বাসে ঈদযাত্রায় আগ্রহ কম
২৫ মার্চ ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২৪, ১২:০৫ এএম
ঈদুল ফিতর সামনে রেখে ট্রেন ও বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। গতকাল রোববার টিকেট বিক্রির তিন ঘন্টায় রেলের সবগুলো (৩ এপ্রিলের যাত্রার ১৩ হাজার) টিকেটে বিক্রি হয়ে গেছে। কিন্তু দূরপাল্লার বাসের টিকেটে তেমন চাপ দেখা যায়নি। গাবতলী, মহাখালি, সায়েদাবার টার্মিনালে একই চিত্র। বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হলেও চাপ নেই। রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে অন্যান্য বার ঈদকে কেন্দ্র করে বাসের অগ্রিম টিকিট কিনতে কাউন্টারগুলোতে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা যেত। এবার এর কোনো প্রভাব পড়েনি। টার্মিনালজুড়ে বিরাজ করছে সুনসান নীরবতা।
গতকাল দুপুরে গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, তেমন কোনো যাত্রী নেই টার্মিনালে। দু-একজন যারা আসছেন তারা কাউন্টার ঘুরে পছন্দ মতো ঈদ যাত্রার আগাম টিকিট সংগ্রহ করছেন।অথচ বিগত বছরগুলোতে এ সময় টিকেটের জন্য দীর্ঘ লাইন দেখা যেত।
যাত্রী সংকটের কারণ হিসেবে রেল যাত্রা ও একাধিক রুটকে দায়ী করে বিভিন্ন কাউন্টার সংশ্লিষ্টরা বলেন, ট্রেনের যাত্রায় কোনো ভোগান্তি নেই। আবার বাসের টিকিটের দামের তুলনায় ট্রেনের টিকিটের দাম কম হওয়ায় মানুষ দূরপাল্লার যাত্রায় প্রধান মাধ্যম হিসেবে ট্রেনকেই বেছে নিচ্ছেন। আর রাস্তায় যানজটের ঝামেলা তো আছেই। সড়ক পথে উত্তরাঞ্চল যেতে মঙ্গবন্ধু সেতু পাড় হতে হয়। সেখানে এখনোই মাইলের পর মাইল যানজট।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে শ্যামলী এন আর ট্রাভেলসের কাউন্টার মাস্টার ওমারুল ইসলাম বলেন, আজ থেকে ঈদ যাত্রার ট্রেনের টিকিট ছেড়েছে। অনেকেই ট্রেনে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। তাই ট্রেনের টিকিট কাটবে। যদি ট্রেনে টিকিট না পায় তখন বাসে যাবে। তাই এখন পর্যন্ত ঈদের যাত্রীর কোনো চাপ নেই গাবতলী বাস টার্মিনালে। যদিও আমাদের গাড়ির অগ্রিম টিকিট সব কল্যাণপুর থেকে দিচ্ছে। তবে অনলাইনেও এখন পর্যন্ত যাত্রীদের তেমন কোনো চাপ দেখছি না।
জানতে চাইলে এস বি সুপার ডিলাক্সের কাউন্টার মাস্টার জিল্লু রহমান বলেন, ঈদের আগে গাবতলী বাস টার্মিনালে একটা সময় মানুষ রাত জেগে লাইনে দাড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করতো। টিকিট কিনতে হিমশিম খেতে হতো যাত্রীদের। আর এখন যাত্রীদের কোনো চাপই নেই। এখন পর্যন্ত যে কয়টা টিকিট বিক্রি হয়েছে তাতে কোনো গাড়িতে ৭ থেকে ৮ জনের বেশি যাত্রী আমরা পাইনি। তবে ৮-৯ তারিখের কিছু যাত্রী পেয়েছি। অধিকাংশ মানুষ ট্রেনে যাতায়াত করে। কারণ রাস্তায় কোনো যানজট থাকে না। নির্দিষ্ট টাইমে বাড়িতে পৌঁছে যায়। আবার অনেকে সায়েদাবাদ বা গাবতলী থেকে অল্প টাকায় ভেঙে ভেঙে চলে যায়।
একাধিক পরিবহনের কাউন্টারে আলাপ করে জানা যায়, বেশ কিছু পরিবহনে দূরপাল্লার অগ্রিম টিকিট বিক্রি এখনও শুরু হয়নি।
সোহাগ পরিবহনের এক কর্মচারী বলেন, আমাদের মালিক পক্ষ থেকে এখনো অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরুর বিষয়ে কিছু জানানো হয় নাই। তাই আমরা এখনও অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করি নাই। বিভিন্ন বাস কর্তৃপক্ষ অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করলেও আপনারা কেন এখনও শুরু করেননি জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাউন্টারে তেমন কেউ অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করতে আসছেন না। যাত্রীদেরও চাপ নেই। চাপ না থাকার কারণেই হয়তো এখনও টিকিট বিক্রি শুরু হয়নি। তবে ২৬ তারিখ থেকে আমাদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হতে পারে।
শুভ বসুন্ধরা পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার বলেন, যাত্রীর চাপ কম থাকায় আমাদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি এখনো শুরু হয়নি। আগামী ২৬ তারিখের পর যেকোনো দিন থেকে আমাদের টিকিট বিক্রি শুরু হতে পারে।
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখী মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে আগে আগেই শুরু হয়েছে বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি কার্যক্রম। গত শুক্রবার বাসের কাউন্টারগুলোতে অগ্রিম টিকিট বিক্রির কার্যক্রম শুরু করতে দেখা গেছে।
এদিকে আনুষ্ঠানিকভাবে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন।
বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গত শুক্রবার থেকেই সব আন্তঃজেলা বাস কাউন্টারে অগ্রিম টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। একই সঙ্গে যাত্রীরা অনলাইনের মাধ্যমে অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন বলেও জানানো হয়েছে।
এর আগে বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষ জানান, বিআরটিএর নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী বাসের ভাড়া নেওয়া হবে। ভাড়ার তালিকার বাইরে বাড়তি ভাড়া নেওয়া যাবে না। সব বাস মালিককে সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং শ্যামলী এনআর ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শুভঙ্কর ঘোষ রাকেশ জানান, যাত্রীরা যাতে বাসের অগ্রিম টিকিট সুশৃংখলভাবে কাউন্টার থেকে কিনতে পারেন, সেজন্য বাস মালিকদের পক্ষ থেকে মনিটরিং টিম কাজ করবে। বাসের কোনো টিকিট কালোবাজারি হবে না।
এদিকে বাস কোম্পানিগুলোর অনলাইনে টিকিট বিক্রির সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘বাসবিডি ডটকম ডট বিডি’ এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বাসের অগ্রিম টিকিট শুক্রবার থেকে অনলাইন মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে। ই-টিকিট কেনা যাত্রীদের জানানো হয়েছে, রাস্তায় সৃষ্ট জ্যামের কারণে ও গাড়ির যান্ত্রিক ত্রুটি এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক কারণে যাত্রার সময় পরিবর্তন হতে পারে। বিষয়টি জেনে টিকিট ক্রয় করতে বলা হচ্ছে।
এদিকে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। ঈদের আগে আন্তঃনগর ট্রেনের ৩ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি হয়েছে। ৪ এপ্রিলের টিকিট ২৫ মার্চ; ৫ এপ্রিলের টিকিট ২৬ মার্চ; ৬ এপ্রিলের টিকিট ২৭ মার্চ; ৭ এপ্রিলের টিকিট ২৮ মার্চ; ৮ এপ্রিলের টিকিট ২৯ মার্চ এবং ৯ এপ্রিলের টিকিট ৩০ মার্চ বিক্রি হবে। এছাড়া ২৫ শতাংশ টিকিট যাত্রা শুরুর আগে প্রারম্ভিক স্টেশনের কাউন্টারে পাওয়া যাবে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
টেলর সুইফটের পর কমলাকে বিখ্যাত বিজ্ঞান ম্যাগাজিনের সমর্থন নিয়ে বিতর্ক
ফিরেই গোলের দেখা পেলেন রোনালদো,নাসেরের সহজ জয়
কোহলি রিভিউ না নেওয়ার যে কারণ জানালেন সঞ্জয় মাঞ্জরেকার
মাঠের বাইরে নতুন পরিচয়ে মেসি
দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার আহ্বান উপদেষ্টা নাহিদের
মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক হালাল শোকেসের ২০তম আসরে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত দেশকে অস্থিতিশীল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে পরাজিত শক্তি
শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কাল
‘মব জাস্টিস’ বন্ধের আহ্বান বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরামের
সাত দফা দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ
গৌরনদীর দই, একবার খাইলেও আর একবার খাই
নোয়াখালীতে জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধের দাবি
স্বর্ণের দাম বেড়ে রেকর্ড ২,৬০৯ ডলার ছাড়িয়েছে
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ ও বিচার দাবিতে খুলনায় মানববন্ধন
গাজায় অব্যাহত ইসরাইলি গণহত্যা ওআইসির নেতারা চেয়ে চেয়ে দেখছেন
চাঁদপুর শহরে সড়ক সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ
সেনা কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়া প্রসঙ্গে
নোয়াখালীতে ৪৪ দিন পর লাশ উত্তোলন
ভারতের দোসর ও হাসিনামিডিয়ার প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা
আশাশুনিতে হাজরাখালির নেটপাটায় পানিবন্দি ২শ’ পরিবার