কাবার পথের মেহমান! লাব্বায়িক (উপস্থিতি) নিশ্চিত করুন
০৭ জুন ২০২৩, ০৯:১৫ পিএম | আপডেট: ০৮ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম
হজ্ব ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ রোকন বা স্তম্ভ। আরবী ভাষায় হজ্ব শব্দের অর্থ যিয়ারতের সংকল্প করা। যেহেতু খানায়ে কাবা যিয়ারত করার উদ্দেশ্যে মুসলমানরা পৃথিবীর চারিদিক হতে নির্দিষ্ট কেন্দ্রের দিকে চলে আসে, তাই এর নাম হজ্ব রাখা হয়েছে। কিন্তু এ হজ্বের পেছনে এক সংগ্রামী, চিত্তাকর্ষক ও শিক্ষাপ্রদ ইতিহাস নিহিত রয়েছে। যারা এ বিশ্ব সম্মেলন কেন্দ্রে আল্লাহর মেহমান হিসাবে হাজিরা দিতে যাবেন, তারা যদি একটু গভীর মনযোগ সহকারে সে ইতিহাস অধ্যয়ন করে নেন তবে হজ্জ্বের প্রকৃত শিক্ষা ও কল্যাণ লাভ করা সহজ হবে।
হজ্ব এলেই আমাদের হৃদয়স্পটে ভেসে ওঠে শিরকের মুলোৎপাঠনকারী মুসলিম মিল্লাতের অবিসংবাদিত সংগ্রামী নেতা ও পিতা হযরত ইবরাহিম আঃ এর কথা। যিনি মহান সৃষ্টিকর্তা ও প্রভুর সন্ধানে চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ ও নক্ষত্রকে ব্যর্থ প্রভু ভেবে ভেবে অবশেষে সত্যের আলোর সন্ধান পেলেন এবং উদাত্ত কন্ঠে ঘোষনা করলেনঃ “তোমরা যাদেরকে আল্লাহর শরীক বলে মনে কর তাদের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক নাই।” তিনি আরো বললেন ”আমি সব দিক হতে মুখ ফিরিয়ে বিশেষভাবে কেবল সেই মহান সত্তাকেই ইবাদাত-বন্দেগীর জন্য নির্র্দিষ্ট করলাম, যিনি সমস্ত আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং আমি মুশরিকদের মধ্যে শামিল নই।”
এ পুর্ণাঙ্গ মানুষটি যৌবনের শুরুতেই যখন আল্লাহকে চিনতে পারলেন তখন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাকে বললেনঃ ”ইসলাম গ্রহণ কর-স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পন কর, আমার দাসত্ব স্বীকার কর। তিনি উত্তরে পরিস্কার ভাষায় বললেন: আমি ইসলাম কবুল করলাম, আমি সারা জাহানের প্রভুর উদ্দেশ্যে নিজেকে উৎসর্গ করলাম, নিজেকে তার নিকট সোপর্দ করলাম। তিনি রাব্বুল আলামীনের জন্য শত শত বছরের পৈতৃক ধর্ম এবং এর যাবতীয় আচার অনুষ্ঠান ও আকীদা বিশ্বাস পরিত্যাগ করলেন। অথচ পৈতৃক মন্দিরের পৌরহিত্যের মহাসম্মানিত গদি তার জন্য অপেক্ষা করছিল। যে গদিটিতে বসলে তিনি অনায়াসেই জাতির নেতা বনে যেতেন। চারদিক থেকে নযর-নিয়ায এসে জড় হত এবং জনগণ ভক্তি -শ্রদ্ধা ভরে মাথা নত ও হাত জোড় করে বসত। সাধারণ মানুষ হতে বাদশাহ পর্যন্ত সকলকে আজ্ঞানুবর্তী গোলাম বানিয়ে নিতে পারতেন। কিন্তু এ বিরাট স্বার্থের উপর পদাঘাত করে সত্যের জন্য দুনিয়া জোড়া বিপদের গর্ভে ঝাপিয়ে পড়তে প্রস্তুত হলেন। জন্মভূমি হতে বের হয়ে আরব দেশ সমুহ ঘুরতে লাগলেন। এ ভ্রমনে তার উপর অসংখ্য বিপদ এসেছে। রাত-দিন তিনি কেবল একটি চিন্তা করতেন, দুনিয়ার মানুষকে অসংখ্য রবের গোলামীর নাগপাশ হতে মুক্ত করে কিভাবে এক আল্লাহর বান্দায় পরিণত করা যায়। দেশত্যাগ ও নির্বাসনের দুঃখ-কষ্ট ভোগ করার পর বৃদ্ধ বয়সে আল্লাহ তাকে সন্তান দান করলেন। তিনি তার জন্যও একই ধর্ম ও কর্তব্য ঠিক করলেন। সব কঠিন পরীক্ষায় পাশ করার পর চুড়ান্ত ও শেষ কঠিণ পরীক্ষা অবশিষ্ট রয়ে গিয়েছিল যে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত হযরত ইবরাহিম আঃ সবকিছু অপেক্ষা রাব্বুল আলামীনকেই বেশী ভালবাসেন কিনা, তার ফয়সালা হতে পারত না। তাই বৃদ্ধ বয়সে একেবারে নিরাশ হয়ে যাওয়ার পর তার সন্তান লাভ হয়েছিল সে প্রিয় সন্তানকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে কুরবানী করতে পারেন কি না তারই পরীক্ষা নেয়া হলো। পরীক্ষায় তিনি উত্তীর্ণ হলেন। তখন চুড়ান্তরূপে ঘোষনা করা হলো যে, এখন তুমি প্রকৃত মুসলিম হওয়ার দাবীকে সত্য বলে প্রমান করেছ। এক্ষণে তোমাকে সারা পৃথিবীর ইমাম বা নেতা বানানো যায়। আল কুরআনের নিম্নোক্ত আয়াতে এ কথাই বলা হয়েছে:-“এবং যখন ইবরাহীমকে তার রব কয়েকটি ব্যাপারে পরীক্ষা করলেন এবং সে সব পরিক্ষায় ঠিকভাবে উত্তীর্ণ হলেন তখন তাকে জানিয়ে দেয়া হলো যে, আমি তোমাকে সমগ্র মানুষের ইমাম বা নেতা নিযুক্ত করছি। তিনি বললেন, আমার বংশধরদের সম্পর্কে কি হুকুম ? আল্লাহ তা’আলা বললেন যালেমদের জন্য আমার ওয়াদা প্রযোজ্য নয়।”(সুরা বাকারা-১২৪)
এভাবে হযরত ইবরাহিম আঃ কে দুনিয়ার নেতৃত্ব দান করা হল এবং বিশ্বব্যাপী ইসলাম বা মুসলমানদের চিরস্থায়ী আদর্শিক নেতা নিযুক্ত করা হল। জ্যেষ্ঠ পুত্র হযরত ইসমাইল আঃ কে সাথে নিয়ে তিনি হিযাযের মক্কা নগরীকে কেন্দ্র করে আরবের কোণে কোণে ইসলামের শিক্ষাকে বিস্তার সাধন করলেন। আর পিতা পুত্র মিলে ইসলামী আন্দোলনের বিশ্ববিখ্যাত কেন্দ্র খানায়ে কাবা প্রতিষ্ঠা করেন। আল্লাহ তা’আলা নিজেই এ কেন্দ্র নির্দিষ্ট করে দেন। খানায়ে কাবা সাধারণ মসজিদের ন্যায় নিছক ইবাদাতের স্থান নয়, প্রথম দিন হতেই এটা দ্বীন ইসলামের বিশ্বব্যাপী আন্দোলনের প্রচার কেন্দ্ররূপে নির্ধারিত হয়েছিল। এ কাবা নির্মানের মুল উদ্দেশ্য ছিল যে, পৃথিবীর দুরবর্তী অঞ্চলসমুহ হতে এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী সকল মানুষ এখানে এসে মিলিত হবে এবং সংঘবদ্ধভাবে এক আল্লাহর ইবাদাত করবে, আবার এখান থেকে ইসলামের বিপ্লবী পয়গাম নিয়ে নিজ নিজ এলাকায় ফিরে গিয়ে তা বান্তবায়নে সচেষ্ট হবে । বিশ্ব মুসলিমের এ সম্মেলনেরই নাম হজ্ব।
এ ঘরের লক্ষ্য উদ্দেশ্য সম্পর্কে হযরত ইবরাহীম আঃ এর দোওয়া শুনুন ঃ আল কুরআনে আল্লাহ বলছেন “এবং স্মরণ কর, যখন ইবরাহিম দুআ করেছিলেনঃ হে আল্লাহ ! এ শহরকে শান্তিপূর্ণ বানাও, আমাকে এবং আমার সন্তানকে মূর্তি পুজার শিরক হতে বাঁচাও। হে আল্লাহ! এ মুর্তিগুলো অসংখ্য লোককে গোমরাহ করেছে। অতএব,যে আমার পন্থা অনুসরণ করবে সে আমার, আর যে আমার পন্থার বিপরীতে চলবে-তখন তুমি নিশ্চয়ই বড় ক্ষমাশীল ও দয়াময়। পরওয়ারদিগার! আমি আমার বংশধরদের একটি অংশ তোমার এ মহান ঘরের নিকট,এ ধুসর মরুভূূমিতে এনে পুনর্বাসিত করেছি-এ উদ্দেশ্যে যে, তারা নামায কায়েম করবে। অতএব,হে আল্লাহ! তুমি লোকদের মনে এতদুর উৎসাহ দাও যেন তারা এর দিকে দলে দলে চলে আসে এবং ফল-মুল দ্বারা তাদের জীবিকার ব্যবস্থা কর। হয়ত ইহারা তোমার কৃতজ্ঞ বান্দা হবে।” সুরা ইবরাহীম-৩৫-৩৭
এ সম্পর্কে আল্লাহ রাব্বুল আরো বলেনঃ-“এবং স্মরণ কর, যখন ইবরাহীমের জন্য এ ঘরের স্থান ঠিক করেছিলাম-এ কথা বলে যে, এখানে কোন প্রকার শিরক করোনা এবং আমার ঘরকে তওয়াফকারী ও নামাযীদের জন্য পাক-সাফ করে রাখ। আর লোকদেরকে হজ্জ করার জন্য প্রকাশ্যভাবে আহবান জানাও-তারা যেন তোমার নিকট আসে, পায়ে হেটে আসুক কিংবা দুরবর্তী স্থান হতে কৃশ উটের পিঠে চড়ে আসুক। এখানে এসে তারা যেন দেখতে পায় তাদের জন্য দ্বীন-দুনিয়ার কল্যাণের ব্যবস্থা রয়েছে এবং নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহর দেয়া জন্তু গুলোকে আল্লাহর নামে কুরবানী করবে, তা হতে নিজেরাও খাবে এবং দরিদ্র ও অভাবগ্রস্থ লোকদেরকে খেতে দেবে।” (সুরা হজ্জ-২৬-২৮)
এ ঘরের লক্ষ্য উদ্দেশ্য সম্পর্কে পিতা পুত্র মিলে মহান আল্লাহর দরবারে আরো দু’আ করেছিলেন যা আল্লাহ নিজের ভাষায় কুরআনে বলেছেন:-“এবং স্মরণ কর, ইবরাহিম ও ইসমাইল যখন এ ঘরের ভিত্তি স্থাপন কালে দোওয়া করছিলেনঃ পরওয়ারদিগার! আমাদের এ চেষ্টা কবুল কর, তুমি সব কিছু জান এবং সবকিছু শুনতে পাও। পরওয়ারদিগার ! তুমি আমাদের দু’জনকেই মুসলিম-অর্থাৎ তোমার অনুগত কর এবং আমাদের বংশাবলী হতে এমন একটি জাতি তৈরী কর যারা একান্তভাবে তোমারই অনুগত হবে। আমাদেরকে তোমার ইবাদাত করার পন্থা বলে দাও, আমাদের প্রতি ক্ষমার দৃষ্টি নিক্ষেপ কর, তুমি বড়ই ক্ষমাশীল ও দয়াময়। পরোয়ারদিগার! তুমি সে জাতির প্রতি তাদের মধ্য হতে এমন একজন নবী পাঠাও যিনি তাদেরকে তোমার বাণী পড়ে শোনাবে,তাদেরকে কিতাব ও জ্ঞান শিক্ষা দিবে এবং তাদের চরিত্র সংশোধন করবে। নিশ্চয় তুমি সার্বভৌম ক্ষমতা সম্পন্ন এবং বিজ্ঞ।”(সুরা বাকারা-১২৭-১২৯)
যে শিরক উচ্ছেদ ও মূর্তি পূজা বন্ধ করার সাধনা ও আন্দোলনে হযরত ইবরাহীম আঃ ও ইসমাইল আঃ এর সারাটি জীবন অতিবাহিত করেছিলেন, কালের বিবর্তনে এ কাবা ঘরে আবার ৩৬০টি মুর্তি স্থাপন করা হয়। চারদিকে শিরক আর শিরক চলতে থাকে। লাত, মানাত, হুবাল, নসর,ইয়াগুস, উজ্জা,আসাফ, নায়েলা আরো অসংখ্য নামের মূর্তি তৈরী করে পূজা করত। হজ্বকে তারা তীর্থযাত্রার অনুরূপ বানিয়ে তাওহীদ প্রচারের কেন্দ্রস্থল কাবা ঘর হতে মূর্তি পূজার প্রচার শুরু করে ছিল এবং পূজারীদের সর্বপ্রকার কলা কৌশল অবলম্বন করে বিভিন্ন স্থান থেকে আগত লোকদের নিকট হতে নযর-নিয়ায আদায় করত। হজ্জের অন্যান্য অনুষ্ঠান গুলোকে বিকৃতরূপ দিয়ে পালন করত। এ ভাবে ইবরাহীম আঃ ও হযরত ইসমাইল আঃ যে মহান কাজ শুরু করেছিলেন এবং যে উদ্দেশ্যে তারা হজ্জ-প্রথার প্রচলন করেছিলেন, তা সবই বিনষ্ট হয়ে যায়।
অবশেষে হযরত ইবরাহীম আঃ এর দু’আরই ফসল মানবতার বন্ধু হযরত মোহাম্মদ সাঃ মক্কা বিজয়ের মাধ্যমে শিরকের মূলোৎপাঠন করেন এবং মুসলিম মিল্লাতের পিতার হাড়ানো হজ্জের নিদর্শন গুলো পূনরুদ্ধার করেন।
হজ্জের প্রতিটি পদে পদে আল্লাহর স্মরণ-আল্লাহর নামের যিকর, নামায,ইবাদাত ও কুরবানী এবং কা’বা ঘরের প্রদক্ষিণ। আর এখানে একটিমাত্র আওয়াযই মুখরিত হয়ে উঠে, হেরেম শরীফের প্রাচীর আর পাহাড়ের চড়াই উৎরাইয়ের প্রতিটি পথে উচ্চারিত হয়ঃ ”লাব্বায়িক আল্লাহুম্মা লাব্বায়িক, লা শারিকা লাকা লাব্বায়িক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নিয়মাতা লাকা ওয়াল মুলকা লা শারিকা লাক” অর্থা হে প্রভু তোমার ডাকে আমি উপস্থিত। আমি এসেছি, তোমার কোন শরীক নাই, আমি তোমারই নিকটে এসেছি। সকল প্রশংসা একমাত্র তোমার জন্যে। সব নিয়ামত তোমারই দান, রাজত্ব আর প্রভুত্ব সবই তোমার। তুমি একক-কেউই তোমার শরীক নাই।”
কাবার পথের যাত্রীরা কোথায় হাজিরা দিতে যাচ্ছেন আর হাজিরা দিতে গিয়ে কি বলছেন তা অবশ্যই গভীর মনোযোগের সাথে চিন্তা করতে হবে। এমনিভাবে হজ্বের প্রতিটি অনুষ্ঠান পালন করার সময় কি করা হচ্ছে এবং বলা হচ্ছে তা অনুধাবণ করতে হবে। প্রকৃতপক্ষেই কি আমরা আমাদের বাস্তব জীবনকে শিরকমুক্ত করতে পেরেছি এবং আল্লাহর কাছে নিজেকে পুর্ণাঙ্গ মুসলিম হিসাবে পেশ করতে পেরেছি ? আত্মজিজ্ঞাসার জবাব যদি নাবোধক হয়। তবে আমরা লাব্বায়িক বলে এ বিশ্বসম্মেলন কেন্দ্রে হাজিরা দিব ঠিকই কিন্তু আল্লাহর হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত লেখা হবে। যেমন প্রানহীন নামায মন্দ কাজ হতে বিরত রাখতে পরছেনা, প্রানহীন রোযা তাকওয়ার গুণ সৃষ্টি করতে পারছেনা ও যাকাত আমাদেরকে পবিত্র করতে পারছে না। তেমনিভাবে প্রানহীন হজ্ব আল্লাহর হাজিরা খাতায় অনুপস্থিতিই লেখা হবে। তাই কাবার পথের যাত্রীরা তাদের উপস্থিতিকে নিশ্চিত করার জন্য হজ্জে গমনের পুর্বে নিম্ন লিখিত বিষয়গুলো প্রতি নজর দেয়া প্রয়োজন।
শিরককে পরিত্যাগ করতে হবে:- শিরক একটি জুলুম। শিরকের গুনাহ আল্লাহ মাফ করবেন না। শিরক সমস্ত নেক আমলকে ধ্বংস করে দেয়। এ শিরক বর্তমানে বিভিন্ন রূপ ধারণ করে আমাদের সমাজের রন্দ্রে রন্দ্রে প্রবেশ করেছে। জীবনের সর্বক্ষেত্রে সর্বাবস্থায় এ শিরককে পরিত্যাগ করতে হবে। কারণ শিরক মুক্ত জীবন ও সমাজ গঠণ করার জন্যই হযরত ইবরাহীম আঃ ও হযরত মুহাম্মদ সাঃ আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। তাছাড়া মহান আল্লাহর সম্মানিত মেহমান হিসাবে তালবিয়া পাঠে বলা হচ্ছে ”আমি উপস্থিত। আমি এসেছি, তোমার কোন শরীক নাই, আমি তোমারই নিকটে এসেছি। তুমি একক-কেহই তোমার শরীক নাই।” এ কথাটিকে বাস্তব জীবনে রূপায়ন করতে হবে।
দ্বিমুখী নীতি পরিহার করে,পরিপূর্ণভাবে আত্মসমর্পণ করতে হবে:-জন্মসূত্রে মুসলমান নয় বরং একজন পরিপূর্ণ মুসলিম হতে হবে, সারা জাহানের প্রভুর উদ্দেশ্যে নিজেকে উৎসর্গ করতে হবে, নিজেকে তার নিকট সোপর্দ করতে হবে। জীবনের প্রতিটি কথা ও কাজ কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী হতে হবে। শুধু মাত্র পাচ ওয়াক্ত নামাযে আল্লাহকে প্রভু হিসাবে স্বীকার করা হলো কিন্তু জীবনের বিশাল অংশকে মানুষের তৈরী আদর্শের হাতে সোপর্দ করলে তিনি মুসলিম নন বরং একজন খাটিঁ মোনাফিক। প্রতি নামাযেই অসংখ্যবার বলা হচ্ছে: “আমরা তোমারই গোলামী করি আর তোমারই সাহায্য চাই”। অথচ নামাযের বাইরে তার বিপরীত কাজ করা হচ্ছে। এ এক মিথ্যাচার ছাড়া কি হতে পারে ? আর এ মিথ্যাচারকে বিশ্ব সম্মেলন কেন্দ্র পর্যন্ত নিয়ে যাবেন না। সেখানে গিয়ে যখন আপনি বললেন. “হে প্রভু তোমার ডাকে আমি উপস্থিত। আমি এসেছি, তোমার কোন শরীক নাই,আমি তোমারই নিকটে এসেছি। সকল প্রশংসা একমাত্র তোমার জন্যে। সব নিয়ামত তোমারই দান, রাজত্ব আর প্রভুত্ব সবই তোমার। তুমি একক-কেউই তোমার শরীক নাই।” অথচ বাস্তবক্ষেত্রে তার বিপরীত কার্য পরিলক্ষিত হয়। এ ধরনের দ্বিমুখী নীতি বা মুনাফেকী আচরণ আমাদের জীবনের সর্বক্ষেত্রে পরিত্যাগ করতে হবে। হজ্ব চেতনার অনুধাবন:-হজ্জের অনুষ্ঠানগুলো ঐতিহাসিক চেতনাকে সামনে রেখে পালন করতে হবে। আর এ চেতনাকে হযরত ইবরাহীম আঃ ও হযরত ইসমাইল আঃ ন্যায় শিরক উচ্চেদে এবং মানুষকে অসংখ্য মিথ্যা রবের নাগপাশ থেকে মুক্ত করার আপোষহীন সংগ্রামের কাজে ব্যবহার করতে হবে এবং এ সংগ্রাম নিজ নিজ এলাকায় ছড়িয়ে দেয়ার বাধ্যতামূলক দায়িত্ব পালন করতে হবে। তবেই হজ্জের স্বার্থকতা ও সুফল পাওয়া যাবে এবং আল্লাহর হাজিরা খাতায় উপস্থিতি নিশ্চিত করা যাবে।
লেখক: ইসলামী চিন্তাবিদ, গবেষক।
বিভাগ : ধর্ম দর্শন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
মাগুরার শালিখায় অজ্ঞাত বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার
আমরা আল্লাহর উপরে ভরসা করি আর হাসিনার ভরসা ভারতে -দুলু
বাংলাদেশের গুমের ঘটনায় ভারতের সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে কমিশন
২০২৫ সালের মধ্যে নির্বাচনের পক্ষে মত বিএনপির যুগপৎ সঙ্গীদের
ঢাকায় ‘হযরত ফাতিমা জাহরা (সা.আ.) বিশ্বের নারীদের আদর্শ’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
চার ভাগে ফিরবেন ক্রিকেটাররা
চাঁদাবাজদের ক্ষমতায় আসতে দেবেন না: হাসনাত
এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের বরাদ্দ পেল বাফুফে
ইজতেমা মাঠকে যারা খুনের মাঠে পরিণত করেছে তারা সন্ত্রাসী
আসছে ভিভোর এক্স সিরিজের নতুন ফ্ল্যাগশিপ
বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ২ ভারতীয় নাগরিককে স্বদেশে ফেরত
মুন্সীগঞ্জে বিএনপি’র দু পক্ষে সংঘর্ষ,৩ জন গুলিবিদ্ব সহ আহত ১০
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সাকিব-তামিমকে পাওয়া যাবে: ফারুক
ইজতেমা মাঠে হত্যাযজ্ঞে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করুন
কলাপাড়ায় অটোরিকশা উল্টে শিশুর মৃত্যু
আগামীকাল পঞ্চগড়ে বিএনপির জনসমাবেশ
ব্যাক্তিস্বার্থ পরিহার করে, দেশ ও দলের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে: ইলিয়াস পাটোয়ারী
সখিপুরে বিদ্যুৎষ্পৃষ্টে ডিস ব্যবসায়ীর মৃত্যু
যারাই সুযোগ পেয়েছে তারাই দেশের সাথে বেঈমানী করেছে: ডা. মু. তাহের
পঞ্চমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো মৌমাছি ও মধু সম্মেলন