বহাল তবিয়তে আসাদুজ্জামান-হারুন সিন্ডিকেট
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:১৫ পিএম | আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:১৪ পিএম
পুলিশের এখনও বহাল রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও তার সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা সাবেক পিএস (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) হারুন উর রশীদের প্রেতাত্মারা। এদের মধ্যে ১৪ জেলার পুলিশ সুপার (এসপি)সহ অনেকের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতাকে গুলি করে হত্যার মত অভিযোগও রয়েছে। আর রহস্যজনক কারনে ওই ১৪ জেলার পুলিশ সুপাররা এখনও বহাল তবিয়তে। দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৫০ জেলায় নতুন এসপি নিয়োগ দেয়া হলেও যারা এক সময় পুলিশের মাস্টারমাইন্ড এসবির প্রধান মনিরুল ইসলাম ও ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের আস্তাভাজন হিসেবে পরিচিত ছিল তাদের বদলি করা হচ্ছে না।
এদের প্রায় সবাই ছাত্রলীগের ক্যাডার পরিচয়ে বিগত সরকারের সময় দাপটের সাথে পুলিশ বাহিনীতে চাকরি করেছেন। এখনো তাদের অনেকের পরামর্শেই চলছে পুলিশের মতো সবচেয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ এই বাহিনী। অথচ পুলিশের এই কর্মকর্তারাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও তার সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা সাবেক পিএস হারুন উর রশীদের ভয়াবহ দুর্নীতিতে নানাভাবে সহায়তা করেছেন। নিজেরাও গড়েছেন দুর্নীতির পাহাড়। সম্প্রতি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পাঠানো একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
ওই প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত জুলাই-আগস্টে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছিল পুলিশের একটি বড় অংশ। এসব গুলির ঘটনায় শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অন্তত ১ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার হাজার। আন্দোলনে গুলি চালিয়ে লাশ ফেলার মাস্টারমাইন্ড হিসেবে কাজ করেছেন শতাধিক পুলিশ কর্মকর্তা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৫০ জেলায় নতুন এসপি নিয়োগ দেয়া হলেও ১৪ জেলায় ছাত্রলীগের ক্যাডার হিসেবে পরিচিত পুলিশ কর্মকর্তারা এখন বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগও রয়েছে। বিগত সরকারের সময় যারা খুন, গুম ও অপহরনসহ বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের গ্রেফতার নির্যাতন করেছেন তাদের দ্রুত বদলি করা প্রয়োজন। জেলায় এসপি হিসেবে ব্যাপক দুনীতিরও অভিযোগ রয়েছে এসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে গোপালগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপারও রয়েছেন। অন্যান্যদের মধ্যে রয়েছেন এসপি নেত্রকোনা, এসপি জামালপুর, এসপি লক্ষীপুর, এসপি বরিশাল, এসপি পঞ্চগড়, এসপি ঠাকুরগাঁও, এসপি নীলফামারি, এসপি মেহেরপুর, এসপি বান্দরবান, এসপি রাঙ্গামাটি, এসপি চাঁদপুর, এসপি নোয়াখালী ও এসপি শরিয়তপুর।
সূত্র জানায়, এছাড়া হাইওয়ে পুলিশের প্রধান ১৫ ব্যাচের কর্মকর্তা অতিরিক্ত আইজিপি শাহাবুদ্দিন খান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের পলিসি মেকারদের সঙ্গে একযোগে কাজ করেছেন। হাইওয়ে পুলিশকে সরাসরি গুলি করার নির্দেশনা দিয়েছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিআইজি পদমর্যাদার একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, অনেক সিনিয়র-জুনিয়র কর্মকর্তা নানাভাবে সাবেক স্বরাষ্টমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ ছিলেন। পরবর্তী আইজিপি (সাবেক) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের সময় তারা অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়িত ছিলেন। নানা কায়দায় তারা বর্তমান সময়ের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিয়োগবাণিজ্যে সিন্ডিকেটের সরাসরি নেতৃত্ব দেন এবং ব্যক্তিগতভাবে প্রচুর ঘুষ গ্রহণ করে মেধাবী ও যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগবঞ্চিত করেন। ওই সিন্ডিকেটে আরো রয়েছেন, রেলওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি দেবদাস ভট্টাচার্য। রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি হিসেবে কর্মকালে বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা রুজু, গ্রেপ্তার, রিমান্ডে এনে অত্যাচারের জন্য সব এসপিকে প্রচ চাপ প্রয়োগ করে বেআইনি কার্যক্রম সম্পাদনে বাধ্য করতেন। সূত্র জানায়, এপিবিএন-এর প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন ১৫ বিসিএস-এর অতিরিক্ত আইজিপি সেলিম মো. জাহাঙ্গীর। ডিআইজি হিসেবে দীর্ঘদিন এনএসআইতে কাজ করেছেন। একই সঙ্গে দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনে কাজ করেছেন। এপিবিএনএর প্রধান হিসেবে ফোর্সকে ছাত্রদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালাতে নির্দেশনা দিয়েছেন। সব অপকর্মের অন্যতম প্রধান সিপাহসালার এবং পরামর্শদাতা হিসেবে সম্মুখভাগে ছিলেন ডিআইজি মোস্তাক আহমেদ খান, অতিরিক্ত ডিআইজি খোন্দকার নূরুন্নবী, এসবির সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলামের ভায়রা কাজী শফিকুল আলম, সাবেক এআইজি মাল্টিমিডিয়া এবং শেরপুর ও জামালপুরের সাবেক এসপি মো. কামরুজ্জামান ও ঢাকা জেলার সাবেক এসপি মো. আসাদুজ্জামান প্রমুখ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতা হত্যার অভিযোগে সাবেক আইজিপি শহীদুল হক ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ৯৭ জন পুলিশ সদস্যের নামে ডিএমপির বিভিন্ন থানায় ২৮৪টি মামলা করা হয়েছে। গত ১৩ আগস্ট থেকে গতকাল পর্যন্ত এসব মামলা করা হয়। সম্প্রতি কয়েকজন মাস্টারমাইন্ড পুলিশ সদস্যকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু রহস্যজনক কারনে খুনসহ নানা অপরাধে মামলার আসামি হয়েও ধরাছোয়ার বাইরে রয়েছেন পুলিশ সদস্যরা।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
যানজটমুক্ত জনবান্ধব শহর গড়তে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণের দাবি
আ.লীগের কোনো নেতাকে এখন খুঁজে পাওয়া যায় না : দুদু
মহিউদ্দিন আহমেদ বুলবুলকে শোকজ
চীনে বিকেএসপির টিটি খেলোয়াড়দের উন্নত প্রশিক্ষণ
মহিউদ্দিন আহমেদ বুলবুলকে শোকজ
কিডনি ফাউন্ডেশন সিলেটে অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপনে ব্র্যাক ব্যাংকের সহায়তা
টাইটেল স্পন্সর হলো আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক পিএলসি
এখনও ধরা ছোঁয়ার বাইরে বিদ্যুৎ খাতের মাফিয়া সিন্ডিকেটের মূলহোতা আলাউদ্দিন নাসিম
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৭ দলের চোখ ফাইনালে
ময়মনসিংহে যৌথ বাহিনীর অভিযানে যুবদল নেতা নিহত
স্যামসাং উইন্ডফ্রি এসি এক্সপেরিয়েন্স জোন: ভবিষ্যতের এক ঝলক
এবার কোচ মারুফুল-বসুন্ধরা কিংস মুখোমুখি!
সাউথইস্ট ব্যাংক ও ইনস্টাশিওর যৌথভাবে মাস্টারকার্ডের সঙ্গে বীমা ও স্বাস্থ্যসেবায় কো-ব্র্যান্ডেড কার্ড চালু করেছে
দুবাইফেরত যাত্রীর সাবান-শ্যাম্পু-চকোলেট হাতিয়ে বরখাস্ত হলেন তিন কর্মকর্তা
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক-এর বিজনেস রিভিউ মিটিং অনুষ্ঠিত
৩ অতিরিক্ত সচিবকে সচিব হিসেবে পদোন্নতি
সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু সালেহ ওএসডি
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সচিব হলেন মো. সাইফুল্লাহ পান্না
এখনো কর্মস্থলে অনুপস্থিত ১৮৭ পুলিশ সদস্য
উপদেষ্টারা এমন কথা বা কাজ করবেন না যাতে জনগণ হতাশ হয় : বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ শাহজাহান