ত করা হয়। সেই সঙ্গে নিউ ইয়র্ক টাইমসের সম্পাদকমণ্ডলীকে প্রকাশ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব সমর্থন করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর হামাসের আন্তসীমান্ত হামলার পর ইসরাইল গাজা উপত্যকায় বিমান ও স্থল অভিযান শুরু করে। ওই হামলায় ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি ইসরাইলি নিহত হন। এরপর থেকে গাজায় নির্বিচারে হামলা করে যাচ্ছে ইসরাইল। গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বর্বরতার শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ১১ হাজার ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছে আরও ২৮ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি। সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স, এপি।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
কারো কাছে থাকা আমানত চুরি হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে।
মাগুরায় ট্রাক চাপায় মোটর সাইকেল চালক নিহত
শেখ হাসিনার আমলে সীমান্তের কাঁটা তারে লাশ ঝুলন্ত, এখন পতাকা বৈঠক হয়--শাকিল উজ্জামান
পেকুয়ায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পথসভায় মাওলানা ইমতিয়াজ
থানা থেকে ছিনাইয়া নেওয়া যুবদল নেতা গ্রেফতার
শ্রীনগরে বিএনপির অঙ্গ-সংগঠনের ৩ কর্মী গ্রেপ্তার
মুকসুদপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা, প্রতিবাদ জানালো আ.লীগ
নতুন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাকিবের বোলিং নিষিদ্ধ
এই সরকার বিপ্লবের চেতনাকে পুরোপুরি ধারণ করতে পারেনি: মাহমুদুর রহমান
শার্শা থানা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে সাংবাদিকদের মিলন মেলা
মুখ্য সংগঠক হান্নান মাসউদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা!
সোনারগাঁওয়ে শীতবস্ত্র বিতরণ ও ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত
রাষ্ট্র সংস্কারে ১৫ দফা প্রস্তাবনা: পৃথক শরীয়া আদালত প্রতিষ্ঠার দাবি
কলম্বিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ১০
দেশের সংগ্রামের ইতিহাস-সংস্কৃতি বিশ্বে তুলে ধরার আহ্বান উপদেষ্টা নাহিদের
ভারতে চার বাংলাদেশি নাগরিক গ্রেপ্তার
পথশিশুদের নিয়ে বিপিএলের ট্রফি উন্মোচন
তামিমকে বিসিবির ধন্যবাদ
গণহত্যাকারীদের বিচারিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে: সারজিস