ঢাকা   শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৬ আশ্বিন ১৪৩১
৫৭তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব সমাপ্তি

আখেরি মোনাজাতে মুসলিম উম্মাহর শান্তি সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা

Daily Inqilab মো. দেলোয়ার হোসেন/ মো. হেদায়েত উল্লাহ, টঙ্গী থেকে

০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০২ এএম

টঙ্গীর তুরাগ তীরে লাখো লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লির অংশগ্রহণে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে সমাপ্তি ঘটলো ৫৭তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। আখেরি মোনাজাতে সমগ্র মুসলিম উম্মাহর শান্তি, সমৃদ্ধি, ইহ ও পরকালীন কল্যাণ এবং দ্বীনের দাওয়াত সর্বত্র পৌঁছে দেয়ার তৌফিক কামনা করা হয়। এ সময় শিশু, কিশোর, যুবক, যুবা, বৃদ্ধ বনিতা সকলেই জীবনের সকল পাপ পঙ্কিলতা থেকে মুক্তির জন্য মহান আল্লাহর দরবারে চোখের অশ্রু ফেলে কায়মনোবাক্যে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

গতকাল রোববার আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন বাংলাদেশের শীর্ষ তাবলিগ মুরুব্বি হাফেজ মাওলানা যোবায়ের। তিনি সকাল ৯টা ১ মিনিট থেকে ৯টা ২৩ মিনিট পর্যন্ত ২২ মিনিট আরবি ও বাংলা ভাষায় মোনাজাত পরিচালনা করেন। সকাল থেকে আম বয়ান ও দিকনির্দেশনামূলক হেদায়েতি বয়ান শেষে হাফেজ মাওলানা যোবায়েরের কন্ঠে মোনাজাত শুরুর সঙ্গে সঙ্গে ইজতেমা ময়দান ও আশপাশের এলাকায় নেমে আসে পিনপতন নীরবতা। তাঁর আবেগঘন মোনাজাতে লাখো মুসল্লি মহান আল্লাহর দরবারে দু’হাত তুলে ‘আমিন, আল্লাহুম্মা আমিন, আল্লাহুম্মা আমিন’ বলে চোখের অশ্রু ছেড়ে দিয়ে নিজ নিজ কৃতকর্মের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এসময় লাখ লাখ মানুষের কান্নায় গোটা ইজতেমা ময়দান ও আশপাশের এলাকার আকাশ-বাতাস যেন ভারী হয়ে ওঠে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে গত ২ ফেব্রুয়ারি টঙ্গীর তুরাগ তীরে শুরু হয় ৫৭তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। এবারের বিশ্ব ইজতেমায় বিবদমান দু’পক্ষের বিরোধকে ঘিরে নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিশ্ব তাবলীগ জামাতের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় সমাবেশ অবশেষে শান্তিপূর্ণভাবে সমাপ্ত হয়েছে। প্রথম পর্বে ইজতেমা ময়দানে ৬ হাজারের অধিক বিদেশি মেহমান গতকাল আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন বলে জানা গেছে।
২২ মিনিটের মোনাজাতে হাফেজ মাওলানা যোবায়ের কান্নাজড়িত কন্ঠে ফরিয়াদ করে বলেন, ‘হে আল্লাহ আমাদের অন্তর থেকে কুফরি, মোনাফেকি দূর করে দাও। হে আল্লাহ তোমার নির্দেশিত পথে চলার তৌফিক দাও। হে আল্লাহ, আমাদের সকল নেক চাহিদা পূরণ করে দাও। হে রাহমানুর রাহিম আমাদের ওপর রহম করো।
আমাদেরকে রোগ-ব্যাধি থেকে মুক্তি দাও। আমাদের ওপর দয়া করো, যেভাবে তুমি তোমার নেক বান্দাদের ওপর রহম করেছ। হে আল্লাহ, আমাদের পরিপূর্ণ ঈমান দাও। তোমার আজাব থেকে পরিত্রাণ দিয়ে জান্নাত নসিব করো।

হে আল্লাহ, জাহান্নামের আগুন আমাদের জন্য হারাম করে দাও। বিশ্বের সকল মুসলিমকে হেফাজত করো। সকল আসমানি বালা আসমানে উঠিয়ে নাও, জমিনের বালা জমিতে দাবিয়ে দাও। সকল প্রকার ষড়যন্ত্র থেকে তুমি মুসলমানদের হেফাজত করো।

কায়মনোবাক্যে আকুতি জানিয়ে মোনাজাতে আরো বলা হয়, হে আল্লাহ আমাদের জিন্দেগির গুনাহ মাফ করে দাও। হে আল্লাহ আমরা গুনাহ স্বীকার করতেছি। প্রিয় হাবিবের এতিম উম্মতকে মাফ করে দাও।

হে আল্লাহ তুমি তো ক্ষমাশীল, তোমার কাছেই আমরা ক্ষমা চাইব। তোমার দ্বিনের ওপর আমাদের চলা সহজ করে দাও। হে আল্লাহ, তুমি আমাদের ওপর সন্তুষ্ট হয়ে যাও। হে আল্লাহ আমাদের দুনিয়ার জিন্দেগি সহজ করে দাও, শান্তির জিন্দেগি নসিব করে দাও, আখেরাতের জিন্দেগি নসিব করে দাও। হে আল্লাহ আমাদের দিলে তোমার জিকির নসিব করে দাও, লোক দেখানো লেবাস খতম করে দাও। হে আল্লাহ আমাদের পেরেসানির রাস্তা বন্ধ করে দাও, হকের রাস্তা খুলে দেওয়া তো তোমারই কাজ।

হে আল্লাহ, ইজতেমাকে কবুল করো। ইজতেমার আয়োজনে যারা শ্রম দিয়েছে তাদের কবুল করো। যারা তোমার কাছে হাত তুলেছে সবাইকে তুমি কবুল করো। ইজতেমার বক্তা ও শ্রোতা সকলকে তুমি কবুল করো। সারা বিশ্বের মুসলমানের জান-মালকে তুমি হেফাজত করো, শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে দাও। দাওয়াতে তাবলিগকে বিশ্বব্যাপী প্রসারিত করো’।

মোনাজাতে সমগ্র বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, মুক্তি, সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি, নিরাপত্তা, ইহ ও পারলৌকিক কল্যাণ কামনা করে, বিভেদ ভুলে ঐক্যের আহ্বানে মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে কাকুতি-মিনতি জানানো হয়। নানা ঝক্কি-ঝামেলা উপেক্ষা করে গভীর ভাবাবেগপূর্ণ পরিবেশে ‘আমিন, আল্লাহুমা আমিন’, ধ্বনিতে টঙ্গীর আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত করে মহামহিম ও দয়াময় আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে অপার করুণা ও রহমত কামনা করে রাজধানী ঢাকাসহ সমগ্র বাংলাদেশের লাখ লাখ মুসল্লি ছাড়াও আখেরি মোনাজাতে অংশ নিয়েছেন বিশ্বের অর্ধশতাধিক বিদেশি রাষ্ট্রের ছয় সহস্রাধিক ধর্মপ্রাণ মুসলমান।

সকাল থেকে দিকনির্দেশনামূলক বয়ানের পর লাখো মানুষের প্রতীক্ষার অবসান ঘটে সকাল ৯টায়। জনসমুদ্রে হঠাৎ নেমে আসে আবেগঘন পিনপতন নীরবতা। যে যেখানে ছিলেন, সেখানে দাঁড়িয়ে কিংবা বসে হাত তোলেন আল্লাহর দরবারে। আখেরি মোনাজাতকে ঘিরে গতকাল লাখ লাখ মুসলমান যেন বাঁধ ভাঙা স্রোতের মতো ছুটছিলেন টঙ্গী অভিমুখে। রাজধানী ঢাকা ছিল প্রায় ফাঁকা। টঙ্গী, গাজীপুর, উত্তরাসহ চারপাশের এলাকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, মার্কেট, বিপণিবিতান, অফিসসহ সব কিছু ছিল বন্ধ। এছাড়া শিল্পনগরী টঙ্গীর হাজারো বহুতল ভবনের ছাদে হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মা ও বোনেরা এ আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন। সবার প্রাণান্তকর চেষ্টা ছিল দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লিদের সঙ্গে মোনাজাতে শরিক হয়ে নিজের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা।

আখেরি মোনাজাতে শরিক হতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা টঙ্গী অভিমুখে ছুটতে থাকেন। বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণকারী লাখ লাখ মুসল্লি ছাড়াও রাজধানীসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার হাজার হাজার মানুষ ভিড় এড়াতে নানা ঝক্কি-ঝামেলা উপেক্ষা করে রাতেই টঙ্গীমুখো হয়। দূর-দূরান্ত থেকে আল্লাহপ্রেমী মুসলমানরা রেলপথ, সড়কপথ, নৌপথসহ বিভিন্ন যানবাহন এবং অনেকে পায়ে হেঁটে টঙ্গীতে পৌঁছে অবস্থান নিতে শুরু করেন। যতই সময় গড়াতে থাকে ততই মানুষের ঢল আছড়ে পড়তে থাকে তুরাগের তীরে। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষের সমাবেশ ঘটে আখেরি মোনাজাতে।

সকাল থেকে সড়কপথে টঙ্গীমুখী সকল প্রকার যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় দীর্ঘ পথ হেঁটে টঙ্গী পৌঁছতে হয়েছে লাখো মানুষকে। শনিবার মধ্যরাত থেকে নদীপথ, রেলপথ ও যানবাহনশূন্য সড়ক-মহাসড়ক দিয়ে পায়ে হেঁটে টুপি-পাঞ্জাবি পরা মানুষের বাঁধভাঙা জোয়ার শুরু হয়। চারদিকে যত দূর চোখ যায় শুধু টুপি-পাঞ্জাবি পরা ধর্মপ্রাণ মানুষ আর মানুষ। সকাল ৮টার মধ্যেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় তুরাগতীরের পুরো ইজতেমাস্থল ও চারপাশের বিস্তীর্ণ এলাকা। ফলে আশপাশের খোলা জায়গা, বাসা-বাড়ি, ভবন, ভবনের ছাদ ও অলি-গলিসহ যে যেখানে পেরেছেন পাটি, চটের বস্তা, খবরের কাগজ বিছিয়ে কাঙ্খিত মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেছেন।

সকালে ইজতেমার মোনাজাতের আগে বাদ ফজর হেদায়াতি বয়ান করেন পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল হক। এরপর নসিয়তমূলক বয়ান করেন ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা। তিনি ইমান, নামাজ, আমল, তালিম, এলেম, জিকির, দাওয়াতের গুরুত্ব তুলে ধরে বয়ান রাখেন। মোনাজাতপূর্ব বয়ানে হাফেজ মাওলানা যোবায়ের সমবেত মুসল্লিদের উদ্দেশে তাবলিগ ও দাওয়াতে মেহনতের গুরুত্ব তুলে ধরেন।

ফিরতি পথে বিড়ম্বনা : গতকাল বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাত শেষে মানুষ একসাথে ফেরার সময় সড়ক-মহাসড়কগুলোতে যানজট ও যানজটে একাকার হয়ে গিয়েছিল। এ অবস্থাটি আখেরি মোনাজাতের পর প্রতিবছরই ঘটে থাকে। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। চার-পাঁচ দিন ধরে টঙ্গীতে জমায়েত হওয়া মুসল্লিরা একযোগে নিজ নিজ গন্তব্যে ফিরতে চাইলে অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হন। হাজার হাজার বৃদ্ধ, শিশু-কিশোর ও মহিলা মাইলের পর মাইল হেঁটে মোনাজাতে শরিক হন এবং একইভাবে ফেরেন। দুপুরের পর টঙ্গী কলেজ গেট থেকে উত্তরা পর্যন্ত ফ্লাইওভার দিয়ে যানচলাচল শুরু হলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে থাকে।

দূর-দূরান্তের যাত্রীরা রিকশা-ভ্যান, টেম্পু, ট্রাক, কাভার্ডভ্যানে চড়ে ভেঙ্গে ভেঙ্গে বাড়ির উদ্দেশে রওয়ান দিতে দেখা গেছে। অপরদিকে, টঙ্গী স্টেশনে ফিরতি যাত্রীদের জন্য অপেক্ষমান ট্রেনগুলোতে উঠতে মানুষের জীবনবাজির লড়াই ছিল উদ্বেগজনক। ট্রেনের ভিতরে জায়গা না পেয়ে ছাদে ও দরজা-জানালায় ঝুলে শত শত মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফিরতে দেখা যায়।

১৯ মুসল্লির মৃত্যু : বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বে গতকাল রোববার সকাল পর্যন্ত একজন পুলিশ সদস্যসহ ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে ইজতেমা ময়দানে ১৩ জন, ময়দানে আসার পথে একজন পুলিশ সদস্যসহ ছয়জন নিয়ে মোট ১৯ জন।

নিহতরা হলেন, রাজবাড়ী জেলার পাংশা থানার সানোয়ার হোসেন (৬০), চট্রগ্রামের আনোয়ারার জলিলের ছেলে আলম (৫৬), নরসিংদীর নুরুল ইসলামের ছেলে শাহনেওয়াজ (৬০), সিরাজগঞ্জ জেলার ওসমান গনির ছেলে আল মাহমুদ(৭০), শেরপুর জেলা সদরের জুগনিবাগ গ্রামের মৃত সমশের আলীর ছেলে নওশের আলী (৬৫), ভোলা জেলার পরাগগঞ্জ থানার সামানদার গ্রামের বেলায়েত হোসেনের ছেলে আ. কাদের (৫৫), নেত্রকোনা সদরের কালিয়াঝুড়ি এলাকার হোসেন আহম্মদের ছেলে স্বাধীন (৪৫), নেত্রকোনা থানার কুমারী বাজার গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আবদুস সাত্তার (৭০), একই জেলার বুড়িঝুড়ি গ্রামের স্বল্পদুগিয়া গ্রামের আব্দুস ছোবাহানের ছেলে এখলাস মিয়া (৬৮), ভোলা জেলার ভোল্লা গ্রামের নজির আহমেদের ছেলে শাহ আলম (৬০), জামালপুর জেলার তুলশীপুর এলাকার পাকুল্লা গ্রামের হযরত আলীর ছেলে মতিউর রহমান (৬০), টঙ্গীর বসির মিয়ার ছেলে আ. জব্বার (৫৫)। আরেকজনের পরিচয় জানা যায়নি।

ময়দানে আসার সময় মারা যাওয়া ৬ জন হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল থানার ধামাউরা গ্রামের ইউনুছ মিয়া (৬০), চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার চৌহদ্দীটোলা গ্রামের জামান মিয়া (৪০), ইজতেমায় আসার পথে বাসচাপায় পুলিশ সদস্য হাসান উজ্জামান (৩০) মারা যান, শেরপুরের আমেলা খাতুন(৬০), ঢাকার মিরপুর সাড়ে এগারর বাসিন্দা মোশাররফ আহমেদের ছেলে মোবাশ্বের আহমেদ (৬৮) ও আরেকজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
তাশকিলের কামরায় চিল্লাভুক্ত মুসল্লি : ইজতেমার প্যান্ডেলের উত্তর-পশ্চিমে তাশকিলের কামরা স্থাপন করা হয়েছে। বিভিন্ন খিত্তা থেকে বিভিন্ন মেয়াদে চিল্লায় অংশ গ্রহনেচ্ছু মুসল্লিদের এ কামরায় আনা হচ্ছে এবং তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে। পরে কাকরাইলের মসজিদের তাবলিগি মুরুব্বীদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এলাকা ভাগ করে তাদের দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাবলিগি কাজে পাঠানো হবে।

মোনাজাতে নারীদের অংশগ্রহণ : ইজতেমায় নারীদের অংশ নেয়ার বিধান না থাকলেও অন্যান্যবারের মতো এবারও বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বে আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার নারী ইজতেমা ময়দানের আশপাশের সড়ক, মার্কেট ও বাসা-বাড়ির ছাদে অবস্থান নেন। মাঝে মধ্যে বেপর্দা নারীর কারণে অনেকটা বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

সড়ক জুড়ে বাজার : রোববার ভোর থেকে টঙ্গীর প্রায় সব রাস্তা পরিণত হয় বাজারে। এমন কিছু নেই যা পাওয়া যায়নি এসব বাজারে। ইজতেমা ফেরৎ মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য দোকানিরা উঁচু গলায় চিৎকার করতে থাকেন ‘হাফ রেট- হাফরেট’ বলে। কম্বল, সুয়েটার, কোট-টাই, শাড়ি, লুঙ্গি, মাছ- গোশত, ডিম, সবজি, গুড়-মুড়ি, আপেল-কমলা থেকে শুরু করে চিনা মাটির তৈজসপত্র, হাড়িপাতিল, মোবাইল ফোন পর্যন্ত সব কিছুই বিক্রি হয়েছে। বাজারে সব কিছুর দাম কম- এ খবরে ছুটে আসতে দেখা গেছে দল বেধে মহিলাদের।

ইজতেমা আয়োজক কমিটির সন্তোষ প্রকাশ : টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা আয়োজক কমিটির শীর্ষ মুরুব্বি প্রকৌশলী প্রকৌশলী মাহফুজুল হান্নান জানান, আলহামদুলিল্লাহ কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই এবারের এক পক্ষের ইজতেমা সমাপ্ত হয়েছে। ইজেতেমার সার্বিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে মুসল্লিদের আসতে এবং ময়দানের সার্বিক নিরাপত্তা বিধানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ভূমিকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সরকারের প্রতি ইজতেমা আয়োজক কমিটির পক্ষে সন্তোষ প্রকাশ করছি।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার আহ্বান উপদেষ্টা নাহিদের

দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার আহ্বান উপদেষ্টা নাহিদের

মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক হালাল শোকেসের ২০তম আসরে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ

মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক হালাল শোকেসের ২০তম আসরে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত দেশকে অস্থিতিশীল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে পরাজিত শক্তি

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত দেশকে অস্থিতিশীল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে পরাজিত শক্তি

শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কাল

শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কাল

‘মব জাস্টিস’ বন্ধের আহ্বান বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরামের

‘মব জাস্টিস’ বন্ধের আহ্বান বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরামের

সাত দফা দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ

সাত দফা দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ

গৌরনদীর দই, একবার খাইলেও আর একবার খাই

গৌরনদীর দই, একবার খাইলেও আর একবার খাই

নোয়াখালীতে জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধের দাবি

নোয়াখালীতে জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধের দাবি

স্বর্ণের দাম বেড়ে রেকর্ড ২,৬০৯ ডলার ছাড়িয়েছে

স্বর্ণের দাম বেড়ে রেকর্ড ২,৬০৯ ডলার ছাড়িয়েছে

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ ও বিচার দাবিতে খুলনায় মানববন্ধন

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ ও বিচার দাবিতে খুলনায় মানববন্ধন

গাজায় অব্যাহত ইসরাইলি গণহত্যা ওআইসির নেতারা চেয়ে চেয়ে দেখছেন

গাজায় অব্যাহত ইসরাইলি গণহত্যা ওআইসির নেতারা চেয়ে চেয়ে দেখছেন

চাঁদপুর শহরে সড়ক সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ

চাঁদপুর শহরে সড়ক সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ

সেনা কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়া প্রসঙ্গে

সেনা কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়া প্রসঙ্গে

নোয়াখালীতে ৪৪ দিন পর লাশ উত্তোলন

নোয়াখালীতে ৪৪ দিন পর লাশ উত্তোলন

ভারতের দোসর ও হাসিনামিডিয়ার প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা

ভারতের দোসর ও হাসিনামিডিয়ার প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা

আশাশুনিতে হাজরাখালির নেটপাটায় পানিবন্দি ২শ’ পরিবার

আশাশুনিতে হাজরাখালির নেটপাটায় পানিবন্দি ২শ’ পরিবার

জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের অধিকার খর্ব হবে না: সেলিম উদ্দিন

জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের অধিকার খর্ব হবে না: সেলিম উদ্দিন

গাছে গাছে আফ্রিকান জায়ান্ট শামুক

গাছে গাছে আফ্রিকান জায়ান্ট শামুক

ঈশ্বরগঞ্জে মহাসড়কে কাঁচাবাজার

ঈশ্বরগঞ্জে মহাসড়কে কাঁচাবাজার

উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্ত্রসহ আরসা সন্ত্রাসী গ্রেফতার

উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্ত্রসহ আরসা সন্ত্রাসী গ্রেফতার