মৌসুম শুরু হলেও পদ্মা-মেঘনায় মিলছে না কাক্সিক্ষত ইলিশ

স্টাফ রিপোর্টার, চাঁদপুর থেকে

২৩ জুন ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ২৩ জুন ২০২৪, ১২:০৩ এএম

চাঁদপুরে মৌসুম শুরু হলেও পদ্মা-মেঘনায় মিলছে না কাঙ্খিত ইলিশ। দিন-রাত নদীতে চষে বেড়ালেও জ্বালানি খরচ উঠছে না জেলেদের। ইলিশের আমদানি না থাকায় নদী উপকূলীয় অধিকাংশ আড়তের ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধে হয়ে যাচ্ছে। মৌসুম শুরু হওয়ায় ইলিশ পাওয়ার সম্ভাবনার কথা জানান, ইলিশ ব্যবসায়ী ও মৎস্য বিভাগ। ঈদুল আজহা পরবর্তী সময়ে চাঁদপুর জেলা সদরে মেঘনা উপকূলীয় জেলে পল্লী ও আড়তগুলোতে ঘুরে জেলেদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানাগেছে।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য বিভাগের দেয়া তথ্যে জানাগেছে, পদ্মা-মেঘনা নদীর চাঁদপুর নৌসীমার মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত প্রায় ৬০ কিলোমিটার নদী পথে ৪৪ হাজার জেলে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ আহরণ করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে। বছরে দুটি সময় অর্থাৎ জাটকা এবং মা ইলিশ সংরক্ষণ সময়ে তাদেরকে প্রণোদনা দেয়া হয়। এছাড়া এসব জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরীর লক্ষ্যে প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করা হয়ে থাকে।

চাঁদপুর সদর উপজেলার হরিণা ও আখনের হাট মাছঘাটে দেখাগেছে অধিকাংশ ইলিশের আড়ৎ বন্ধ। ইলিশের আমদানি না থাকায় অনেক আড়তে ব্যবসায়ীরা অলস সময় কাটাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ আড়তেই ঘুমিয়ে আছেন। হরিণা মাছঘাটের ব্যবসায়ী নেছার ছৈয়াল বলেন, ‘নদীতে এখন মাছ কম। যে কারণে ব্যবসায়ীরা অনেকেই অবসর সময় কাটাচ্ছেন। তবে নদীতে পানি বাড়লে ইলিশ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাকী আল্লাহর ইচ্ছা।’

আখনের হাটের আড়তদার শহীদ সরদার বলেন, ‘ইলিশের আমদানি না থাকায় ১১টি আড়তের ৬টি বন্ধ হয়ে গেছে। মৌসুমে সঠিকভাবে জাটকা সংরক্ষণ না হওয়ায় নদীতে ইলিশ কমেছে। আবারো জেলেরা নদীতে নামলে জালের প্রকারভেদ নিয়ে নৌপুলিশের হয়রানিতো আছেই।’ চাঁদপুর সদর উপজেলার হানারচর ইউনিয়নের গোবিন্দিয়া গ্রামের জেলে জাকির হোসেন বলেন, ‘তার নৌকায় তিনিসহ ৫ জন জেলে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মেঘনায় ইলিশ ধরতে জাল ফেলেন। দুপুরে ফিরেছেন হরিণাঘাট আড়তে। ছোট বড় ৬টি ইলিশ নিয়ে, বিক্রি করে পেয়েছেন মাত্র ১ হাজার টাকা। এতে তাদের জ্বালানি খরচও উঠে না। চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সভাপতি মানিক জমাদার বলেন, নাব্যতা সঙ্কটসহ নানা কারণে নদীতে ইলিশের বিচরণ কম। এসব সমস্যা সমাধানে এগিয়ে না আসলে ইলিশের প্রাপ্যতা কমতে থাকবে। গত কয়েক বছর স্থানীয় ইলিশের উৎপাদন ক্রমাম্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে।

চাঁদপুর সদর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. তানজিমুল ইসলাম বলেন, চাঁদপুর সদরে পদ্মা-মেঘনায় বছর জুড়ে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধিতে কাজ করছি। বিশেষ করে জাটকা সংরক্ষণ ও মা ইলিশ রক্ষায় আমরা জেলেদের সচেতন করে আসছি। এ বছর জাটকা সংরক্ষণ সফল হয়েছে। আগামী মৌসুমে এটির সুফল পাবে জেলেরা। তারপরও নদীতে চর জেগে উঠা, নদীর পানি দূষণ ও ইলিশের খাদ্য হ্রাস পাওয়ায় মিঠা পানিতে ইলিশের বিচরণ কম। তবে ভরা মৌসুমে ইলিশ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বিভাগ : জাতীয়