আইকনিক সড়ক ধ্বংসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অব্যাহত
০৩ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৮ এএম | আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৮ এএম
দেশের একমাত্র দ্বিতল এবং চট্টগ্রামের আইকনিক সড়ক ধ্বংস করে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্প নির্মাণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অব্যাহত আছে। গতকাল মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো বিভিন্ন সংগঠন সিআরবি এলাকায় মানববন্দন, প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। সিডিএ চেয়ারম্যানের সাথে দেখা করে শতবর্ষী বৃক্ষ ও পাহাড় নিধন বন্ধের দাবি জানিয়েছেন নাগরিক সমাজ, চট্টগ্রামের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. অনুপম সেন। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম নগর প্রকৃতির লীলাক্ষেত্র। এখানে সমুদ্র পাহাড় নদী হ্রদ দীঘি আছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপার সম্ভার চট্টগ্রাম। কিন্তু সভ্যতার আগ্রাসনে সবকিছু যেন বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রামের চমৎকার প্রাকৃতিক স্থান সিআরবিকে আমরা আগ্রাসন থেকে রক্ষা করেছি। দেশরতœ শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে বহু উন্নয়ন করেছেন, যা ইর্ষণীয়। উন্নয়ন তো দরকার। কিন্তু পরিবেশ বিঘিœত হলে সব উন্নয়নই ব্যর্থ হয়ে যাবে। খালি শতবর্ষী গাছের কথাই নয়। ১৪-১৫টি র্যাম্প করা হচ্ছে। ২-৩টি র্যাম্প হলেই চলে। অতিরিক্ত র্যাম্পগুলো শহরে যানজটের সৃষ্টি করে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতেও যানজট হবে।
তিনি বলেন, নগরীর দ্বিতল রাস্তা এক অপূর্ব সুন্দর জায়গা। সেখানে আমার মনে হয় না র্যাম্পেরই কোনো প্রয়োজন আছে। হলে একটি কুৎসিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। এতগুলো র্যাম্পের দরকার কেন হবে? আমিও তো আরবান প্ল্যানিংয়ের ছাত্র। আরবান প্ল্যানিং হবে এমন যেখানে প্রাকৃতিক পরিবেশ অবশ্যই বজায় রাখতে হবে। জঞ্জাল যেন সৃষ্টি না হয়। এলিভেটেড মানেই উপর দিয়ে দূর দূরান্তের গাড়ি যাবে। সব রাস্তায় সেটাকে কেন নামাতে হবে। তিনি সিডিএ চেয়ারম্যানের উদ্দেশে বলেন, আপাতত কাজ বন্ধ করে দিন। আমরা সবাই মিলে বসে সিদ্ধান্ত নিব এ বিষয়ে কি করা যায়। চট্টগ্রামের নাগরিকরা নিজেদের মতামত জানাবেন।
এ সময় চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, এক্সপ্রেসওয়ে আমরা করিনি। প্রধানমন্ত্রীর একটা প্রকল্প। করার সময় অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। শুরুতে কেউ বলেছিল বারিক বিল্ডিং কেউ বলেছে দেওয়ানহাটে শেষ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন লালখান বাজার নামাতে। বুয়েটের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, দেওয়ানহাটে নামালে সুফল মিলবে না। ৩৫টা র্যাম্পের দাবি ছিল। কিছু ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে। শতবর্ষী গাছ কাটা যাবে না। ছোট কিছু গাছ কাটা হবে। বন বিভাগ মার্কিং করেছে। আমরা করিনি। ড্রইং দেখলে বুঝতে পারবেন। প্রয়োজনে সাইজ আরো ছোট করতে বলেছি। ঈদের পর সবার সাথে বসে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথাও জানান তিনি।
প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, র্যাম্প করব কিনা সেটা জনঘনত্ব অনুসারে করা হয়। এখানে না করলে ২ নম্বর গেট থেকে উঠতে হবে। প্রতি বছর গাড়ি বাড়ছে। পোর্ট সিটি বলে ট্রাক লরির সংখ্যা বেশি। ৫০-১০০ বছরের গাড়ি যে বাড়বে তার উপর ডিজাইন। উঠানামা সহজ করব এটা টার্গেট ছিল। এলাকার গুরুত্ব বিবেচনা করে প্রস্তাব করা হয়। চট্টগ্রাম শহরে পরিবেশ বিধ্বংসী কিছু করব না। গাছ কেটে আমরা কোনো র্যাম্প করব না। নতুন ডিজাইন করে জানাব। দ্বিতল রাস্তা নষ্ট করব না।
এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুর রহমান বলেন, শতবর্ষী গাছ কাটা যাবে না। শুধু একটি শতবর্ষী গাছের ডাল কাটা যাবে। র্যাম্প যদি এখানে তুলতে চাই আরেকটু মডিফাই করব। ঈদের পরে দেখাব। সবাই যদি মত দেন তাহলে কাজ বাস্তবায়ন করা আমার দায়িত্ব। র্যাম্প দরকার না হলে করব না।
নাগরিক সমাজ চট্টগ্রামের মহাসচিব ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল বলেন, চট্টগ্রামের মানুষের সেন্টিমেন্টের বাইরে কিছু করবেন না। আমরা বিশেষজ্ঞদের নাম দিব। সবাই মিলে যেটা ঠিক করব সেভাবে হবে।
এদিকে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) চট্টগ্রাম জেলার সমন্বয়ক শফি উদ্দিন কবির আবিদ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্প নির্মাণের জন্য সিডিএ কর্তৃক টাইগারপাস-পলোগ্রাউন্ড সড়কের শতবর্ষীসহ গাছ কাটার অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত বাতিলের জোর দাবি জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, দ্বিতল সড়কটি একটি নান্দনিক ও ঐতিহাসিক স্থান। এখানে শতবর্ষের পুরনো গাছসহ নানা প্রজাতির শতাধিক বিশাল গাছ আছে। এ সড়কটিতে শতবর্ষী গাছসহ শতাধিক গাছ কেটে সিডিএ এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্প নামাতে চায়। সিডিএর এ ধরণের উদ্যোগে চট্টগ্রামের আপামর জনগণ প্রচন্ড ক্ষুব্ধ। গাছ না কেটে সিডিএর নকশা পরিবর্তন করে বিকল্প স্থানে র্যাম্প নির্মাণ করা যেতো। অথচ সিডিএ সে পথে হাঁটছেনা।
তাদের বক্তব্য হচ্ছে, উন্নয়ন করতে হলে গাছ কাটতে হবে। অর্থাৎ প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করে হলেও এ তথাকথিত উন্নয়ন তাদের চালাতে হবে। সিডিএ, সিটি কর্পোরেশনসহ বিভিন্ন সংস্থার উন্নয়ন সম্পর্কিত এমন আগ্রাসী দৃষ্টিভঙ্গি ও অপরিণামদর্শী উন্নয়ন প্রকল্পের ফলাফলে চট্টগ্রামের প্রাণ-প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ক্রমাগত ধ্বংস হয়ে বসবাসের অযোগ্য নগরীতে পরিণত হচ্ছে। এছাড়া পলোগ্রাউন্ড সড়কটি সিডিএর চট্টগ্রাম মহানগরী মাস্টারপ্ল্যান অনুসারে বিশেষ প্রাকৃতিক ঐতিহ্যগত অঞ্চল হিসেবে সিআরবির অন্তর্ভুক্ত ও সংরক্ষিত। ফলে উন্নয়ন প্রকল্পের নামে এ অঞ্চলে সিডিএর নির্বিচার বৃক্ষনিধন বেআইনী ও মাস্টারপ্ল্যানের বিরোধী। সিডিএর এ ধরণের অপতৎপরতা জনগণ মেনে নেবেনা। চট্টগ্রামের সর্বস্তরের জনগণকে সিডিএর এ স্বেচ্ছাচারী অপতৎপরতার বিরুদ্ধে প্রবল গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
শ্রমবাজার সম্প্রসারণে সমন্বিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে
বাগেরহাটে যুবলীগ নেতাকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন আওয়ামী লীগ নেতা
ব্যাটারি রিপ্লেসমেন্ট সুবিধা আনলো ভিভো ভি৩০ লাইট
সোনালী ব্যাংকের মুনাফা ৮৩ শতাংশ বেড়েছে
টেকসই রাজস্ব নিশ্চিতে করতে গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে প্রয়োজন নীতিনির্ধারণে ধারাবাহিকতা
শপআপ-এর প্রেসিডেন্ট হিসেবে যোগদান করলেন মামুন রশীদ
১ বছরে আদানি গ্রিনের ২৫ শতাংশ মুনাফা বৃদ্ধি
উপজেলা নির্বাচনে ইভিএমে প্রথমবারের মতো ভোট দিচ্ছে মতলব উত্তরবাসী
গোদাগাড়ীতে ৩ কেজি ৪শ’ গ্রাম হেরোইনসহ ২ জন গ্রেফতার
বজ্রপাতে নগরকান্দায় ২১ মাদ্রাসা ছাত্র আহতের ১১ জন এখনও হাসপাতালে
মেসিদের লিগকে যে পরামর্শ দিলেন ফিফা সভাপতি
বান্দরবানে সেনাবাহিনীর অভিযানে একজন কেএনএফ সদস্য নিহত, বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার
স্কটল্যান্ডের বিশ্বকাপ দলে হুইল ও জোন্স
আগামীকাল হরিরামপুর উপজেলা ভোটগ্রহণ : ত্রিমুখী লড়াইেয়র সম্ভাবনা
সিরি-এ বর্ষসেরা মিডফিল্ডার ফার্গুসন
সোনার দাম এবার ভরিতে বাড়লো ৪৫০২ টাকা
বিএনপির সমাবেশ: সবকিছু বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত দেবে ডিএমপি
রাত পোহালেই ফরিদপুর ৩ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ পুতিনের, ছয় বছর ভোগ করবেন একচ্ছত্র ক্ষমতা
যোগীরাজ্যে মুসলিমদের ভোটদানে বাধা! ‘পিটিয়ে মারা হচ্ছে’, বিস্ফোরক মমতা