ঐতিহাসিক পলাশী দিবসের আলোচনা সভা

বিশ্বাসঘাতকের কবলে পড়ে পলাশীর ন্যায় আবার স্বাধীনতা হারাতে বসেছি আমরা : ড. হেলাল উদ্দিন

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

২৫ জুন ২০২৪, ১২:০৬ এএম | আপডেট: ২৫ জুন ২০২৪, ১২:০৬ এএম

 

 

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদিন আজ বিকেলে রাজধানীতে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত ঐতিহাসিক পলাশী দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন আমরা আজাদী হারিয়ে ছিলাম। সেদিনই একটি দলের জম্মদিন। বাংলাদেশে জাকজমকভাবে আজ তা পালন করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ১৭৫৭ সালের আজকের এই দিনে কিছু বিশ্বাসঘাতকের কারণে পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদৌলার পরাজয় হয়েছিল। এই পরাজয়ের মাধ্যমে আমরা দুইশ’ বছরের জন্য স্বাধীনতা হারিয়েছিলাম। আর ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর প্রহসনের নির্বাচনের পর হতে ধারাবাহিকভাবে ভোট চোর ডাকাতদের কবলে পড়ে আমরা আবার স্বাধীনতা হারাতে বসেছি। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত ঐতিহাসিক পলাশী দিবসের আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আলাউদ্দিন আবির এবং সঞ্চালনায় ছিলেন ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি হেলাল উদ্দিন রুবেল। এছাড়াও আলোচনা সভায় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদিন বলেন, বাংলাদেশের আকাশে পলাশীর কালো মেঘের ঘনঘটা দেখা যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়ে। দেশের ভূখন্ড ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ দেশ চালাচ্ছে না। দেশ চালাচ্ছে ভারতের চানক্যরা। এমতাবস্থায় দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধভাবে সকল দেশপ্রেমিক শক্তিতে এগিয়ে আসতে হবে। ২৬৬ বছর পূর্বে ২৩ জুন পলাশীর আমবাগানে নবাব সিরাজউদ্দৌলা বনাম ইংরেজদের যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্ত নেমেছিল। সেদিন অস্ত নেমেছিল যে স্বাধীনতা, তাকে আবার ফিরে পেতে ২০০ বছরের বেশি অপেক্ষা করতে হয়েছে বাঙালিদের।

তিনি বলেন, পলাশীর সাথে বর্তমান সময়ের মিল দেখতে পাচ্ছি। বর্তমানে দেশে জনগণের সরকার নেই। আছে আওয়ামী লীগ ও চোর ডাকাতের সরকার। তাই জনগণের আজ আশ্রয়ের কোনো জায়গা নেই। পুরো দেশ এখন পলাশী। দেশে এমন কোনো বিভাগ নেই যা আগ্রাসী শক্তির পদলেহী নয়। তাই দেশকে মুক্ত করার জন্য জনগণকেই আজ জেগে উঠতে হবে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হলে মীর জাফরদের চিহ্নিত করতে হবে। মীরজাফর ও ঘসেটি বেগমদের কারণে পলাশী ট্রাজেডি ঘটেছিল। বাংলাদেশের আকাশে আজ পলাশীর কালো মেঘের ঘনঘটা দেখা দিয়েছে। দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধ করেছিল দেশে কোনো একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য নয়। মুক্তিযুদ্ধ করেছিল স্বাধীন সার্বভৌম গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য। তিনি সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।

তিনি আরও বলেন, পলাশীর প্রান্তে নবাবের পরাজয় আমাদের গোটা জাতির জন্য বিরাট বড় শিক্ষা। হতাশাজনক হলেও সত্য, পলাশী যুদ্ধের পরাজয় থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা আজও আমরা কাজে লাগাতে পারিনি। তৎকালীন সময়ে, দেশের অধিকাংশ মানুষই শাসকশ্রেণি এর পরিবর্তনের ব্যাপারে উদাসীন ছিলো। জাতির মধ্যে ছিলো না কোনো ঐক্যবদ্ধতা। ফলে, রবার্ট ক্লাইভের সামান্য সামরিক শক্তি ও কূটকৌশলের কাছে বাংলা হারায় তার স্বাধীনতা। তাই আমাদেরকে অর্জন করতে হবে জাতীয় ঐক্যের শক্তি। নিজেদের মধ্যে সকল প্রকার হিংসা-বিদ্বেষ ও ভেদাভেদকে ভুলে দেশের জন্য কাজ করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে আলাউদ্দিন আবির বলেন, সদাসর্বদা আমাদের মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত রাখতে হবে। প্রিয় জন্মভূমিকে সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের থেকে মুক্ত রাখতে হলে সৎ, যোগ্য ও আদর্শবাদী দেশপ্রেমিক নাগরিক গঠনের লক্ষ্যে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাঁজাতে হবে। তাহলে আর কখনো পলাশীর পটভূমি রচিত হবে না এই বাংলাদেশে।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

মার্কিন গোয়েন্দা প্রধানের মন্তব্যে তীব্র নিন্দা বাংলাদেশের
নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে
নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র!
সৈকতসহ চিহ্নিত হামলাকারীদের নাম নেই তালিকায়, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
হিন্দুদের ওপর হামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: প্রধান উপদেষ্টা
আরও
X

আরও পড়ুন

আদালত চলতো হাসিনার নির্দেশে, মামলার রায় আসতো গণভবন থেকে: নুর

আদালত চলতো হাসিনার নির্দেশে, মামলার রায় আসতো গণভবন থেকে: নুর

দোহারের কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যা: আসামি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুদণ্ড

দোহারের কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যা: আসামি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুদণ্ড

কক্সবাজার শহরে উচ্ছেদের মুখে আতঙ্কগ্রস্থ হাজারো নারী-পুরুষ ঘরবাড়ি ও জমি রক্ষায় মানববন্ধন

কক্সবাজার শহরে উচ্ছেদের মুখে আতঙ্কগ্রস্থ হাজারো নারী-পুরুষ ঘরবাড়ি ও জমি রক্ষায় মানববন্ধন

কর্পোরেট জবাবদিহিতা ও পরিবেশগত ন্যায়বিচারের আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার

কর্পোরেট জবাবদিহিতা ও পরিবেশগত ন্যায়বিচারের আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার

মার্কিন গোয়েন্দা প্রধানের মন্তব্যে তীব্র নিন্দা বাংলাদেশের

মার্কিন গোয়েন্দা প্রধানের মন্তব্যে তীব্র নিন্দা বাংলাদেশের

বাংলাদেশে ট্রান্সন্যাশনাল এডুকেশন নিয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ

বাংলাদেশে ট্রান্সন্যাশনাল এডুকেশন নিয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ

গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৪১৩

গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৪১৩

নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে

নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে

জ্বালানি সচিব-তিতাসের এমডিকে আদালত অবমাননার নোটিশ

জ্বালানি সচিব-তিতাসের এমডিকে আদালত অবমাননার নোটিশ

নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র!

নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র!

সোনার দামে নতুন রেকর্ড, ভরি ১৫৪৯৪৫ টাকা

সোনার দামে নতুন রেকর্ড, ভরি ১৫৪৯৪৫ টাকা

ঢাবিতে ছাত্রদলের উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী কোরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

ঢাবিতে ছাত্রদলের উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী কোরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

আনোয়ারায় ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত-জড়িতদের বসতঘরে জ্বালিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা

আনোয়ারায় ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত-জড়িতদের বসতঘরে জ্বালিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা

বার্জার ও সিএমপি-এর উন্নত কোটিং প্রযুক্তি যমুনা রেল সেতুকে দিচ্ছে দীর্ঘস্থায়ী সুরক্ষা

বার্জার ও সিএমপি-এর উন্নত কোটিং প্রযুক্তি যমুনা রেল সেতুকে দিচ্ছে দীর্ঘস্থায়ী সুরক্ষা

ড্যাপ বাতিল ও ইমারত বিধিমালা বাস্তবায়নে রিহ্যাবের মানববন্ধন

ড্যাপ বাতিল ও ইমারত বিধিমালা বাস্তবায়নে রিহ্যাবের মানববন্ধন

রাখাল রাহার অপসরণ দাবি, ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি

রাখাল রাহার অপসরণ দাবি, ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি

ভারত সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় সংখ্যালঘু নির্যাতন

ভারত সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় সংখ্যালঘু নির্যাতন

ইউএনও অফিসের ২৮ চালকের চাকরি স্থায়ীকরণে বাধা নেই

ইউএনও অফিসের ২৮ চালকের চাকরি স্থায়ীকরণে বাধা নেই

ভোজ্যতেলে কর ছাড় ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর সুপারিশ

ভোজ্যতেলে কর ছাড় ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর সুপারিশ

ডিএসসিসিতে চাকরিচ্যুত দুই কর্মকর্তার পুনঃনিয়োগে চেষ্টা

ডিএসসিসিতে চাকরিচ্যুত দুই কর্মকর্তার পুনঃনিয়োগে চেষ্টা